< আদিপুস্তক 8 >

1 আর ঈশ্বর নোহকে ও জাহাজে অবস্থিত তাঁর সঙ্গী পশু যাবতীয় প্রাণীকে স্মরণ করলেন, ঈশ্বর পৃথিবীতে বাতাস বহালেন, তাতে জল থামল।
কিন্তু ঈশ্বর নোহকে এবং জাহাজে তাঁর সাথে থাকা সব বন্য ও গৃহপালিত পশুকে স্মরণ করলেন, এবং পৃথিবীতে তিনি বাতাস পাঠালেন, ও জল সরে গেল।
2 আর গভীর জলের উনুই ও আকাশের জানালা সকল বন্ধ এবং আকাশের মহাবৃষ্টি থামল।
এদিকে মাটির নিচে থাকা জলের উৎসগুলি, ও আকাশমণ্ডলের জানালাগুলি বন্ধ হয়ে গেল, এবং আকাশ থেকে বৃষ্টি পড়াও বন্ধ হল।
3 আর জল ক্রমশঃ মাটির ওপর থেকে সরে গিয়ে একশো পঞ্চাশ দিনের র শেষে কমে গেল।
পৃথিবী থেকে জল সরার প্রক্রিয়া অব্যাহত রইল। 150 দিন পর জল নিচে নামল,
4 তাতে সপ্তম মাসে, সতেরো দিনের অরারটের পর্বতের ওপরে জাহাজ লেগে থাকল।
এবং সপ্তম মাসের সপ্তদশতম দিনে জাহাজটি আরারট পর্বতের চূড়ায় এসে স্থির হল।
5 পরে দশ মাস পর্যন্ত জল কমতে থাকল, ঐ দশ মাসের প্রথম দিনের পর্বতের শৃঙ্গ দেখা গেল।
দশম মাস পর্যন্ত জল অনবরত সরে এল, এবং দশম মাসের প্রথম দিনে পাহাড়-পর্বতের চূড়াগুলি দৃষ্টিগোচর হল।
6 আর চল্লিশ দিন পরে নোহ নিজের বানানো জাহাজের জানালা খুলে, একটা দাঁড়কাক ছেড়ে দিলেন;
চল্লিশ দিন পর নোহ সেই জানালাটি খুলে দিলেন, যেটি তিনি সেই জাহাজে তৈরি করেছিলেন
7 তাতে সে উড়ে ভূমির উপরের জল শুকনো না হওয়া পর্যন্ত এখানে ওখানে ঘোরাফেরা করতে লাগলো।
এবং একটি দাঁড়কাক বাইরে পাঠালেন, আর পৃথিবীতে জল না শুকানো পর্যন্ত সেটি ইতস্তত বাইরে যাচ্ছিল ও ফিরে আসছিল।
8 আর মাটির ওপরে জল কমেছে কি না, তা জানবার জন্য তিনি নিজের কাছ থেকে এক ঘুঘু ছেড়ে দিলেন।
পরে স্থলভূমির উপরে জল শুকিয়েছে কি না, তা দেখার জন্য তিনি একটি পায়রা বাইরে পাঠালেন।
9 তাতে সমস্ত পৃথিবী জলে ভরে থাকাতে ঘুঘু নামার জায়গা পেল না, তাই জাহাজে তাঁর কাছে ফিরে আসল। তখন তিনি হাত বাড়িয়ে তাকে ধরলেন ও জাহাজের ভিতরে নিজের কাছে রাখলেন।
কিন্তু পায়রাটি তার পা রাখার জায়গা পায়নি, কারণ পৃথিবীর উপরে সর্বত্র তখনও জল জমে ছিল; তাই সেটি জাহাজে নোহের কাছে ফিরে এল। তখন তিনি তাঁর হাত বাড়িয়ে পায়রাটিকে ধরে জাহাজে তাঁর নিজের কাছে ফিরিয়ে আনলেন।
10 ১০ পরে তিনি আর সাত দিন অপেক্ষা করে জাহাজ থেকে সেই ঘুঘু আবার ছেড়ে দিলেন
তিনি আরও সাত দিন অপেক্ষা করলেন এবং আবার জাহাজ থেকে সেই পায়রাটিকে বাইরে পাঠালেন।
11 ১১ এবং ঘুঘুটি সন্ধ্যাবেলায় তাঁর কাছে ফিরে এল; আর দেখ, তার ঠোঁটে জিতগাছের একটা নতুন পাতা ছিল; এতে নোহ বুঝলেন, মাটির ওপরে জল কমেছে।
সন্ধ্যাবেলায় যখন সেই পায়রাটি তাঁর কাছে ফিরে এল, তখন সেটির চঞ্চুতে ছিল জলপাই গাছের একটি টাটকা পাতা! তখন নোহ জানতে পারলেন যে পৃথিবী থেকে জল সরে গিয়েছে।
12 ১২ পরে তিনি আর সাত দিন অপেক্ষা করে সেই ঘুঘু ছেড়ে দিলেন, তখন সে তাঁর কাছে আর ফিরে এল না।
তিনি আরও সাত দিন অপেক্ষা করলেন এবং আবার সেই পায়রাটিকে বাইরে পাঠালেন, এবার কিন্তু সেটি আর তাঁর কাছে ফিরে এল না।
13 ১৩ [নোহের বয়সের] ছয়শো এক বছরের প্রথম মাসের প্রথম দিনের পৃথিবীর ওপরে জল শুকনো হল; তাতে নোহ জাহাজের ছাদ খুলে দেখলেন, আর দেখ, মাটিতে জল নেই।
নোহের জীবনকালের 601 তম বছরের প্রথম মাসের প্রথম দিনে, পৃথিবীর উপরে জল শুকিয়ে গেল। নোহ তখন জাহাজ থেকে আচ্ছাদনটি সরিয়ে দিলেন এবং দেখতে পেলেন যে স্থলভূমির উপরদিকটি শুকিয়ে গিয়েছে।
14 ১৪ পরে দ্বিতীয় মাসের সাতাশ দিনের ভূমি শুকনো হল।
দ্বিতীয় মাসের সাতাশতম দিনে পৃথিবী পুরোপুরি শুকিয়ে গেল।
15 ১৫ পরে ঈশ্বর নোহকে বললেন,
ঈশ্বর তখন নোহকে বললেন,
16 ১৬ তুমি নিজের বউ, ছেলেদের ও ছেলের বউদেরকে সঙ্গে নিয়ে জাহাজ থেকে বাইরে যাও।
“তুমি ও তোমার স্ত্রী ও তোমার ছেলেরা ও তাদের স্ত্রীরা—তোমরা জাহাজ থেকে বাইরে বেরিয়ে এসো।
17 ১৭ আর তোমার সঙ্গী পশু, পাখি ও মাটিতে চলা সরীসৃপ প্রভৃতি মাংসিক যত জীবজন্তু আছে, সেই সমস্ত কিছুকে তোমার সঙ্গে বাইরে আন, তারা পৃথিবীতে প্রাণীময় করুক এবং পৃথিবীতে ফলবান ও বহুবংশ হোক।
যেসব জীবিত প্রাণী তোমার সাথে আছে—পাখিরা, পশুরা, ও সব সরীসৃপ প্রাণী—সবাইকে বাইরে বের করে আনো, যেন সেগুলি পৃথিবীতে বংশবৃদ্ধি করে এখানে ফলবান হয় ও সংখ্যায় বৃদ্ধি পায়।”
18 ১৮ তখন নোহ নিজের ছেলেদের এবং নিজের স্ত্রী ও ছেলের স্ত্রীদেরকে সঙ্গে নিয়ে বের হলেন।
অতএব নোহ তাঁর স্ত্রীকে, ছেলেদের, এবং তাঁর পুত্রবধূদের সাথে নিয়ে বাইরে বের হয়ে এলেন।
19 ১৯ আর নিজের নিজের জাতি অনুসারে প্রত্যেক পশু, সরীসৃপ জীব ও পাখি, সমস্ত মাটিতে চলনশীল প্রাণী জাহাজ থেকে বের হল।
সব পশু এবং সরীসৃপ প্রাণী ও পাখি—পৃথিবীতে বিচরণকারী সবকিছু, তাদের প্রজাতি অনুসারে এক এক করে জাহাজ থেকে বাইরে বের হয়ে এল।
20 ২০ পরে নোহ সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে যজ্ঞবেদি নির্মাণ করলেন এবং সমস্ত রকমের শুচি পশুর ও সমস্ত রকমের শুচি পাখির মধ্যে কতকগুলি নিয়ে বেদির ওপরে হোম করলেন।
পরে নোহ সদাপ্রভুর উদ্দেশে একটি যজ্ঞবেদি তৈরি করলেন এবং, সব শুচিশুদ্ধ পশু ও শুচিশুদ্ধ পাখির মধ্যে থেকে কয়েকটি নিলেন, ও সেই বেদিতে হোমবলি উৎসর্গ করলেন।
21 ২১ তাতে সদাপ্রভু তার সুগন্ধ গ্রহণ করলেন, আর সদাপ্রভু মনে মনে বললেন, “আমি মানুষের জন্য মাটিকে আর অভিশাপ দেব না, কারণ বাল্যকাল পর্যন্ত মানুষের মনের কল্পনা দুষ্ট; যেমন করলাম, তেমন আর কখনও সকল প্রাণীকে ধ্বংস করব না।
সদাপ্রভু সেই প্রীতিকর সৌরভের ঘ্রাণ নিয়ে মনে মনে বললেন: “মানুষের জন্য আমি আর কখনোই ভূমিকে অভিশাপ দেব না, যদিও শিশুকাল থেকেই মানুষের অন্তরের সব প্রবণতা মন্দ। যেভাবে আমি সব জীবিত প্রাণীকে ধ্বংস করেছি, আমি আর তা করব না।
22 ২২ যতদিন পৃথিবী থাকবে, ততদিন শস্য বোনার ও শস্য কাটার দিন এবং শীত ও উত্তাপ এবং গ্রীষ্মকাল ও হেমন্তকাল এবং দিন ও রাত, এই সমস্ত থেমে যাবে না।”
“যতদিন এই পৃথিবী টিকে থাকবে, বীজবপনকাল ও ফসল গোলাজাত করার সময়, শৈত্য ও উত্তাপ, গ্রীষ্মকাল ও শীতকাল, দিন ও রাত কখনোই শেষ হবে না।”

< আদিপুস্তক 8 >

A Dove is Sent Forth from the Ark
A Dove is Sent Forth from the Ark