আদিপুস্তক 7
1 ১ আর সদাপ্রভু নোহকে বললেন, “তুমি সপরিবারে জাহাজে প্রবেশ কর, কারণ এই কালের লোকদের মধ্যে আমার সামনে তোমাকেই ধার্মিক দেখেছি।
সদাপ্রভু পরে নোহকে বললেন, “তুমি ও তোমার সম্পূর্ণ পরিবার জাহাজে প্রবেশ করো, কারণ এই প্রজন্মে আমি তোমাকেই ধার্মিকরূপে খুঁজে পেয়েছি।
2 ২ তুমি শুচি পশুর স্ত্রীপুরুষ নিয়ে প্রত্যেক জাতির সাত সাত জোড়া এবং অশুচি পশুর স্ত্রী ও পুরুষ নিয়ে প্রত্যেক জাতির
তুমি সব ধরনের শুচিশুদ্ধ পশুর মধ্যে সাত জোড়া করে, একটি মদ্দা ও তার সহচরীকে, সব ধরনের অশুচি পশুর মধ্যে এক জোড়া করে, একটি মদ্দা ও তার সহচরীকে,
3 ৩ এক এক জোড়া এবং আকাশের পাখিদেরও স্ত্রীপুরুষ নিয়ে প্রত্যেক জাতির সাত সাত জোড়া, সমস্ত ভূমণ্ডলে তাদের বংশ রক্ষার জন্য নিজের সঙ্গে রাখ।
আর সব ধরনের পাখির মধ্যে সাত জোড়া করে, মদ্দা ও মাদিকেও সাথে নিয়ো, যেন পৃথিবীর সর্বত্র তাদের বিভিন্ন প্রজাতি রক্ষা পায়।
4 ৪ কারণ সাত দিনের র পর আমি পৃথিবীতে চল্লিশ দিন রাত বৃষ্টি বর্ষণ করে আমার সৃষ্টি যাবতীয় প্রাণীকে পৃথিবী থেকে উচ্ছিন্ন করব।”
আর সাত দিন পর আমি পৃথিবীতে চল্লিশ দিন ও চল্লিশ রাত পর্যন্ত চলতে থাকা বৃষ্টি পাঠাব, এবং আমার তৈরি করা প্রত্যেকটি জীবিত প্রাণীকে আমি পৃথিবীর বুক থেকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলব।”
আর সদাপ্রভু নোহকে যা যা আদেশ দিয়েছিলেন, তিনি সেসবকিছু করলেন।
নোহের 600 বছর বয়সকালে বন্যার জল পৃথিবীতে ধেয়ে এল।
আর বন্যার জলের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নোহ এবং তাঁর ছেলেরা ও তাঁর স্ত্রী ও পুত্রবধূরা সবাই সেই জাহাজে প্রবেশ করলেন।
শুচিশুদ্ধ ও অশুচি পশুদের, পাখিদের ও সরীসৃপ সব প্রাণীর মদ্দা ও মাদিরা জোড়ায় জোড়ায়,
9 ৯ এবং পাখির ও ভূমিতে চলাচল যাবতীয় জীবের স্ত্রী পুরুষ জোড়া জোড়া জাহাজে প্রবেশ করল, যেমন ঈশ্বর নোহকে আদেশ করেছিল।
নোহকে দেওয়া ঈশ্বরের আদেশানুসারে নোহের কাছে এল এবং জাহাজে প্রবেশ করল।
আর সেই সাত দিন পর পৃথিবীতে বন্যার জল ধেয়ে এল।
11 ১১ নোহের বয়সের ছয়শো বছরের দ্বিতীয় মাসের সতেরো দিনের মহাজলধির সমস্ত উনুই ভেঙে গেল এবং আকাশের জানালা সব মুক্ত হল;
নোহের জীবনকালের 600 তম বছরের, দ্বিতীয় মাসের সপ্তদশতম দিনে—সেদিন ভূগর্ভস্থ জলের সব উৎস বিস্ফোরিত হল, এবং আকাশের জলনিকাশের সব পথ খুলে গেল।
আর চল্লিশ দিন ও চল্লিশ রাত পৃথিবীতে বৃষ্টি পড়ল।
13 ১৩ সেই দিন নোহ এবং শেম, হাম ও যেফৎ নামে নোহের ছেলেরা এবং তাঁদের সঙ্গে নোহের স্ত্রী ও তিন ছেলের বউরা জাহাজে প্রবেশ করলেন।
সেদিনই নোহ ও তাঁর স্ত্রী এবং তাঁর ছেলেরা—শেম, হাম ও যেফৎ, ও তিন পুত্রবধূ সেই জাহাজে প্রবেশ করলেন।
14 ১৪ আর তাঁদের সঙ্গে সর্বজাতীয় বন্য পশু, সবজাতীয় গ্রাম্য পশু, সবজাতীয় মাটিতে চলাচল করা সরীসৃপ জীব ও সবজাতীয় পাখি,
তাদের সাথে তারা নিজ নিজ প্রজাতি অনুসারে সব ধরনের বন্যপশু, সব ধরনের গৃহপালিত পশু, সব ধরনের সরীসৃপ প্রাণী এবং ডানাওয়ালা সব ধরনের পাখি রাখলেন।
প্রাণবায়ুবিশিষ্ট সব প্রাণী জোড়ায় জোড়ায় নোহের কাছে এল এবং জাহাজে প্রবেশ করল।
16 ১৬ ফলতঃ তাঁর প্রতি ঈশ্বরের আদেশ অনুসারে সমস্ত প্রাণীর স্ত্রী ও পুরুষ প্রবেশ করল। পরে সদাপ্রভু তাঁর জন্য পিছনের দরজা বন্ধ করলেন।
যেসব পশু ভিতরে ঢুকল, তারা ছিল প্রত্যেকটি জীবিত প্রাণীর মদ্দা ও মাদি পশু, ঠিক যেভাবে ঈশ্বর নোহকে আদেশ দিয়েছিলেন। পরে সদাপ্রভু তাঁকে ভিতর থেকে বন্ধ করে দিলেন।
চল্লিশ দিন ধরে পৃথিবীতে বন্যা হল, আর যেমন যেমন জল বেড়েছিল, তেমন তেমন জাহাজটিকে সেই জল ভূতল থেকে উঁচুতে তুলে ধরেছিল।
জল উপরে উঠে পৃথিবীর উপর অত্যন্ত বেড়ে গেল, এবং সেই জাহাজটি জলের উপর ভেসে উঠল।
জল পৃথিবীর উপর খুব বেড়ে গেল, ও সমগ্র আকাশমণ্ডলের নিচে অবস্থিত সব উঁচু উঁচু পাহাড়-পর্বত ঢাকা পড়ে গেল।
জলস্তর 6.8 মিটারেরও বেশি উচ্চতায় উঠে গেল ও পাহাড়-পর্বতগুলি ঢাকা পড়ে গেল।
পাখি, গৃহপালিত ও বন্যপশু, পৃথিবীতে উড়ে বেড়ানো সব কীটপতঙ্গ, ও সমগ্র মানবজাতি—পৃথিবীতে বিচরণকারী প্রত্যেকটি জীবিত প্রাণী ধ্বংস হল।
শুকনো জমির উপরে থাকা প্রত্যেকটি শ্বাসবিশিষ্ট প্রাণী মারা গেল।
23 ২৩ এই ভাবে পৃথিবী নিবাসী সমস্ত প্রাণী মানুষ, পশু, সরীসৃপ, জীব ও আকাশের পাখি সকল উচ্ছিন্ন হল, পৃথিবী থেকে উচ্ছিন্ন হল, কেবল নোহ ও তাঁর সঙ্গী জাহাজে প্রাণীরা বেঁচে গেলেন।
পৃথিবীর বুকে যত জীবিত প্রাণী ছিল, সবাই নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল; মানুষজন ও পশু এবং সরীসৃপ জীব ও আকাশের পাখি, সবাই পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল। শুধুমাত্র নোহ এবং জাহাজে যারা তাঁর সাথে ছিল, তারাই বাদ পড়ল।
150 দিন ধরে জল পৃথিবীকে প্লাবিত করে রাখল।
The Great Flood
