< রূতের বিবরণ 4 >
1 ইত্যবসরে বোয়স নগরের ফটকের কাছে গেলেন এবং সেখানে বসলেন। যে মুক্তিকর্তা জ্ঞাতির কথা তিনি রূতকে বলেছিলেন, তাঁকে যখন তিনি রাস্তা দিয়ে যেতে দেখলেন, তখন বোয়স তাঁকে ডেকে বললেন, “বন্ধু আমার কাছে এখানে এসে বসো।” তাই তিনি বোয়সের কাছে এসে বসলেন।
১পরে বোয়স নগর-দ্বারে উঠে গিয়ে সেই জায়গায় বসলেন। আর দেখ, যে মুক্তিকর্তা জ্ঞাতির কথা বোয়স বলেছিলেন, সেই ব্যক্তি পথ দিয়ে আসছিল; তাতে বোয়স তাকে বললেন, “ওহে অমুক (দাদা), পথ ছেড়ে এই জায়গায় এসে বস,” তখন সে পথ ছেড়ে এসে বসল।
2 বোয়স নগরের আরও দশজন প্রাচীনকে ডেকে বললেন, “এখানে আমার কাছে এসে বসুন।” তাঁরাও তাঁর কাছে এসে বসলেন।
২পরে বোয়স নগরের দশ জন প্রাচীনকে নিয়ে বললেন, আপনারাও এই জায়গায় বসুন তাঁরা বসলেন।
3 তখন বোয়স সেই মুক্তিকর্তা জ্ঞাতিকে বললেন, “যে নয়মী মোয়াব দেশ থেকে ফিরে এসেছে, সে তার স্বামী ইলীমেলকের জমিটি বিক্রি করতে চায়।
৩তখন বোয়স ঐ মুক্তিকর্তা জ্ঞাতিকে বললেন, “আমাদের ভাই ইলীমেলকের যে জমি ছিল, তা মোয়াব দেশ থেকে আসা নয়মী বিক্রি করছেন।
4 আমি ভাবলাম যে এই বিষয়টি তোমার নজরে আমার আনা উচিত এবং এখানে যাঁরা বসে আছেন ও আমার স্বজাতীয় প্রাচীনদের সামনে আমি এই জমিটি মুক্ত করার প্রস্তাব রাখছি। যদি তুমি সেই জমিটি মুক্ত করতে চাও, মুক্ত করতে পারো। কিন্তু যদি না করতে চাও, আমাকে বলো, যেন আমি তা জানতে পারি। কারণ সেই জমিটি মুক্ত করার প্রথম অধিকার তোমার ছাড়া আর কারোর নেই এবং তারপর সেই অধিকার আছে আমার।” সেই মুক্তিকর্তা জ্ঞাতি বললেন, “আমি এটি মুক্ত করব।”
৪অতএব আমি তোমাকে এই কথা জানাতে স্থির করেছি; তুমি এই লোকদের সামনে ও আমার নিজের জাতের প্রাচীনবর্গের সামনে তা কিনে নাও। যদি তুমি মুক্ত করতে চাও, মুক্ত কর; কিন্তু যদি মুক্ত করতে না চাও, আমাকে বল, আমি জানতে চাই; কারণ তুমি মুক্ত করলে আর কেউ করতে পারে না; কিন্তু তোমার পরে আমি পারি।” সে বলল, “আমি মুক্ত করব।”
5 তারপর বোয়স বললেন, “যেদিন তুমি নয়মী ও রূতের কাছ থেকে সেই জমি কিনবে, সেদিন তাদের মরা লোকের সম্পত্তির সঙ্গে মরা লোকটির নাম উদ্ধার করার জন্য তার বিধবা মোয়াবীয় মহিলা রূতকে নিজের স্ত্রীরূপে গ্রহণ করতে হবে।”
৫তখন বোয়স বললেন, “তুমি যে দিনের নয়মীর হাত থেকে জমি কিনবে, সেই দিনের মৃত ব্যক্তির অধিকারে তার নাম উদ্ধারের জন্য তার স্ত্রী মোয়াবীয়া রূত থেকেও তা কিনতে হবে।”
6 তখন সেই মুক্তিকর্তা জ্ঞাতি বললেন, “আমি মুক্ত করতে পারব না, কারণ পরে এমন হলে আমি আমার নিজের সম্পত্তিও হারাব। তুমি নিজেই এই সম্পত্তি মুক্ত করো। আমি করতে পারব না।”
৬তখন ঐ মুক্তিদাতা জ্ঞাতি বলল, “আমি আপনার জন্য তা মুক্ত করতে পারি না, করলে নিজের অধিকার নষ্ট করবে; আমার মুক্ত করবার বস্তু তুমি মুক্ত কর, কারণ আমি মুক্ত করতে পারিনা।
7 (প্রাচীনকালে ইস্রায়েল জাতির মধ্যে সম্পত্তি মুক্ত করার ও তার মালিকানা হস্তান্তর করে তা চূড়ান্ত করার জন্য এক পক্ষ তার পায়ের চটি খুলে তা অন্য পক্ষকে দিয়ে দিত। ইস্রায়েলে এই প্রথা বিনিময়ের ক্ষেত্রে বৈধতা পেত।)
৭মুক্তি ও বিনিময় বিষয়ের সব কথা স্থির করবার জন্য আগে ইস্রায়েলের মধ্যে এইরকম রীতি ছিল; লোকে নিজের জুতো খুলে প্রতিবেশীকে দিত; এটা ইস্রায়েলের মধ্যে সাক্ষ্যস্বরূপ হত।”
8 তাই সেই মুক্তিকর্তা জ্ঞাতি বোয়সকে বললেন, “তুমিই কিনে নাও।” আর তিনি নিজের চটি খুলে ফেললেন।
৮অতএব সে মুক্তিদাতা জ্ঞাতি যখন বোয়সকে বলল, “তুমি নিজে তা কেনো, তখন সে নিজের জুতো খুলে দিল।”
9 তখন বোয়স, যারা সেখানে বসেছিল সেই লোকদের ও প্রাচীনদের উদ্দেশে ঘোষণা করে বললেন, “আজ আমি আপনাদের সকলকে সাক্ষী রেখে ইলীমেলক, কিলিয়োন এবং মহলোনের সমস্ত সম্পত্তি নয়মীর কাছ থেকে কিনে নিলাম।
৯পরে বোয়স প্রাচীনদেরকে ও সকল লোককে বললেন, “আজ আপনার সাক্ষী হলেন, ইলীমেলকের যা যা ছিল এবং কিলিয়োনের ও মহলোনের যা যা ছিল, সে সমস্তই আমি নয়মীর হাত থেকে কিনলাম।
10 আর আমি মহলোনের স্ত্রী মোয়াবীয় রূতকে নিজের স্ত্রীরূপে সেই মৃত ব্যক্তির নাম রক্ষা করার জন্য গ্রহণ করলাম, যেন সেই ব্যক্তির নাম নগরের পারিবারিক নামের তালিকা থেকে বাদ না যায়। আজ আপনারা তার সাক্ষী হলেন!”
১০আর নিজের ভাইদের মধ্যে ও নিজের বাসস্থানের দ্বারে সেই মৃত ব্যক্তির নাম যেন উছিন্ন না হয়, এই জন্য সেই মৃত ব্যক্তির অধিকারে তার নাম উদ্ধারের জন্য আমি নিজের স্ত্রীরূপে মহলোনের স্ত্রী মোয়াবীয়া রূতকেও কিনলাম; আজ আপনারা সাক্ষী হলেন।”
11 নগরের ফটকের কাছে যত লোক ছিল এবং প্রাচীনেরা সবাই বললেন, “আমরা এর সাক্ষী রইলাম। যে মহিলা তোমার ঘরে আসছে তাকে সদাপ্রভু রাহেল ও লেয়ার মতো তৈরি করুন, যাঁরা দুজন ইস্রায়েল পরিবারকে তৈরি করেছিলেন। ইফ্রাথায় তুমি ধনবান হও এবং বেথলেহেমে তোমার নাম বিখ্যাত হোক।
১১তাতে দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা সমস্ত লোক ও প্রাচীনরা বললেন, “আমরা সাক্ষী হলাম। যে স্ত্রী তোমার কুলে এসেছে, সদাপ্রভু তাকে রাহেল ও লেয়ার মতো করুন, যে দুই জন (অর্থাৎ রাহেল ও লেয়ার মতো) (সদাপ্রভু যাকোবের মাধ্যমে বহু সন্তান দিয়েছেন) ইস্রায়েলের বংশ তৈরী করেছিলেন; আর ইফ্রাথায় তোমারই ঐশ্বর্য্য ও বৈৎলেহমে তোমার সুখ্যাতি হোক।
12 এই যুবতী মহিলার মাধ্যমে সদাপ্রভু তোমাকে যে সন্তানদের দেন, তারা যেন যিহূদা ও তামরের পুত্র পেরসের মতো হয়।”
১২সদাপ্রভু সেই যুবতীর গর্ভ থেকে যে ছেলে তোমাকে দেবেন, তা দিয়ে তামরের গর্ভজাত যিহূদার ছেলে পেরসের বংশের মতো তোমার বংশ হোক।”
13 তাই বোয়স রূতকে গ্রহণ করলেন এবং সে তাঁর স্ত্রী হল। এরপর বোয়স তার কাছে গেলে, সদাপ্রভু রূতকে গর্ভধারণ করার শক্তি দিলেন এবং সে এক ছেলের জন্ম দিল।
১৩পরে বোয়স রূতকে বিয়ে করলে তিনি তাঁর স্ত্রী হলেন এবং বোয়স তাঁর কাছে গেলে তিনি সদাপ্রভু থেকে গর্ভধারণশক্তি পেয়ে ছেলে প্রসব করলেন।
14 সেই দেশের মহিলারা নয়মীকে বলল, “সদাপ্রভুর প্রশংসা হোক, কারণ তিনি তোমাকে মুক্তিকর্তা জ্ঞাতি থেকে আলাদা করেননি। সমগ্র ইস্রায়েল জাতির মধ্যে সে বিখ্যাত হোক!
১৪পরে স্ত্রীলোকেরা নয়মীকে বলল, “ধন্য সদাপ্রভু, তিনি আজ তোমাকে মুক্তিদাতা জ্ঞাতি থেকে বঞ্চিত করেননি; তাঁর নাম ইস্রায়েলের মধ্যে বিখ্যাত হোক।
15 এই পুত্র তোমার জীবন আবার নতুন করে দিক এবং বৃদ্ধাবস্থায় তোমার যত্ন করুক। কারণ তুমি যাকে সাত ছেলের থেকেও বেশি ভালোবাসো সেই এর জন্ম দিয়েছে।”
১৫[এই বালকটি] তোমার প্রাণ উদ্ধার করবে ও বৃদ্ধাবস্থায় তোমার রক্ষণাবেক্ষণকারী হবে; কারণ যে তোমাকে ভালবাসে ও তোমার পক্ষে সাত ছেলে থেকেও সেরা, তোমার সেই ছেলের স্ত্রীই একে জন্ম দিয়েছে।”
16 এরপর নয়মী ছেলেটিকে বুকে জড়িয়ে ধরল এবং তার যত্ন নিল।
১৬তখন নয়মী বালকটিকে নিয়ে নিজের কোলে রাখল ও তার অভিভাবক হল।
17 সেখানে বসবাসকারী মহিলারা বলল, “নয়মীর এক ছেলে জন্মেছে!” এই বলে তারা সেই ছেলেটির নাম রাখল ওবেদ। ইনি যিশয়ের বাবা, যিনি দাউদের বাবা।
১৭পরে নয়মীর এক ছেলে জন্মাল, এই বলে তার প্রতিবাসীরা তার নাম রাখল; তারা তার নাম ওবেদ রাখল। সে যিশয়ের বাবা, আর যিশয় দায়ূদের বাবা।
18 আর এই হল পেরসের পরিবারের সন্তানদের বংশতালিকা: পেরসের ছেলে হিষ্রোণ,
১৮পেরসের বংশাবলী এই।
19 হিষ্রোণের ছেলে রাম, রামের ছেলে অম্মীনাদব,
১৯পেরসের ছেলে হিষোণ; হিষোণের ছেলে রাম; রামের ছেলে অম্মীনাদব;
20 অম্মীনাদবের ছেলে নহশোন, নহশোনের ছেলে সলমন,
২০অম্মীনাদবের ছেলে নহশোন; নহশোনের ছেলে সল্-মোন;
21 সল্মোনের ছেলে বোয়স, বোয়সের ছেলে ওবেদ,
২১সল্-মোনের ছেলে বোয়স; বোয়সের ছেলে ওবেদ; ওবেদের ছেলে যিশয়;
22 ওবেদের ছেলে যিশয়, এবং যিশয়ের ছেলে দাউদ।
২২ও যিশয়ের ছেলে দায়ূদ এবং যিশয় দায়ূদের বাবা হল।