< মথি 6 >
1 “সতর্ক থেকো তোমরা যেন প্রকাশ্যে কোনো লোক-দেখানো ধর্মকর্ম না করো। যদি করো, তাহলে তোমরা তোমাদের স্বর্গস্থ পিতার কাছ থেকে কোনো পুরস্কারই পাবে না।
2 “তাই তোমরা যখন কোনো দরিদ্র মানুষকে দান করো, তখন ভণ্ডেরা যেমন সমাজভবনগুলিতে বা পথে পথে মানুষদের কাছে প্রশংসা পাওয়ার জন্য তূরী বাজিয়ে ঘোষণা করে, তোমরা তেমন কোরো না। আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তারা তাদের পুরস্কার পেয়ে গেছে।
3 কিন্তু যখন তুমি দরিদ্রদের দান করো, তোমার ডান হাত কী করছে, তা যেন তোমার বাঁ হাত জানতে না পায়, যেন তোমার দান গোপনে হয়।
4 তাহলে তোমার পিতা, যিনি গোপনে সবকিছু দেখেন, তিনি তোমাকে পুরস্কার দেবেন।
5 “আর তোমরা যখন প্রার্থনা করো, তখন ভণ্ডদের মতো কোরো না, কারণ তারা সমাজভবনগুলিতে বা পথের কোণে কোণে দাঁড়িয়ে লোক-দেখানো প্রার্থনা করতে ভালোবাসে। আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, তারা তাদের পুরস্কার পেয়ে গেছে।
6 কিন্তু তুমি যখন প্রার্থনা করো তখন ঘরে যাও, দরজা বন্ধ করো ও তোমার পিতা যিনি অদৃশ্য হলেও উপস্থিত—তাঁর কাছে প্রার্থনা করো। এতে তোমার পিতা, যিনি গোপনে সবকিছু দেখেন, তিনি তোমাকে পুরস্কৃত করবেন।
7 আর তুমি প্রার্থনা করার সময় পরজাতীয়দের মতো অর্থহীন পুনরাবৃত্তি কোরো না, কারণ তারা মনে করে, বাগবাহুল্যের জন্যই তারা প্রার্থনার উত্তর পাবে।
8 তাদের মতো হোয়ো না, কারণ তোমাদের কী প্রয়োজন তা চাওয়ার পূর্বেই তোমাদের পিতা জানেন।
9 “অতএব, তোমরা এভাবে প্রার্থনা কোরো: “‘হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতা, তোমার নাম পবিত্র বলে মান্য হোক,
10 তোমার রাজ্য আসুক, তোমার ইচ্ছা যেমন স্বর্গে, তেমন পৃথিবীতেও পূর্ণ হোক।
11 আমাদের দৈনিক আহার আজ আমাদের দাও।
12 আমরা যেমন আমাদের বিরুদ্ধে অপরাধীদের ক্ষমা করেছি, তেমন তুমিও আমাদের অপরাধসকল ক্ষমা করো।
13 আর আমাদের প্রলোভনে পড়তে দিয়ো না, কিন্তু সেই পাপাত্মা থেকে রক্ষা করো।’
14 কারণ তোমরা যদি লোকের অপরাধ ক্ষমা করো, তোমাদের স্বর্গস্থ পিতাও তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করবেন।
15 কিন্তু তোমরা যদি লোকের অপরাধ ক্ষমা না করো, তোমাদের পিতাও তোমাদের অপরাধসকল ক্ষমা করবেন না।
16 “তোমরা যখন উপোস করো, তখন ভণ্ডদের মতো নিজেদের গুরুগম্ভীর দেখিয়ো না, কারণ তারা নিজেদের মুখমণ্ডল মলিন করে লোকদের দেখায় যে তারা উপোস করছে। আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তারা তাদের পুরস্কার পেয়ে গেছে।
17 কিন্তু তুমি যখন উপোস করো, তোমার মাথায় তেল দিয়ো ও মুখ ধুয়ো,
18 ফলে তুমি যে উপোস করছ, তা যেন লোকদের কাছে স্পষ্ট না হয়, কেবলমাত্র তোমার পিতার কাছেই স্পষ্ট হয় যিনি অদৃশ্য। এতে তোমার পিতা, যিনি গোপনে সব দেখেন, তিনি তোমাকে পুরস্কৃত করবেন।
19 “তোমরা নিজেদের জন্য পৃথিবীতে ধন সঞ্চয় কোরো না। এখানে কীটপতঙ্গ ও মরচে তা নষ্ট করে এবং চোর সিঁধ কেটে চুরি করে।
20 কিন্তু নিজেদের জন্য স্বর্গে ধন সঞ্চয় করো, যেখানে কীটপতঙ্গ ও মরচে তা নষ্ট করতে পারে না এবং চোরেও সিঁধ কেটে চুরি করতে পারে না।
21 কারণ যেখানে তোমাদের ধন থাকবে, সেখানেই তোমাদের মন পড়ে থাকবে।
22 “চোখ শরীরের প্রদীপ। তোমার দুই চোখ যদি নির্মল হয়, তাহলে তোমার সমস্ত শরীর আলোময় হয়ে উঠবে।
23 কিন্তু তোমার চোখ যদি মন্দ হয়, তোমার সমস্ত শরীর অন্ধকারে ছেয়ে যাবে। তোমার ভিতরের আলো যদি অন্ধকারময় হয়ে ওঠে, তবে সেই অন্ধকার কতই না ভয়ংকর!
24 “কেউই দুজন মনিবের সেবা করতে পারে না। সে হয় একজনকে ঘৃণা করে অপরজনকে ভালোবাসবে, নয়তো সে একজনের অনুগত হয়ে অপরজনকে অবজ্ঞা করবে। তোমরা ঈশ্বর ও অর্থ, এই দুয়ের সেবা করতে পারো না।
25 “এই কারণে আমি তোমাদের বলছি, তোমাদের জীবনের বিষয়ে দুশ্চিন্তা কোরো না, তোমরা কী খাবে বা পান করবে; বা শরীরের বিষয়ে, কী পোশাক পড়বে। খাবারের চেয়ে জীবন কি বড়ো বিষয় নয় এবং পোশাকের চেয়ে শরীর কি বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়?
26 আকাশের পাখিদের দিকে তাকিয়ে দেখো; তারা বীজবপন করে না, ফসল কাটে না, বা গোলায় সঞ্চয়ও করে না; তবুও তোমাদের স্বর্গস্থ পিতা তাদের খাবার জুগিয়ে দেন। তোমরা কি তাদের চেয়েও অনেক বেশি মূল্যবান নও?
27 দুশ্চিন্তা করে তোমাদের কেউ কি নিজের আয়ু এক ঘণ্টাও বৃদ্ধি করতে পারে?
28 “আর পোশাকের বিষয়ে তোমরা কেন দুশ্চিন্তা করো? দেখো, মাঠের লিলি ফুল কীভাবে বিকশিত হয়। তারা পরিশ্রম করে না, সুতোও কাটে না।
29 তবুও আমি তোমাদের বলছি, রাজা শলোমনও তার সমস্ত মহিমায় এদের একটিরও মতো সুশোভিত ছিলেন না।
30 মাঠের যে ঘাস আজ আছে, অথচ আগামীকাল আগুনে নিক্ষিপ্ত করা হবে, ঈশ্বর যদি সেগুলিকে এত সুশোভিত করে থাকেন, তাহলে ওহে অল্পবিশ্বাসীরা, তিনি কি তোমাদের আরও বেশি সুশোভিত করবেন না?
31 সেই কারণে, ‘আমরা কী খাব?’ বা ‘আমরা কী পান করব?’ বা ‘আমরা কী পরব?’ এসব নিয়ে তোমরা দুশ্চিন্তা কোরো না।
32 কারণ পরজাতীয়রাই এই সমস্ত বিষয়ে ব্যতিব্যস্ত হয়ে থাকে, অথচ তোমাদের স্বর্গস্থ পিতা জানেন যে এগুলো তোমাদের প্রয়োজন।
33 কিন্তু তোমরা প্রথমে তাঁর রাজ্য ও ধার্মিকতার অন্বেষণ করো, তাহলে এই সমস্ত বিষয়ও তোমাদের দেওয়া হবে।
34 অতএব, কালকের বিষয়ে দুশ্চিন্তা কোরো না, কারণ কাল স্বয়ং নিজের বিষয়ে দুশ্চিন্তা করবে। প্রত্যেকটি দিনের কষ্ট প্রতিটি দিনের জন্য যথেষ্ট।