< মথি 16 >
1 ফরিশী ও সদ্দূকীরা যীশুর কাছে এসে পরীক্ষা করার জন্য তাঁকে বলল যেন তিনি আকাশ থেকে তাদের কোনো চিহ্ন দেখান।
2 তিনি উত্তর দিলেন, “যখন সন্ধ্যা আসে, তোমরা বলো, ‘আবহাওয়া মনোরম হবে, কারণ আকাশ লাল হয়েছে,’ আবার সকালবেলায় বলো,
3 ‘আজ ঝড় হবে, কারণ আকাশ লাল ও মেঘাচ্ছন্ন হয়েছে।’ তোমরা আকাশের অবস্থা দেখে আবহাওয়ার ব্যাখ্যা করতে পারো, কিন্তু সময়ের চিহ্ন ব্যাখ্যা করতে পারো না।
4 এক দুষ্ট ও ব্যভিচারী প্রজন্ম অলৌকিক চিহ্ন খোঁজে কিন্তু যোনার চিহ্ন ছাড়া আর কিছুই তাদের দেওয়া হবে না।” তখন যীশু তাদের ছেড়ে চলে গেলেন।
5 তারা যখন সাগরের অপর পারে গেলেন, শিষ্যেরা রুটি সঙ্গে নিতে ভুলে গিয়েছিলেন।
6 যীশু তাদের বললেন, “সতর্ক হও, ফরিশী ও সদ্দূকীদের খামির থেকে তোমরা সাবধান থেকো।”
7 তারা নিজেদের মধ্যে এ বিষয়ে আলোচনা করে বললেন, “আমরা রুটি আনিনি বলেই তিনি এরকম বলছেন।”
8 তাদের আলোচনা বুঝতে পেরে যীশু জিজ্ঞাসা করলেন, “অল্পবিশ্বাসী তোমরা, রুটি নেই বলে কেন নিজেদের মধ্যে বিতর্ক করছ?
9 তোমরা কি এখনও বুঝতে পারোনি? তোমাদের কি পাঁচটি রুটি ও পাঁচ হাজার মানুষের কথা মনে পড়ে না, তখন কত ঝুড়ি উদ্বৃত্ত তোমরা তুলে নিয়েছিলে?
10 কিংবা সেই সাতটি রুটি ও চার হাজার মানুষ, কত ঝুড়ি তোমরা সংগ্রহ করেছিলে?
11 আমি যে তোমাদের রুটির কথা বলিনি তা তোমরা বুঝতে পারোনি? তোমরা ফরিশী ও সদ্দূকীদের খামির থেকে সাবধান থেকো।”
12 তখন তারা বুঝতে পারলেন যে, তিনি তাদের রুটিতে ব্যবহৃত খামির থেকে সতর্ক থাকতে বলেননি, কিন্তু ফরিশী ও সদ্দূকীদের দেওয়া শিক্ষা থেকে সতর্ক থাকতে বলেছেন।
13 যীশু যখন কৈসরিয়া-ফিলিপী অঞ্চলে এলেন, তিনি তাঁর শিষ্যদের জিজ্ঞাসা করলেন, “মনুষ্যপুত্র কে, এ সম্বন্ধে লোকে কী বলে?”
14 তাঁরা উত্তর দিলেন, “কেউ কেউ বলে আপনি বাপ্তিষ্মদাতা যোহন; অন্যেরা বলে এলিয়; আর কেউ কেউ বলে, যিরমিয় বা ভাববাদীদের মধ্যে কোনও একজন।”
15 “কিন্তু তোমরা কী বলো?” তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কী বলো, আমি কে?”
16 শিমোন পিতর উত্তর দিলেন, “আপনি সেই খ্রীষ্ট, জীবন্ত ঈশ্বরের পুত্র।”
17 যীশু উত্তর দিলেন, “যোনার পুত্র শিমোন ধন্য তুমি, কারণ রক্তমাংসের কোনো মানুষ এ তোমার কাছে প্রকাশ করেনি, কিন্তু আমার স্বর্গস্থ পিতাই প্রকাশ করেছেন।
18 আর আমি তোমাকে বলি, তুমি পিতর, আর আমি এই পাথরের উপরে আমার মণ্ডলী নির্মাণ করব। আর পাতালের দ্বারসকল এর বিপক্ষে জয়ী হতে পারবে না। (Hadēs )
19 আমি তোমাকে স্বর্গরাজ্যের চাবি দেব; তোমরা পৃথিবীতে যা আবদ্ধ করবে তা স্বর্গেও আবদ্ধ হবে এবং পৃথিবীতে যা কিছু মুক্ত করবে তা স্বর্গেও মুক্ত হবে।”
20 তারপর তিনি তাঁর শিষ্যদের সতর্ক করে বলে দিলেন, তিনি যে খ্রীষ্ট একথা তাঁরা যেন কাউকে না বলেন।
21 সেই সময় থেকে যীশু তাঁর শিষ্যদের কাছে স্পষ্টরূপে বলতে লাগলেন যে, তাঁকে অবশ্যই জেরুশালেমে যেতে হবে। সেখানে তাঁকে বিভিন্ন বিষয়ে দুঃখভোগ করতে হবে; প্রাচীনবর্গ, মহাযাজকবৃন্দ ও শাস্ত্রবিদরা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করবে। তাঁকে হত্যা করা হবে এবং তৃতীয় দিনে তাঁর পুনরুত্থান হবে।
22 পিতর তাঁকে এক পাশে নিয়ে গিয়ে অনুযোগ করে বললেন, “প্রভু, তা নয়! এরকম আপনার প্রতি কখনও ঘটবে না!”
23 যীশু ফিরে পিতরকে বললেন, “দূর হও শয়তান! তুমি আমার কাছে এক বাধাস্বরূপ; তোমার মনে ঈশ্বরের বিষয়গুলি নেই কেবল মানুষের বিষয়গুলিই আছে।”
24 তারপর যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, “কেউ যদি আমাকে অনুসরণ করতে চায়, সে অবশ্যই নিজেকে অস্বীকার করবে, তার ক্রুশ তুলে নেবে ও আমাকে অনুসরণ করবে।
25 কারণ যে কেউ তার প্রাণরক্ষা করতে চায় সে তা হারাবে, কিন্তু কেউ যদি আমার কারণে তার প্রাণ হারায় সে তা লাভ করবে।
26 কেউ যদি সমস্ত জগতের অধিকার লাভ করে ও তার নিজের প্রাণ হারায়, তাহলে তার কী লাভ হবে? কিংবা কোনো মানুষ তার প্রাণের বিনিময়ে আর কী দিতে পারে?
27 কারণ মনুষ্যপুত্র তাঁর দূতদের সঙ্গে নিয়ে নিজ পিতার মহিমায় ফিরে আসবেন, তখন তিনি প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার কাজ অনুসারে ফল দেবেন।
28 “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যারা এখানে দাঁড়িয়ে আছে, তাদের মধ্যে কেউ কেউ, যতদিন না মনুষ্যপুত্রকে তাঁর রাজ্যে আসতে দেখবে ততদিন পর্যন্ত মৃত্যুর আস্বাদ পাবে না।”