< মার্ক 2 >
1 কয়েক দিন পরে যীশু যখন আবার কফরনাহূমে প্রবেশ করলেন, তখন সেখানকার লোকজনেরা জানতে পারল যে, তিনি বাড়িতে এসেছেন।
2 ফলে সেই বাড়িতে অসংখ্য লোক জড়ো হল; এমনকি, দরজার বাইরেও তিল ধারণের স্থান রইল না। যীশু তাদের কাছে ঈশ্বরের বাণী প্রচার করলেন।
3 সেই সময় একদল লোক চারজন বাহকের সাহায্যে এক পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তিকে যীশুর কাছে নিয়ে আসতে চাইছিল।
4 কিন্তু ভিড়ের জন্য তারা কিছুতেই যীশুর কাছে পৌঁছাতে পারছিল না; ফলে, যীশুর ঠিক মাথার উপরের ছাদ খুলে তারা পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তিকে খাটে শুইয়ে ঘরের মধ্যে নামিয়ে দিল।
5 তাদের এই ধরনের বিশ্বাস দেখে যীশু পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তিকে বললেন, “বৎস, তোমার সব পাপ ক্ষমা করা হল।”
6 সেখানে কয়েকজন শাস্ত্রবিদ বসেছিল। তারা মনে মনে ভাবল,
7 “লোকটা এভাবে কথা বলছে কেন? এ তো ঈশ্বরনিন্দা! কেবলমাত্র ঈশ্বর ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করতে পারে?”
8 তাদের মনের এই কথা যীশু তক্ষুনি তাঁর অন্তরে বুঝতে পেরে তাদের বললেন, “তোমরা এসব কথা চিন্তা করছ কেন?
9 পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগীকে কোন কথাটি বলা সহজ, ‘তোমার পাপ ক্ষমা করা হল’ বলা, নাকি ‘ওঠো, তোমার বিছানা তুলে নিয়ে ঘরে চলে যাও’ বলা?
10 কিন্তু আমি চাই যেন তোমরা জানতে পারো যে পৃথিবীতে পাপ ক্ষমা করার অধিকার মনুষ্যপুত্রের আছে” এই বলে তিনি সেই পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তিকে বললেন,
11 “ওঠো, তোমার খাট তুলে বাড়ি চলে যাও।”
12 লোকটি সঙ্গে সঙ্গে উঠে তার খাট তুলে নিয়ে সকলের চোখের সামনে দিয়ে ঘরের বাইরে হেঁটে চলে গেল। এই দৃশ্য দেখে সবাই বিস্ময়ে অভিভূত হল এবং তারা ঈশ্বরের প্রশংসা করে বলতে লাগল, “এরকম ঘটনা আমরা কখনও দেখিনি।”
13 যীশু আবার গালীল সাগরের তীরে চলে গেলেন। সেখানে অনেক লোক তাঁর কাছে এসে উপস্থিত হল এবং তিনি তাদের শিক্ষা দিতে লাগলেন।
14 এরপর সেখান থেকে ফেরার পথে যীশু দেখলেন, আলফেয়ের পুত্র লেবি কর আদায়ের চালাঘরে বসে আছেন। যীশু তাঁকে বললেন, “আমাকে অনুসরণ করো।” লেবি তখনই উঠে পড়লেন ও তাঁকে অনুসরণ করতে লাগলেন।
15 লেবির বাড়িতে যীশু যখন রাতের খাওয়া খেতে বসেছিলেন, তখন বহু কর আদায়কারী ও পাপী মানুষ এসে যীশু ও তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে খেতে বসল। কারণ তাদের মধ্যে অনেকেই যীশুর অনুগামী ছিল।
16 পাপী ও কর আদায়কারীদের সঙ্গে ওইভাবে পাশাপাশি বসে যীশুকে খাওয়াদাওয়া করতে দেখে, কয়েকজন শাস্ত্রবিদ ফরিশী যীশুর শিষ্যদের জিজ্ঞাসা করল, “তিনি এইসব কর আদায়কারী ও পাপীদের সঙ্গে বসে কেন খাওয়াদাওয়া করেন?”
17 একথা শুনে যীশু তাদের বললেন, “পীড়িত ব্যক্তিরই চিকিৎসকের প্রয়োজন, সুস্থ ব্যক্তির নয়। আমি ধার্মিকদের নয়, কিন্তু পাপীদের আহ্বান করতে এসেছি।”
18 একদিন বাপ্তিষ্মদাতা যোহনের শিষ্যেরা ও ফরিশীরা উপোস করছিল। তখন কয়েকজন ব্যক্তি এসে জিজ্ঞাসা করল, “যোহন আর ফরিশীদের শিষ্যেরা উপোস করে, কিন্তু আপনার শিষ্যেরা করে না, এ কেমন কথা?”
19 যীশু উত্তর দিলেন, “বর সঙ্গে থাকতে তার অতিথিরা কীভাবে উপোস করতে পারে? যতদিন বর তাদের সঙ্গে থাকবে ততদিন তারা তা করতে পারবে না।
20 কিন্তু সময় আসবে, যেদিন বরকে তাদের মধ্য থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে; এবং সেদিনই তারা উপোস করবে।
21 “পুরোনো পোশাকে কেউ নতুন কাপড়ের তালি লাগায় না। তা করলে নতুন কাপড়ের টুকরোটি পুরোনো পোশাক থেকে ছিঁড়ে বেরিয়ে আসবে ও সেই ছিদ্র আরও বড়ো হয়ে উঠবে।
22 তেমনই পুরোনো চামড়ার সুরাধারে কেউ নতুন সুরা রাখে না। তা করলে সুরাধারের চামড়া ফেটে যাবে। তাতে সুরা এবং সুরাধার দুটিই নষ্ট হবে—তাই নতুন সুরা নতুন সুরাধারেই রাখতে হবে।”
23 এক বিশ্রামদিনে যীশু শস্যক্ষেত্রের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই সময় তাঁর শিষ্যেরা শস্যের শিষ ছিঁড়তে লাগলেন।
24 তা দেখে ফরিশীরা যীশুকে বলল, “আচ্ছা, বিশ্রামদিনে যা করা বিধিসংগত নয়, তা আপনার শিষ্যেরা করছে কেন?”
25 তিনি উত্তর দিলেন, “যখন দাউদ ও তাঁর সঙ্গীরা ক্ষুধার্ত ছিলেন, তখন খাদ্যের প্রয়োজনে তাঁরা কী করেছিলেন, তা কি তোমরা কখনও পাঠ করোনি?
26 মহাযাজক অবিয়াথরের সময়ে তিনি ঈশ্বরের গৃহে প্রবেশ করেছিলেন এবং সেই পবিত্র রুটি খেয়েছিলেন যা করা একমাত্র যাজকদের পক্ষেই বিধিসংগত ছিল। এমনকি তিনি তাঁর সঙ্গীদেরও দিয়েছিলেন।”
27 তারপর তিনি তাদের বললেন, “বিশ্রামদিন সৃষ্ট হয়েছে মানুষের জন্য, মানুষ বিশ্রামদিনের জন্য সৃষ্ট হয়নি।
28 অতএব, মনুষ্যপুত্রই হলেন বিশ্রামদিনের প্রভু।”