< বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ 1 >
1 যিহোশূয়ের মৃত্যুর পর ইস্রায়েলীরা সদাপ্রভুকে জিজ্ঞাসা করল, “কনানীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমাদের মধ্যে থেকে কোন গোষ্ঠী প্রথমে যাবে?”
2 সদাপ্রভু উত্তর দিলেন, “যিহূদা গোষ্ঠী যাবে; আমি তাদেরই হাতে এই দেশটি সমর্পণ করেছি।”
3 তখন যিহূদা গোষ্ঠীর লোকেরা তাদের সহ-ইস্রায়েলী শিমিয়োনীয়দের বলল, “কনানীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমাদের সাথে আমাদের জন্য বরাদ্দ অঞ্চলে এসো। পরে আমরাও তোমাদের সঙ্গে তোমাদের জন্য নির্দিষ্ট অঞ্চলে যাব।” সুতরাং শিমিয়োন গোষ্ঠীর লোকেরাও তাদের সঙ্গে গেল।
4 যিহূদা গোষ্ঠীর লোকেরা যখন আক্রমণ করল, সদাপ্রভু তাদের হাতে কনানীয় ও পরিষীয়দের সমর্পণ করলেন, এবং তারা বেষকে 10,000 লোককে হত্যা করল।
5 সেখানে তারা অদোনী-বেষকের সন্ধান পেল ও তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করল এবং কনানীয় ও পরিষীয়দের ছত্রভঙ্গ করে দিল।
6 অদোনী-বেষক পালিয়ে গেলেন; কিন্তু তারা তাড়া করে তাঁকে ধরে ফেলল এবং তাঁর হাত-পায়ের বুড়ো আঙুল কেটে দিল।
7 তখন অদোনী-বেষক বললেন, “হাত-পায়ের বুড়ো আঙুল কাটা সত্তরজন রাজা আমার টেবিলের নিচে পড়ে থাকা এঁটোকাটা কুড়িয়ে খেতেন। আমি তাঁদের প্রতি যা করেছিলাম, ঈশ্বর আমাকে তার উপযুক্ত প্রতিফল দিয়েছেন।” যিহূদা গোষ্ঠীর লোকেরা তাঁকে জেরুশালেম নিয়ে এল এবং সেখানেই তিনি মারা গেলেন।
8 তারা জেরুশালেমও আক্রমণ করল এবং নগরটি অধিকার করল। তারা নগরের অধিবাসীদের তরোয়াল দ্বারা হত্যা করল এবং নগরটিতে আগুন ধরিয়ে দিল।
9 তারপর, যিহূদা গোষ্ঠীর লোকেরা পাহাড়ি অঞ্চলে, নেগেভে এবং পশ্চিমী পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী কনানীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে নেমে গেল।
10 তারা হিব্রোণ নিবাসী কনানীয়দের বিরুদ্ধেও অগ্রসর হল এবং শেশয়, অহীমান ও তল্ময়কে পরাজিত করল। (হিব্রোণের পূর্বতন নাম ছিল কিরিয়ৎ-অর্ব)
11 সেখান থেকে তারা দবীরে বসবাসকারী লোকদের বিরুদ্ধে অগ্রসর হল (দবীরের পূর্বতন নাম ছিল কিরিয়ৎ-সেফর)।
12 আর কালেব বললেন, “যে ব্যক্তি কিরিয়ৎ-সেফর আক্রমণ করে তা নিয়ন্ত্রণে আনবে, আমি তার সঙ্গে আমার মেয়ে অক্ষার বিয়ে দেব।”
13 কালেবের ছোটো ভাই, কনসের ছেলে অৎনীয়েল সেটি দখল করলেন; অতএব কালেব তাঁর মেয়ে অক্ষার সঙ্গে অৎনীয়েলের বিয়ে দিলেন।
14 একদিন অক্ষা অৎনীয়েলের কাছে এসে তাঁকে প্ররোচিত করলেন যেন তিনি তাঁর বাবার কাছে একটি ক্ষেতজমি চেয়ে নেন। অক্ষা তাঁর গাধার পিঠ থেকে নামার পর, কালেব তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি তোমার জন্য কী করতে পারি?”
15 তিনি উত্তর দিলেন, “আমার প্রতি বিশেষ এক অনুগ্রহ দেখান। আপনি যেহেতু নেগেভে আমাকে জমি দিয়েছেন, জলের উৎসগুলিও আমাকে দিন।” অতএব কালেব উচ্চতর ও নিম্নতর জলের উৎসগুলি তাঁকে দিলেন।
16 মোশির শ্বশুরমশাই-এর বংশধরেরা, অর্থাৎ কেনীয়েরা যিহূদা গোষ্ঠীর লোকদের সঙ্গে খর্জুরপুর থেকে অরাদের নিকটবর্তী নেগেভে, যিহূদার মরুভূমি নিবাসী লোকদের মধ্যে বসবাস করার জন্য চলে গেল।
17 তখন যিহূদা গোষ্ঠীর লোকেরা তাদের সহ-ইস্রায়েলী আত্মীয় শিমিয়োন গোষ্ঠীর লোকদের সঙ্গে গিয়ে সফাৎ নিবাসী কনানীয়দের আক্রমণ করল এবং নগরটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিল। এজন্য নগরটির নাম হল হর্মা।
18 যিহূদা গাজা, অস্কিলোন ও ইক্রোণ—প্রত্যেকটি নগর এবং সেগুলির সন্নিহিত অঞ্চলগুলিও অধিকার করল।
19 সদাপ্রভু যিহূদা গোষ্ঠীর লোকদের সহায় ছিলেন। তারা পার্বত্য অঞ্চলটি অধিকার করে নিল, কিন্তু সমভূমির অধিবাসীদের তারা বিতাড়িত করতে পারল না, কারণ তাদের কাছে লৌহরথ ছিল।
20 মোশির প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী হিব্রোণ কালেবকে দেওয়া হল। তিনি সেখান থেকে অনাকের তিন ছেলেকে বিতাড়িত করলেন।
21 বিন্যামীনীয়েরা অবশ্য জেরুশালেম নিবাসী সেই যিবূষীয়দের বিতাড়িত করেনি, যারা জেরুশালেমে বসবাস করত; আজও পর্যন্ত সেই যিবূষীয়েরা বিন্যামিনীয়দের সঙ্গে সেখানে বসবাস করছে।
22 এবার যোষেফ গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা বেথেল আক্রমণ করল, এবং সদাপ্রভু তাদের সহবর্তী ছিলেন।
23 তারা যখন বেথেলে (সেই নগরের পূর্বতন নাম লূস) গুপ্তচরবৃত্তি করার জন্য লোক পাঠাল,
24 গুপ্তচরেরা একটি লোককে নগর থেকে বেরিয়ে আসতে দেখে তাকে বলল, “এই নগরে প্রবেশ করার পথ আমাদের দেখিয়ে দাও ও আমরা দেখব যেন তোমার প্রতি সদয় ব্যবহার করা হয়।”
25 তাই সে তাদের তা দেখিয়ে দিল এবং তারা নগরে প্রবেশ করে তরোয়াল দ্বারা নগরবাসীদের হত্যা করল কিন্তু সেই লোকটিকে ও তার সমগ্র পরিবারকে অব্যাহতি দিল।
26 লোকটি পরে হিত্তীয়দের দেশে গিয়ে সেখানে একটি নগর পত্তন করল এবং তার নাম দিল লূস, যা আজও এই নামেই পরিচিত।
27 কিন্তু মনঃশি গোষ্ঠীর লোকেরা বেথ-শান বা তানক বা দোর বা যিব্লিয়ম বা মগিদ্দো প্রভৃতি নগর-নিবাসী ও সেগুলির সন্নিহিত অঞ্চল-নিবাসী লোকজনকে বিতাড়িত করেনি, কারণ কনানীয়েরা সেদেশেই বসবাস করতে দৃঢ়সংকল্প হয়েছিল।
28 ইস্রায়েল যখন শক্তিশালী হয়ে উঠল, তখন কনানীয়দের সম্পূর্ণরূপে বিতাড়িত করার পরিবর্তে তারা জোর করে তাদের বেগার শ্রমিকে পরিণত করল।
29 ইফ্রয়িম গোষ্ঠীর লোকেরাও গেষর নিবাসী কনানীয়দের বিতাড়িত করল না, কিন্তু কনানীয়েরা গেষরে তাদের মধ্যেই বসবাস করতে থাকল।
30 সবূলূন গোষ্ঠীর লোকেরাও কিট্রোণ ও নহলাল নিবাসী কনানীয়দের বিতাড়িত করল না, তাই সেই কনানীয়রা তাদের মধ্যেই বসবাস করল, কিন্তু সবূলূন তাদেরও জোর করে বেগার শ্রমিকে পরিণত করল।
31 আশের গোষ্ঠীর লোকেরাও অক্কো বা সীদোন বা অহলব বা অক্ষীব বা হেল্বা বা অফীক বা রহোব নিবাসী লোকজনকে বিতাড়িত করল না।
32 আশেরীয়রা সেই দেশের অধিবাসী কনানীয়দের মধ্যেই বসবাস করতে থাকল কারণ তারা কনানীয়দের বিতাড়িত করেনি।
33 নপ্তালি গোষ্ঠীর লোকেরাও বেত-শেমশ বা বেথ-অনাৎ নিবাসী লোকজনকে বিতাড়িত করল না; কিন্তু নপ্তালীয়েরা সেদেশের অধিবাসী কনানীয়দের মধ্যেই বসবাস করতে থাকল, এবং বেত-শেমশ ও বেথ-অনাৎ নিবাসী লোকজন তাদের জন্য বেগার শ্রমিকে পরিণত হল।
34 ইমোরীয়রা দান বংশীয় লোকজনকে পার্বত্য অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ করে রাখল, তাদের সমভূমিতে নেমে আসতে দিল না।
35 আর ইমোরীয়রা হেরস পর্বতে, অয়ালোনে ও শাল্বীমে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হল, কিন্তু যোষেফ-গোষ্ঠীর যখন শক্তিবৃদ্ধি হল, তখন ইমোরীয়দেরও জোর করে বেগার শ্রমিকে পরিণত করা হল।
36 ইমোরীয়দের সীমানা বিস্তৃত হল বৃশ্চিক-গিরিপথ থেকে সেলা ও তা অতিক্রম করে আরও বহুদূর পর্যন্ত।