< বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ 5 >
1 সেদিন দবোরা এবং অবীনোয়মের ছেলে বারক এই গানটি গাইলেন:
১সেদিন দবোরা ও অবীনোয়মের পুত্র বারক এই গান করলেন।
2 “ইস্রায়েলের নেতারা যখন নেতৃত্বভার হাতে নিলেন, প্রজারা যখন স্বেচ্ছায় নিজেদের উৎসর্গ করল— সদাপ্রভুর প্রশংসা করো!
২ইস্রায়েললে নেতারা নেতৃত্ব দিলেন, প্রজারা নিজের ইচ্ছায় নিজেদেরকে উত্সর্গ করল, এজন্য তোমরা সদাপ্রভুর ধন্যবাদ কর।
3 “হে রাজারা, একথা শোনো! হে শাসকেরা, কর্ণপাত করো! আমি, আমিই সদাপ্রভুর উদ্দেশে গান গাইব; গানে গানে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রশংসা করব।
৩রাজারা শোনো; শাসকরা মনোযোগ দাও; আমি, আমিই সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে গান করব, ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে গান করব।
4 “হে সদাপ্রভু, তুমি যখন সেয়ীর থেকে চলে গেলে, ইদোমের দেশ থেকে কুচকাওয়াজ করলে, পৃথিবী কম্পিত হল, আকাশমণ্ডলও বর্ষণ করল, মেঘমালা জলধারা ঢেলে দিল।
৪হে সদাপ্রভু, তুমি যখন সেয়ীর থেকে চলে গেলে, ইদোম-ক্ষেত্র থেকে এগিয়ে গেলে, ভূমি কেঁপে উঠল, আকাশও বর্ষণ করল, মেঘমালা জল বর্ষণ করল।
5 পর্বতগুলি সীনয়ের সেই সদাপ্রভুর সামনে কম্পিত হল, ইস্রায়েলের ঈশ্বর সেই সদাপ্রভুর সামনেই হল।
৫সদাপ্রভুর সামনে পর্বতেরা কম্পমান হল, ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে ঐ সীনয় কম্পমান হল।
6 “অনাতের পুত্র শম্গরের সময়ে, রাজপথগুলি যায়েলের সময়ে পরিত্যক্ত হল; ভ্রমণকারীরা ঘুরপথে যেত।
৬অনাতের পুত্র শম্গরের দিনের, যায়েলের দিনের, রাজপথ শূন্য হল, পথিকেরা অন্য পথ দিয়ে যেত।
7 ইস্রায়েলের গ্রামবাসীরা যুদ্ধ করতে চায়নি; তারা ক্ষান্ত ছিল, যতদিন না আমি, দবোরা উঠে দাঁড়ালাম, যতদিন না আমি, ইস্রায়েলের এক মাতৃস্থানীয়া উঠে দাঁড়ালাম।
৭নায়করা ইস্রায়েলের মধ্যে থেমে ছিল, শেষে আমি দবোরা উঠলাম, ইস্রায়েলের মধ্যে মাতৃস্থানীয় হয়ে উঠলাম।
8 ঈশ্বর নতুন নেতৃবৃন্দ মনোনীত করলেন যুদ্ধ যখন নগর-প্রবেশদ্বারে ঘনিয়ে এল, কিন্তু একটিও ঢাল অথবা বর্শা দেখা গেল না, ইস্রায়েলে হাজার চল্লিশ সেই সেনানীর হাতে।
৮তারা নূতন দেবতা মনোনীত করেছিল; সেই দিনের নগরের দরজার কাছে যুদ্ধ হল; ইস্রায়েলের চল্লিশ হাজার লোকের মধ্যে কি একটা ঢাল বা বর্শা দেখা গেল না?
9 আমার হৃদয় ইস্রায়েলী নেতৃবৃন্দের প্রতি আসক্ত হল, জনতার মধ্যে ইচ্ছুক স্বেচ্ছাসেবকদের প্রতি। সদাপ্রভুর প্রশংসা করো!
৯আমার হৃদয় ইস্রায়েলের অধ্যক্ষগণের দিকে গেল, যাঁরা প্রজাদের মধ্যে নিজের ইচ্ছায় নিজেদেরকে উৎসর্গ করলেন; তোমরা সদাপ্রভুর ধন্যবাদ কর।
10 “তোমরা যারা সাদা গাধার পিঠে চেপে যাও, জিন কম্বলের উপর বসে থাকো, আর তোমরা যারা পথযাত্রা করো, বিবেচনা করো
১০তোমরা যারা সাদা গাধীর পিঠে চড়ে থাক, যারা আসনের ওপরে বসে থাক, যারা পথে ভ্রমণ কর, তোমরাই ওর সংবাদ দাও।
11 জলসেচনের স্থানে সেই গায়কদের রব। তারা সদাপ্রভুর বিজয় বর্ণনা করে, ইস্রায়েলের গ্রামবাসীদের বিজয়। “তখন সদাপ্রভুর প্রজাসকল নগরদ্বারে নেমে গেল।
১১ধনুর্দ্ধরদের আওয়াজ থেকে দূরে, জল তুলবার স্থান সকলে সেখানে কীর্ত্তিত হচ্ছে সদাপ্রভুর ধর্মকাজ, ইস্রায়েলে তাঁর শাসন সংক্রান্ত ধর্ম-কাজ সমূহ, তখন সদাপ্রভুর প্রজারা নগরের দরজায় নেমে যেত।
12 ‘জাগো, জাগো হে দবোরা! জাগো, জাগো, গানে মুখরিত হও! হে বারক, ওঠো! হে অবীনোয়মের পুত্র, বন্দি করো তোমার বন্দিদের।’
১২দবোরে, জাগ্রত হও; জাগ্রত হও, জাগ্রত হও, জাগ্রত হও, গান গাও; বারক, উঠ, অবীনোয়মের ছেলে, তোমার বন্দিদেরকে বন্দি কর।
13 “পরিষদবর্গের অবশিষ্টাংশ নেমে এল; সদাপ্রভুর প্রজারা আমার কাছে বিক্রমীদের বিরুদ্ধাচারী হয়ে নেমে এল।
১৩তখন বেঁচে থাকা মহান লোকদের অবশিষ্টেরা ও সদাপ্রভুর লোকেরা আমার পক্ষে সেই বিক্রমীদের বিরুদ্ধে নামলেন।
14 কেউ ইফ্রয়িম থেকে এল, যাদের মূল অমালেকেতে ছিল; বিন্যামীন তোমার অনুগামীদের সহবর্তী ছিল। অধিনায়কেরা মাখীর থেকে নেমে এলেন, সেই রণ-দণ্ডধারীরা সবূলূন থেকে এলেন।
১৪অমালেকেরা ইফ্রয়িম থেকে আসলো; বিন্যামীনের লোকেরা তাদের অনুসরণ করে আসলো; মাখীর থেকে অধ্যক্ষরা নেমে এলেন, সবূলূন থেকে শাসকদের লাঠিধারীরা নেমে এলেন।
15 ইষাখরের নেতারা দবোরার সঙ্গী ছিলেন; হ্যাঁ, ইষাখর বারকেরও সঙ্গী ছিল, তাঁর আদেশে তাঁরা উপত্যকায় সবেগে ছুটে গেলেন। রূবেণের জেলাগুলিতে খুব অন্তর অনুসন্ধান হল।
১৫ইষাখরেতে আমার অধ্যক্ষরা দবোরার সঙ্গী ছিলেন, ইষাখর যেমন বারকও তেমন, তার পিছনে তাঁরা দ্রুত উপত্যকায় এলেন। রূবেণের গোষ্ঠীর কাছে গুরুতর পরীক্ষা ছিল।
16 কেন তোমরা মেষ-খোঁয়াড়ের মাঝে বসে রইলে শুধু মেষপালকদের বাঁশির সুর শুনবে বলে? রূবেণের জেলাগুলিতে খুব অন্তর অনুসন্ধান হল।
১৬তুমি কেন মেষদের মাঝখানে বসলে? কি মেষপালকদের বাঁশির সুর শুনবার জন্য? রূবেণের গোষ্ঠীর কাছে গুরুতর হৃদয়ের পরীক্ষা হল।
17 গিলিয়দ জর্ডনের ওপারে থেকে গেল। আর দান, কেনই বা সে জাহাজের পাশে গড়িমসি করল? আশের সমুদ্র উপকূলে থেকে গেল আর তার সেই উপসাগরে বসবাস করল।
১৭গিলিয়দ যর্দ্দনের ওপারে বাস করল, আর দান কেন জাহাজে থাকল? আশের সমুদ্রে বন্দরে বসে থাকল, নিজের বন্দরের ধারে বাস করল।
18 সবূলূন-প্রজারা নিজ জীবনের ঝুঁকি নিল; নপ্তালিও তাদের দেখাদেখি সোপানক্ষেত্রে তা করল।
১৮সবূলূনগোষ্ঠীর জীবন তুচ্ছ করল মৃত্যু পর্যন্ত, নপ্তালিও যুদ্ধ ক্ষেত্রে তাই করল।
19 “রাজারা এলেন, যুদ্ধ করলেন, কনানের রাজারা যুদ্ধ করলেন। তানকে, মগিদ্দোর নদীতীরে, তারা রুপোর কোনো লুন্ঠিত জিনিসপত্র নেয়নি।
১৯রাজগণ এসে যুদ্ধ করলেন, তখন কনানের রাজারা যুদ্ধ করলেন; মগিদ্দোর জলাশয়ের তীরে যুদ্ধ করলেন; কিন্তু তাঁরা একখণ্ড রূপাও লুট করল না।
20 আকাশমণ্ডল থেকে নক্ষত্রেরা যুদ্ধ করল, তাদের কক্ষপথ থেকে সীষরার বিরুদ্ধে তারা যুদ্ধ করল।
২০আকাশমণ্ডল থেকে যুদ্ধ হল, নিজের নিজের পথে তারারা সীষরার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করল।
21 কীশোন নদী তাদের ভাসিয়ে দিল, যুগবাহিত সেই নদী, সেই কীশোন নদী। হে আমার প্রাণ, এগিয়ে যাও; বলীয়ান হও!
২১কীশোন নদী তাদেরকে ভাসিয়ে নিয়ে গেল; সেই প্রাচীন নদী, কীশোন নদী। হে আমার প্রাণ, সবলে এগিয়ে যাও।
22 তখন অশ্ব-ক্ষুরের বজ্রনিনাদ হল— তাঁর সবল ঘোড়ার জোরে ছোটার শব্দ।
২২তখন শক্তিশালীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য ঘোড়াদের খুর মাটি পিষে দিল।
23 সদাপ্রভুর দূত বললেন ‘মেরোসকে অভিশাপ দাও।’ ‘তার প্রজাদের দারুণ অভিশাপ দাও, কারণ তারা সদাপ্রভুকে সাহায্য করতে আসেনি, সদাপ্রভুকে বলশালীদের বিরুদ্ধে সাহায্য করতে।’
২৩সদাপ্রভুর দূত বলেন, মেরোসকে অভিশাপ দাও, সেখানকার অধিবাসীদেরকে দারুন অভিশাপ দাও; কারণ তাঁরা বিক্রমীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য সদাপ্রভুকে সাহায্য করতে এল না।
24 “নারীকুলে যায়েল পরমধন্যা, কেনীয় হেবরের স্ত্রী, তাঁবু-নিবাসী নারীকুলে পরমধন্যা।
২৪মহিলাদের মধ্যে যায়েল ধন্যা, কেনীয় হেবরের পত্নী ধন্যা, তাঁবুবাসিনী স্ত্রীলোকদের মধ্যে তিনি ধন্যা।
25 সীষরা জল চেয়েছিলেন, আর তিনি তাঁকে দুধ দিলেন; অভিজাতদের জন্য উপযুক্ত পাত্রে তিনি দধি এনে দিলেন।
২৫সে জল চাইল, তিনি তাকে দুধ দিলেন। রাজার উপযোগী পাত্রে ক্ষীর এনে দিলেন।
26 তিনি তাঁবু-খুটা হাতে তুলে নিলেন, ডান হাতে শ্রমিকদের হাতুড়ি নিলেন। তিনি সীষরাকে আঘাত করলেন, তাঁর মাথা চূর্ণ করলেন, তিনি তাঁর রগ চুরমার ও বিদ্ধ করলেন।
২৬তিনি তাঁবুর খোঁটায় হাত রাখলেন, কামারের হাতুড়িতে ডান হাত রাখলেন; তিনি সীষরাকে হাতুড়ি দিয়ে মারলেন, তার মাথা ভেঙে দিলেন, তার মাথার খুলি ভেঙে টুকরো টুকরো করলেন ও কানপাটি ভাঙলেন।
27 তিনি যায়েলের পদাবনত হলেন, পতিত হলেন; যেখানে তিনি পদাবনত হলেন, সেখানেই মরে পতিত হয়ে রইলেন।
২৭সে তাঁর পায়ে হেঁট হয়ে পড়ল, লম্বা হয়ে শুয়ে পড়ল আর যেখানে হেঁট হল, সেখানে মারা গেল।
28 “খোলা জানালা দিয়ে সীষরার মা তাকিয়েছিলেন; জাফরির পিছন থেকে তিনি চিৎকার করেছিলেন, ‘তার রথ আসতে কেন এত দেরি হচ্ছে? কেন তার রথের ঘর্ঘর-ধ্বনি বিলম্বিত?’
২৮সীষরার মা ছোট জানালা দিয়ে দেখল, সে জানালা থেকে ডেকে বলল, “তার রথ আসতে কেন দেরী করছে? তার রথের চাকা কেন ধীরে ধীরে চলছে?”
29 তাঁর জ্ঞানবতী সহচরীরা তাঁকে উত্তর দিল; তিনি নিজেও আপনমনে কথা বললেন,
২৯তার জ্ঞানবতী সহচরীরা উত্তর করল, সে নিজেও তার কথার উত্তর দিল,
30 ‘ওরা কি লুন্ঠিত জিনিসপত্র পায়নি? ভাগাভাগি কি করেনি? প্রত্যেক পুরুষের জন্য একটি বা দুটি করে রমণী, সীষরার জন্য লুন্ঠিত রঙিন পোশাক, দোরোখা রঙিন পোশাক, আমার গ্রীবার জন্য উচ্চমানের দোরোখা পোশাক— লুন্ঠিত জিনিসপত্ররূপে এসবই?’
৩০তারা কি পায়নি? লুটের ভাগ করে নেয়নি? প্রত্যেক পুরুষের জন্য একটি স্ত্রী, দুইটি স্ত্রী আর সীষরার চিত্রিত বস্ত্র পেয়েছে, চিত্রিত দুধার বাঁধা বস্ত্র লুটকারীর আমার গলায়।
31 “হে সদাপ্রভু, তোমার সব শত্রু এভাবেই বিনষ্ট হোক! কিন্তু যারা তোমায় ভালোবাসে তারা সব সেই সূর্যের মতো হোক যখন তা সপ্রতাপে উদিত হয়।” পরে চল্লিশ বছর দেশে শান্তি বজায় ছিল।
৩১হে সদাপ্রভু, তোমার সব শত্রু এই ভাবে বিনষ্ট হোক, কিন্তু যারা তোমাকে প্রেম করে তারা প্রভাবশালী সূর্য্যের মতো হোক। পরে চল্লিশ বছর দেশে শান্তি থাকল।