< বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ 3 >
1 যেসব ইস্রায়েলী কনানে কোনও যুদ্ধের অভিজ্ঞতা লাভ করেনি, তাদের পরীক্ষা করার জন্য সদাপ্রভু এসব জাতিকে অবশিষ্ট রেখেছিলেন:
2 (ইস্রায়েলীদের সেই বংশধরদের যুদ্ধবিগ্রহ শিক্ষা দেওয়ার জন্যই শুধুমাত্র তিনি এরকম করলেন, ইতিপূর্বে যাদের যুদ্ধের কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না)
3 ফিলিস্তিনীদের পাঁচজন শাসনকর্তা, বায়াল-হর্মোণ পর্বত থেকে লেবো-হমাৎ পর্যন্ত বিস্তৃত লেবাননের পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারী সমস্ত কনানীয়, সীদোনীয় এবং হিব্বীয় জাতি।
4 মোশির মাধ্যমে ইস্রায়েলীদের পূর্বপুরুষদের সদাপ্রভু যে আদেশগুলি দিয়েছিলেন, সেগুলি তারা পালন করে কি না, তা জানার জন্যই এই জাতিদের অবশিষ্ট রাখা হল।
5 ইস্রায়েলীরা কনানীয়, হিত্তীয়, ইমোরীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় এবং যিবূষীয়দের মধ্যে বসবাস করল।
6 ইস্রায়েলীরা তাদের মেয়েদের বিয়ে করে আনত ও নিজেদের মেয়েদের সঙ্গে তাদের ছেলেদের বিয়ে দিত, এবং তাদের দেবতাদের সেবা করত।
7 সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ ইস্রায়েলীরা তাই করল; তারা তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভুলে গিয়ে বায়াল-দেবতাদের ও আশেরা-দেবীদের সেবা করল।
8 সদাপ্রভুর ক্রোধ ইস্রায়েলীদের বিরুদ্ধে প্রজ্বলিত হল, আর তিনি তাদের অরাম-নহরয়িমের রাজা সেই কূশন-রিশিয়াথয়িমের হাতে বিক্রি করে দিলেন, ইস্রায়েলীরা আট বছর যাঁর শাসনাধীন হয়ে থাকল।
9 কিন্তু তারা যখন সদাপ্রভুর কাছে কেঁদে উঠল, তিনি তাদের জন্য এক রক্ষাকর্তাকে—কালেবের ছোটো ভাই কনসের ছেলে অৎনীয়েলকে—উত্থাপিত করলেন, যিনি তাদের রক্ষা করলেন।
10 সদাপ্রভুর আত্মা অৎনীয়েলের উপর নেমে এলেন, আর তিনি ইস্রায়েলীদের বিচারক হলেন এবং যুদ্ধযাত্রা করলেন। সদাপ্রভু অরামের রাজা কূশন-রিশিয়াথয়িমকে সেই অৎনীয়েলের হাতে সমর্পণ করলেন, যিনি তাঁকে পরাজিত করলেন।
11 অতএব কনসের ছেলে অৎনীয়েলের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত চল্লিশ বছরের জন্য দেশে শান্তি বজায় থাকল।
12 আবার ইস্রায়েলীরা সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ তাই করল, এবং যেহেতু তারা এরকম মন্দ কাজ করল, তাই সদাপ্রভু মোয়াবের রাজা ইগ্লোনকে ইস্রায়েলের উপর শক্তিপ্রদর্শন করতে দিলেন।
13 অম্মোনীয় ও অমালেকীয়দের সঙ্গে নিয়ে এসে ইগ্লোন ইস্রায়েলকে আক্রমণ করলেন, এবং খর্জুরপুর অধিকার করে নিলেন।
14 ইস্রায়েলীরা আঠারো বছর যাবৎ মোয়াবের রাজা ইগ্লোনের শাসনাধীন হয়ে থাকল।
15 ইস্রায়েলীরা আবার সদাপ্রভুর কাছে কেঁদে উঠল, এবং তিনি তাদের এক রক্ষাকর্তা দিলেন—যিনি হলেন বিন্যামীনীয় গেরার ছেলে ন্যাটা এহূদ। ইস্রায়েলীরা তাঁকে রাজস্ব-অর্থ সমেত মোয়াবরাজ ইগ্লোনের কাছে পাঠাল।
16 এহূদ প্রায় 45 সেন্টিমিটার লম্বা এবং উভয় দিকে ধারবিশিষ্ট একটি ছোরা তৈরি করলেন, ও সেটি তিনি তাঁর পোশাকের নিচে তাঁর ডান ঊরুতে বেঁধে রাখলেন।
17 তিনি মোয়াবের রাজা সেই ইগ্লোনের কাছে সেই রাজস্ব-অর্থ পেশ করলেন, যিনি অত্যন্ত স্থূলকায় এক ব্যক্তি ছিলেন।
18 সেই রাজস্ব-অর্থ পেশ করার পর এহূদ তাদের বিদায় করে দিলেন, যারা তা বহন করে এনেছিল।
19 কিন্তু গিল্গলের নিকটবর্তী সেই পাথর-প্রতিমাগুলির কাছে পৌঁছানোর পর আবার তিনি ইগ্লোনের কাছে ফিরে এসে বললেন, “হে মহারাজ, আপনার জন্য আমার কাছে এক গোপন সংবাদ আছে।” রাজামশাই তাঁর সেবকদের বললেন, “আমাদের একা ছেড়ে দাও!” আর তারা সবাই বাইরে চলে গেল।
20 রাজামশাই যখন তাঁর প্রাসাদের উপরতলার ঘরে একা বসেছিলেন, তখন এহূদ তাঁর কাছে এগিয়ে গিয়ে বললেন, “আপনার জন্য আমার কাছে ঈশ্বরের এক বাণী আছে।” রাজামশাই যেই না তাঁর আসন ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন,
21 এহূদ তাঁর বাঁ হাত বাড়িয়ে ডান ঊরু থেকে সেই ছোরাটি টেনে বের করে সোজা রাজামশাই-এর পেটে ঢুকিয়ে দিলেন।
22 এমনকি ছোরার সঙ্গে বাঁটটিও ভিতরে ঢুকে গেল, এবং তাঁর নাড়িভুঁড়ি বাইরে বেরিয়ে এল। এহূদ ছোরাটি টেনে বের করলেন না, এবং সেটি চর্বিতে আটকে থাকল।
23 পরে এহূদ বাইরে বারান্দায় বেরিয়ে এলেন; তিনি উপরতলার ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে তাতে তালা লাগিয়ে দিলেন।
24 তিনি চলে যাওয়ার পর দাসেরা এসে দেখল যে উপরতলার ঘরের দরজা তালাবন্ধ। তারা বলল, “রাজামশাই নিশ্চয় প্রাসাদের শৌচাগারে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়েছেন।”
25 তারা বিব্রত না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে গেল, কিন্তু রাজামশাই দরজা খুলছেন না দেখে তারা একটি চাবি নিয়ে দরজাটি খুলে ফেলল। সেখানে তারা দেখল যে তাদের মনিব মৃত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে আছেন।
26 তারা যখন অপেক্ষা করছিল, তখন এহূদ পালিয়ে গেলেন। তিনি পাথর-প্রতিমাগুলি পার করে গেলেন ও পালিয়ে সিয়ীরাতে গিয়ে পৌঁছালেন।
27 সেখানে পৌঁছে তিনি ইফ্রয়িমের পার্বত্য অঞ্চলে শিঙা বাজালেন, এবং ইস্রায়েলীরা তাঁর সঙ্গে পাহাড় থেকে নেমে গেল, ও এহূদ তাদের নেতৃত্ব দিলেন।
28 “আমার অনুগামী হও,” তিনি আদেশ দিলেন, “কারণ সদাপ্রভু তোমাদের শত্রু মোয়াবকে তোমাদের হাতে সমর্পণ করে দিয়েছেন।” অতএব তারা এহূদের অনুগামী হল এবং জর্ডনের হাঁটুজলবিশিষ্ট সেই স্থানগুলি অধিকার করে নিল, যেগুলি মোয়াবের দিকে উঠে যায়; তারা কাউকেই ওপারে যেতে দিল না।
29 সেই সময় তারা প্রায় 10,000 মোয়াবীয়কে আঘাত করল, যারা সবাই ছিল সবল ও শক্তিশালী; একজনও পালাতে পারল না।
30 সেদিন মোয়াবকে ইস্রায়েলের শাসনাধীন করা হল, এবং আশি বছরের জন্য দেশে শান্তি বজায় থাকল।
31 এহূদের পর এলেন অনাতের ছেলে শম্গর, যিনি বলদের অঙ্কুশ দিয়ে 600 ফিলিস্তিনীকে আঘাত করলেন। তিনিও ইস্রায়েলকে রক্ষা করলেন।