< বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ 2 >

1 সদাপ্রভুর দূত গিল্‌গল থেকে বোখীমে উঠে গিয়ে বললেন, “আমি মিশর থেকে তোমাদের বের করে এনেছি এবং যে দেশ দেওয়ার শপথ আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে করেছিলাম, সেই দেশে তোমাদের নিয়ে এসেছি। আমি বলেছিলাম, ‘আমি তোমাদের কাছে আমার নিয়মটি কখনোই ভঙ্গ করব না,
আর সদাপ্রভুর দূত গিলগল থেকে বোখীমে উঠে আসলেন। তিনি বললেন, “আমি তোমাদেরকে মিশর থেকে বের করে এনেছি; যে দেশ দিতে তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে শপথ করেছিলাম, সে দেশে তোমাদেরকে এনেছি, আর এই কথা বলেছি, আমি তোমাদের সঙ্গে নিজের নিয়ম কখনও ভাঙব না;
2 আর তোমরাও এই দেশের অধিবাসীদের সঙ্গে কোনও নিয়ম স্থির করবে না, কিন্তু তোমরা তাদের যজ্ঞবেদিগুলি ভেঙে ফেলবে।’ অথচ তোমরা আমার অবাধ্য হয়েছ। তোমরা কেন এরকম করলে?
তোমরাও এই দেশে বসবাসকারীদের সঙ্গে চুক্তি স্থাপন করবে না, তাদের যজ্ঞবেদি সব ভেঙে ফেলবে। কিন্তু তোমরা আমার কথা শোননি; কেন এমন কাজ করেছ?
3 আর আমি এও বলেছি, ‘আমি তোমাদের সামনে থেকে তাদের বিতাড়িত করব না; তারা তোমাদের জন্য জালে পরিণত হবে, এবং তাদের দেবতারা তোমাদের কাছে ফাঁদে পরিণত হবে।’”
এই জন্য আমিও বললাম, ‘তোমাদের সামনে থেকে আমি এই লোকদেরকে দূরে সরাবো না; তারা তোমাদের পাশে কাঁটার মত, ও তাদের দেবতারা তোমাদের ফাঁদস্বরূপ হবে’।”
4 সদাপ্রভুর দূত ইস্রায়েলীদের কাছে এসব কথা বলাতে, তারা তারস্বরে কেঁদে ফেলল,
তখন সদাপ্রভুর দূত ইস্রায়েল লোকদের এই কথা বললে লোকেরা জোরে চিত্কার করে কাঁদতে লাগল।
5 এবং তারা সেই স্থানটির নাম রাখল বোখীম। সেখানে তারা সদাপ্রভুর উদ্দেশে বলি উৎসর্গ করল।
আর তারা সেই জায়গার নাম বোখীম [রোদনকারী-গণ] রাখল; পরে তারা সেই জায়গায় সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে বলিদান করল।
6 যিহোশূয় ইস্রায়েলীদের বিদায় করে দেওয়ার পর, তারা প্রত্যেকে তাদের নিজস্ব অধিকার অনুসারে, দেশ দখল করতে গেল।
যিহোশূয় লোকদের বিদায় করলে পর ইস্রায়েল-সন্তানরা দেশ অধিকার করার জন্য প্রত্যেকে সেই জায়গায় গেল।
7 লোকজন যিহোশূয়ের জীবনকালে ও সেইসব প্রাচীনের জীবনকালে আগাগোড়াই সদাপ্রভুর সেবা করল, যারা যিহোশূয়ের মৃত্যুর পরও জীবিত ছিলেন ও ইস্রায়েলের জন্য সদাপ্রভু যেসব মহান কাজ করেছিলেন, সেগুলি দেখেছিলেন।
আর যিহোশূয়ের সমস্ত জীবনে এবং যে প্রাচীনরা যিহোশূয়ের মৃত্যুর পর জীবিত ছিলেন ও ইস্রায়েলের জন্য সদাপ্রভুর করা সমস্ত মহান কাজ দেখেছিলেন, তাঁদেরও সমস্ত জীবনে লোকেরা সদাপ্রভুর সেবা করল।
8 নূনের ছেলে, সদাপ্রভুর দাস যিহোশূয় 110 বছর বয়সে মারা গেলেন।
পরে নূনের ছেলে সদাপ্রভুর দাস যিহোশূয় একশো দশ বছর বয়সে মারা গেলেন।
9 আর তারা তাঁকে গাশ পর্বতের উত্তরে, ইফ্রয়িমের পার্বত্য প্রদেশের তিম্নৎ-হেরসে, তাঁর নিজস্ব অধিকার-ভূমিতে কবর দিল।
তাতে লোকেরা গাশ পর্বতের উত্তর পাহাড়ী অঞ্চল ইফ্রয়িম প্রদেশের তিম্নৎহেরসে তাঁর অধিকারের জায়গায় তাঁকে কবর দিল।
10 সেই প্রজন্মের সমস্ত লোকজন তাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে একত্রিত হওয়ার পর, অপর এক প্রজন্ম বেড়ে উঠল, যারা না চিনত সদাপ্রভুকে, না জানত তিনি ইস্রায়েলের জন্য কী কী করেছিলেন।
১০আর সেই দিনের র অন্য সব লোকও পূর্বপুরুষদের কাছে সংগৃহীত হল এবং তাদের পরে নতুন বংশ বৃদ্ধি হল, এরা সদাপ্রভুকে জানত না এবং ইস্রায়েলের জন্য তাঁর করা কাজ জানা ছিল না।
11 পরে ইস্রায়েলীরা সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ তাই করল এবং বায়াল-দেবতাদের সেবা করল।
১১ইস্রায়েল-সন্তানেরা সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা খারাপ, তাই করতে লাগল এবং বালদেবতাদের সেবা করতে লাগল।
12 তারা তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর, সেই সদাপ্রভুকে পরিত্যাগ করল, যিনি মিশর থেকে তাদের বের করে এনেছিলেন। তারা তাদের চারপাশে বসবাসকারী লোকদের আরাধ্য বিভিন্ন দেবতাদের অনুগামী হল এবং তাদের আরাধনা করতে লাগল। তারা সদাপ্রভুর ক্রোধ জাগিয়ে তুলল
১২আর যিনি তাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর, যিনি তাদেরকে মিশর দেশ থেকে বের করে এনেছিলেন, সেই সদাপ্রভুকে ত্যাগ করে অন্য দেবতাদের, অর্থাৎ নিজেদের চারিদিকে অবস্থিত লোকেদের দেবতাদের অনুগামী হয়ে তাদের কাছে প্রার্থনা করতে লাগল, এই ভাবে সদাপ্রভুকে অসন্তুষ্ট করল।
13 কারণ তারা তাঁকে পরিত্যাগ করল এবং বায়াল-দেবতার ও অষ্টারোৎ দেবীদের সেবা করল।
১৩তারা সদাপ্রভুকে ত্যাগ করে বালদেবতার ও অষ্টারোৎ দেবীদের সেবা করত।
14 ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে ক্রোধের বশবর্তী হয়ে সদাপ্রভু তাদের সেই আক্রমণকারীদের হাতে সমর্পণ করলেন, যারা তাদের উপরে লুঠতরাজ চালিয়েছিল। তিনি তাদের চারপাশের সেই শত্রুদের হাতে তাদের বিক্রি করে দিলেন, যাদের প্রতিরোধ তারা আর করে উঠতে পারেনি।
১৪তাতে ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে সদাপ্রভু রেগে গেলেন, আর তিনি তাদেরকে লুন্ঠনকারীদের হাতে সমর্পণ করলেন, তারা তাদের সম্পদ লুট করল; আর তিনি তাদের চারিদিকের শত্রুদের হাতে তাদের বিক্রি করলেন, তাতে তারা নিজের শত্রুদের সামনে আর দাঁড়াতে পারল না।
15 যখনই ইস্রায়েল যুদ্ধযাত্রা করতে যেত, তাদের পরাজিত করার জন্য সদাপ্রভুর হাত তাদের বিরুদ্ধাচারী হত, ঠিক যেভাবে তিনি তাদের কাছে শপথ করেছিলেন। তাদের উপরে চরম দুর্দশা নেমে এল।
১৫সদাপ্রভু যেমন তাদের কাছে শপথ করেছিলেন, সেই অনুসারে তারা যে কোন জায়গায় যেত, সেই জায়গায় অমঙ্গলের জন্য সদাপ্রভু তাদের বিরোধিতা করত; এই ভাবে তারা ভীষণ দুঃখ পেত।
16 তখন সদাপ্রভু সেই বিচারকদের উত্থাপিত করলেন, যারা আক্রমণকারীদের হাত থেকে তাদের রক্ষা করেছিলেন।
১৬তখন সদাপ্রভু বিচারকর্তাদেরকে উঠাতেন, আর তারা লুটকারীদের হাত থেকে তাদেরকে রক্ষা করতেন;
17 তবুও তারা তাদের বিচারকদের কথায় কর্ণপাত করত না কিন্তু অন্যান্য দেবতাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে বেশ্যাবৃত্তিতে নেমে তাদের আরাধনা করত। তারা দ্রুত তাদের সেই পূর্বপুরুষদের পথ থেকে ফিরে গেল, যারা সদাপ্রভুর আদেশগুলির প্রতি বাধ্য হয়ে চলতেন।
১৭তবুও তারা নিজেদের বিচারকর্তাদের কথায় কান দিত না, কিন্তু অন্য দেবতাদের কাছে গিয়ে ব্যভিচার করত ও তাদের কাছে উপাসনা করত; এই ভাবে তাদের পিতৃপুরুষেরা সদাপ্রভুর আজ্ঞা পালন করে যে পথে চলতেন, তারা সেই অনুযায়ী না করে সেই পথ থেকে সরে আসল।
18 সদাপ্রভু যখনই তাদের জন্য কোনও বিচারক উত্থাপিত করতেন, তিনি সেই বিচারকের সহায় হতেন এবং যতদিন সেই বিচারক জীবিত থাকতেন ততদিন সদাপ্রভু তাদের শত্রুদের হাত থেকে তাদের রক্ষা করতেন; যেহেতু তাদের শোষণের কারণে ও নির্যাতনকারীদের অধীনে তাদের জীবনে উৎপন্ন কাতরোক্তির কারণে সদাপ্রভু করুণাবিষ্ট হতেন।
১৮আর সদাপ্রভু যখন তাদের জন্য বিচারকর্ত্তা উত্পন্ন করতেন, তখন সদাপ্রভু বিচারকর্তাদের সঙ্গে সঙ্গে থেকে বিচারকর্তাদের সমস্ত জীবনে শত্রুদের হাত থেকে তাদেরকে উদ্ধার করতেন, কারণ উপদ্রব ও তাড়নাকারীদের সামনে তাদের অনুনয়-বিনয়ের জন্য সদাপ্রভু করুণাবিষ্ট হতেন।
19 কিন্তু সেই বিচারক মারা গেলেই, লোকেরা আবার অন্যান্য দেবতাদের অনুগামী হয়ে, তাদের সেবা ও আরাধনা করার মাধ্যমে তাদের পূর্বপুরুষদের থেকেও বেশি পরিমাণে কলুষিত হয়ে বিপথগামী হয়ে পড়ত। তারা তাদের মন্দ অভ্যাস ও অনমনীয় স্বভাব ত্যাগ করতে চাইত না।
১৯কিন্তু সেই বিচারকর্ত্তা মারা গেলেই তারা ফিরত, পিতৃপুরুষ থেকে আরও দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ত, অন্য দেবতাদের অনুগামী হয়া তাদের সেবা করত ও তাদের কাছে উপাসনা করত; নিজের নিজের কাজ ও স্বেচ্ছাচারীতার কিছুই ছাড়ত না।
20 অতএব সদাপ্রভু ইস্রায়েলের উপরে প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হয়ে বললেন, “যেহেতু এই জাতি সেই নিয়মটি ভঙ্গ করেছে, যা আমি তাদের পূর্বপুরুষদের জন্য নিরূপিত করেছিলাম এবং যেহেতু আমার কথায় তারা কর্ণপাত করেনি,
২০তাতে ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে সদাপ্রভুর ক্রোধ আরো বেড়ে গেল, তিনি বললেন, “আমি এদের পিতৃপুরুষদেরকে যে নিয়ম পালনের আজ্ঞা দিয়েছিলাম, এই জাতি তা অমান্য করেছে, আমার কথায় কান দেয়নি;
21 তাই আমি আর সেইসব জাতির মধ্যে কোনো জাতিকেই তাদের সামনে থেকে বিতাড়িত করব না, যিহোশূয় মারা যাওয়ার সময় যাদের অবশিষ্ট রেখে গিয়েছিল।
২১অতএব যিহোশূয় মৃত্যুর দিন যে যে জাতিকে অবশিষ্ট রেখেছে, আমিও এদের সামনে থেকে তাদের কাউকেও তাড়াব না।
22 ইস্রায়েলকে পরীক্ষা করার জন্য ও তাদের পূর্বপুরুষদের মতো তারা সদাপ্রভুর পথে চলে তাঁর আজ্ঞা পালন করছে কি না তা দেখার জন্য আমি এই জাতিকে ব্যবহার করব।”
২২তাদের পিতৃপুরুষেরা যেমন সদাপ্রভুর পথে গমন করে তাঁর আজ্ঞা পালন করত, তারাও সেরূপ করবে কি না, এই বিষয়ে ঐ জাতিদের মাধ্যমে ইস্রায়েলের পরীক্ষা নেব।”
23 সদাপ্রভু সেইসব জাতিকে সেখানে থাকতে দিলেন; তিনি যিহোশূয়ের হাতে তাদের সমর্পণ করার দ্বারা অবিলম্বে তাদের বিতাড়িত করলেন না।
২৩এই জন্য সদাপ্রভু সেই জাতিদের তাড়াতাড়ি অধিকার থেকে তাড়িয়ে না দিয়ে অবশিষ্ট রাখলেন; যিহোশূয়ের হাতেও সমর্পণ করেননি।

< বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ 2 >