< বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ 14 >

1 শিম্‌শোন তিম্নায় নেমে গেলেন ও সেখানে এক যুবতী ফিলিস্তিনী মহিলাকে দেখতে পেলেন।
আর শিম্‌শোন তিম্নায় (গ্রামে) নেমে গেলেন, ও তিম্নায় পলেষ্টীয়দের মেয়েদের মধ্যে একটি মেয়েটি দেখতে পেলেন।
2 ফিরে এসে, তিনি তাঁর বাবা-মাকে বললেন, “তিম্নায় আমি এক ফিলিস্তিনী মহিলাকে দেখেছি; এখন তোমরা তাকে আমার স্ত্রী করে এনে দাও।”
পরে ফিরে এসে নিজের মা বাবাকে সংবাদ দিয়ে বললেন, “আমি তিম্নায় পলেষ্টীয়দের মেয়েদের মধ্যে একটি মেয়েটি দেখেছি; তোমরা তাকে এনে আমার সঙ্গে বিয়ে দাও।”
3 তাঁর বাবা-মা উত্তর দিলেন, “তোমার আত্মীয়দের মধ্যে বা আমাদের সব আত্মীয়স্বজনের মধ্যে কি উপযুক্ত কোনও মেয়ে নেই? স্ত্রী পাওয়ার জন্য তোমাকে কি সেই সুন্নত না করানো ফিলিস্তিনীদের কাছেই যেতে হবে?” কিন্তু শিম্‌শোন তাঁর বাবাকে বললেন, “আমার জন্য তাকেই এনে দাও। সেই আমার জন্য উপযুক্ত।”
তখন তাঁর বাবা মা তাঁকে বললেন, “তোমার আত্মীয়দের মধ্যে ও আমার সব নিজের জাতির মধ্যে কি কোনো মেয়ে নেই যে, তুমি অচ্ছিন্নত্বক পলেষ্টীয়দের মেয়ে বিয়ে করতে যাচ্ছ?” শিম্‌শোন বাবাকে বললেন, “তুমি আমার জন্য তাকেই নিয়ে এস, কারণ আমার দৃষ্টিতে সে খুবই সুন্দরী।”
4 (তাঁর বাবা-মা জানতেন না যে এই ঘটনা সেই সদাপ্রভুর ইচ্ছাতেই ঘটছে, যিনি ফিলিস্তিনীদের শায়েস্তা করার এক সুযোগ খুঁজছিলেন; কারণ সেই সময় তারা ইস্রায়েলের উপর রাজত্ব করছিল।)
কিন্তু তাঁর মা-বাবা জানতেন না যে, ওটা সদাপ্রভু থেকে হয়েছে, কারণ তিনি পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে সুযোগ খুঁজছিলেন। সেই দিনের পলেষ্টীয়েরা ইস্রায়েলের উপরে কর্তৃত্ব করত।
5 শিম্‌শোন তাঁর বাবা-মার সঙ্গে তিম্নায় নেমে গেলেন। তারা তিম্নার দ্রাক্ষাক্ষেতের কাছাকাছি পৌঁছানোমাত্রই, আচমকা এক যুবা সিংহ গর্জন করতে করতে শিম্‌শোনের দিকে তেড়ে এল।
পরে শিম্‌শোন ও তাঁর মা-বাবা তিম্নায় নেমে গেলেন, তিম্নায় আঙ্গুর ক্ষেতে পৌছালে দেখ, এক যুবসিংহ শিম্‌শোনের সামনে হয়ে গর্জন করে উঠল।
6 সদাপ্রভুর আত্মা এমন সপরাক্রমে শিম্‌শোনের উপর নেমে এসেছিলেন যে শিম্‌শোন খালি হাতে ছাগশাবক ছিঁড়ে ফেলার মতো করে ওই সিংহটিকে ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ফেললেন। কিন্তু তিনি কী করলেন, তা তিনি তাঁর বাবা বা মা কাউকেই জানালেন না।
তখন সদাপ্রভুর আত্মা তাঁর ওপরে আসলেন, তাতে তাঁর হাতে কিছু না থাকলেও তিনি ছাগলের বাচ্চা ছিঁড়বার মত ঐ সিংহকে ছিঁড়ে ফেললেন, কিন্তু কি করেছেন, তা বাবা মাকে বললেন না।
7 পরে তিনি সেই মহিলাটির কাছে গিয়ে তার সঙ্গে কথাবার্তা বললেন, এবং মেয়েটিকে তাঁর খুব পছন্দ হল।
পরে তিনি গিয়ে সেই কন্যার সঙ্গে আলাপ করলেন; আর সে শিম্‌শোনের দৃষ্টিতে খুবই সুন্দরী ছিল।
8 কিছুকাল পর, শিম্‌শোন যখন তাকে বিয়ে করার জন্য সেখানে ফিরে গেলেন, তখন তিনি সেই সিংহের শবটি দেখার জন্য পথের অন্য পাশে গেলেন, ও গিয়ে দেখলেন যে সেই শবটিতে এক ঝাঁক মৌমাছি ও কিছু মধু লেগে আছে।
কিছু দিন পরে তিনি তাকে বিয়ে করতে সেই জায়গায় ফিরে গেলেন এবং সেই সিংহের শব দেখবার জন্য পথ ছেড়ে গেলেন; আর দেখ, সিংহের দেহে এক ঝাঁক মৌমাছি ও মৌচাক রয়েছে।
9 তিনি হাত দিয়ে কিছুটা মধু বের করলেন ও পথে যেতে যেতে তা খেতে থাকলেন। তিনি যখন তাঁর বাবা-মার সঙ্গে আবার মিলিত হলেন, তখন তিনি তাঁদেরও খানিকটা মধু দিলেন ও তাঁরাও তা খেলেন। কিন্তু তিনি তাঁদের বলেননি যে সেই মধু তিনি সিংহের মৃতদেহ থেকে সংগ্রহ করেছেন।
তখন তিনি তা হাতে নিয়ে চললেন, ভোজন করতে করতে চললেন এবং মা বাবার কাছে গিয়ে তাঁদেরকেও কিছু দিলে তাঁরাও ভোজন করলেন; কিন্তু সেই মধু যে সিংহের দেহ থেকে এনেছেন, তা তিনি তাঁদেরকে বললেন না।
10 এমতাবস্থায় তাঁর বাবা সেই মহিলাটিকে দেখতে গেলেন। আর যুবা পুরুষেরা প্রথাগতভাবে যেমন করত, সেই প্রথানুসারে শিম্‌শোনও সেখানে এক ভোজসভার আয়োজন করলেন।
১০পরে তাঁর পিতা সেই মেয়ের কাছে গেলে শিম্‌শোন সেই জায়গায় ভোজ প্রস্তুত করলেন্‌, কারণ যুবকদের সেই রকম রীতি ছিল।
11 লোকেরা যখন তাঁকে দেখল, তখন তারা তাঁর সহচর হওয়ার জন্য ত্রিশজন লোককে মনোনীত করল।
১১আর তাঁকে দেখে পলেষ্টীয়েরা তাঁর কাছে থাকতে ত্রিশ জন বন্ধুদেরকে আনল।
12 “আমি তোমাদের কাছে একটি ধাঁধা বলছি,” শিম্‌শোন তাদের বললেন। “তোমরা যদি উৎসব চলাকালীন এই সাত দিনের মধ্যে এর অর্থ আমায় ব্যাখ্যা করে দিতে পারো, তবে আমি তোমাদের ত্রিশটি মসিনার পোশাক এবং ত্রিশ জোড়া কাপড়চোপড় দেব।
১২শিম্‌শোন তাদেরকে বললেন, “আমি তোমাদের কাছে একটি ধাঁধা বলি, তোমরা যদি এই উৎসবের সাত দিনের র মধ্যে তার অর্থ বুঝে আমাকে বলে দিতে পার, তবে আমি তোমাদেরকে ত্রিশটি জামা ও ত্রিশ জোড়া বস্ত্র দেব।
13 কিন্তু তোমরা যদি এর অর্থ আমাকে বলতে না পারো, তবে তোমরাই আমাকে ত্রিশটি মসিনার পোশাক এবং ত্রিশ জোড়া কাপড়চোপড় দেবে।” “তোমার ধাঁধাটি আমাদের বলো,” তারা বলল। “তা শোনা যাক।”
১৩কিন্তু যদি আমাকে তার অর্থ বলতে না পার, তবে তোমরা আমাকে ত্রিশটি জামা ও ত্রিশ জোড়া বস্ত্র দেবে।” তাঁরা বলল, “তোমার ধাঁধাটি বল, আমরা শুনি।”
14 শিম্‌শোন উত্তর দিলেন, “ভক্ষকের মধ্যে থেকে কিছু খাদ্যদ্রব্য বেরিয়ে এল; শক্তিধরের মধ্যে থেকে কিছু মিষ্টদ্রব্য বেরিয়ে এল।” তিনদিনে তারা এই ধাঁধার অর্থোদ্ধার করতে পারেনি।
১৪তিনি তাদেরকে বললেন, “খাদক থেকে বের হল খাদ্য, বলবান থেকে বের হল মিষ্ট দ্রব্য।” তারা তিন দিনের সেই হেঁয়ালির অর্থ করতে পারল না।
15 চতুর্থ দিনে, তারা শিম্‌শোনের স্ত্রীকে বলল, “তোমার স্বামীকে তোষামোদ করে ভুলিয়েভালিয়ে আমাদের জন্য ধাঁধার অর্থটি জেনে নাও, তা না হলে আমরা তোমাকে এবং তোমার বাবার পরিবার-পরিজনদের আগুনে পুড়িয়ে মারব। আমাদের সম্পত্তি হরণ করার জন্যই কি তোমরা এখানে আমাদের নিমন্ত্রণ করেছ?”
১৫পরে সপ্তম দিনের তারা শিম্‌শোনের স্ত্রীকে বলল, “তুমি নিজের স্বামীকে খোসামোদ, যাতে তিনি ধাঁধার অর্থ আমাদেরকে বলেন; না হলে আমরা তোমাকে ও তোমার পিতৃকুলকে আগুনে পুড়িয়ে মারব। তোমরা কি আমাদেরকে দরিদ্র করার জন্য এই জায়গায় নিমন্ত্রণ করেছ? তাই নয় কি?”
16 তখন শিম্‌শোনের স্ত্রী তাঁর কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ে ককাতে ককাতে বলল, “তুমি আমাকে ঘৃণাই করো! তুমি সত্যিই আমাকে ভালোবাসো না। তুমি আমার লোকজনদের কাছে একটি ধাঁধা বলেছ, কিন্তু আমাকে তার অর্থ ব্যাখ্যা করে দাওনি।” “আমার মা-বাবাকেই আমি এর অর্থ বলিনি,” তিনি উত্তর দিলেন, “অতএব তোমাকে কেন আমি এর অর্থ বলতে যাব?”
১৬তখন শিম্‌শোনের স্ত্রী স্বামীর কাছে কেঁদে বলল, “তুমি আমাকে শুধুই ঘৃণা কর, ভালবাস না; আমার স্বজাতীয়দেরকে একটা ধাঁধা বললে, কিন্তু আমাকে তা বুঝিয়ে দিলে না।” তিনি তাঁকে বললেন, “দেখ, আমার বাবা-মাকেও তা বুঝিয়ে দেয়নি, তবে তোমাকে কি বোঝাব?”
17 উৎসব চলাকালীন সেই সাত দিন যাবৎ সে কান্নাকাটি করল। অতএব সপ্তম দিনে শেষ পর্যন্ত শিম্‌শোন তাকে ধাঁধাটির অর্থ বলে দিলেন, কারণ সেই স্ত্রী অনবরত তাঁকে চাপ দিয়ে যাচ্ছিল। সেও তখন তার লোকজনদের সেই ধাঁধাটির অর্থ বলে দিল।
১৭তার স্ত্রী উৎসব-সপ্তাহের শেষ পর্যন্ত তাঁর কাছে কাঁদল; পরে তিনি সপ্তম দিনের তাকে বলে দিলেন; কারণ সে তাঁকে ক্রমাগত খোসামোদ করেছিল। পরে ঐ স্ত্রী স্বজাতীয়দেরকে ধাঁধার অর্থ বলে দিল।
18 সপ্তম দিনে সূর্যাস্তের আগেই সেই নগরের লোকেরা এসে শিম্‌শোনকে বলল, “মধুর থেকে বেশি মিষ্টি আর কী হতে পারে? সিংহের থেকে বেশি শক্তিশালী আর কে হতে পারে?” শিম্‌শোন তাদের বললেন, “আমার বকনা-বাছুর দিয়ে যদি চাষ না করতে, আমার ধাঁধার নিষ্পত্তি করতে তোমাদের নাভিশ্বাস উঠে যেত।”
১৮পরে সপ্তম দিনের সূর্য্য অস্ত যাবার আগে ঐ নগরের লোকেরা তাঁকে বলল, “মধু থেকে মিষ্ট আর কি? আর সিংহের থেকে বলবান্‌ কি?” তিনি তাদেরকে বললেন, “তোমরা যদি আমার গাভী দিয়ে চাষ না করতে, তবে আমার ধাঁধার অর্থ খুঁজে পেতে না।”
19 পরে সদাপ্রভুর আত্মা সপরাক্রমে তাঁর উপরে এলেন। শিম্‌শোন অস্কিলোনে নেমে গেলেন, সেখানকার ত্রিশজন লোককে আঘাত করে, তাদের সব পোশাক-আশাক খুলে নিলেন ও তাদের পোশাকগুলি তাদের দিয়ে দিলেন, যারা তাঁর ধাঁধার অর্থ ব্যাখ্যা করে দিয়েছিল। রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে, শিম্‌শোন তাঁর বাবার ঘরে ফিরে গেলেন।
১৯পরে সদাপ্রভুর আত্মা তাঁর ওপরে সবলে আসলেন, আর তিনি অস্কিলোনে (শহরে) নেমে গিয়ে সেখানকার ত্রিশ জনকে আঘাত করে তাদের বস্ত্র খুলে নিয়ে ধাঁধার অর্থকারীদেরকে জোড়া জোড়া বস্ত্র দিলেন। আর সে প্রচন্ড রেগে গেল; তিনি পিতার বাড়িতে উঠে গেলেন।
20 আর শিম্‌শোনের স্ত্রীকে তাঁর সহচরদের মধ্যে এমন একজনের হাতে তুলে দেওয়া হল, যে সেই উৎসব চলাকালীন তাঁর পরিচর্যা করেছিল।
২০পরে শিম্‌শোনের যে প্রিয় বন্ধু তার কাছে এসেছিল, তাকে তাঁর স্ত্রী দেওয়া হল।

< বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ 14 >