< যিহোশূয়ের বই 5 >
1 যখন জর্ডন নদীর পশ্চিম পারে ইমোরীয়দের সমস্ত রাজা ও উপকূল বরাবর কনানীয়দের সমস্ত রাজা শুনতে পেলেন, জর্ডন নদী অতিক্রম না করা পর্যন্ত, সদাপ্রভু কীভাবে তা ইস্রায়েলীদের সামনে শুকনো করে দিয়েছিলেন, ভয়ে তাদের হৃদয় গলে গেল। ইস্রায়েলীদের সম্মুখীন হওয়ার সাহস আর তাদের রইল না।
১আর যখন যর্দ্দনের পশ্চিম দিকের ইমোরীয়দের সমস্ত রাজা ও মহাসমুদ্রের কাছাকাছি কনানীয়দের সমস্ত রাজা শুনতে পেলেন যে, আমরা যতক্ষণ পার না হলাম, ততক্ষণ সদাপ্রভু ইস্রায়েল-সন্তানদের সামনে যর্দ্দনের জল শুকনো করলেন, তখন তাঁদের হৃদয় নরম হল ও ইস্রায়েল-সন্তানদের প্রতি তাঁদের আর সাহস রইল না।
2 সেই সময় সদাপ্রভু যিহোশূয়কে বললেন, “তুমি চকমকি পাথরের কয়েকটি ছুরি তৈরি করো এবং আরেকবার ইস্রায়েলীদের সুন্নত করাও।”
২সেই দিনের সদাপ্রভু যিহোশূয়কে বললেন, “তুমি চকমকি পাথরের কতগুলি ছুরি তৈরী করে দ্বিতীয় বার ইস্রায়েল-সন্তানদের ত্বকছেদ করাও৷”
3 তাই যিহোশূয় চকমকি পাথরের কয়েকটি ছুরি তৈরি করলেন এবং গিবিয়োৎ-হারালোতে ইস্রায়েলীদের সুন্নত করালেন।
৩তাতে যিহোশূয় চকমকি পাথরের ছুরি তৈরী করে ত্বক্প র্বতের সামনে ইস্রায়েল-সন্তানদের ত্বক্ছেদ করলেন।
4 যিহোশূয় এরকম করার কারণ হল এই: যারা মিশর থেকে বের হয়ে এসেছিল—সৈন্যবাহিনীতে যোগদানের উপযোগী বয়ঃপ্রাপ্ত সমস্ত পুরুষ—তারা সবাই মিশর ত্যাগ করে আসার পর পথে মরুপ্রান্তরে মারা গিয়েছিল।
৪যিহোশূয় যে ত্বক্ছেদ করলেন, তার কারণ এই; মিশর থেকে যে সমস্ত পুরুষ যোদ্ধা বেরিয়ে এসেছিল, তারা মিশর থেকে আসার দিনের পথের মধ্যে মরুপ্রান্তে মারা গিয়েছিল।
5 যারা বের হয়ে এসেছিল, তাদের সকলের সুন্নত হয়েছিল, কিন্তু যাদের জন্ম মিশর থেকে যাত্রাপথে মরুপ্রান্তরে হয়েছিল, তাদের সুন্নত করা হয়নি।
৫যারা বেরিয়ে এসেছিল, তারা সবাই ছিন্নত্বক ছিল ঠিকই, কিন্তু মিশর থেকে বেরিয়ে আসার পর যে সকল লোক প্রান্তরে পথের মধ্যে জন্মেছিল, তাদের ত্বক্ছেদ হয়নি।
6 মরুপ্রান্তরে ইস্রায়েলীরা চল্লিশ বছর ইতস্তত ভ্রমণ করল। সেই সময়, সৈন্যবাহিনীতে যোগদান করা সমস্ত পুরুষের—যারা মিশর থেকে বের হয়ে এসেছিল—মৃত্যু হল, যেহেতু তারা সদাপ্রভুর আদেশ পালন করেনি। সদাপ্রভু তাদের কাছে শপথ করে বলেছিলেন যে, যে দুধ ও মধু প্রবাহিত দেশটি তিনি তাদের পূর্বপুরুষদের দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা তারা দেখতেই পাবে না।
৬তার ফলে যে সমস্ত যোদ্ধারা মিশর থেকে বেরিয়ে এসেছিল, তারা সদাপ্রভুর কথা মেনে চলত না, তাই তাদের বিনাশ না হওয়া পর্যন্ত ইস্রায়েল-সন্তানরা চল্লিশ বছর প্রান্তরে ঘুরেছিল; কারণ যে দেশ দিয়ে দুধ ও মধু প্রবাহিত হয় তাদের সেই দেশ দেবার কথা সদাপ্রভু তাদের পূর্বপুরুষদের কাছে শপথ করেছিলেন, সদাপ্রভু তাদেরকে সেই দেশ দেখতে দেবেন না, এমন শপথ তাদের কাছে করেছিলেন।
7 তাই তিনি তাদের স্থানে তাদের সন্তানদের উৎপন্ন করলেন, এবং যিহোশূয় এদেরই সুন্নত করিয়েছিলেন। তাদের তখনও পর্যন্ত সুন্নত হয়নি, যেহেতু পথিমধ্যে তাদের সুন্নত করানো হয়নি।
৭তাদের জায়গায় তাদের যে সন্তানদের তিনি উৎপন্ন করলেন, যিহোশূয় তাদেরই ত্বক্ছেদ করলেন; কারণ তারা অচ্ছিন্নত্বক ছিল; কারণ পথের মধ্যে তাদের ত্বকছেদ করা যায়নি।
8 আর সমগ্র জাতির সুন্নত করানোর পর, যতক্ষণ না তারা সুস্থ হল, তারা সেখানেই শিবিরের মধ্যে অবস্থান করল।
৮সেই সমস্ত লোকের ত্বকছেদ শেষ হওয়ার পর যতদিন তারা সুস্থ না হল, ততদিন শিবিরের মধ্যে নিজের জায়গায় থাকল।
9 পরে সদাপ্রভু যিহোশূয়কে বললেন, “আজ আমি তোমাদের মধ্য থেকে মিশরের দুর্নাম গড়িয়ে দিলাম।” তাই সেই স্থানটির নাম আজও পর্যন্ত গিল্গল বলে আখ্যাত রয়েছে।
৯পরে সদাপ্রভু যিহোশূয়কে বললেন, “আজ আমি তোমাদের থেকে মিশরের বদনাম দূর করলাম”। আর আজ পর্যন্ত সেই জায়গার নাম গিল্গল [গড়ান] হিসাবে পরিচিত হলো।
10 যিরীহোর সমভূমিতে গিল্গলে শিবির স্থাপন করে থাকার সময়, মাসের চতুর্দশ দিনের সন্ধ্যাবেলায় ইস্রায়েলীরা নিস্তারপর্ব উদ্যাপন করল।
১০ইস্রায়েল-সন্তানরা গিল্গলে শিবির স্থাপন করল; আর সেই মাসের চৌদ্দদিনের র দিন সন্ধ্যাবেলা যিরীহোর তলভূমিতে নিস্তারপর্ব্ব পালন করল।
11 নিস্তারপর্বের পরের দিন, ঠিক সেদিনই, তারা সেই দেশে উৎপন্ন শস্যের খানিকটা: খামিরবিহীন রুটি ও সেঁকা শস্য ভোজন করল।
১১সেই নিস্তারপর্ব্বের পরের দিন তারা দেশে উৎপন্ন শস্য ভোজন করতে লাগল, সেদিনের তাড়ীশূন্য রুটি ও ভাজা শস্য ভোজন করল।
12 দেশের এই খাদ্য ভোজন করার পরই মান্না বর্ষণ নিবৃত্ত হল; ইস্রায়েলীদের জন্য কোনও মান্না আর রইল না, কিন্তু সেবছর তারা কনানে উৎপন্ন শস্য ভোজন করল।
১২আর পরের দিন তাদের দেশোৎপন্ন শস্য ভোজনের পরে মান্না পড়া বন্ধ হল; তখন থেকে ইস্রায়েল-সন্তানরা আর মান্না পেল না, কিন্তু সেই বছরে তারা কনান দেশের ফল ভোজন করল।
13 পরে যিহোশূয় যখন যিরীহোর কাছে গেলেন, তিনি উপরে তাকিয়ে খাপ খোলা তরোয়াল হাতে একজন লোককে তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন। যিহোশূয় তাঁর দিকে এগিয়ে গিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনি কি আমাদের পক্ষে, না আমাদের শত্রুদের পক্ষে?”
১৩যিরীহোর কাছে বসবাসের দিন যিহোশূয় চোখ তুলে চাইলেন, আর দেখলেন, এক পুরুষ তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে আছেন, তাঁর হাতে একটি খোলা তলোয়ার; যিহোশূয় তাঁর কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি আমাদের পক্ষে, না কি আমাদের শত্রুদের পক্ষে?
14 “কোনও পক্ষেই নই,” তিনি উত্তর দিলেন, “কিন্তু আমি এখন সদাপ্রভুর সৈন্যদলের সেনাপতিরূপে এসেছি।” তখন যিহোশূয় সম্মান দেখিয়ে মাটিতে মাথা নত করে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমার প্রভু তাঁর এই দাসের জন্য কী খবর এনেছেন?”
১৪তিনি বললেন “না; কিন্তু আমি সদাপ্রভুর সৈন্যের প্রধান, এখনই উপস্থিত হলাম৷” তখন যিহোশূয় ভূমিতে উপুড় হয়ে প্রণাম করলেন ও তাঁকে বললেন, “হে আমার প্রভু, আপনার এ দাসকে কি আদেশ দেন?”
15 সদাপ্রভুর সৈন্যদলের সেনাপতি উত্তর দিলেন, “তোমার চটিজুতো খুলে ফেলো, যেহেতু তুমি যেখানে দাঁড়িয়ে আছ, সেই স্থানটি পবিত্র।” আর যিহোশূয় সেরকমই করলেন।
১৫সদাপ্রভুর সৈন্য দলের প্রধান যিহোশূয়কে বললেন, “তোমার পা থেকে জুতো খুলে ফেল, কারণ যেখানে তুমি দাঁড়িয়ে আছ, ঐ জায়গা পবিত্র।”