< যিহোশূয়ের বই 23 >
1 এরপর বহুদিন পার হয়ে গেল এবং সদাপ্রভু ইস্রায়েলের চারপাশের সমস্ত শত্রু থেকে তাদের বিশ্রাম দিলেন। যিহোশূয় সেই সময় অতি বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন।
১অনেক দিন পরে, যখন সদাপ্রভু ইস্রায়েলকে-তাদের চারদিকের সমস্ত শত্রু থেকে বিশ্রাম দিলেন এবং যিহোশূয় বৃদ্ধ ও গতবয়স্ক হলেন;
2 তিনি ইস্রায়েলীদের সবাইকে—সমস্ত প্রাচীন, নেতা, বিচারক ও কর্মকর্তাদের—ডেকে পাঠালেন ও তিনি তাঁদের বললেন: “আমার অনেক বয়স হয়েছে।
২তখন যিহোশূয় সমস্ত ইস্রায়েলকে, তাদের প্রাচীনবর্গ, নেতাদের, বিচারকর্তাদের ও শাসকদেরকে ডেকে বললেন, “আমি বৃদ্ধ ও গতবয়স্ক হয়েছি।
3 তোমরা নিজেরা দেখেছ, তোমাদের জন্য তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই সমস্ত জাতির প্রতি কী করেছেন; তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুই তোমাদের হয়ে যুদ্ধ করেছেন।
৩তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের জন্য এই সব জাতির প্রতি যে যে কাজ করেছেন, তা তোমরা দেখেছ; কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু নিজেই তোমাদের পক্ষে যুদ্ধ করেছেন।
4 জর্ডন নদী থেকে পশ্চিমে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত যেসব জাতিকে আমি ধ্বংস করেছি ও যারা এখনও বাকি আছে, মনে করে দেখো, তাদের সেই দেশ আমি কীভাবে তোমাদের মধ্যে উত্তরাধিকাররূপে বণ্টন করে দিয়েছি।
৪দেখ, যে যে জাতি অবশিষ্ট আছে এবং যর্দ্দন পর্যন্ত সূর্য্য অস্ত যাওয়ার দিকে মহাসমুদ্র পর্যন্ত যে সমস্ত জাতিকে আমি ধ্বংস করেছি, তাদের দেশ আমি তোমাদের সমস্ত বংশের অধিকারের জন্য গুলিবাঁটের মাধ্যমে ভাগ করেছি।
5 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু স্বয়ং অবশিষ্ট ওই জাতিদের তোমাদের পথ থেকে তাড়িয়ে দেবেন। তিনি তোমাদের সামনে থেকে তাদের বিতাড়িত করবেন, আর তোমরা তাদের দেশের দখল নেবে, যেমন তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
৫আর তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তিনিই তোমাদের সামনে থেকে তাদেরকে ঠেলে ফেলে দেবেন, তোমাদের দৃষ্টি থেকে তাড়িয়ে দেবেন, তাতে তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কথা অনুসারে তাদের দেশ অধিকার করবে।
6 “তোমরা অত্যন্ত শক্তিশালী হও; মোশির বিধানপুস্তকে যা লেখা আছে, সেগুলির সবকিছু সাবধান হয়ে পালন কোরো। তা থেকে ডানদিকে বা বাঁদিকে সরে যেয়ো না।
৬অতএব তোমরা মোশির ব্যবস্থাগ্রন্থে লেখা সমস্ত কথা পালন ও রক্ষা করার জন্য সাহস কর; তাঁর ডান দিকে কিম্বা বাঁ দিকে যেও না।
7 তোমরা এই সমস্ত জাতি, যারা তোমাদের মধ্যে রয়ে গিয়েছে, তাদের সহযোগী হোয়ো না; তাদের দেবতাদের নামে মিনতি বা শপথ কোরো না। তোমরা অবশ্যই তাদের সেবা করবে না অথবা তাদের সামনে প্রণত হবে না।
৭আর এই জাতিগুলির যে অবশিষ্ট লোক তোমাদের মধ্যে আছে, তাদের মধ্যে প্রবেশ করো না, তাদের দেবতাদের নাম নিয়ো না, তাদের নামে শপথ করো না এবং তাদের সেবা ও তাদের প্রণাম করো না;
8 কিন্তু তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে আঁকড়ে ধরে রাখবে, যেমন তোমরা এ পর্যন্ত করে এসেছ।
৮কিন্তু আজ পর্যন্ত যেমন করে আসছ, তেমনই তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুতে আসক্ত থাক।
9 “সদাপ্রভু তোমাদের সামনে মহান ও শক্তিশালী সব জাতিকে তাড়িয়ে দিয়েছেন; আজ পর্যন্ত, তারা কেউই তোমাদের সামনে দাঁড়াতে পারেনি।
৯কারণ সদাপ্রভু তোমাদের সামনে থেকে বড় ও শক্তিশালী জাতিদের তাড়িয়ে দিয়েছেন; কিন্তু তোমাদের সামনে আজ পর্যন্ত কেউ দাঁড়াতে পারে নি।
10 তোমাদের এক একজন, 1,000 জনকে বিতাড়িত করছে, কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁর প্রতিশ্রুতিমতো, তোমাদের জন্য যুদ্ধ করেছেন।
১০তোমাদের একজন হাজার জনকে তাড়িয়ে দেয়; কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদেরকে যেমন বলেছিলেন, সেই অনুসারে তিনি নিজেই তোমাদের পক্ষে যুদ্ধ করছেন।
11 তাই তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভালোবাসার ব্যাপারে তোমরা অত্যন্ত যত্নশীল হবে।
১১অতএব তোমরা তোমাদের প্রাণের বিষয়ে খুব সাবধান হয়ে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে প্রেম করো।
12 “কিন্তু তোমরা যদি পিছনে ফিরে যাও ও তোমাদের মধ্যে অবশিষ্ট এই সমস্ত জাতির সঙ্গে তোমরা কোনোরকম মৈত্রী স্থাপন করো, যদি তাদের সঙ্গে তোমরা পারস্পরিক বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করো ও তাদের সহযোগী হও,
১২নাহলে কোন ভাবে যদি পিছনে ফিরে যাও এবং এই জাতিগুলির শেষ যে লোকেরা তোমাদের মধ্যে অবশিষ্ট আছে, তাদের প্রতি আসক্ত হও, তাদের সঙ্গে বিয়ের সম্বন্ধ স্থাপন কর এবং তাদের সঙ্গে তোমরা ও তোমাদের সঙ্গে তারা মেলামেশা করে;
13 তবে তোমরা নিশ্চয় জানবে, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, আর এসব জাতিকে তোমাদের সামনে থেকে তাড়িয়ে দেবেন না। তারা বরং তোমাদের পক্ষে জাল ও ফাঁদস্বরূপ হবে, তারা তোমাদের পিঠে চাবুকের মতো ও তোমাদের চোখে কাঁটার মতো হবে, যতক্ষণ না তোমরা এই উৎকৃষ্ট দেশ থেকে বিনষ্ট হও, যে দেশ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের দান করেছেন।
১৩তবে নিশ্চয় জানবে, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের দৃষ্টি থেকে এই জাতিগুলিকে আর তাড়িয়ে দেবেন না, কিন্তু তারা তোমাদের ফাঁদ ও জাল স্বরূপ হবে এবং তোমাদের পিঠের চাবুক ও তোমাদের চোখের কাঁটা হয়ে থাকবে, যে পর্যন্ত তোমরা এই উত্তম ভূমি থেকে ধ্বংস না হও, যে ভূমি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদেরকে দিয়েছেন।
14 “এখন সমস্ত পৃথিবীর যে অন্তিম পথ, আমি সেই পথে যাচ্ছি। তোমরা সমস্ত মনেপ্রাণে জানো যে, সদাপ্রভু যে সমস্ত উৎকৃষ্ট প্রতিশ্রুতি তোমাদের দিয়েছিলেন, সেগুলির একটিও ব্যর্থ হয়নি। সব প্রতিশ্রুতিই পূর্ণ হয়েছে; একটিও ব্যর্থ হয়নি।
১৪আর দেখ, সমস্ত জগতের যে পথ, আজও আমি সেই পথে চলেছি; আর তোমরা সমস্ত হৃদয়ে ও সমস্ত প্রাণে এটা জেনে রাখো যে, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের বিষয়ে যত মঙ্গলবাক্য বলেছিলেন, তার মধ্যে একটিও বিফল হয়নি; তোমাদের জন্য সমস্তই সফল হয়েছে, তার একটিও বিফল হয়নি।
15 কিন্তু, যেমন তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রত্যেকটি উৎকৃষ্ট প্রতিশ্রুতি সত্য প্রমাণিত হয়েছে, তেমনই সদাপ্রভু যে সমস্ত মন্দ বিষয়ের ব্যাপারে তোমাদের ভীতিপ্রদর্শন করেছেন, তা তোমাদের উপরে নিয়ে আসবেন, যতক্ষণ না এই যে উৎকৃষ্ট দেশ তিনি তোমাদের দান করেছেন, সেখান থেকে তোমাদের ধ্বংস করেন।
১৫কিন্তু তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের কাছে যে সমস্ত মঙ্গলবাক্য বলেছিলেন, তা যেমন তোমাদের পক্ষে সফল হয়েছিল, সেই রকম সদাপ্রভু তোমাদের প্রতি সমস্ত অমঙ্গলবাক্যও সফল করবেন, যে পর্যন্ত না তিনি তোমাদেরকে এই উত্তম ভূমি থেকে ধ্বংস করেন, যে ভূমি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদেরকে দিয়েছেন।
16 তোমরা যদি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নিয়ম, যা পালন করার আদেশ তিনি তোমাদের দিয়েছেন, তা লঙ্ঘন করো, এবং গিয়ে অন্য দেবদেবীর পুজো করো ও তাদের সামনে প্রণত হও, তবে সদাপ্রভুর ক্রোধ তোমাদের উপরে ফেটে পড়বে এবং তোমরা দ্রুত সেই উৎকৃষ্ট দেশে বিনষ্ট হবে, যে দেশ তিনি তোমাদের দান করেছেন।”
১৬তোমরা যদি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দেওয়া নিয়ম লঙ্ঘন কর, গিয়ে অন্য দেবতাদের সেবা কর ও তাদের কাছে প্রণাম কর, তবে তোমাদের প্রতি সদাপ্রভুর ক্রোধ প্রজ্বলিত হবে এবং তাঁর দেওয়া এই উত্তম দেশ থেকে তোমরা খুব তাড়াতাড়িই ধ্বংস হবে।”