< যিহোশূয়ের বই 2 >
1 পরে নূনের ছেলে যিহোশূয়, গোপনে দুজন গুপ্তচরকে শিটিম থেকে পাঠালেন। তিনি বললেন, “তোমরা যাও, ওই দেশ, বিশেষ করে যিরীহো নগরটি পর্যবেক্ষণ করো।” তাই তারা রাহব নামক এক বেশ্যার বাড়িতে গিয়ে উঠল ও সেখানে অবস্থান করল।
2 যিরীহোর রাজাকে বলা হল, “দেখুন! কয়েকজন ইস্রায়েলী আজ রাতে এখানে দেশ পর্যবেক্ষণ করার জন্য এসেছে।”
3 তাই যিরীহোর রাজা, রাহবের কাছে এই খবর পাঠালেন: “যে লোকেরা তোমার কাছে এসে তোমার ঘরে প্রবেশ করেছে, তাদের বের করে আনো, কারণ তারা সমস্ত দেশ পর্যবেক্ষণ করতে এসেছে।”
4 কিন্তু সেই নারী তাদের দুজনকে লুকিয়ে রেখেছিল। সে বলল, “সত্যিই সেই দুজন লোক আমার কাছে এসেছিল, কিন্তু আমি জানতাম না, তারা কোথা থেকে এসেছিল।
5 সূর্য অস্ত যাওয়ার সময়, যখন নগর-দুয়ার বন্ধ হওয়ার সময় হল, ওই লোকেরা চলে গেল। আমি জানি না, তারা কোন পথে গেল। তাদের পিছনে দ্রুত তাড়া করে যাও। তোমরা হয়তো তাদের নাগাল পাবে।”
6 (কিন্তু সে তাদের ছাদের উপরে নিয়ে গিয়ে, সেখানে ছাদের উপরে তার রাখা মসিনার ডাঁটার পাঁজায় তাদের লুকিয়ে রেখেছিল)
7 তাই ওই লোকেরা সেই গুপ্তচরদের খুঁজে বের করার জন্য তাড়া করে গেল। তারা জর্ডন নদী পার হওয়ার জন্য পারঘাটের অভিমুখে চলে গেল। তারা যাওয়া মাত্র নগর-দুয়ার বন্ধ হল।
8 রাতে, ওই দুজন গুপ্তচর শুতে যাওয়ার আগে, রাহব ছাদে তাদের কাছে গেল
9 ও তাদের বলল, “আমি জানি, সদাপ্রভু এই দেশ তোমাদের হাতে দিয়েছেন। আমাদের মধ্যে এক মহা ভয় এসে পড়েছে। সেই কারণে, তোমাদের জন্য এই দেশে বসবাসকারী প্রত্যেকের হৃদয় ভয়ে গলে গিয়েছে।
10 আমরা শুনেছি, যখন তোমরা মিশর থেকে বের হয়ে এসেছিলে, তোমাদের জন্য সদাপ্রভু কীভাবে লোহিত সাগরের জল শুকিয়ে দিয়েছিলেন। আরও শুনেছি, জর্ডন নদীর পূর্বদিকে, ইমোরীয়দের দুই রাজা সীহোন ও ওগের প্রতি তোমরা কী করেছিলে। তোমরা তাদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছ।
11 আমরা যখন সেকথা শুনলাম, আমাদের হৃদয় গলে গেল, তোমাদের জন্য আমাদের প্রত্যেকের সাহস নষ্ট হয়ে গেল, কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু উপরে স্বর্গের ও নিচে পৃথিবীর ঈশ্বর।
12 “তাই এখন, দয়া করে তোমরা আমার কাছে সদাপ্রভুর নামে শপথ করো যে, তোমরা আমার পরিবারবর্গের উপরে করুণা প্রদর্শন করবে, কারণ আমিও তোমাদের প্রতি করুণা প্রদর্শন করেছি। আমাকে একটি নিশ্চিত চিহ্ন দাও
13 যে, তোমরা আমার বাবা ও মা, আমার ভাইদের ও বোনেদের এবং তাদের সঙ্গে সম্পর্কিত সকলের প্রাণভিক্ষা দেবে ও মৃত্যু থেকে আমাদের রক্ষা করবে।”
14 সেই গুপ্তচরেরা তাকে আশ্বাস দিল, “তোমাদের প্রাণের পরিবর্তে আমাদের প্রাণ যাক। আমরা যা করতে চলেছি, তা যদি তুমি কাউকে না বলো, তবে সদাপ্রভু যখন এই দেশ আমাদের দেবেন, তখন আমরা তোমাদের সঙ্গে বিশ্বস্ততাপূর্বক সদয় ব্যবহার করব।”
15 তাই রাহব জানালার পথে ওই দুজনকে একটি দড়ি দিয়ে নামিয়ে দিল, কারণ যে বাড়িতে সে বসবাস করত তা নগর-প্রাচীরের অংশবিশেষ ছিল।
16 সে তাদের বলল, “তোমরা পাহাড়ে উঠে যাও, যেন তোমাদের পশ্চাদ্ধাবনকারীরা তোমাদের সন্ধান না পায়। তারা ফিরে না আসা পর্যন্ত তিন দিন তোমরা সেখানেই নিজেদের লুকিয়ে রাখো, পরে নিজেদের পথে চলে যাবে।”
17 ওই লোকেরা তাকে বলল, “এই শপথ, যা তুমি আমাদের নিতে বাধ্য করেছ, তা থেকে আমরা মুক্ত হব,
18 যদি আমাদের এই দেশে প্রবেশ করার সময়, যে জানালা দিয়ে তুমি আমাদের নামিয়ে দিলে, তাতে এই টকটকে লাল রংয়ের দড়িটি বেঁধে না রাখো। সেই সঙ্গে তুমি তোমার বাবা ও মা, তোমার ভাইরা ও তাদের সমস্ত পরিজন তোমার এই বাড়িতে এসে আশ্রয় নেবে।
19 যদি কেউ তোমার বাড়ির বাইরে পথে যায়, তার রক্তের দায় তারই মাথায় বর্তাবে; আমরা তার দায় নেব না। কিন্তু তোমার বাড়ির ভিতরে যারা থাকে, তাদের কারও উপরে আমাদের কেউ যদি হাত উঠায়, তার রক্তের দায় আমাদের মাথায় বর্তাবে।
20 কিন্তু আমরা যা করতে চলেছি, তা যদি তুমি প্রকাশ করে দাও, তবে যে শপথে তুমি আমাদের আবদ্ধ করেছ, তা থেকে আমরা মুক্ত হব।”
21 “আমি রাজি,” রাহব উত্তর দিল। “তোমরা যেমন বলেছ, তেমনই হবে।” এভাবে সে তাদের বিদায় দিল, ও তারা চলে গেল। সে তখন ওই টকটকে লাল রংয়ের দড়িটি তার জানালায় বেঁধে দিল।
22 তারা প্রস্থান করে পাহাড়ি এলাকায় চলে গেল। সেখানে তারা তিন দিন অবস্থান করল। তাদের পশ্চাদ্ধাবনকারীরা সমস্ত পথ ধরে তাদের খুঁজে বেড়াল এবং তাদের সন্ধান না পেয়ে নগরে ফিরে গেল।
23 পরে সেই দুজন লোক ফিরে গেল এবং পাহাড়ের পাদদেশে নেমে গিয়ে জর্ডন নদী অতিক্রম করে নূনের ছেলে যিহোশূয়ের কাছে চলে গেল। তাদের প্রতি যা কিছু ঘটেছিল, তারা সে সমস্তই তাঁকে বলল।
24 তারা যিহোশূয়কে বলল, “সদাপ্রভু নিশ্চিতভাবেই এই সমস্ত দেশ আমাদের হাতে দিয়েছেন; আমাদের কারণে সেখানকার সমস্ত মানুষের হৃদয় ভয়ে গলে গিয়েছে।”