যোহন 1
1 আদিতে বাক্য ছিলেন, সেই বাক্য ঈশ্বরের সঙ্গে ছিলেন এবং বাক্যই ঈশ্বর ছিলেন।
[In principio erat Verbum, et Verbum erat apud Deum, et Deus erat Verbum.
2 আদিতে তিনি ঈশ্বরের সঙ্গে ছিলেন।
Hoc erat in principio apud Deum.
3 তাঁর মাধ্যমে সবকিছু সৃষ্ট হয়েছিল; সৃষ্ট কোনো বস্তুই তিনি ব্যতিরেকে সৃষ্ট হয়নি।
Omnia per ipsum facta sunt: et sine ipso factum est nihil, quod factum est.
4 তাঁর মধ্যে জীবন ছিল। সেই জীবন ছিল মানবজাতির জ্যোতি।
In ipso vita erat, et vita erat lux hominum:
5 সেই জ্যোতি অন্ধকারে আলো বিকিরণ করে, কিন্তু অন্ধকার তা উপলব্ধি করতে পারেনি।
et lux in tenebris lucet, et tenebræ eam non comprehenderunt.
6 ঈশ্বর থেকে প্রেরিত এক ব্যক্তির আবির্ভাব হল, তাঁর নাম যোহন।
Fuit homo missus a Deo, cui nomen erat Joannes.
7 সেই জ্যোতির সাক্ষ্য দিতেই সাক্ষীরূপে তাঁর আগমন ঘটেছিল, যেন তাঁর মাধ্যমে মানুষ বিশ্বাস করে।
Hic venit in testimonium ut testimonium perhiberet de lumine, ut omnes crederent per illum.
8 তিনি স্বয়ং সেই জ্যোতি ছিলেন না, কিন্তু সেই জ্যোতির সাক্ষ্য দিতেই তাঁর আবির্ভাব হয়েছিল।
Non erat ille lux, sed ut testimonium perhiberet de lumine.
9 সেই প্রকৃত জ্যোতি, যিনি প্রত্যেক মানুষকে আলো দান করেন, জগতে তাঁর আবির্ভাব হচ্ছিল।
Erat lux vera, quæ illuminat omnem hominem venientem in hunc mundum.
10 তিনি জগতে ছিলেন, জগৎ তাঁর দ্বারা সৃষ্ট হলেও জগৎ তাঁকে চিনল না।
In mundo erat, et mundus per ipsum factus est, et mundus eum non cognovit.
11 তিনি তাঁর আপনজনদের মধ্যে এলেন, কিন্তু যারা তাঁর আপন, তারা তাঁকে গ্রহণ করল না।
In propria venit, et sui eum non receperunt.
12 তবু যতজন তাঁকে গ্রহণ করল, যারা তাঁর নামে বিশ্বাস করল, তাদের তিনি ঈশ্বরের সন্তান হওয়ার অধিকার দিলেন।
Quotquot autem receperunt eum, dedit eis potestatem filios Dei fieri, his qui credunt in nomine ejus:
13 তারা স্বাভাবিকভাবে জাত নয়, মানবিক ইচ্ছা বা পুরুষের ইচ্ছায় নয়, কিন্তু ঈশ্বর থেকে জাত।
qui non ex sanguinibus, neque ex voluntate carnis, neque ex voluntate viri, sed ex Deo nati sunt.
14 সেই বাক্য দেহ ধারণ করলেন এবং আমাদেরই মধ্যে বসবাস করলেন। আমরা তাঁর মহিমা দেখেছি, ঠিক যেমন পিতার নিকট থেকে আগত এক ও অদ্বিতীয় পুত্রের মহিমা। তিনি অনুগ্রহ ও সত্যে পূর্ণ।
Et Verbum caro factum est, et habitavit in nobis: et vidimus gloriam ejus, gloriam quasi unigeniti a Patre plenum gratiæ et veritatis.
15 যোহন তাঁর বিষয়ে সাক্ষ্য দিলেন। তিনি উচ্চকণ্ঠে ঘোষণা করলেন, “ইনিই সেই ব্যক্তি যাঁর সম্পর্কে আমি বলেছিলাম, ‘আমার পরে যিনি আসছেন তিনি আমার অগ্রগণ্য, কারণ আমার আগে থেকেই তিনি বিদ্যমান।’”
Joannes testimonium perhibet de ipso, et clamat dicens: Hic erat quem dixi: Qui post me venturus est, ante me factus est: quia prior me erat.
16 তাঁর অনুগ্রহের পূর্ণতা থেকে আমরা সকলেই একের পর এক আশীর্বাদ লাভ করেছি।
Et de plenitudine ejus nos omnes accepimus, et gratiam pro gratia:
17 মোশির মাধ্যমে বিধান দেওয়া হয়েছিল; যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে অনুগ্রহ ও সত্য উপস্থিত হয়েছে।
quia lex per Moysen data est, gratia et veritas per Jesum Christum facta est.
18 ঈশ্বরকে কেউ কোনোদিন দেখেনি; কিন্তু এক ও অদ্বিতীয় ঈশ্বর, যিনি পিতার পাশে বিরাজ করেন, তিনিই তাঁকে প্রকাশ করেছেন।
Deum nemo vidit umquam: unigenitus Filius, qui est in sinu Patris, ipse enarravit.]
19 জেরুশালেমে ইহুদিরা যখন কয়েকজন যাজক ও লেবীয়কে পাঠিয়ে তাঁর পরিচয় জানতে চাইল, তখন যোহন এভাবে সাক্ষ্য দিলেন।
Et hoc est testimonium Joannis, quando miserunt Judæi ab Jerosolymis sacerdotes et Levitas ad eum ut interrogarent eum: Tu quis es?
20 তিনি স্বীকার করতে দ্বিধাবোধ করলেন না বরং মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করলেন, “আমি সেই খ্রীষ্ট নই।”
Et confessus est, et non negavit, et confessus est: Quia non sum ego Christus.
21 তারা তাঁকে প্রশ্ন করল, “তাহলে আপনি কে? আপনি কি এলিয়?” তিনি বললেন, “না, আমি নই।” “আপনি কি সেই ভাববাদী?” তিনি বললেন, “না।”
Et interrogaverunt eum: Quid ergo? Elias es tu? Et dixit: Non sum. Propheta es tu? Et respondit: Non.
22 শেষে তারা বলল, “তাহলে, কে আপনি? আমাদের বলুন। যারা আমাদের পাঠিয়েছেন, তাদের কাছে উত্তর নিয়ে যেতে হবে। নিজের সম্পর্কে আপনার অভিমত কী?”
Dixerunt ergo ei: Quis es ut responsum demus his qui miserunt nos? quid dicis de teipso?
23 ভাববাদী যিশাইয়ের ভাষায় যোহন উত্তর দিলেন, “আমি মরুপ্রান্তরে এক কণ্ঠস্বর যা আহ্বান করছে, ‘তোমরা প্রভুর জন্য রাজপথগুলি সরল করো।’”
Ait: Ego vox clamantis in deserto: Dirigite viam Domini, sicut dixit Isaias propheta.
24 তখন ফরিশীদের প্রেরিত কয়েকজন লোক
Et qui missi fuerant, erant ex pharisæis.
25 তাঁকে প্রশ্ন করল, “আপনি যদি খ্রীষ্ট, এলিয়, বা সেই ভাববাদী না হন, তাহলে বাপ্তিষ্ম দিচ্ছেন কেন?”
Et interrogaverunt eum, et dixerunt ei: Quid ergo baptizas, si tu non es Christus, neque Elias, neque propheta?
26 যোহন উত্তর দিলেন, “আমি তোমাদের জলে বাপ্তিষ্ম দিচ্ছি ঠিকই, কিন্তু তোমাদেরই মধ্যে এমন একজন দাঁড়িয়ে আছেন, যাঁকে তোমরা জানো না।
Respondit eis Joannes, dicens: Ego baptizo in aqua: medius autem vestrum stetit, quem vos nescitis.
27 তিনি আমার পরে আসছেন। তাঁর চটিজুতোর বাঁধন খোলারও যোগ্যতা আমার নেই।”
Ipse est qui post me venturus est, qui ante me factus est: cujus ego non sum dignus ut solvam ejus corrigiam calceamenti.
28 এই সমস্ত ঘটল জর্ডন নদীর অপর পারে বেথানিতে, যেখানে যোহন লোকেদের বাপ্তিষ্ম দিচ্ছিলেন।
Hæc in Bethania facta sunt trans Jordanem, ubi erat Joannes baptizans.
29 পরের দিন যোহন যীশুকে তাঁর দিকে এগিয়ে আসতে দেখে বললেন, “ওই দেখো ঈশ্বরের মেষশাবক, যিনি জগতের সমস্ত পাপ দূর করেন।
Altera die vidit Joannes Jesum venientem ad se, et ait: Ecce agnus Dei, ecce qui tollit peccatum mundi.
30 ইনিই সেই ব্যক্তি, যাঁর সম্পর্কে আমি বলেছিলাম ‘আমার পরে যিনি আসছেন তিনি আমার চেয়েও মহান, কারণ আমার আগে থেকেই তিনি বিদ্যমান আছেন।’
Hic est de quo dixi: Post me venit vir qui ante me factus est: quia prior me erat:
31 আমি নিজে তাঁকে জানতাম না, কিন্তু তিনি যেন ইস্রায়েলের কাছে প্রকাশিত হন সেজন্যই আমি জলে বাপ্তিষ্ম দিতে এসেছি।”
et ego nesciebam eum, sed ut manifestetur in Israël, propterea veni ego in aqua baptizans.
32 তারপর যোহন এই সাক্ষ্য দিলেন: “আমি পবিত্র আত্মাকে কপোতের মতো স্বর্গ থেকে নেমে আসতে দেখলাম, তিনি তাঁর উপরে অধিষ্ঠান করলেন।
Et testimonium perhibuit Joannes, dicens: Quia vidi Spiritum descendentem quasi columbam de cælo, et mansit super eum.
33 আমি তাঁকে চিনতাম না কিন্তু যিনি আমাকে জলে বাপ্তিষ্ম দিতে পাঠিয়েছেন তিনি বলেছিলেন, ‘আত্মাকে যাঁর উপরে নেমে এসে অধিষ্ঠান করতে দেখবে তিনিই পবিত্র আত্মায় বাপ্তিষ্ম দেবেন।’
Et ego nesciebam eum: sed qui misit me baptizare in aqua, ille mihi dixit: Super quem videris Spiritum descendentem, et manentem super eum, hic est qui baptizat in Spiritu Sancto.
34 আমি দেখেছি ও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, ইনিই ঈশ্বরের পুত্র।”
Et ego vidi: et testimonium perhibui quia hic est Filius Dei.
35 পরের দিন যোহন তাঁর দুজন শিষ্যের সঙ্গে আবার সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
Altera die iterum stabat Joannes, et ex discipulis ejus duo.
36 সেখান দিয়ে যীশুকে যেতে দেখে তিনি বললেন, “ওই দেখো ঈশ্বরের মেষশাবক।”
Et respiciens Jesum ambulantem, dicit: Ecce agnus Dei.
37 তাঁর একথা শুনে শিষ্য দুজন যীশুকে অনুসরণ করলেন।
Et audierunt eum duo discipuli loquentem, et secuti sunt Jesum.
38 তাঁদের অনুসরণ করতে দেখে যীশু ঘুরে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কী চাও?” তাঁরা বললেন, “রব্বি, (এর অর্থ, গুরুমহাশয়) আপনি কোথায় থাকেন?”
Conversus autem Jesus, et videns eos sequentes se, dicit eis: Quid quæritis? Qui dixerunt ei: Rabbi (quod dicitur interpretatum Magister), ubi habitas?
39 “এসো,” তিনি উত্তর দিলেন, “আর তোমরা দেখতে পাবে।” অতএব, তাঁরা গিয়ে দেখলেন তিনি কোথায় থাকেন এবং তাঁরা সেদিন তাঁর সঙ্গেই থাকলেন। তখন সময় ছিল বেলা প্রায় চারটা।
Dicit eis: Venite et videte. Venerunt, et viderunt ubi maneret, et apud eum manserunt die illo: hora autem erat quasi decima.
40 যোহনের কথা শুনে যে দুজন যীশুকে অনুসরণ করেছিলেন, শিমোন পিতরের ভাই আন্দ্রিয় ছিলেন তাদের অন্যতম।
Erat autem Andreas, frater Simonis Petri, unus ex duobus qui audierant a Joanne, et secuti fuerant eum.
41 আন্দ্রিয় প্রথমে তাঁর ভাই শিমোনের খোঁজ করলেন এবং তাঁকে বললেন, “আমরা মশীহের (অর্থাৎ খ্রীষ্টের) সন্ধান পেয়েছি।”
Invenit hic primum fratrem suum Simonem, et dicit ei: Invenimus Messiam (quod est interpretatum Christus).
42 তিনি তাঁকে যীশুর কাছে নিয়ে এলেন। যীশু তাঁর দিকে তাকিয়ে বললেন, “তুমি যোহনের পুত্র শিমোন। তোমাকে কৈফা বলে ডাকা হবে।” (যার অনূদিত অর্থ, পিতর)।
Et adduxit eum ad Jesum. Intuitus autem eum Jesus, dixit: Tu es Simon, filius Jona; tu vocaberis Cephas, quod interpretatur Petrus.
43 পরের দিন যীশু গালীলের উদ্দেশে যাত্রার সিদ্ধান্ত নিলেন। ফিলিপকে দেখতে পেয়ে তিনি বললেন, “আমাকে অনুসরণ করো।”
In crastinum voluit exire in Galilæam, et invenit Philippum. Et dicit ei Jesus: Sequere me.
44 আন্দ্রিয় ও পিতরের মতো ফিলিপও ছিলেন বেথসৈদা নগরের অধিবাসী।
Erat autem Philippus a Bethsaida, civitate Andreæ et Petri.
45 ফিলিপ নথনেলকে দেখতে পেয়ে বললেন, “মোশি তার বিধানপুস্তকে ও ভাববাদীরাও যাঁর বিষয়ে লিখেছেন, আমরা তাঁর সন্ধান পেয়েছি। তিনি নাসরতের যীশু, যোষেফের পুত্র।”
Invenit Philippus Nathanaël, et dicit ei: Quem scripsit Moyses in lege, et prophetæ, invenimus Jesum filium Joseph a Nazareth.
46 নথনেল জিজ্ঞাসা করলেন, “নাসরৎ থেকে কি ভালো কিছু আসতে পারে?” ফিলিপ বললেন, “এসে দেখে যাও।”
Et dixit ei Nathanaël: A Nazareth potest aliquid boni esse? Dicit ei Philippus: Veni et vide.
47 যীশু নথনেলকে আসতে দেখে তাঁর সম্পর্কে বললেন, “ওই দেখো একজন প্রকৃত ইস্রায়েলী, যার মধ্যে কোনও ছলনা নেই।”
Vidit Jesus Nathanaël venientem ad se, et dicit de eo: Ecce vere Israëlita, in quo dolus non est.
48 নথনেল জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনি কী করে আমাকে চিনলেন।” যীশু বললেন, “ফিলিপ তোমাকে ডাকার আগে তুমি যখন ডুমুর গাছের নিচে ছিলে, তখনই আমি তোমাকে দেখেছিলাম।”
Dicit ei Nathanaël: Unde me nosti? Respondit Jesus, et dixit ei: Priusquam te Philippus vocavit, cum esses sub ficu, vidi te.
49 তখন নথনেল বললেন, “রব্বি, আপনিই ঈশ্বরের পুত্র, আপনিই ইস্রায়েলের রাজা।”
Respondit ei Nathanaël, et ait: Rabbi, tu es Filius Dei, tu es rex Israël.
50 যীশু বললেন, “তোমাকে ডুমুর গাছের তলায় দেখেছি একথা বলার জন্য কি তুমি বিশ্বাস করলে! তুমি এর চেয়েও অনেক মহৎ বিষয় দেখতে পাবে।”
Respondit Jesus, et dixit ei: Quia dixi tibi: Vidi te sub ficu, credis; majus his videbis.
51 তিনি আরও বললেন, “আমি তোমাকে সত্যি বলছি, তুমি দেখবে স্বর্গলোক উন্মুক্ত হয়েছে, আর ঈশ্বরের দূতেরা মনুষ্যপুত্রের উপর ওঠানামা করছেন।”
Et dicit ei: Amen, amen dico vobis, videbitis cælum apertum, et angelos Dei ascendentes, et descendentes supra Filium hominis.
