যোহন 7
1 এরপর যীশু গালীল প্রদেশের চতুর্দিকে ঘুরে বেড়াতে লাগলেন, ইচ্ছাপূর্বক তিনি যিহূদিয়া থেকে দূরে রইলেন, কারণ সেখানে ইহুদিরা তাঁর প্রাণনাশের চেষ্টায় ছিল।
Post hæc autem ambulabat Iesus in Galilæam, non enim volebat in Iudæam ambulare: quia quærebant eum Iudæi interficere.
2 কিন্তু ইহুদিদের কুটিরবাস-পর্ব সন্নিকট হলে,
Erat autem in proximo dies festus Iudæorum, Scenopegia.
3 যীশুর ভাইয়েরা তাঁকে বলল, “এ স্থান ছেড়ে তোমার যিহূদিয়ায় যাওয়া উচিত, যেন তোমার শিষ্যেরা তোমার অলৌকিক কাজ দেখতে পায়।
Dixerunt autem ad eum fratres eius: Transi hinc, et vade in Iudæam, ut et discipuli tui videant opera tua, quæ facis.
4 প্রকাশ্যে পরিচিতি লাভ করতে চাইলে কেউ গোপনে কাজ করে না। তুমি যখন এই সমস্ত কাজ করছই, তখন নিজেকে জগতের সামনে প্রকাশ করো।”
Nemo quippe in occulto quid facit, et quærit ipse in palam esse: si hæc facis, manifesta teipsum mundo.
5 এরকম বলার কারণ হল, এমনকি যীশুর নিজের ভাইরাও তাঁকে বিশ্বাস করত না।
Neque enim fratres eius credebant in eum.
6 তখন যীশু তাদের বললেন, “আমার নিরূপিত সময় এখনও আসেনি, তোমাদের পক্ষে যে কোনো সময়ই উপযুক্ত।
Dicit ergo eis Iesus: Tempus meum nondum advenit: tempus autem vestrum semper est paratum.
7 জগৎ তোমাদের ঘৃণা করতে পারে না, কিন্তু আমাকে ঘৃণা করে। কারণ জগৎ যা করে, তা যে মন্দ, তা আমি প্রকাশ করে দিই।
Non potest mundus odisse vos: me autem odit: quia ego testimonium perhibeo de illo quod opera eius mala sunt.
8 তোমরাই পর্বে যোগদান করতে যাও। আমি এখনই পর্বে যাচ্ছি না, কারণ আমার উপযুক্ত সময় এখনও আসেনি।”
Vos ascendite ad diem festum hunc, ego autem non ascendo ad diem festum istum: quia meum tempus nondum impletum est.
9 একথা বলে তিনি গালীলেই থেকে গেলেন।
Hæc cum dixisset, ipse mansit in Galilæa.
10 কিন্তু তাঁর ভাইয়েরা পর্বে চলে গেলে, তিনিও সেখানে গেলেন, তবে প্রকাশ্যে নয়, কিন্তু গোপনে।
Ut autem ascenderunt fratres eius, tunc et ipse ascendit ad diem festum non manifeste, sed quasi in occulto.
11 পর্বের সময় ইহুদিরা যীশুর সন্ধান করছিল এবং জিজ্ঞাসা করছিল, “সেই ব্যক্তি কোথায়?”
Iudæi ergo quærebant eum in die festo, et dicebant: Ubi est ille?
12 ভিড়ের মধ্যে তাঁকে নিয়ে প্রচুর গুঞ্জন চলছিল। কেউ কেউ বলল, “তিনি একজন সৎ মানুষ।” অন্যেরা বলল, “না, সে মানুষকে ভুল পথে চালনা করছে।”
Et murmur multum erat in turba de eo. Quidam enim dicebant: Quia bonus est. Alii autem dicebant: Non, sed seducit turbas.
13 কিন্তু ইহুদিদের ভয়ে কেউ তাঁর সম্পর্কে প্রকাশ্যে কোনো কথা বলল না।
Nemo tamen palam loquebatur de illo propter metum Iudæorum.
14 পর্বের মাঝামাঝি সময়, যীশু মন্দির-প্রাঙ্গণে গিয়ে শিক্ষা দিতে লাগলেন।
Iam autem die festo mediante, ascendit Iesus in templum, et docebat.
15 ইহুদিরা বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞাসা করল, “শিক্ষালাভ না করেও এই মানুষটি কী করে এত শাস্ত্রজ্ঞ হয়ে উঠল?”
Et mirabantur Iudæi, dicentes: Quomodo hic litteras scit, cum non didicerit?
16 যীশু উত্তর দিলেন, “এই শিক্ষা আমার নিজস্ব নয়। যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁর কাছ থেকেই আমি এই শিক্ষা পেয়েছি।
Respondit eis Iesus, et dixit: Mea doctrina non est mea, sed eius, qui misit me.
17 কেউ যদি ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করতে মনস্থির করে, তাহলে সে উপলব্ধি করতে পারবে, আমার এই শিক্ষা ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছে, না আমি নিজে থেকে বলেছি।
Si quis voluerit voluntatem eius facere: cognoscet de doctrina, utrum ex Deo sit, an ego a me ipso loquar.
18 যে নিজের জ্ঞানের কথা বলে, সে তার গৌরবপ্রাপ্তির জন্যই তা করে, কিন্তু যে তার প্রেরণকর্তার গৌরবের জন্য কাজ করে, সে সত্যবাদী পুরুষ। তার মধ্যে কোনো মিথ্যাচার নেই।
Qui a semetipso loquitur, gloriam propriam quærit. Qui autem quærit gloriam eius, qui misit eum, hic verax est, et iniustitia in illo non est.
19 মোশি কি তোমাদের বিধান দেননি? তবু তোমরা একজনও সেই বিধান পালন করো না। তোমরা কেন আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করছ?”
Nonne Moyses dedit vobis legem: et nemo ex vobis facit legem?
20 সব লোক উত্তর দিল, “তোমাকে ভূতে পেয়েছে। কে তোমাকে হত্যার চেষ্টা করছে?”
Quid me quæritis interficere? Respondit turba, et dixit: Dæmonium habes: quis te quæret interficere?
21 যীশু তাদের বললেন, “আমি মাত্র একটি অলৌকিক কাজ করেছি, আর তা দেখেই তোমরা চমৎকৃত হয়েছিলে।
Respondit Iesus, et dixit eis: Unum opus feci, et omnes miramini:
22 মোশি তোমাদের সুন্নত প্রথা দিয়েছিলেন বলে (যদিও প্রকৃতপক্ষে মোশি তা দেননি, কিন্তু পিতৃপুরুষদের সময় থেকে এই প্রথার প্রচলন ছিল), তোমরা বিশ্রামদিনে শিশুকে সুন্নত করে থাকো।
Propterea Moyses dedit vobis circumcisionem: (non quia ex Moyse est, sed ex patribus) et in Sabbato circumciditis hominem.
23 এখন, বিশ্রামদিনে কোনো শিশুকে সুন্নত করলে যদি মোশির বিধান ভাঙা না হয়, তাহলে বিশ্রামদিনে একটি মানুষকে সম্পূর্ণ সুস্থ করেছি বলে তোমরা আমার উপর ক্রুদ্ধ হচ্ছো কেন?
Si circumcisionem accipit homo in Sabbato, ut non solvatur lex Moysi: mihi indignamini quia totum hominem sanum feci in Sabbato?
24 শুধু বাহ্যিক বিষয় দেখে বিচার কোরো না, ন্যায়সংগত বিচার করো।”
Nolite iudicare secundum faciem, sed iustum iudicium iudicate.
25 সেই সময় জেরুশালেমের কিছু লোক জিজ্ঞাসা করতে লাগল, “এই লোকটিকেই কি তারা হত্যা করার চেষ্টা করছেন না?
Dicebant ergo quidam ex Ierosolymis: Nonne hic est, quem quærunt interficere?
26 ইনি তো এখানে প্রকাশ্যে কথা বলছেন, অথচ তারা তাঁকে একটিও কথা বলছেন না। কর্তৃপক্ষ কি সত্যিসত্যিই মেনে নিয়েছেন যে, উনিই সেই খ্রীষ্ট?
Et ecce palam loquitur, et nihil ei dicunt. Numquid vere cognoverunt principes quia hic est Christus?
27 যাই হোক, এই ব্যক্তি কোথা থেকে এসেছেন তা আমরা জানি, কিন্তু খ্রীষ্ট এলে কেউ জানবে না যে কোথা থেকে তাঁর আগমন হয়েছে।”
Sed hunc scimus unde sit: Christus autem cum venerit, nemo scit unde sit.
28 তারপর মন্দির-প্রাঙ্গণে শিক্ষা দেওয়ার সময় যীশু উচ্চকণ্ঠে বললেন, “এটা ঠিক যে, তোমরা আমাকে জানো এবং আমি কোথা থেকে এসেছি, তাও তোমরা জানো। আমি নিজের ইচ্ছানুসারে এখানে আসিনি, কিন্তু যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তিনি সত্যময়। তোমরা তাঁকে জানো না।
Clamabat ergo Iesus in templo docens, et dicens: Et me scitis, et unde sim scitis: et a me ipso non veni, sed est verus, qui misit me, quem vos nescitis.
29 কিন্তু আমি তাঁকে জানি, কারণ আমি তাঁরই কাছ থেকে এসেছি এবং তিনিই আমাকে পাঠিয়েছেন।”
Ego scio eum: quia ab ipso sum, et ipse me misit.
30 একথায় তারা তাঁকে বন্দি করতে চেষ্টা করল, কিন্তু কেউ তাঁর গায়ে হাত দিল না, কারণ তাঁর সময় তখনও উপস্থিত হয়নি।
Quærebant ergo eum apprehendere: et nemo misit in illum manus, quia nondum venerat hora eius.
31 কিন্তু লোকদের মধ্যে অনেকেই তাঁর উপর বিশ্বাস স্থাপন করল। তারা বলল, “খ্রীষ্টের আগমন হলে তিনি কি এই লোকটির চেয়ে আরও বেশি চিহ্নকাজ করে দেখাবেন?”
De turba autem multi crediderunt in eum, et dicebant: Christus cum venerit, numquid plura signa faciet quam quæ hic facit?
32 ফরিশীরা লোকদিগকে তাঁর সম্পর্কে এসব বিষয়ে কানাকানি করতে শুনল। তখন প্রধান যাজকবর্গ এবং ফরিশীরা তাঁকে গ্রেপ্তার করার জন্য মন্দিরের রক্ষীদের পাঠাল।
Audierunt Pharisæi turbam murmurantem de illo hæc: et miserunt principes, et Pharisæi ministros ut apprehenderent eum.
33 যীশু বললেন, “আমি তোমাদের সঙ্গে আর অল্পকাল আছি, তারপর যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, আমি তাঁর কাছে ফিরে যাব।
Dixit ergo eis Iesus: Adhuc modicum tempus vobiscum sum: et vado ad eum, qui me misit.
34 তোমরা আমার সন্ধান করবে, কিন্তু পাবে না। আর আমি যেখানে থাকব, তোমরা সেখানে আসতে পারো না।”
Quæretis me, et non invenietis: et ubi ego sum, vos non potestis venire.
35 তখন ইহুদিরা পরস্পর বলাবলি করল, “এই লোকটি এমন কোথায় যেতে চায় যে আমরা তাঁর সন্ধান পাব না? যেখানে গ্রিকদের মধ্যে আমাদের লোকরা বিক্ষিপ্ত অবস্থায় রয়েছে, ও কি সেখানে গিয়ে গ্রিকদের শিক্ষা দিতে চায়?
Dixerunt ergo Iudæi ad semetipsos: Quo hic iturus est, quia non inveniemus eum? Numquid in dispersionem Gentium iturus est, et docturus Gentes?
36 ‘তোমরা আমাকে খুঁজবে, কিন্তু পাবে না,’ আর, ‘আমি যেখানে থাকব, তোমরা সেখানে আসতে পারো না,’ একথার দ্বারা ও কী বলতে চায়?”
Quis est hic sermo, quem dixit: Quæretis me, et non invenietis: et ubi sum ego, vos non potestis venire?
37 পর্বের শেষ ও প্রধান দিনটিতে যীশু দাঁড়িয়ে উচ্চকণ্ঠে বললেন, “কেউ যদি তৃষ্ণার্ত হয়, সে আমার কাছে এসে পান করুক।
In novissimo autem die magno festivitatis stabat Iesus, et clamabat, dicens: Si quis sitit, veniat ad me, et bibat.
38 আমাকে যে বিশ্বাস করে, শাস্ত্রের বচন অনুসারে, তার অন্তর থেকে জীবন্ত জলের স্রোতোধারা প্রবাহিত হবে।”
Qui credit in me, sicut dicit Scriptura, flumina de ventre eius fluent aquæ vivæ.
39 একথার দ্বারা তিনি সেই পবিত্র আত্মার কথাই বললেন। যারা তাঁকে বিশ্বাস করে, পরবর্তীকালে তারা সেই আত্মা লাভ করবে। যীশু তখনও মহিমান্বিত হননি, তাই সেই সময় পর্যন্ত পবিত্র আত্মা প্রদান করা হয়নি।
Hoc autem dixit de Spiritu, quem accepturi erant credentes in eum: nondum enim erat Spiritus datus, quia Iesus nondum erat glorificatus.
40 তাঁর একথা শুনে কিছু লোক বলল, “নিশ্চয়ই, এই লোকটিই সেই ভাববাদী।”
Ex illa ergo turba cum audissent hos sermones eius, dicebant: Hic est vere Propheta.
41 অন্যেরা বলল, “ইনিই সেই খ্রীষ্ট।” আবার অনেকে জিজ্ঞাসা করল, “গালীল থেকে কি খ্রীষ্টের আগমন হতে পারে?
Alii dicebant: Hic est Christus. Quidam autem dicebant: Numquid a Galilæa venit Christus?
42 শাস্ত্র কি একথা বলে না যে, দাউদ যেখানে বসবাস করতেন, সেই বেথলেহেম নগরে, দাউদের বংশে খ্রীষ্টের আগমন হবে?”
Nonne Scriptura dicit: Quia ex semine David, et de Bethlehem castello, ubi erat David, venit Christus?
43 এভাবে যীশুকে নিয়ে লোকদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিল।
Dissensio itaque facta est in turba propter eum.
44 কয়েকজন তাঁকে গ্রেপ্তার করতে চাইলেও কেউ তাঁর গায়ে হাত দিল না।
Quidam autem ex ipsis volebant apprehendere eum: sed nemo misit super eum manus.
45 মন্দিরের রক্ষীরা অবশেষে প্রধান যাজকদের ও ফরিশীদের কাছে ফিরে গেল। তারা তাদের জিজ্ঞাসা করল, “তোমরা তাকে ধরে নিয়ে এলে না কেন?”
Venerunt ergo ministri ad Pontifices, et Pharisæos. Et dixerunt eis illi: Quare non adduxistis illum?
46 রক্ষীরা বলল, “এই লোকটি যেভাবে কথা বলেন, এ পর্যন্ত আর কেউ সেভাবে কথা বলেননি।”
Responderunt ministri: Numquam sic locutus est homo, sicut hic homo.
47 প্রত্যুত্তরে ফরিশীরা ব্যঙ্গ করে বলল, “তোমরা বলতে চাইছ, লোকটি তোমাদেরও বিভ্রান্ত করেছে।
Responderunt ergo eis Pharisæi: Numquid et vos seducti estis?
48 কোনো নেতা বা কোনো ফরিশী কি তাকে বিশ্বাস করেছে?
Numquid ex principibus aliquis credidit in eum, aut ex Pharisæis?
49 না! কিন্তু এই যেসব লোক, যারা বিধানের কিছুই জানে না, এরা সকলে অভিশপ্ত।”
Sed turba hæc, quæ non novit legem, maledicti sunt.
50 তখন নীকদীম, যিনি আগে যীশুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন এবং যিনি ছিলেন তাদেরই একজন, জিজ্ঞাসা করলেন,
Dixit Nicodemus ad eos, ille, qui venit ad eum nocte, qui unus erat ex ipsis:
51 “কোনো ব্যক্তির কথা প্রথমে না শুনে ও সে কী করে তা না জেনে, তাকে দোষী সাব্যস্ত করা কি আমাদের পক্ষে বিধানসংগত?”
Numquid lex nostra iudicat hominem, nisi prius audierit ab ipso, et cognoverit quid faciat?
52 তারা উত্তর দিল, “তুমিও কি গালীলের লোক? শাস্ত্র খুঁজে দেখো, দেখতে পাবে যে, গালীল থেকে কোনো ভাববাদীই আসতে পারেন না।”
Responderunt, et dixerunt ei: Numquid et tu Galilæus es? Scrutare Scripturas, et vide quia a Galilæa propheta non surgit.
53 তখন তারা প্রত্যেকেই নিজের নিজের ঘরে ফিরে গেল,
Et reversi sunt unusquisque in domum suam.
