< যোহন 16 >
1 “আমি তোমাদের এ সমস্ত কথা বললাম, যেন তোমরা বিপথে না যাও।
2 ওরা সমাজভবন থেকে তোমাদের বহিষ্কার করবে; এমনকি সময় আসছে, যখন তোমাদের যারা হত্যা করবে তারা ভাববে যে তারা ঈশ্বরের উদ্দেশে এক নৈবেদ্য উৎসর্গ করছে।
3 ওরা পিতাকে বা আমাকে জানে না বলেই, এই সমস্ত কাজ করবে।
4 একথা আমি তোমাদের এজন্য বললাম যে, সময় উপস্থিত হলে তোমরা মনে করতে পারো যে, আমি আগেই তোমাদের সতর্ক করেছিলাম। আমি প্রথমে তোমাদের একথা বলিনি, কারণ আমি এতদিন তোমাদের সঙ্গেই ছিলাম।
5 “যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, এখন আমি তাঁরই কাছে যাচ্ছি, অথচ তোমরা কেউই আমাকে জিজ্ঞাসা করছ না, ‘আপনি কোথায় যাচ্ছেন?’
6 এ সমস্ত কথা আমি বলেছি বলেই তোমাদের হৃদয় দুঃখে ভরে গেছে।
7 কিন্তু আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, তোমাদের মঙ্গলের জন্যই আমি চলে যাচ্ছি। আমি না গেলে সেই সহায় তোমাদের কাছে আসবেন না। আমি গিয়ে তাঁকে তোমাদের কাছে পাঠিয়ে দেব।
8 তিনি এসে পাপ, ধার্মিকতা এবং বিচার সম্বন্ধে জগৎকে অভিযুক্ত করবেন:
9 পাপের সম্বন্ধে করবেন, কারণ মানুষ আমাকে বিশ্বাস করে না;
10 ধার্মিকতার সম্বন্ধে করবেন, কারণ আমি পিতার কাছে যাচ্ছি এবং তোমরা আমাকে আর দেখতে পাবে না;
11 আর বিচার সম্বন্ধে করবেন, কারণ এই জগতের অধিপতি এখন দোষী প্রমাণিত হয়েছে।
12 “তোমাদেরকে আমার আরও অনেক কিছু বলার আছে, যা এখন তোমরা সহ্য করতে পারবে না।
13 কিন্তু যখন তিনি, সেই সত্যের আত্মা আসবেন, তিনি তোমাদের সমস্ত সত্যের পথে নিয়ে যাবেন। তিনি নিজে থেকে কিছুই বলবেন না, তিনি যা শুনবেন, তিনি শুধু তাই বলবেন। আর তিনি আগামী দিনের ঘটনার কথাও তোমাদের কাছে প্রকাশ করবেন।
14 তিনি আমাকেই মহিমান্বিত করবেন, কারণ তিনি আমার কাছ থেকে যা গ্রহণ করবেন তা তিনি তোমাদের কাছে প্রকাশ করবেন।
15 যা কিছু পিতার অধিকারভুক্ত, তা আমারই। সেজন্যই আমি বলছি পবিত্র আত্মা আমার কাছ থেকে সেইসব গ্রহণ করে তোমাদের কাছে প্রকাশ করবেন।
16 “কিছুকাল পরে তোমরা আমাকে আর দেখতে পাবে না, কিন্তু তার অল্পকাল পরে তোমরা আমাকে আবার দেখতে পাবে, কারণ আমি পিতার কাছে যাচ্ছি।”
17 তখন তাঁর কয়েকজন শিষ্য পরস্পর বলাবলি করলেন, “‘আর কিছুকাল পরে তোমরা আমাকে দেখতে পাবে না, কিন্তু তার অল্পকাল পরে তোমরা আমাকে আবার দেখতে পাবে,’ আবার বলছেন, ‘কারণ আমি পিতার কাছে যাচ্ছি,’ এসব কথার মাধ্যমে তিনি কী বলতে চাইছেন?”
18 তাঁরা আরও বললেন, “‘অল্পকাল পরে’ বলতে তিনি কী বোঝাতে চেয়েছেন? আমরা তাঁর কথার মানে বুঝতে পারছি না।”
19 যীশু বুঝতে পারলেন, তাঁরা এ সম্পর্কে তাঁকে কিছু জিজ্ঞাসা করতে চান। তাই তিনি বললেন, “‘আর কিছুকাল পরে তোমরা আমাকে দেখতে পাবে না, কিন্তু তার অল্পকাল পরে তোমরা আমাকে দেখতে পাবে,’ আমার একথার অর্থ কি তোমরা পরস্পরের কাছে জানতে চাইছ?
20 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা যখন কাঁদবে ও শোক করবে, জগৎ তখন আনন্দ করবে। তোমরা শোক করবে, কিন্তু তোমাদের শোক আনন্দে রূপান্তরিত হবে।
21 সন্তানের জন্ম দেওয়ার সময় নারী যন্ত্রণায় কাতর হয়ে ওঠে, কারণ তার সময় পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু সন্তানের জন্ম হলে, আনন্দে সে তার যন্ত্রণা ভুলে যায়, কারণ জগতে একটি শিশুর জন্ম হয়েছে।
22 তোমাদের ক্ষেত্রেও তাই। এখন তোমাদের শোকের সময়, কিন্তু আমি তোমাদের সঙ্গে আবার সাক্ষাৎ করব এবং তোমরা আনন্দ করবে। তোমাদের সেই আনন্দ কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।
23 সেদিন তোমরা আমার কাছে আর কিছু চাইবে না। আমি তোমাদের সত্যি বলছি, আমার নামে, আমার পিতার কাছে, তোমরা যা কিছু প্রার্থনা করবে, তা তিনি তোমাদের দান করবেন।
24 এখনও পর্যন্ত তোমরা আমার নামে কোনো কিছুই চাওনি। চাও, তোমরা পাবে এবং তখন তোমাদের আনন্দ পূর্ণ হবে।
25 “আমি রূপকের মাধ্যমে কথা বললেও এমন এক সময় আসছে, যখন আমি আর এমন ভাষা প্রয়োগ করব না। আমার পিতার সম্পর্কে আমি স্পষ্টভাবে কথা বলব।
26 সেদিন তোমরা আমার নামে চাইবে। আমি বলছি না যে, তোমাদের পক্ষে আমি পিতার কাছে অনুরোধ করব,
27 কিন্তু পিতা স্বয়ং তোমাদের প্রেম করেন, কারণ তোমরা আমাকে ভালোবেসেছ এবং বিশ্বাস করেছ যে, আমি পিতার কাছ থেকে এসেছি।
28 আমি পিতার কাছ থেকে এসে এই জগতে প্রবেশ করেছি। এখন আমি জগৎ থেকে বিদায় নিয়ে পিতার কাছে ফিরে যাচ্ছি।”
29 তাঁর শিষ্যেরা তখন বললেন, “এখন আপনি রূপকের সাহায্য না নিয়েই স্পষ্টভাবে কথা বলছেন।
30 এখন আমরা জানতে পারলাম যে, আপনি সবই জানেন এবং আপনাকে প্রশ্ন করার কারও কোনো প্রয়োজন নেই। এর দ্বারাই আমরা বিশ্বাস করছি যে, ঈশ্বরের কাছ থেকে আপনি এসেছেন।”
31 যীশু উত্তর দিলেন, “অবশেষে তোমরা বিশ্বাস করলে!
32 কিন্তু সময় আসছে, বরং এসে পড়েছে, যখন তোমরা ছিন্নভিন্ন হয়ে প্রত্যেকে আপন আপন ঘরের কোণে ফিরে যাবে। তোমরা আমাকে নিঃসঙ্গ অবস্থায় পরিত্যাগ করবে। তবুও আমি নিঃসঙ্গ নই, কারণ আমার পিতা আমার সঙ্গে আছেন।
33 “আমি তোমাদের এসব কথা জানালাম, যেন আমার মধ্যে তোমরা শান্তি লাভ করো। এই জগতে তোমরা সংকটের সম্মুখীন হবে, কিন্তু সাহস করো! আমি এই জগৎকে জয় করেছি।”