< ইয়োবের বিবরণ 6 >
1 পরে ইয়োব উত্তর দিলেন:
2 “শুধু যদি আমার মনস্তাপ মাপা যেত আর আমার সব দুর্দশা দাঁড়িপাল্লায় তোলা যেত!
3 তবে তা নিঃসন্দেহে সমুদ্রের বালুকণাকেও ছাপিয়ে যেত— এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই যে আমার কথাগুলি দুর্দমনীয় হয়েছে।
4 সর্বশক্তিমানের তিরগুলি আমাকে বিদ্ধ করেছে, আমার আত্মা সেগুলির বিষে জর্জরিত; ঈশ্বরের আতঙ্ক আমার বিরুদ্ধে শ্রেণীবদ্ধ হয়েছে।
5 বুনো গাধা ঘাস পেয়ে কি ডাক ছাড়ে? বা বলদ জাব পেয়ে কি গর্জন করে?
6 বিস্বাদ খাদ্য কি বিনা লবণে খাওয়া যায়? বা ম্যালোর রসে কি কোনও স্বাদ আছে?
7 আমি তা স্পর্শ করতে চাই না; এ ধরনের খাদ্য আমাকে অসুস্থ করে তোলে।
8 “আহা, আমি যদি অনুরোধ জানাতে পারতাম, যেন আমার আশা ঈশ্বর পূরণ করেন,
9 যেন ঈশ্বর আমাকে চূর্ণ করতে ইচ্ছুক হয়ে, তাঁর হাত বাড়িয়ে আমার প্রাণ ধ্বংস করেন!
10 তবে তখনও আমি এই সান্ত্বনা পেতাম— নির্মম যন্ত্রণার মধ্যেও আনন্দিত হতাম— যে আমি সেই পবিত্রজনের কথা অগ্রাহ্য করিনি।
11 “আমার কী শক্তি আছে, যে এখনও আমি আশা রাখব? কী সম্ভাবনা আছে, যে আমি ধৈর্যশীল থাকব?
12 পাথরের মতো শক্তি কি আমার আছে? আমার দেহ কি ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরি?
13 নিজেকে সাহায্য করার কোনও শক্তি কি আমার আছে, যেহেতু সাফল্য আমার কাছ থেকে অপবাহিত হয়েছে?
14 “যে কেউ বন্ধুর প্রতি দয়া দেখাতে কার্পণ্য বোধ করে সে সর্বশক্তিমানের ভয় ত্যাগ করে।
15 কিন্তু আমার ভাইরা সবিরাম জলপ্রবাহের মতো অনির্ভরযোগ্য, সেই জলপ্রবাহের মতো যা তখনই উপচে পড়ে
16 যখন গলা বরফের দ্বারা তা কালো হয়ে যায় আর তরল তুষারে ফুলেফেঁপে ওঠে,
17 কিন্তু সুখা মরশুমে তা আর প্রবাহিত হয় না, আর গ্রীষ্মকালে খাত থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়।
18 বণিক দল তাদের গতিপথ ছেড়ে অন্য পথে সরে যায়; তারা পতিত জমিতে গিয়ে বিনষ্ট হয়।
19 টেমার বণিক দল জলের খোঁজ করে, শিবার ভ্রমণকারী বণিকেরা আশা নিয়ে তাকায়।
20 তারা আকুল হয়, কারণ তারা আত্মবিশ্বাসী হয়েছিল; তারা সেখানে পৌঁছায়, শুধু নিরাশ হওয়ার জন্য।
21 এখন তোমরাও প্রমাণ দিয়েছ যে তোমরা কোনও কাজের নও; তোমরা ভয়ংকর কিছু দেখে ভয় পেয়েছ।
22 আমি কি কখনও বলেছি, ‘আমাকে কিছু দাও, তোমাদের ধনসম্পত্তি থেকে আমার জন্য এক মুক্তিপণ দাও,
23 শত্রুর হাত থেকে আমাকে উদ্ধার করো, নিষ্ঠুর লোকের খপ্পর থেকে আমাকে মুক্ত করো’?
24 “আমাকে শিক্ষা দাও, ও আমি শান্ত থাকব; আমায় দেখিয়ে দাও কোথায় আমি ভুল করেছি।
25 সরল কথাবার্তা কতই না যন্ত্রণাদায়ক! কিন্তু তোমাদের যুক্তিতর্ক কী প্রমাণ করে?
26 আমি যা বলেছি তা কি তোমরা শুধরে দিতে চাও, আর আমার মরিয়া কথাবার্তাকে কি বাতাসের মতো গণ্য করতে চাও?
27 পিতৃহীনের জন্য তোমরা এমনকি গুটিকাপাতের দান চালবে আর তোমাদের বন্ধুকে বিক্রি করে দেবে।
28 “কিন্তু এখন দয়া করে আমার দিকে তাকাও। আমি কি তোমাদের মুখের উপরে মিথ্যা কথা বলব?
29 কঠোরতা কমাও, অন্যায় কোরো না; পুনর্বিবেচনা করো, কারণ আমার সততা বিপন্নতার সম্মুখীন।
30 আমার ঠোঁটে কি কোনও দুষ্টতা আছে? আমার মুখ কি বিদ্বেষ ঠাহর করতে পারে না?