< ইয়োবের বিবরণ 19 >
১তখন ইয়োব উত্তর দিলেন এবং বললেন,
2 “তোমরা আর কতক্ষণ আমাকে যন্ত্রণা দেবে ও কথার আঘাত দিয়ে আমাকে পিষে মারবে?
২“কত দিন তোমরা আমার প্রাণকে কষ্ট দেবে এবং কথায় আমায় ভেঙে টুকরো টুকরো করবে?
3 এই নিয়ে দশবার তোমরা আমাকে গঞ্জনা দিয়েছ; নির্লজ্জভাবে আমাকে আক্রমণ করেছ।
৩এই দশবার তোমরা আমার নিন্দা করেছ; তোমরা লজ্জিত নও যে তোমরা আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছ।
4 যদি সত্যিই আমি বিপথে গিয়েছি, তবে আমার ভুলভ্রান্তি শুধু আমারই উদ্বেগের বিষয়।
৪যদি এটা প্রকৃতই সত্য হয় যে আমি ভুল করেছি, আমার ভুল আমার নিজেরই থাকবে।
5 তোমরা যদি সত্যিই আমার উপরে নিজেদের উন্নত করবে ও আমার বিরুদ্ধে আমার এই মানহানিকে ব্যবহার করবে,
৫তোমরা কি সত্যি আমার বিরুদ্ধে নিজেরা দর্প করবে এবং প্রত্যেককে বিশ্বাস করবে যে আমি নিন্দিত।
6 তবে জেনে রেখো যে ঈশ্বরই আমার প্রতি অন্যায় করেছেন ও আমাকে তাঁর জালে বন্দি করেছেন।
৬তাহলে এটা তোমার জানা উচিত যে ঈশ্বর আমায় তাঁর জালে ধরেছেন।
7 “যদিও আমি আর্তনাদ করে বলি, ‘হিংস্রতা!’ তাও আমি কোনও সাড়া পাই না; যদিও আমি সাহায্যের জন্য চিৎকার করি, তাও কোথাও ন্যায়বিচার নেই।
৭দেখ, আমি কাঁদি যে আমি ভুল কাজ করছি, কিন্তু আমি উত্তর পাইনি; আমি কেঁদেছি সাহায্যের জন্য, কিন্তু ন্যায়বিচার পাইনি।
8 তিনি আমার পথ অবরুদ্ধ করেছেন যেন আমি পার হতে না পারি; তিনি আমার পথ অন্ধকারাবৃত করে দিয়েছেন।
৮তিনি আমার রাস্তায় দেয়াল তুলেছেন যাতে আমি যেতে না পারি এবং তিনি আমার রাস্তা অন্ধকার করেছেন।
9 তিনি আমার সম্মান হরণ করেছেন ও আমার মাথা থেকে মুকুট অপসারিত করেছেন।
৯তিনি আমার গৌরব ছিনতাই করেছেন এবং তিনি আমার মাথা থেকে মুকুট নিয়েছেন।
10 আমি সর্বস্বান্ত না হওয়া পর্যন্ত চতুর্দিকে তিনি আমাকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছেন; তিনি আমার আশা এক গাছের মতো উপড়ে ফেলেছেন।
১০তিনি আমায় চারিদিক দিয়ে ভেঙ্গেছেন এবং আমি গেলাম; তিনি আমার আশা গাছের মত উপড়িয়েছেন।
11 তাঁর ক্রোধ আমার বিরুদ্ধে জ্বলে উঠেছে; তিনি আমাকে তাঁর শত্রুদের মধ্যে একজন বলে গণ্য করেছেন।
১১তিনি তাঁর ক্রোধ আমার বিরুদ্ধে জ্বালিয়ে ছিলেন; তিনি আমায় তাঁর একজন বিপক্ষ হাসবে বিবেচনা করেছেন।
12 তাঁর সৈন্যবাহিনী বেগে ধেয়ে আসছে; আমার বিরুদ্ধে তারা এক অবরোধ-পথ নির্মাণ করেছে ও আমার তাঁবুর চারপাশে শিবির স্থাপন করেছে।
১২তাঁর সৈন্যরা একসঙ্গে আসছে; তারা আমার বিরুদ্ধে ঢিবি স্থাপন করে অবরোধ করেছে এবং আমার তাঁবুর চারিদিকে শিবির করেছে।
13 “তিনি আমার কাছ থেকে আমার পরিবারকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন; আমার পরিচিত লোকজনও আমার কাছে পুরোপুরি অপরিচিত হয়ে গিয়েছে।
১৩তিনি আমার ভাইদের আমার কাছ থেকে দূরে রেখেছেন; আমার পরিচিতরা সম্পূর্ণ আমার থেকে বিচ্ছিন্ন।
14 আমার আত্মীয়স্বজন দূরে সরে গিয়েছে; আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাও আমাকে ভুলে গিয়েছে।
১৪আমার আত্মীয়রা আমায় ব্যর্থ করেছে; আমার কাছের বন্ধুরা আমায় ভুলে গেছে।
15 আমার অতিথিরা ও আমার ক্রীতদাসীরা আমাকে এক বিদেশি বলে গণ্য করছে; তারা এমনভাবে আমার দিকে তাকাচ্ছে যেন আমি এক আগন্তুক।
১৫যারা একদিন আমার বাড়িতে অতিথি হয়ে থাকছে এবং আমার দাসীরা আমায় অপরিচিতদের মত বিবেচনা করেছে; আমি তাদের চোখে বিদেশী।
16 আমি আমার দাসকে ডাকছি, কিন্তু সে উত্তর দিচ্ছে না, যদিও নিজের মুখেই আমি তাকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
১৬আমি আমার দাসকে ডাকি, কিন্তু সে আমায় কোন উত্তর দেয় না, যদিও আমি নিজে মুখে তার কাছে অনুনয় করি।
17 আমার নিশ্বাস আমার স্ত্রীর কাছে বিরক্তিকর; আমার নিজের পরিবারের কাছেও আমি ঘৃণিত।
১৭আমার নিঃশ্বাস আমার স্ত্রীর কাছে অপমানকর; আমার আবেদন আমার নিজের ভাই ও বোনের কাছে জঘন্য।
18 ছোটো ছোটো ছেলেরাও আমাকে অবজ্ঞা করে; আমি যখন হাজির হই, তারা আমাকে বিদ্রুপ করে।
১৮এমনকি ছোট বাচ্চারাও আমায় অবজ্ঞা করে; যদি আমি কথা বলার জন্য উঠি, তারা আমার বিরুদ্ধে কথা বলে।
19 আমার সব অন্তরঙ্গ বন্ধু আমাকে ঘৃণা করে; যাদের আমি ভালোবাসি তারাও আমার প্রতি বিমুখ হয়েছে।
১৯আমার সমস্ত পরিচিত বন্ধুরা আমায় ঘৃণার চোখে দেখে; যাদেরকে আমি ভালবাসতাম আমার বিরুদ্ধে গেছে।
20 অস্থিচর্ম ছাড়া আমি আর কিছুই নই; শুধু দাঁতের চর্মবিশিষ্ট হয়েই আমি বেঁচে আছি।
২০আমার হাড় আমার চামড়ায় এবং মাংসে লেগে আছে; আমি শুধু আমার দাঁতের চামড়ার মত হয়ে বেঁচে আছি।
21 “আমার প্রতি দয়া করো, হে আমার বন্ধুরা, দয়া করো, যেহেতু ঈশ্বর হাত দিয়ে আমায় আঘাত করেছেন।
২১আমার বন্ধুরা, আমার প্রতি দয়া কর, আমার প্রতি দয়া কর, কারণ ঈশ্বরের হাত আমায় স্পর্শ করেছে।
22 ঈশ্বরের মতো তোমরাও কেন আমার পশ্চাদ্ধাবন করছ? আমার মাংস কি তোমরা যথেষ্ট পরিমাণে খেয়ে ফেলোনি?
২২কেন তোমরা আমায় অত্যাচার কর যেন তোমরাই ঈশ্বর; আমার মাংস খেয়েও তোমরা কেন তৃপ্ত নও?
23 “হায়, আমার কথাগুলি যদি নথিভুক্ত করে রাখা যেত, যদি সেগুলি এক গোটানো কাগজে লিখে রাখা যেত,
২৩আহা, আমার কথা এখন লেখা হয়েছে! আহা, তারা একটি বইয়ে লিখে রাখছে!
24 যদি সেগুলি লোহার এক যন্ত্র দিয়ে সীসায় খোদাই করে রাখা যেত, বা পাষাণ-পাথরে চিরতরে অন্তর্লিখিত করে রাখা যেত!
২৪আহা, তারা পাথরে লোহার কলম এবং সীসা দিয়ে চিরকালের জন্য লিখে রেখেছে!
25 আমি জানি যে আমার মুক্তিদাতা জীবিত আছেন, ও শেষে তিনি পৃথিবীতে উঠে দাঁড়াবেন।
২৫কিন্তু আমার জন্য, আমি জানি যে আমার উদ্ধারকর্তা জীবিত
26 আর আমার ত্বক নষ্ট হয়ে যাওয়ার পরেও, আমার এই মরদেহেই আমি ঈশ্বরের দর্শন পাব;
২৬আমার চামড়া নষ্ট হওয়ার পরে, এই যে আমার শরীর, ধ্বংস হয়, তারপর আমার মাংসে আমি ঈশ্বরকে দেখব।
27 আমি স্বয়ং তাঁকে দেখব স্বচক্ষে দেখব—আমিই দেখব, আর কেউ নয়। মনে মনে আমার হৃদয় কত আকুলভাবে কামনা করছে!
২৭আমি তাঁকে দেখব, আমি নিজে তাঁকে আমার পাশে দেখব; আমার চোখ তাঁকে অপরিচিতের মত দেখবে না। আমার হৃদয় আমার মধ্যে অচল হয়েছে।
28 “তোমরা যদি বলো, ‘আমরা কীভাবে তাকে জ্বালাতন করব, যেহেতু সমস্যার মূল তার মধ্যেই অবস্থান করছে,’
২৮যদি তুমি বল, ‘কীভাবে আমরা তাকে অত্যাচার করব,’ কারণ তার মধ্যে মূল বিষয় পাওয়া গেছে,
29 তরোয়ালের ভয়ে তোমাদেরই ভীত হওয়া উচিত; যেহেতু ক্রোধ তরোয়াল দ্বারাই দণ্ড নিয়ে আসবে, ও তখনই তোমরা জানতে পারবে যে বিচার আছে।”
২৯তবে তলোয়ারের থেকে ভয় পাও, কারণ ক্রোধ তলোয়ারের শাস্তি নিয়ে আসে, যাতে তোমরা জানতে পার বিচার আছে।”