< যিরমিয়ের বই 31 >

1 সদাপ্রভু বলেন, “সেই সময়ে আমি হব ইস্রায়েলের সমস্ত গোষ্ঠীর ঈশ্বর, আর তারা হবে আমার প্রজা।”
“সেই দিন” এটি সদাপ্রভুর ঘোষণা “আমি ইস্রায়েলের সব গোষ্ঠীরই ঈশ্বর হব এবং তারা আমার প্রজা হবে।”
2 সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “যারা তরোয়ালের আঘাত থেকে রক্ষা পাবে, তারা মরুপ্রান্তরে কৃপা লাভ করবে; আর আমি এসে ইস্রায়েলকে বিশ্রাম দেব।”
সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “লোকেরা, যারা তরোয়ালের থেকে বেঁচে গেছে, তারা মরুপ্রান্তে অনুগ্রহ পেল, ইস্রায়েলকে বিশ্রাম দিতে গেলাম।”
3 বহুদিন পূর্বে, সদাপ্রভু আমাদের সামনে আবির্ভূত হয়ে বলেছিলেন, “আমি এক চিরস্থায়ী প্রেমে তোমাদের প্রেম করেছি; আমি স্নেহময় দয়ায় তোমাদের কাছে টেনেছি।
সদাপ্রভু অতীতে আমার কাছে আবির্ভূত হয়ে বললেন, “ইস্রায়েল, আমি তোমাকে অনন্তকালীন ভালোবাসায় ভালোবেসেছি। তাই আমি তোমাকে বিশ্বস্ত চুক্তি দিয়ে আমার কাছে টেনেছি।
4 আমি তোমাদের আবার গড়ে তুলব এবং হে কুমারী-ইস্রায়েল, তোমরা পুনর্নির্মিত হবে। তোমরা আবার তোমাদের তম্বুরা তুলে নেবে এবং আনন্দকারীদের সঙ্গে নৃত্য করতে যাবে।
কুমারী ইস্রায়েল, আমি তোমাকে আবার গড়ে তুলব, তাতে তুমি গড়ে উঠবে। তুমি আবার তোমার খঞ্জনি নেবে এবং আনন্দের সঙ্গে নাচতে যাবে।
5 তোমরা শমরিয়ার পাহাড়গুলির উপরে আবার দ্রাক্ষাক্ষেত্র প্রস্তুত করবে; কৃষকেরা চারা রোপণ করে তার ফল উপভোগ করবে।
শমরিয়ার পর্বতের উপরে তুমি আবার আঙ্গুর ক্ষেত রোপণ করবে; চাষীরা চাষ করবে এবং তার ফল ভালো কাজে লাগবে।
6 একদিন আসবে যখন ইফ্রয়িমের পাহাড়গুলির উপর থেকে প্রহরী চিৎকার করবে ‘এসো, আমরা সিয়োনে উঠে যাই, আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে।’”
কারণ একটি দিন আসবে, যখন ইফ্রয়িমের পর্বতের উপরে পাহারাদারেরা ঘোষণা করবে, ‘ওঠ, আমরা সিয়োনে সদাপ্রভু, আমাদের ঈশ্বরের কাছে যাই’।”
7 সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “যাকোব কুলের জন্য আনন্দগান করো; সব জাতি থেকে অগ্রগণ্যের জন্য আনন্দধ্বনি করো। তোমাদের প্রশংসা-রব শ্রুত হোক, তোমরা বলো, ‘হে সদাপ্রভু, তোমার প্রজাদের রক্ষা করো, যারা ইস্রায়েলের অবশিষ্টাংশ।’
কারণ সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “তোমরা যাকোবের আনন্দের জন্য চিত্কার কর! জাতির প্রধান লোকেদের জন্য উল্লাসধ্বনি কর! প্রশংসা শোনা যাক, বল, ‘সদাপ্রভু ইস্রায়েলের অবশিষ্ট থাকা লোকেদের, তাঁর প্রজাদের উদ্ধার করেছেন’।
8 দেখো, আমি তাদের উত্তর দিকের দেশ থেকে নিয়ে আসব, পৃথিবীর প্রান্তসীমা থেকে তাদের সংগ্রহ করব। তাদের মধ্যে থাকবে অন্ধ ও খঞ্জেরা, আসন্নপ্রসবা মা ও প্রসববেদনাগ্রস্ত নারীরা; এক মহাসমাজ এখানে ফিরে আসবে।
দেখ, আমি উত্তরের দেশ থেকে তাদের নিয়ে আসব। পৃথিবীর শেষ সীমানা থেকে তাদের জড়ো করব। তাদের মধ্যে থাকবে অন্ধ, খোঁড়া, গর্ভবতী এবং প্রসূতি মহিলা এখানে অনেক অনেক মানুষ ফিরে আসবে।
9 তারা রোদন করতে করতে আসবে; তাদের আমি ফিরিয়ে আনা মাত্র তারা প্রার্থনা করবে। আমি তাদের জলস্রোতের তীরে চালিত করব, তারা চলবে এমন এক সমান পথে, যেখানে হোঁচট খাবে না, কারণ আমিই ইস্রায়েলের বাবা, আর ইফ্রয়িম আমার প্রথমজাত সন্তান।
তারা কাঁদতে কাঁদতে আসবে; তাদের আবেদন মত আমি তাদের পরিচালনা করব। আমি তাদের জলের স্রোতের কাছের সরল পথ দিয়ে চালাবো। সেখানে তারা হোঁচট খাবে না, কারণ আমি ইস্রায়েলের পিতা হবো এবং ইফ্রয়িম আমার প্রথম সন্তান।”
10 “হে জাতিগণ, তোমরা সদাপ্রভুর বাক্য শোনো; দূরবর্তী উপকূলগুলিতে এই কথা ঘোষণা করো, ‘যিনি ইস্রায়েলকে ছিন্নভিন্ন করেছিলেন, তিনি তাদের সংগ্রহ করবেন, এবং পালকের মতো তাঁর পালের উপরে দৃষ্টি রাখবেন।’
১০জাতিসমূহ, সদাপ্রভুর বাক্য শোন। দূরের উপকূলে তা বর্ণনা কর। জাতি, তোমরা বল, “যিনি ইস্রায়েলকে ছড়িয়েছেন, তিনিই তাদের জড়ো করবেন এবং মেষপালকের মত করে তাঁর মেষ রক্ষা করবেন।”
11 কারণ সদাপ্রভু যাকোবকে উদ্ধার করবেন এবং তিনি তাদের চেয়েও শক্তিশালী লোকদের হাত থেকে তাদের মুক্ত করবেন।
১১কারণ সদাপ্রভু যাকোবকে মুক্ত করেছেন এবং তার থেকে শক্তিশালীদের হাত থেকে তাদের ছাড়িয়ে এনেছেন।
12 তারা সিয়োনের উঁচু স্থানগুলিতে এসে আনন্দে চিৎকার করবে; সদাপ্রভুর দেওয়া প্রাচুর্যের কারণে তারা উল্লসিত হবে, শস্যদানা, নতুন দ্রাক্ষারস ও তেল, পালের মেষশাবক ও গোবৎসদের জন্য। তারা হবে উত্তমরূপে সেচিত উদ্যানের মতো, তারা আর দুঃখ পাবে না।
১২তখন তারা আসবে এবং সিয়োনের উঁচু জায়গায় আনন্দ করবে। তারা সদাপ্রভুর মঙ্গলদানে, দানাশষ্যে, নতুন আঙ্গুর রস, তেল, ভেড়া ও গরুর পালের বাচ্চা পেয়ে আনন্দ করবে। কারণ তাদের প্রাণ হবে জলপূর্ণ বাগানের মত এবং তারা আর কখনও দুঃখ অনুভব করবে না।
13 তখন কুমারী-কন্যারা নৃত্য করবে ও আনন্দিত হবে, যুবকেরা ও বৃদ্ধেরাও তা করবে। আমি তাদের বিলাপ আনন্দে পরিণত করব; দুঃখের পরিবর্তে আমি তাদের সান্ত্বনা ও আনন্দ দেব।
১৩তখন কুমারীরা নাচবে এবং যুবক ও বয়ষ্ক লোকেরাও সাথে থাকবে। “আমি তাদের বিলাপ উল্লাসে বদলে দেব; আমি তাদের দয়া করব এবং তাদের দুঃখের পরিবর্তে আনন্দিত করব।
14 প্রাচুর্য দান করে আমি যাজকদের পরিতৃপ্ত করব, আমার প্রজারা আমার প্রাচুর্যে পরিপূর্ণ হবে,” সদাপ্রভু এই কথা বলেন।
১৪তখন আমি যাজকদের প্রাচুর্য্য দিয়ে পরিপূর্ণ করব। আমার প্রজারা আমার মঙ্গল দিয়ে পূর্ণ হবে।” এটা সদাপ্রভুর ঘোষণা।
15 সদাপ্রভু এই কথা বলেন: “রামা-নগরে এক স্বর শোনা যাচ্ছে, হাহাকার ও তীব্র রোদনের শব্দ, রাহেল তার সন্তানদের জন্য কাঁদছেন, তিনি সান্ত্বনা পেতে চান না, কারণ তারা আর বেঁচে নেই।”
১৫সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “রামায় একটি আওয়াজ শোনা যাচ্ছে, হাহাকার ও তিক্ত কান্না। রাহেল তার সন্তানদের জন্য কাঁদছে। সে তাদের ছেড়ে আরাম করতে অস্বীকার করে, কারণ তারা আর বেঁচে নেই।”
16 সদাপ্রভু এই কথা বলেন: “তোমার কান্নার রব থামাও ও তোমার চোখের জল মুছে ফেলো, কারণ তোমার কাজ পুরস্কৃত হবে,” একথা সদাপ্রভু বলেন। “তারা শত্রুদের দেশ থেকে ফিরে আসবে।
১৬সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “তোমার কান্নাকাটি থামাও ও চোখের জল ধরে রাখো; কারণ তোমার কষ্টের পুরষ্কার পাবে।” এটা সদাপ্রভুর ঘোষণা। “তোমার সন্তানেরা শত্রুদের দেশ থেকে ফিরে আসবে।
17 তাই তোমার ভবিষ্যতের আশা আছে,” একথা সদাপ্রভু বলেন। “তোমার ছেলেমেয়েরা স্বদেশে ফিরে যাবে।
১৭তোমার ভবিষ্যতের জন্য আশা আছে।” এটা সদাপ্রভুর ঘোষণা। “তোমার বংশধরেরা তাদের দেশে ফিরে আসবে।
18 “আমি নিশ্চিতরূপে ইফ্রয়িমের কাতরধ্বনি শুনেছি: ‘কোনো অবাধ্য বাছুরের মতো তুমি আমাকে শাসন করেছ, আর আমি শাস্তি পেয়েছি। আমাকে ফিরাও, তাহলে আমি ফিরে আসব, কারণ তুমিই হলে সদাপ্রভু, আমার ঈশ্বর।
১৮আমি অবশ্যই ইফ্রয়িমের দুঃখের কথা শুনেছি, ‘তুমি আমাকে শাস্তি দিয়েছ এবং আমি শাস্তি পেয়েছি। অবাধ্য বাছুরের মত আমাকে ফিরিয়ে আনো এবং আমি ফিরে আসব, কারণ তুমি সদাপ্রভু, আমার ঈশ্বর।
19 আমি বিপথগামী হওয়ার পর, আমি অনুতাপ করেছি; আমি সব বুঝতে পারলে আমার বুক চাপড়ালাম। আমি লজ্জিত ও অপমান বোধ করছিলাম কারণ আমি আমার যৌবনের অপমান সহ্য করেছি।’
১৯কারণ আমি তোমার কাছে ফিরলাম, আমি দুঃখিত হলাম, আমি বাধ্য হবার পর দুঃখে আমার বুকে চাপড় মারলাম। আমি লজ্জিত ও অপমানিত হলাম, কারণ আমার যুবক বয়সের অপরাধ বহন করেছি’।
20 ইফ্রয়িম কি আমার প্রিয় পুত্র নয়? সেই বালক কি আমাকে আনন্দ দান করে না? যদিও আমি প্রায়ই তার বিরুদ্ধে কথা বলি, আমি তবুও তাকে এখনও স্মরণ করি। সেই কারণে আমার হৃদয় তার জন্য ব্যাকুল হয়; তার জন্য আমার রয়েছে বিশাল সহানুভূতি,” সদাপ্রভু এই কথা বলেন।
২০ইফ্রয়িম কি আমার মূল্যবান সন্তান নয়? সে কি আমার প্রিয়, আহ্লাদের সন্তান নয়? কারণ যখনই আমি তার বিরুদ্ধে কথা বলি, আমি অবশ্যই তাকে ভালবেসে মনে করি। এই ভাবে আমার অন্তর ব্যাকুল হয়। আমি অবশ্যই তার উপর দয়া করব।” এটা সদাপ্রভুর ঘোষণা।
21 “তোমরা পথনির্দেশক চিহ্ন স্থাপন করো; পথনির্দেশের ফলকগুলি লাগাও। তোমরা যে রাজপথ ধরে যাবে, সেই পথ স্মরণে রাখো। হে কুমারী-ইস্রায়েল, ফিরে এসো, তোমার নিজের নগরগুলিতে ফিরে এসো।
২১জায়গায় জায়গায় তোমার জন্য পথের চিহ্ন রাখো। তোমার জন্য পথনির্দেশের স্তম্ভ স্থাপন কর। তোমার মনকে সঠিক পথে ধরে রাখো, যে পথে তুমি গিয়েছিলে। কুমারী ইস্রায়েল, ফিরে এস! তোমার এইসব শহরে ফিরে এস।
22 বিপথগামী ইস্রায়েল কন্যা, তুমি কত কাল উদ্দেশ্যহীন ঘুরে বেড়াবে? সদাপ্রভু এক নতুন বিষয় পৃথিবীতে সৃষ্টি করবেন, একজন নারী একজন পুরুষকে রক্ষা করবে।”
২২বিপথগামী মেয়ে, আর কতকাল তুমি ঘুরে বেড়াবে? কারণ সদাপ্রভু পৃথিবীতে একটি নতুন কিছু সৃষ্টি করেছেন: স্ত্রীলোকেরা শক্তিশালী পুরুষদের রক্ষা করার জন্য তাদের চারপাশে ঘুরবে।
23 বাহিনীগণের সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, এই কথা বলেন, “আমি যখন তাদের বন্দিত্ব থেকে ফিরিয়ে আনি, যিহূদা ও তার নগরগুলির লোকেরা পুনরায় এই কথাগুলি ব্যবহার করবে, ‘হে ধার্মিকতার নিবাস, হে পবিত্র পর্বত, সদাপ্রভু তোমাকে আশীর্বাদ করুন।’
২৩বাহিনীগণের সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর এই কথা বলেন, “আমি যখন লোকেদের নিজেদের দেশে ফিরিয়ে আনব, তারা যিহূদা দেশ ও তার শহরগুলিতে এই কথা বলবে, ‘তোমার ন্যায়পরায়ন স্থান, যেখানে তিনি বাস করেন; পবিত্র পাহাড় তোমাকে সদাপ্রভু তোমাকে আশীর্বাদ করুন’।
24 যিহূদা ও তার সমস্ত নগরে, লোকেরা একসঙ্গে বসবাস করবে, কৃষকেরা ও যারা তাদের পশুপাল নিয়ে ঘুরে বেড়ায়, তারা সকলে করবে।
২৪কারণ যিহূদা ও তার সমস্ত শহর একসঙ্গে বাস করবে। চাষীরা ও মেষপালকেরা তাদের পশুপালের সঙ্গে সেখানে থাকবে।
25 আমি ক্লান্তদের সতেজ করব এবং অবসন্ন প্রাণকে তৃপ্ত করব।”
২৫কারণ আমি ক্লান্তদের পান করার জল দেবো এবং আমি প্রত্যেক তৃষ্ণার্ত লোককে তার কষ্ট থেকে তৃপ্ত করব।”
26 এতে আমি জেগে উঠে চারপাশে তাকালাম। আমার নিদ্রা আমার কাছে আরামদায়ক ছিল।
২৬তারপর আমি জেগে উঠলাম এবং আমি বুঝলাম আমার ঘুম সুখদায়ক ছিল।
27 সদাপ্রভু বলেন, “সেই দিনগুলি আসন্ন, যখন আমি মানুষের বংশধর ও পশুদের দিয়ে ইস্রায়েলের কুল ও যিহূদার কুলকে প্রতিষ্ঠিত করব।
২৭সদাপ্রভু বলেন, “দেখ, দিন আসছে, যখন আমি ইস্রায়েল ও যিহূদা দেশে লোকেদের ও পশুদের বীজের মত বপন করব।
28 যেভাবে আমি তাদের উপর দৃষ্টি রেখে তাদের উৎপাটন করেছি ও ছিঁড়ে ফেলেছি, তাদের ছুঁড়ে ফেলেছি, ধ্বংস ও বিপর্যয় নিয়ে এসেছি, সেভাবেই আমি তাদের রোপণ ও গঠন করার প্রতিও দৃষ্টি দেব,” সদাপ্রভু এই কথা বলেন।
২৮তখন এটা ঘটবে, আমি যেমন তাদের উপড়ে, ভেঙে ও ছুঁড়ে ফেলা, ধ্বংস ও বিপদ আনার দিকে খেয়াল রেখেছিলাম; তেমনি করে তাদের গড়ে তোলার ও রোপণ করার দিকেও খেয়াল রাখব।” এটা সদাপ্রভু বলেন।
29 “ওই সমস্ত দিনে লোকেরা আর বলবে না, “‘বাবারা টক আঙুর খেয়েছিলেন, তাই সন্তানদের দাঁত টকে গেছে।’
২৯“সেই দিনের লোকেরা আর কেউ বলবে না, ‘বাবারা টক আঙ্গুর খেয়েছেন, কিন্তু সন্তানদের দাঁত টকে গেছে’।
30 পরিবর্তে, সকলে তাদের নিজের নিজের পাপের জন্যই মরবে; যে টক আঙুর খাবে, তারই দাঁত টকে যাবে।
৩০কারণ প্রত্যেকে নিজের পাপের জন্যই মরবে; যে টক আঙ্গুর খাবে তারই দাঁত টকে যাবে।
31 “সময় আসছে,” সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “যখন আমি ইস্রায়েলের কুল ও যিহূদার বংশধরদের সঙ্গে, একটি নতুন নিয়ম স্থাপন করব।
৩১দেখ, সেই দিন আসছে” সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “যখন আমি ইস্রায়েল ও যিহূদার লোকেদের সঙ্গে একটি নতুন চুক্তি স্থাপন করব।
32 তাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে স্থাপন করা নিয়মের মতো হবে না, যখন আমি তাদের হাত ধরে মিশর থেকে বের করে এনেছিলাম, কারণ তারা আমার নিয়ম ভেঙেছিল, যদিও তাদের কাছে আমি এক স্বামীর মতো ছিলাম,” সদাপ্রভু এই কথা বলেন।
৩২মিশর দেশ থেকে তাদের পূর্বপুরুষদের হাত ধরে বের করে আনবার দিন তাদের জন্য যে চুক্তি স্থাপন করেছিলাম, এটি সেই চুক্তির মত হবে না। সেই দিনের আমি যদিও তাদের স্বামীর মত ছিলাম, তবুও তারা আমার চুক্তি অগ্রাহ্য করেছিল” এটা সদাপ্রভুর ঘোষণা।
33 “সেই সময়ের পরে, আমি ইস্রায়েল কুলের সঙ্গে এই নিয়ম স্থাপন করব,” সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “আমি তাদের মনে আমার বিধান দেব এবং তাদের হৃদয়ে তা লিখে দেব। আমি তাদের ঈশ্বর হব আর তারা আমার প্রজা হবে।
৩৩“কিন্তু সেই দিনের র পর এই চুক্তি আমি ইস্রায়েলীয়দের জন্য স্থাপন করব তা হল” এটা সদাপ্রভুর ঘোষণা: “আমি তাদের মধ্যে আমার ব্যবস্থা রাখব এবং এগুলি তাদের অন্তরে লিখে রাখব, কারণ আমি তাদের ঈশ্বর হবো এবং তারা আমার প্রজা হবে।
34 কোনো মানুষ তার প্রতিবেশীকে শেখাবে না বা একে অপরকে বলবে না, ‘তুমি সদাপ্রভুকে জেনে নাও,’ কারণ নগণ্যতম জন থেকে মহত্তম ব্যক্তি পর্যন্ত, তারা সবাই আমার পরিচয় পাবে,” সদাপ্রভু এই কথা বলেন। “কারণ আমি তাদের পাপ ক্ষমা করব এবং তাদের অনাচারগুলি আর কোনোদিন স্মরণ করব না।”
৩৪তখন কোনো ব্যক্তি তার প্রতিবেশীকে এবং তার ভাইকে শিক্ষা দিয়ে বলবে না, ‘সদাপ্রভুকে জানো!’ কারণ তারা প্রত্যেকে, একদম ছোট থেকে মহান সবাই আমাকে জানবে।” এটা সদাপ্রভুর ঘোষণা। “কারণ আমি তাদের অন্যায় ক্ষমা করব, তাদের পাপ আর কখনও মনে রাখব না।”
35 সেই সদাপ্রভু এই কথা বলেন, যিনি দিনের বেলা সূর্যকে আলো দেওয়ার জন্য নিয়োগ করেন, এবং রাতের বেলায় করেন চাঁদ ও নক্ষত্রপুঞ্জকে, যিনি সমুদ্রকে আলোড়িত করলে তার তরঙ্গমালা গর্জন করে— বাহিনীগণের সদাপ্রভু তাঁর নাম:
৩৫সদাপ্রভু এই কথা বলেন সদাপ্রভু, যিনি দিনের র জন্য সূর্যকে তৈরী করেন আর রাতের জন্য চাঁদ ও তারাকে আলো দেবার জন্য হুকুম দেন। তিনিই একমাত্র, যিনি সমুদ্রকে তোলপাড় করেন যাতে তার ঢেউগুলি গর্জন করে। বাহিনীগণের সদাপ্রভু তাঁর নাম। তিনি এই কথা বলেন,
36 “কেবলমাত্র এসব বিধিবিধান যদি আমার দৃষ্টিপথ থেকে অন্তর্হিত হয়,” সদাপ্রভু ঘোষণা করেন, “তাহলে ইস্রায়েলের বংশধরেরাও আমার সামনে আর জাতিরূপে অবশিষ্ট থাকবে না।”
৩৬“যদি এই স্থায়ী জিনিসগুলি আমার সামনে থেকে অদৃশ্য হয়” সদাপ্রভু এই কথা বলেন “তবে ইস্রায়েলীয়রাও জাতি হিসাবে আমার সামনে থেকে শেষ হয়ে যাবে।”
37 সদাপ্রভু এই কথা বলেন: “যদি ঊর্ধ্বস্থিত আকাশমণ্ডলের পরিমাপ করা যায় এবং পৃথিবীর ভিত্তিমূলগুলির অনুসন্ধান করা যায়, তাহলেই ইস্রায়েলের বংশধরেরা যা কিছু করেছে, তার জন্য আমি তাদের অগ্রাহ্য করব,” সদাপ্রভু এই কথা বলেন।
৩৭সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “যদি উপরের মহাকাশকে মাপা যায় এবং যদি নীচে পৃথিবীর উত্স খুঁজে পাওয়া যায়, তবুও ইস্রায়েলের বংশধরদের তাদের সমস্ত কাজের জন্য আমি অগ্রাহ্য করব।” এটা সদাপ্রভুর ঘোষণা।
38 “সেই দিনগুলি আসন্ন,” সদাপ্রভু ঘোষণা করেন, “যখন হননেলের দুর্গ থেকে কোণের ফটক পর্যন্ত আমার জন্য এই নগরটি পুনর্নির্মিত হবে।
৩৮“দেখ, সেই দিন আসছে” এটা সদাপ্রভুর ঘোষণা, “যখন আমার জন্য হননেল দুর্গ থেকে কোণার ফটক পর্যন্ত এই শহরটি আবার গড়ে তোলা হবে।
39 পরিমাপের দড়ি সেখান থেকে সোজা গারেব পাহাড় পর্যন্ত বিস্তৃত হবে এবং তারপর গোয়ার দিকে ঘুরে যাবে।
৩৯তখন মাপার দড়ি সেখান থেকে সোজা গারেব পাহাড় পর্যন্ত টানা হবে এবং তারপর ঘুরে গোয়াতে যাবে।
40 সমস্ত উপত্যকাটি, যেখানে মৃতদেহ ও ভস্ম নিক্ষেপ করা হয় এবং পূর্বদিকে কিদ্রোণ উপত্যকা থেকে অশ্ব-ফটকের কোণ পর্যন্ত সমস্ত ক্ষেত্রটি সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে পবিত্র হবে। এই নগর আর কখনও উৎপাটিত বা ধ্বংস করা হবে না।”
৪০মৃতদেহ ও ছাই ফেলার উপত্যকা এবং কিদ্রোণ উপত্যকার সমস্ত মাঠ এবং পূর্ব দিকে ঘোড়া ফটকের কোণা পর্যন্ত, সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে আলাদা করা হবে। এটিকে আর কখনও উপড়ে ফেলা বা ছুঁড়ে ফেলা হবে না।”

< যিরমিয়ের বই 31 >