< যিরমিয়ের বই 27 >
1 যিহূদার রাজা যোশিয়ের পুত্র সিদিকিয়ের রাজত্বের প্রথমদিকে, সদাপ্রভুর কাছ থেকে যিরমিয়ের কাছে এই বাক্য উপস্থিত হল:
2 সদাপ্রভু আমাকে এই কথা বললেন: “তুমি চামড়ার ফালি ও কাঠের দণ্ড দিয়ে একটি জোয়াল তৈরি করো এবং তা তোমার ঘাড়ে রাখো।
3 তারপর জেরুশালেমে যিহূদার রাজা সিদিকিয়ের কাছে আসা ইদোম, মোয়াব, অম্মোন, টায়ার ও সীদোনের প্রতিনিধিদের কাছে এই বার্তা পাঠও।
4 তাদের মনিবদের জন্য এই বার্তা পাঠিয়ে তাদের বলো, ‘বাহিনীগণের সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর এই কথা বলেন: “তোমরা তোমাদের মনিবদের কাছে গিয়ে এই কথা বলো:
5 আমার মহাপরাক্রম ও প্রসারিত বাহু দ্বারা আমি পৃথিবী, তার অধিবাসী ও তার উপরে স্থিত পশুদের সৃষ্টি করেছি। আমি যাকে যা দেওয়া উপযুক্ত মনে করেছি, তাকে তা দিয়েছি।
6 এখন আমি তোমাদের সব দেশকে, আমার সেবক, ব্যাবিলনের রাজা নেবুখাদনেজারকে দেব; আমি বন্য পশুদেরও তার বশ্যতাধীন করব।
7 সব জাতি তার, তার পুত্র ও তার পৌত্রের সেবা করবে, যতদিন না তাদের সময় সম্পূর্ণ হয়; তারপর বহু জাতি ও মহান রাজারা তাকে তাদের আয়ত্তাধীনে আনবে।”’
8 “‘“কিন্তু, কোনো জাতি বা রাজ্য যদি ব্যাবিলনের রাজা নেবুখাদনেজারের সেবা না করে কিংবা তার জোয়ালের নিচে কাঁধ না দেয়, আমি তরোয়াল, দুর্ভিক্ষ ও মহমারীর দ্বারা সেই জাতিকে শাস্তি দেব, সদাপ্রভু এই কথা বলেন, যতক্ষণ না সেই জাতিকে আমি তার হাত দিয়ে ধ্বংস করি।
9 তাই তোমাদের ভাববাদীদের, তোমাদের গণকদের, তোমাদের স্বপ্ন অনুবাদকদের, তোমাদের প্রেতমাধ্যম ও তোমাদের জাদুকরদের কথা তোমরা শুনবে না, যারা বলে, ‘তোমাদের ব্যাবিলনের রাজার সেবা করতে হবে না।’
10 তারা তোমাদের কাছে মিথ্যা ভাববাণী বলে, যার ফলে তা কেবলমাত্র তোমাদের স্বদেশ থেকে দূরে অপসারিত করবে; আমি তোমাদের নির্বাসিত করব ও তোমরা বিনষ্ট হবে।
11 কিন্তু কোনো জাতি যদি ব্যাবিলনের রাজার জোয়ালের নিচে কাঁধ পাতে ও তাঁর সেবা করে, সেই দেশকে আমি স্বস্থানে থাকতে দেব, তারা তা কর্ষণ ও চাষ করে সেখানে বসবাস করতে পারবে, সদাপ্রভু এই কথা বলেন।”’”
12 আমি যিহূদার রাজা সিদিকিয়কেও এই একই বাক্য দিয়েছি। আমি বলেছি, “তোমার কাঁধ ব্যাবিলনের রাজার জোয়ালের নিচে পেতে দাও, তাঁর ও তাঁর প্রজাদের সেবা করো, তাহলে তুমি বেঁচে থাকবে।
13 কেন তুমি ও তোমার প্রজারা তরোয়াল, দুর্ভিক্ষ ও মহামারিতে মৃত্যুবরণ করবে, যা দিয়ে সদাপ্রভু সেইসব জাতিকে ভয় দেখিয়েছেন, যারা ব্যাবিলনের রাজার সেবা করবে না?
14 তোমরা ওইসব ভাববাদীর কথা বিশ্বাস কোরো না, যারা তোমাদের বলে, ‘ব্যাবিলনের রাজার সেবা তোমাদের করতে হবে না,’ কারণ তারা তোমাদের কাছে মিথ্যা ভাববাণী বলছে।
15 ‘আমি তাদের প্রেরণ করিনি,’ সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘তারা আমার নামে মিথ্যা ভাববাণী বলছে। সেই কারণে আমি তোমাদের নির্বাসিত করব। এতে তোমরা এবং যারা তোমাদের কাছে ভাববাণী বলে, সেই ভাববাদীরা, উভয়েই বিনষ্ট হবে।’”
16 তারপর আমি যাজকদের ও এই সমস্ত লোককে বললাম, “সদাপ্রভু এই কথা বলেন: ওইসব ভাববাদীর কথা শুনো না, যারা বলে, ‘খুব শীঘ্র সদাপ্রভুর গৃহ থেকে নিয়ে যাওয়া পাত্রগুলি ব্যাবিলন থেকে ফেরত আনা হবে।’ তারা তোমাদের কাছে মিথ্যা ভাববাণী বলেছে।
17 তোমরা তাদের কথা শুনো না। তোমরা ব্যাবিলনের রাজার সেবা করো, তাহলে বেঁচে থাকবে। কেন এই নগর এক ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে?
18 তারা যদি ভাববাদীই হয়ে থাকে এবং সদাপ্রভুর বাক্য তাদের কাছে থাকে, তাহলে তারা বাহিনীগণের সদাপ্রভুর কাছে মিনতি করুক যেন, সদাপ্রভুর গৃহে, যিহূদার রাজার গৃহে ও জেরুশালেমে অবশিষ্ট যেসব জিনিসপত্র আছে, সেগুলি ব্যাবিলনে নিয়ে যাওয়া না হয়।
19 কারণ বাহিনীগণের সদাপ্রভু ওই জিনিসগুলি সম্বন্ধে এই কথা বলেন, যেমন পিতলের স্তম্ভ, সমুদ্রপাত্র, স্থানান্তরযোগ্য তাকগুলি এবং অন্যান্য আসবাব, যেগুলি এই নগরে ছেড়ে যাওয়া হয়েছে,
20 যেগুলি ব্যাবিলনের রাজা নেবুখাদনেজার সঙ্গে নিয়ে যাননি, যখন তিনি যিহূদার রাজা যিহোয়াকীমের পুত্র যিহোয়াখীনকে, যিহূদা ও জেরুশালেমের সমস্ত সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিকে জেরুশালেম থেকে ব্যাবিলনে নিয়ে যান—
21 হ্যাঁ, একথা বাহিনীগণের সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, সদাপ্রভুর গৃহে ও যিহূদার রাজার প্রাসাদে ও জেরুশালেমে যেসব জিনিস অবশিষ্ট রয়ে গেছে, সেগুলির সম্পর্কে বলেন:
22 ‘সেগুলি ব্যাবিলনে নিয়ে যাওয়া হবে এবং সেগুলি সেখানেই থাকবে, যতদিন না আমি সেগুলির জন্য ফিরে আসি,’ সদাপ্রভু এই কথা বলেন। ‘পরে আমি সেগুলি ফিরিয়ে আনব এবং এই স্থানে পুনরায় স্থাপন করব।’”