< যিশাইয় ভাববাদীর বই 63 >
1 ইদোম থেকে আসছেন, উনি কে? বস্রা থেকে রক্তরঞ্জিত পোশাক পরে আসছেন, কে তিনি? বাহারি পোশাক পরিহিত, ইনি কে? কে তিনি আপন শক্তির পূর্ণতায় এগিয়ে আসছেন? “এ আমি, যিনি ধর্মশীলতায় কথা বলেন, যিনি পরিত্রাণ সাধন করার জন্য শক্তিশালী।”
2 আপনার পোশাক রক্তরাঙা কেন, দ্রাক্ষামাড়াইকারী লোকদের মতো কেন?
3 “দ্রাক্ষামাড়াই কুণ্ডে আমি একাই দ্রাক্ষা দলন করেছি; সমস্ত জাতির মধ্য থেকে একজনও আমার সঙ্গে ছিল না। আমি ক্রোধে তাদের পদদলিত করেছি, মহাকোপে তাদের মর্দন করেছি; তাদের রক্তের ছিটে আমার পোশাকে লেগেছে, আমার সমস্ত পরিচ্ছদ আমি কলঙ্কিত করেছি।
4 কারণ প্রতিশোধের দিন আমার মনে ছিল, আর আমার মুক্তিদানের বছর এসে পড়েছে।
5 আমি চেয়ে দেখলাম, কিন্তু আমাকে সাহায্য করার জন্য কেউ নেই, আমি বিস্মিত হলাম যে কেউ আমাকে সমর্থন করেনি; তাই আমার নিজেরই হাত আমার জন্য পরিত্রাণ সাধন করল, আমার নিজের ক্রোধই আমাকে তুলে ধরল।
6 আমি ক্রোধে সব জাতিকে পদদলিত করলাম; আমার কোপবশে আমি তাদের মত্ত করলাম আর তাদের রক্ত মাটিতে ঢেলে দিলাম।”
7 আমি সদাপ্রভুর বিভিন্ন করুণার কীর্তন করব, প্রশংসা করব তাঁর বহু কীর্তির কথা, তিনি আমাদের জন্য যা কিছু করেছেন, তার জন্য, হ্যাঁ, তিনি ইস্রায়েল কুলের জন্য বহু উৎকৃষ্ট কাজ করেছেন, তাঁর মহা করুণা ও বহুবিধ দয়ার গুণে করেছেন।
8 তিনি বলেছেন, “অবশ্যই তারা আমার প্রজা, তারা এমন সন্তান, যারা মিথ্যা আচরণ করবে না”; এভাবেই তিনি তাদের পরিত্রাতা হলেন।
9 তাদের সমস্ত দুর্দশায় তিনি নিজেও দুর্দশাগ্রস্ত হয়েছিলেন, তাঁর সান্নিধ্যে থাকা স্বর্গদূত তাদের রক্ষা করল। তাঁর ভালোবাসা ও করুণাগুণে তিনি তাদের মুক্ত করলেন; পুরাকালের সেই দিনগুলিতে তিনি কোলে তুলে তাদের বহন করতেন।
10 তবুও তারা বিদ্রোহী হল ও তাঁর পবিত্র আত্মাকে দুঃখ দিল। তাই তিনি মুখ ফিরিয়ে তাদের শত্রু হলেন, আর তিনি স্বয়ং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলেন।
11 তারপর তাঁর প্রজারা পুরোনো দিনের কথা স্মরণ করল, মোশি ও তাঁর প্রজাদের সময়কাল— তিনি কোথায়, যিনি সমুদ্রের মধ্য দিয়ে তাদের উত্তীর্ণ করেছিলেন, তাঁর পালের এক রক্ষকের দ্বারা? তিনি কোথায়, যিনি তাদের মধ্যে তাঁর পবিত্র আত্মাকে স্থাপন করেছিলেন?
12 যিনি তাঁর পরাক্রমের মহিমাময় বাহু মোশির ডান হাতরূপে প্রেরণ করেছিলেন, যিনি তাদের সামনে জলরাশিকে বিভক্ত করেছিলেন যেন নিজের জন্য চিরস্থায়ী খ্যাতি লাভ করতে পারেন?
13 খোলা মাঠে ধাবমান অশ্বের মতো, কে সমুদ্রের গভীরে তাদের চালিত করল? তাদের মধ্যে কেউই হোঁচট খায়নি।
14 পশুপাল যেমন সমভূমিতে নেমে যায়, সদাপ্রভুর আত্মা তেমনই তাদের বিশ্রাম দিলেন। তুমি এভাবেই তোমার প্রজাদের পথ প্রদর্শন করেছিলে, যেন তুমি নিজের জন্য এক মহিমান্বিত নাম স্থাপন করতে পারো।
15 তুমি স্বর্গ থেকে নিচে তাকাও ও দেখো, তোমার উন্নত, পবিত্র ও মহিমাপূর্ণ সিংহাসন থেকে দেখো। তোমার সেই উদ্যম ও তোমার পরাক্রম কোথায়? তোমার কোমলতা ও সহানুভূতি আমাদের কাছ থেকে সরিয়ে রেখেছ।
16 কিন্তু তুমি আমাদের বাবা, যদিও অব্রাহাম আমাদের জানেন না, কিংবা ইস্রায়েল আমাদের স্বীকার করে না; তুমি সদাপ্রভু, তুমিই আমাদের বাবা, পুরাকাল থেকে আমাদের মুক্তিদাতা, এই তোমার নাম।
17 হে সদাপ্রভু, কেন তুমি তোমার পথ ছেড়ে আমাদের যেতে দিচ্ছ? কেন তোমার হৃদয় কঠিন করছ, যেন আমরা তোমাকে সম্ভ্রম না করি? তুমি ফিরে এসো তোমার দাসদের অনুরোধে, তোমার অধিকারস্বরূপ গোষ্ঠীসমূহের কারণে।
18 অল্প সময়ের জন্য তোমার প্রজারা তোমার পবিত্রস্থান অধিকারে রেখেছিল, কিন্তু এখন আমাদের শত্রুরা তোমার পবিত্রধাম পদদলিত করেছে।
19 প্রাচীনকাল থেকে আমরা তোমারই; কিন্তু আমরা হয়েছি তাদের মতো, যাদের উপরে তুমি কখনও শাসন করোনি, তাদের মতো, যাদের কখনও তোমার নামে ডাকা হয়নি।