< যিশাইয় ভাববাদীর বই 59 >
1 নিশ্চয়ই সদাপ্রভুর হাত এত ছোটো নয়, যে তিনি ত্রাণ করতে পারেন না, বা তাঁর কান এমন বধির নয়, যে তিনি শুনতে পান না।
১দেখ, সদাপ্রভুর হাত এত ছোট নয় যে, তিনি উদ্ধার করতে পারেন না; তাঁর কানও এত ভারী নয় যে, তিনি শুনতে পান না।
2 কিন্তু তোমাদের অপরাধগুলিই তোমাদের পৃথক করেছে তোমাদের ঈশ্বর থেকে; তোমাদের পাপগুলি তোমাদের কাছ থেকে তাঁর শ্রীমুখকে লুকিয়েছে, তাই তিনি শোনেন না।
২যদিও, তোমাদেরই পাপ সদাপ্রভুর কাছ থেকে তোমাদের আলাদা করে দিয়েছে এবং তোমাদের পাপের জন্যই তিনি তাঁর মুখ তোমাদের কাছ থেকে লুকিয়েছেন; সেইজন্য তিনি শোনেন না।
3 কারণ তোমাদের হাতগুলি রক্তে ও তোমাদের আঙুলগুলি অপরাধে কলুষিত হয়েছে। তোমাদের মুখ মিথ্যা কথা বলেছে, আর তোমাদের জিভ কেবলই দুষ্টতার কথা বলে।
৩তোমাদের হাত রক্তের দাগে ও আঙ্গুল পাপে অশুচি হয়েছে। তোমাদের মুখ মিথ্যা কথা বলে এবং তোমাদের জিভ দুষ্টতার কথা বলে।
4 কেউ ন্যায্য বিচারের আহ্বান করে না; কেউই তার মামলা সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে উপস্থাপিত করে না। তারা অসার তর্কযুক্তিতে নির্ভর করে এবং মিথ্যা কথা বলে; তারা সমস্যা গর্ভে ধারণ করে মন্দতার জন্ম দেয়।
৪কেউ ধার্ম্মিকতায় অভিযোগ করে না, কেউ সততার সঙ্গে আত্মপক্ষ সমর্থন করে না। তারা অসার কথার উপর নির্ভর করে এবং মিথ্যা বলে; তারা দুষ্টতা গর্ভে ধরে আর পাপের জন্ম দেয়।
5 তারা কালসাপের ডিম ফোটায় এবং মাকড়সার জাল বোনে। কেউ যদি তাদের ডিম খায়, সে মারা যাবে, সেই ডিম যখন ফোটে, বিষাক্ত সাপ বের হয়।
৫তারা বিষাক্ত সাপের ডিমে তা দেয় এবং মাকড়সার জাল বোনে। যে কেউ সেই ডিম খায় সে মরে; সেগুলো ফুটে বিষাক্ত সাপ বের হয়।
6 তাদের জালের সুতোয় পোশাক তৈরি হয় না; তাদের তৈরি পোশাকে তারা নিজেদের আবৃত করতে পারে না। তাদের সমস্ত কাজ মন্দ, তাদের হাতে রয়েছে সমস্ত হিংস্রতার কাজ।
৬তাদের জাল পোশাকের জন্য ব্যবহার করা যাবে না; তারা তাদের কাজ দিয়ে নিজেদের ঢাকতে পারে না। তাদের কাজগুলি হল পাপের কাজ এবং অপরাধ তাদের হাতে থাকে।
7 তাদের পাগুলি পাপের পথে দৌড়ায়; নির্দোষের রক্তপাত করার জন্য তারা দ্রুত ছুটে যায়। তাদের সমস্ত চিন্তাধারা কেবলই মন্দ; তাদের পথে পথে রয়েছে ধ্বংস ও বিনাশ।
৭তাদের পা পাপের দিকে দৌড়ে যায় এবং তারা নির্দোষীদের রক্তপাত করবার জন্য দৌড়ে যায়। তাদের সমস্ত চিন্তাই পাপের চিন্তা; অপরাধ ও ধ্বংস তাদের পথ।
8 তারা শান্তির পথ জানে না; তাদের পথে কোনো ন্যায়বিচার নেই। তারা নিজেদের আঁকাবাঁকা পথে ফিরিয়েছে; সেই পথ যে অতিক্রম করে, সে শান্তির সন্ধান পায় না।
৮শান্তির পথ তারা জানে না; তাদের পথে কোন ন্যায়বিচার নেই। তারা নিজেদের পথ আঁকাবাঁকা করেছে; যারা সেই পথে চলে তারা শান্তি কি তা জানে না।
9 তাই ন্যায়বিচার আমাদের কাছ থেকে দূরে থাকে, ধার্মিকতা আমাদের কাছে পৌঁছায় না। আমরা আলোর অপেক্ষা করি, কিন্তু সবই অন্ধকার অপেক্ষা করি উজ্জ্বলতার, কিন্তু গহন ছায়ায় পথ চলি।
৯তাই ন্যায়বিচার আমাদের থেকে দূরে থাকে আর ধার্ম্মিকতা আমাদের কাছে পৌঁছাতে পারে না। আমরা আলোর জন্য অপেক্ষা করে থাকি, কিন্তু অন্ধকার দেখতে পাই; আমরা আলোর খোঁজ করি, কিন্তু অন্ধকারে চলি।
10 দৃষ্টিহীনের মতো আমরা দেওয়াল ধরে পথ হাঁতড়াই, চক্ষুহীন মানুষের মতোই আমরা পথ অনুমান করি। মধ্যাহ্নেই সন্ধ্যা হয়েছে ভেবে আমরা হোঁচট খাই, শক্তিশালী লোকেদের মাঝে, আমরা যেন মৃত মানুষ।
১০আমরা অন্ধের মত দেয়াল হাতড়ে বেড়াই, তাদের মত যাদের চোখ নেই। যেমন সন্ধ্যায় হয় তেমন আমরা দুপুরেই হোঁচট খাই; বলবানদের মধ্যে আমরা মরার মত।
11 আমরা সবাই ভালুকের মতো গর্জন করি; ঘুঘুর মতোই আমরা করুণ আর্তস্বর করি। আমরা ন্যায়বিচারের অপেক্ষা করি, কিন্তু পাই না; মুক্তির প্রতীক্ষায় থাকি, কিন্তু তা দূরে থাকে।
১১আমরা সবাই ভাল্লুকের মত গর্জন করি, পায়রার মত কাতর স্বরে ডাকি; আমরা ন্যায়বিচারের অপেক্ষা করি, কিন্তু পাই না; আমরা উদ্ধার পেতে চাই, কিন্তু তা আমাদের থেকে অনেক দূরে থাকে।
12 কারণ তোমার দৃষ্টিতে আমাদের অপরাধ প্রচুর, আমাদের পাপগুলি আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়। আমাদের অপরাধগুলি আমাদের নিত্যসঙ্গী, আমরা আমাদের সব অধর্ম স্বীকার করি:
১২কারণ আমাদের অনেক অন্যায় তোমার সামনে আছে এবং আমাদের পাপ আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়। কারণ আমাদের পাপ আমাদের সঙ্গে সঙ্গেই রয়েছে এবং আমরা আমাদের পাপ জানি।
13 সেগুলি হল: সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও বিশ্বাসঘাতকতা, আমাদের ঈশ্বরের প্রতি পিঠ প্রদর্শন, অত্যাচার ও বিপ্লব করার জন্য প্ররোচিত করা, আমাদের হৃদয়ে সঞ্চিত মিথ্যা কথা উগরে দেওয়া।
১৩আমরা বিদ্রোহ করেছি, সদাপ্রভুকে অস্বীকার করেছি এবং আমাদের ঈশ্বরকে অনুসরণ করার থেকে দূরে সরে গিয়েছি৷ আমরা অত্যাচার ও বিপথে যাওয়ার কথা বলেছি, অভিযোগ এবং মিথ্যা কথা হৃদয়ে ধারণ করেছি।
14 তাই ন্যায়বিচার পিছু হটে যায়, ধার্মিকতা দূরে দাঁড়িয়ে থাকে; সত্য পথে পথে হোঁচট খেয়েছে, সততা প্রবেশ করতেই পারে না।
১৪সেইজন্য ন্যায়বিচারকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ধার্ম্মিকতা দূরে দাঁড়িয়ে আছে; কারণ সত্য রাস্তায় রাস্তায় হোঁচট খায় এবং সততা প্রবেশ করতে পারে না।
15 সত্যের সন্ধান কোথাও পাওয়া যায় না, আর কেউ যদি মন্দতাকে ত্যাগ করে, সে অত্যাচারের শিকার হয়ে যায়। সেখানে ন্যায়বিচার নেই লক্ষ্য করে সদাপ্রভু অসন্তুষ্ট হলেন।
১৫সততা দূরে চলে গিয়েছে এবং যে কেউ মন্দকে ত্যাগ করে সে অত্যাচারের শিকার হয়। সদাপ্রভু এই সব দেখলেন অসন্তুষ্ট হলেন কারণ সেখানে কোন ন্যায়বিচার নেই।
16 তিনি দেখলেন, সেখানে একজনও নেই, অবাক হলেন দেখে যে, মধ্যস্থতা করার জন্য একজনও নেই; তাই তাঁর নিজেরই বাহু তাঁর হয়ে মুক্তিসাধন করল, তাঁর নিজের ধার্মিকতা তাঁকে তুলে ধরল।
১৬তিনি দেখলেন সেখানে কোনো লোক নেই এবং অবাক হলেন যে, অনুরোধ করার জন্য কেউ নেই। তাই তাঁর নিজের হাত দিয়েই উদ্ধারের কাজ করলেন এবং তাঁর ধার্ম্মিকতা তাঁকে সাহায্য করল।
17 তিনি ধার্মিকতাকে তার বুকপাটারূপে ও মাথার উপরে পরিত্রাণকে শিরস্ত্রাণরূপে পরিধান করলেন; তিনি প্রতিশোধ গ্রহণের সব পোশাক পরে নিলেন, পরিচ্ছদরূপে গায়ে জড়িয়ে নিলেন উদ্যোগ।
১৭তিনি বুক রক্ষার জন্য ধার্ম্মিকতা বর্ম পরলেন এবং তাঁর মাথার ওপরে উদ্ধারের শিরস্ত্রাণ দিলেন। তিনি প্রতিশোধের পোশাক পরলেন ও আগ্রহকে পোশাকের মত করে গায়ে জড়ালেন।
18 তারা যে রকম কাজ করেছে, সেইরকমভাবেই তিনি তাদের প্রতিশোধ দেবেন, শত্রুদের প্রতি ক্রোধ ও বিপক্ষদের প্রতি তাঁর দণ্ড; দ্বীপনিবাসীদের কাছে তিনি তাদের প্রাপ্য দেবেন।
১৮তারা যা করেছে তিনি তাই তাদের ফিরিয়ে দেবেন; তাঁর বিপক্ষদের উপর ক্রোধের বিচার ঢেলে দেবেন, শত্রুদের শাস্তি দেবেন। দূর দেশের লোকদের শাস্তি উপহার হিসাবে তিনি তাদের দেবেন।
19 পশ্চিমদিক থেকে, লোকেরা সদাপ্রভুর নামকে ভয় করবে, সূর্যোদয়ের দিক থেকে, তারা তাঁর মহিমাকে সম্ভ্রম করবে। কারণ তিনি বাঁধ ভাঙা বন্যার মতো আসবেন, যা সদাপ্রভুর নিশ্বাসে প্রবাহিত হবে।
১৯পশ্চিম দিকের লোকেরা সদাপ্রভুর নামকে এবং তাঁর প্রতাপ থেকে সূর্য্য উদয়ের দিকের লোকেরা ভয় পাবে, কারণ তিনি প্রবল বন্যার মত আসবেন, যা সদাপ্রভুর নিঃশ্বাস আমার বিরুদ্ধে পতাকা তুলবেন।
20 “যাকোব কুলে যারা তাদের পাপসমূহের জন্য অনুতপ্ত হবে, মুক্তিদাতা তাদের কাছে সিয়োন থেকে আসবেন,” সদাপ্রভু এই কথা ঘোষণা করেন।
২০এই কথা সদাপ্রভু বলেন, “যাকোবে যারা পাপ থেকে মন ফেরাবে তাদের জন্য মুক্তিদাতা সিয়োনে আসবেন।”
21 “আমার দিক থেকে, এ হল তাদের সঙ্গে কৃত আমার নিয়ম,” সদাপ্রভু এই কথা বলেন। “আমার আত্মা, যা তোমার উপরে আছে এবং আমার বাক্য, যা আমি তোমার মুখে দিয়েছি, তা তোমার মুখ থেকে বা তোমার ছেলেমেয়েদের মুখ থেকে, এবং তাদের বংশধরদের মুখ থেকে, এখন থেকে চিরকাল পর্যন্ত, কখনও দূর করা যাবে না,” সদাপ্রভু এই কথা বলেন।
২১সদাপ্রভু বলেন, “তাদের জন্য তাদের সঙ্গে আমার এই ব্যবস্থা, আমার আত্মা যিনি তোমাদের উপরে আছেন এবং আমার যে কথা আমি তোমাদের মুখে দিয়েছি তা তোমাদের মুখ থেকে চলে যাবে না, তোমাদের ছেলে মেয়েদের ও তাদের বংশধরদের মুখ থেকে চলে যাবে না, সদাপ্রভু বলেন, তা এখন থেকে চিরকাল থাকবে।”