< যিশাইয় ভাববাদীর বই 54 >

1 “গান গাও, ওগো বন্ধ্যা নারী, তুমি, যে কখনও সন্তানের জন্ম দাওনি; সংগীতে ফেটে পড়ো, আনন্দে চিৎকার করো, যারা কখনও প্রসবযন্ত্রণা ভোগ করোনি; কারণ যার স্বামী আছে, সেই নারীর চেয়ে, যে নারী পরিত্যক্তা, তার সন্তান বেশি,” সদাপ্রভু একথা বলেন।
“হে বন্ধ্যা স্ত্রীলোক, যে সন্তানের জন্ম দেয়নি, যার কখনও প্রসব-বেদনা হয়নি, তুমি চিৎকার করে আনন্দ গান কর ও জোরে চিত্কার কর; কারণ বিবাহিত স্ত্রীর সন্তানের থেকে অনাথের সন্তান অনেক।” এটা সদাপ্রভু বলেন।
2 “তোমার তাঁবুর স্থান আরও প্রশস্ত করো, তোমার তাঁবুর পর্দাগুলি আরও প্রসারিত করো, খরচের ভয় কোরো না; তোমার তাঁবুর দড়িগুলি আরও লম্বা করো, তোমার গোঁজগুলি আরও শক্ত করো।
তোমার তাঁবুর জায়গা আরও বাড়াও; তোমার শিবিরের পর্দা আরও দূরে যাক, ব্যয় শঙ্কা কর না; তোমার দড়িগুলো লম্বা কর এবং তোমার গোঁজগুলো শক্ত কর।
3 কারণ তুমি ডান ও বাঁ, উভয় দিকে প্রসারিত হবে; তোমার বংশধরেরা জাতিসমূহকে অধিকারচ্যুত করবে ও তাদের পরিত্যক্ত নগরগুলিতে বসবাস করবে।
কারণ তুমি ডানে ও বাঁয়ে ছড়িয়ে পড়বে এবং তোমার বংশধরেরা অন্যান্য জাতিদের দেশ দখল করবে এবং লোকজনহীন শহরগুলোতে পুনর্বাসিত করবে।
4 “তুমি ভয় পেয়ো না, তুমি লজ্জিত হবে না। তুমি অপমানের ভয় কোরো না; তোমাকে অসম্মানিত করা হবে না। তুমি তোমার যৌবনকালের লজ্জা ভুলে যাবে, তোমার বৈধব্যের দুর্নাম আর কখনও স্মরণ করবে না।
তুমি ভয় কোরো না, কারণ তুমি লজ্জিত হবে না। নিরূত্সাহ হয়ো না, কারণ তুমি অপদস্থ হবে না। তোমার যৌবনের লজ্জা তুমি ভুলে যাবে আর তোমার বিধবার দুর্নাম মনে থাকবে না।
5 কারণ তোমার নির্মাতাই তোমার স্বামী— সর্বশক্তিমান সদাপ্রভু তাঁর নাম— ইস্রায়েলের সেই পবিত্রতম জন তোমার মুক্তিদাতা; তিনি সমস্ত পৃথিবীর ঈশ্বর নামে আখ্যাত।
কারণ তোমার সৃষ্টিকর্তাই তোমার স্বামী, তাঁর নাম বাহিনীদের সদাপ্রভু; ইস্রায়েলের সেই পবিত্রতমই তোমার মুক্তিদাতা। তাঁকেই সমস্ত পৃথিবীর ঈশ্বর বলা হয়।
6 সদাপ্রভু তোমাকে আবার ডাকবেন, তুমি যেন এক পরিত্যক্ত ও আত্মায় বিপর্যস্ত এক স্ত্রীর মতো— এক স্ত্রী, যার যৌবনকালে বিবাহ হয়েছিল কেবলমাত্র অগ্রাহ্য হওয়ার জন্য,” বলেন তোমার ঈশ্বর।
কারণ সদাপ্রভু তোমাকে পরিত্যক্তা ও আত্মায় দুঃখিত স্ত্রীর মত, কিংবা যৌবনকালে দূর করে দেওয়া স্ত্রীর মত ডেকেছেন, এটা তোমার ঈশ্বর বলেন।
7 “ক্ষণিক মুহূর্তের জন্য আমি তোমাকে পরিত্যাগ করেছিলাম, কিন্তু গভীর মমতায় আমি তোমাকে ফিরিয়ে আনব।
“কারণ এক মুহূর্তের জন্য আমি তোমাকে ত্যাগ করেছি, কিন্তু মহা দয়ায় আমি তোমাকে জড়ো করব।
8 ক্রোধের আবেশে আমি তোমার কাছ থেকে ক্ষণিকের জন্য আমার মুখ লুকিয়েছিলাম, কিন্তু চিরন্তন করুণায় আমি তোমার প্রতি মমতা করব,” বলেন সদাপ্রভু, তোমার মুক্তিদাতা।
ক্রোধে মুহূর্তের জন্য তোমার কাছ থেকে আমি মুখ লুকিয়েছিলাম, কিন্তু চিরকাল স্থায়ী দয়াতে আমি তোমার প্রতি করুণা করব,” এটা তোমার মুক্তিদাতা সদাপ্রভু বলেন।
9 “আমার কাছে এ যেন নোহের সময়ের মতো, যখন আমি শপথ করেছিলাম যে, নোহের সময়কালীন জলরাশি আর কখনও পৃথিবীকে প্লাবিত করবে না। সেরকমই, এখন আমি প্রতিজ্ঞা করছি, তোমার উপরে আর ক্রুদ্ধ হব না, তোমাকে আর কখনও তিরস্কার করব না।
“কারণ আমার কাছে এটা নোহের জলসমূহের মত; আমি যেমন শপথ করেছিলাম যে, নোহের দিন কার জলের মত জল আর কখনও পৃথিবীকে অতিক্রম করবে না, তেমনি এই শপথ করলাম যে, তোমার ওপর আর রাগ করব না, তোমাকে আর ভর্ত্সনা করব না।
10 যদিও পর্বতসকল কম্পিত হয়, পাহাড়গুলি অপসারিত হতে থাকে, তবুও তোমার প্রতি আমার অফুরান ভালোবাসা কখনও সরে যাবে না, আমার শান্তিচুক্তিও অপসারিত হবে না,” একথা বলেন সদাপ্রভু, যিনি তোমার প্রতি অনুকম্পা করেন।
১০যদিও পর্বত সরে যাবে আর পাহাড় টলবে, তবুও আমার বিশ্বস্ততার চুক্তি তোমার থেকে সরে যাবে না এবং আমার শান্তির নিয়ম টলবে না।” যিনি তোমার দয়া করেন সেই সদাপ্রভু এটা বলেন।
11 ওহে দুর্দশাগ্রস্ত, ঝড়ে আহত, সান্ত্বনাবিহীন নগরী, আমি ফিরোজা মণি দিয়ে তোমাকে গেঁথে তুলব, তোমার ভিত্তিমূলগুলি হবে নীলকান্তমণির।
১১ওহে দুঃখিনী, ঝড়ে তাড়িত হওয়া ও সান্ত্বনাবিহীনে দেখ, আমি নীলকান্তমণি দিয়ে তোমার পাথর বসাব এবং নীলমনি দিয়ে তোমার ভিত্তিমূল স্থাপন করব।
12 আমি পদ্মরাগমণি দিয়ে তোমার প্রাচীরের আলিসা, তোমার তোরণদ্বারগুলি ঝকমকে মণি দিয়ে গাঁথব, তোমার প্রাচীরগুলি সব বহুমূল্য মণি দিয়ে গাঁথা হবে।
১২পদ্মরাগমণি দিয়ে তোমার চূড়া ও চকমকি মনি দিয়ে তোমার ফটকগুলি ও সুন্দর পাথর দিয়ে তোমার সমস্ত দেয়াল তৈরী করব।
13 তোমার সন্তানেরা সকলে সদাপ্রভুর কাছ থেকে শিক্ষা পাবে, তোমার ছেলেমেয়েরা মহাশান্তি ভোগ করবে।
১৩তোমার সব ছেলেরা সদাপ্রভুর কাছে শিক্ষা পাবে আর তোমার সন্তানদের অনেক শান্তি হবে।
14 ধার্মিকতায় তুমি প্রতিষ্ঠিত হবে: উপদ্রব থেকে তুমি দূরে থাকবে; তোমার ভয় করার কিছু থাকবে না। আতঙ্ক বহুদূরে সরিয়ে ফেলা হবে, তা তোমার কাছে আসবে না।
১৪তুমি ধার্ম্মিকতায় পুনস্থাপিত হবে। তুমি অত্যাচারের থেকে দূরে থাকবে; তুমি ভীত হবে না এবং ত্রাস থেকে দূরে থাকবে এবং তা তোমার কাছে আসবে না।
15 কেউ যদি তোমাকে আক্রমণ করে, তা আমার থেকে হবে না; যে কেউই তোমাকে আক্রমণ করুক, সে তোমার কাছে আত্মসমর্পণ করবে।
১৫দেখ, লোকে যদি দল বাঁধে, তা আমার থেকে হয় না; যে কেউ তোমার বিরুদ্ধে দল বাঁধে, সে তোমার জন্য পড়ে যাবে।
16 “দেখো, আমি সেই কর্মকারকে সৃষ্টি করেছি, যে হাপরে বাতাস দিয়ে অঙ্গার প্রজ্বলিত করে ও কাজের উপযুক্ত এক অস্ত্র গঠন করে। বিনাশককে ধ্বংস করার জন্য আমিই সৃষ্টি করেছি;
১৬“দেখ, যে কামার জ্বলন্ত কয়লায় বাতাস দেয় এবং তার কাজের জন্য অস্ত্র তৈরী করে আমিই তার সৃষ্টি করেছি, ধ্বংস করার জন্য ধ্বংসকারীকে আমিই সৃষ্টি করেছি।
17 তোমার বিরুদ্ধে গঠিত কোনো অস্ত্র সফল হবে না, তোমার বিরুদ্ধে প্রত্যেক জিহ্বার অভিযোগ তুমি খণ্ডন করবে। সদাপ্রভুর দাসেদের এই হল অধিকার, আমার কাছে তারা এভাবেই নির্দোষ প্রতিপন্ন হবে,” সদাপ্রভু এই কথা ঘোষণা করেন।
১৭যে কোনো অস্ত্র তোমার বিরুদ্ধে তৈরী হয় তা সফল হবে না; তুমি প্রত্যেককে দোষী করবে যারা তোমাকে দোষারোপ করে। এই হল সদাপ্রভুর দাসদের অধিকার এবং আমার থেকে তাদের এই ধার্ম্মিকতা লাভ হয়,” এটা সদাপ্রভু বলেন।

< যিশাইয় ভাববাদীর বই 54 >

A Dove is Sent Forth from the Ark
A Dove is Sent Forth from the Ark