< যিশাইয় ভাববাদীর বই 41 >

1 “দ্বীপনিবাসী তোমরা, আমার সামনে নীরব হও! জাতিসমূহ তাদের শক্তি নবায়িত করুক! তারা সামনে এগিয়ে এসে কথা বলুক; এসো, আমরা বিচারের স্থানে পরস্পর মিলিত হই।
“হে উপকূলগুলো, তোমরা আমার সামনে চুপ করে থাক। জাতিগুলো নতুন করে শক্তি পাক; তোমরা এগিয়ে এস এবং বল। আমরা একটি বিতর্কের বিচারের জন্য একসঙ্গে জড়ো হই।
2 “পূর্বদিক থেকে একজনকে কে উত্তেজিত করেছে, যাকে তাঁর সেবার জন্য ন্যায়সংগতভাবে আহ্বান করা হয়েছে? তিনি জাতিসমূহকে তাঁর হাতে সমর্পণ করেন এবং রাজাদের তাঁর সামনে অবনত করেন। তাঁর তরোয়ালের দ্বারা তিনি তাদের ধুলায় মেশান, তাঁর ধনুকের দ্বারা উড়ে যাওয়া তুষের মতো করেন।
কে পূর্ব দিক থেকে এক জনকে উত্তেজিত করল? কে তাকে ধার্ম্মিকতায় ডেকে তার অনুগামী করেন? তিনি তার হাতে জাতিদের তুলে দেন এবং রাজাদের পরাস্ত করতে তাকে সক্ষম করে তোলেন। তার তরোয়াল দিয়ে সে তাদের ধূলোর মত করবে আর তার ধনুকের সঙ্গে বায়ুতাড়িত খড়ের মত করেন।
3 তিনি তাদের পশ্চাদ্ধাবন করে অক্ষত গমন করেন, এমন এক পথে, যেখানে তাঁর চরণ পূর্বে গমন করেনি।
সে তাদের তাড়া করবে এবং নিরাপদে অতিক্রম করবে, এক দ্রুতগতির পথের দ্বারা যে পথ তারা মোটেই ছুঁইনি।
4 কে এই কাজ করেছেন এবং তা করে গিয়েছেন, প্রথম থেকেই প্রজন্ম পরম্পরাকে কে আহ্বান করেছেন? এ আমি, সেই সদাপ্রভু, প্রথম ও শেষ, কেবলমাত্র আমিই তিনি।”
কে এই কাজ করেছেন? কার দ্বারা এই কাজ সম্পন্ন হয়েছে? এক বংশের শুরু থেকে কে ডাকেন? আমি, সদাপ্রভু, প্রথম এবং শেষ দিনের র লোকদের সঙ্গে, আমিই তিনি।
5 দ্বীপসমূহ তা দেখেছে এবং ভয় পায়; পৃথিবীর প্রান্তসীমাসকল ভয়ে কম্পিত হয়। তারা সম্মুখীন হয় ও এগিয়ে আসে;
উপকূলগুলি দেখল এবং ভীত হল; পৃথিবীর শেষ সীমার লোকেরা কাঁপল। তারা কাছাকাছি আসল;
6 একে অপরকে সাহায্য করে এবং তার প্রতিবেশীকে বলে, “বলবান হও!”
প্রত্যেকে তার প্রতিবেশীকে সাহায্য করল এবং প্রত্যেকে একজন অন্য জনকে বলল, ‘সাহস কর।’
7 শিল্পকর স্বর্ণকারকে উৎসাহ দেয়, আর যে হাতুড়ি দিয়ে সমান করে, সে নেহাইয়ের উপরে যন্ত্রণাকারীকে উদ্দীপিত করে। সে জোড় দেওয়া ধাতুর বিষয়ে বলে, “ভালো হয়েছে।” সে প্রতিমায় পেরেক ঠোকে, যেন তা নড়ে না যায়।
তাই ছুতোরমিস্ত্রি স্বর্ণকারকে উৎসাহ দিল; হাতুড়ী দিয়ে সমানকারী লোক নেহাইয়ের ওপর আঘাতকারীকে জোড়ার বিষয়ে বলল, ‘ভাল হয়েছে।’ তারা পেরেক দিয়ে দৃঢ় করল যেন সেটা পড়ে না যায়।
8 “কিন্তু তুমি, আমার দাস ইস্রায়েল, তুমি যাকোব, যাকে আমি মনোনীত করেছি, তুমি আমার বন্ধু অব্রাহামের বংশ,
কিন্তু হে আমার দাস ইস্রায়েল, আমার মনোনীত যাকোব, আমার বন্ধু অব্রাহামের বংশ,
9 আমি তোমাকে পৃথিবীর প্রান্তসীমা থেকে এনেছি, তার সুদূরতম প্রান্ত থেকে আমি তোমাকে আহ্বান করেছি। আমি বলেছি, ‘তুমি আমার দাস’; আমি তোমাকে মনোনীত করেছি, অগ্রাহ্য করিনি।
আমি তোমাকে পৃথিবীর শেষ সীমা থেকে এনেছি, তোমাকে সবচেয়ে দূরের জায়গা থেকে ডেকেছি এবং আমি বলেছি, ‘তুমি আমার দাস;’ আমি তোমাকে মনোনীত করেছি এবং তোমাকে প্রত্যাখ্যান করিনি।
10 তাই ভয় কোরো না, কারণ আমি তোমার সঙ্গে আছি; হতাশ হোয়ো না, কারণ আমি তোমার ঈশ্বর। আমি তোমাকে শক্তি দেব ও তোমাকে সাহায্য করব; আমার ধর্মময় ডান হাত দিয়ে তোমাকে ধরে রাখব।
১০ভয় কর না, কারণ আমি তো তোমার সঙ্গে আছি; উদ্বিগ্ন হয়ো না, কারণ আমি তোমার ঈশ্বর। আমি তোমাকে শক্তি দেব এবং আমি তোমাকে সাহায্য করব আর আমার ডান হাত দিয়ে তোমাকে ধরে রাখব।
11 “যারা তোমার বিরুদ্ধে রেগে ওঠে, তারা অবশ্যই লজ্জিত ও অপমানিত হবে; যারা তোমার বিরোধিতা করে, তারা অসার প্রতিপন্ন হয়ে ধ্বংস হবে।
১১দেখ, তারা লজ্জিত ও নিন্দিত হবে, সবাই যারা তোমার সঙ্গে বিবাদ করে; তারা থাকবে না এবং বিনষ্ট হবে যারা তোমার প্রতি বিরোধিতা করে।
12 তুমি যদিও তোমার শত্রুদের খুঁজবে, তুমি তাদের সন্ধান পাবে না। যারা তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে, তাদের চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যাবে না।
১২তুমি খুঁজবে এবং পাবে না যারা তোমার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে; যারা তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল তারা শূন্যের মত হবে, একেবারে শূন্যের মত হবে।
13 কারণ আমি সদাপ্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, যিনি ধারণ করেন তোমার ডান হাত এবং তোমাকে বলেন, ভয় কোরো না; আমি তোমাকে সাহায্য করব।
১৩কারণ আমি, সদাপ্রভু তোমার ঈশ্বর, তোমার ডান হাত ধরে আছি, তোমাকে বলছি, ভয় কোরো না; আমি তোমাকে সাহায্য করব।
14 ওহে কীটসদৃশ যাকোব, ওহে নগণ্য ইস্রায়েল, তোমরা ভয় কোরো না, কারণ আমি স্বয়ং তোমাকে সাহায্য করব,” যিনি তোমাদের মুক্তিদাতা, ইস্রায়েলের সেই পবিত্রতম জন, সদাপ্রভু ঘোষণা করেন।
১৪হে কীট যাকোব ভয় কোরোনা এবং হে ইস্রায়েলের লোক; আমি তোমাকে সাহায্য করব” এটা সদাপ্রভুর ঘোষণা, ইস্রায়েলের এক পবিত্রতম, তোমার উদ্ধারক।
15 “দেখো, আমি তোমাকে এক শস্য মাড়াই কল বানাব, নতুন এবং ধারালো, যার মধ্যে অনেক দাঁত থাকবে। তুমি পর্বতসমূহকে মাড়াই করে সেগুলি চূর্ণ করবে এবং পাহাড়গুলিকে তুষের মতো করবে।
১৫দেখ, আমি তোমাকে নতুন, ধারালো দাঁতযুক্ত শস্য মাড়াইয়ের যন্ত্র এবং দুই ধারের মত বানাব। তুমি পর্বতদের মাড়াই করে সেগুলো চুরমার করবে, আর ছোট পাহাড়গুলোকে তুষের মত করবে।
16 তুমি তাদের ঝাড়াই করে তাদের তুলে নেবে আর এক ঘূর্ণিবায়ু তাদের উড়িয়ে নিয়ে যাবে। তুমি কিন্তু সদাপ্রভুতে উল্লসিত হবে, ইস্রায়েলের পবিত্রতমজনের উপরে মহিমা করবে।
১৬তুমি তাদেরকে ঝাড়বে বাতাস তাদের বয়ে নিয়ে যাবে এবং বাতাস তাদের ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দেবে। তুমি সদাপ্রভুতে আনন্দ করবে, তুমি ইস্রায়েলের পবিত্রতমে আনন্দিত হবে।
17 “দরিদ্র ও নিঃস্ব লোকেরা জলের অন্বেষণ করে, কিন্তু কোনো জল পাওয়া যায় না; তাদের জিভ পিপাসায় শুকিয়ে গেছে। কিন্তু আমি সদাপ্রভু তাদের উত্তর দেব; আমি ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তাদের পরিত্যাগ করব না।
১৭“নির্যাতিতরা ও অভাবগ্রস্তরা জলের খোঁজ করে, কিন্তু জল নেই; পিপাসায় তাদের জিভ শুকিয়ে গেছে। আমি, সদাপ্রভু, তাদের প্রার্থনার উত্তর দেব; আমি, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তাদের ত্যাগ করব না।
18 আমি বৃক্ষহীন পর্বতশ্রেণীতে নদী প্রবাহিত করব, উপত্যকাগুলিতে উৎপন্ন করব জলের ফোয়ারা। মরুভূমিকে আমি পরিণত করব জলাশয়ে, শুষ্ক-ভূমিতে আমি বইয়ে দেব ঝর্ণাধারা।
১৮আমি গাছপালাহীন পাহাড়গুলোর উপরে নদী বইয়ে দেব আর উপত্যকার নানা জায়গায় ঝরণা বইয়ে দেব। আমি মরুভূমিকে পুকুর করব ও শুকনো ভূমি ফোয়ারা খুলে দেব।
19 আমি মরুভূমিতে স্থাপন করব সিডার ও বাবলা, মেদি গাছ ও জলপাই গাছ। পরিত্যক্ত স্থানে আমি রোপণ করব দেবদারু, একইসঙ্গে ঝাউ ও চিরহরিৎ সব বৃক্ষ,
১৯আমি মরুপ্রান্তের এরস, বাবলা, গুলমেঁদি ও জলপাই গাছ লাগাব আর মরুপ্রান্তে লাগাব দেবদারু, ঝাউ ও তাশূর গাছ,
20 যেন লোকেরা দেখে ও জানতে পায়, বিবেচনা করে ও বুঝতে পারে, যে সদাপ্রভুরই হাত এসব করেছে, ইস্রায়েলের পবিত্রতম জন এ সকল সৃষ্টি করেছেন।
২০যাতে লোকেরা দেখে, জেনে ও বিবেচনা করে বুঝতে পারে যে, সদাপ্রভুর হাতই এই কাজ করেছে, ইস্রায়েলের পবিত্রতম ঈশ্বর এই সব করেছেন।”
21 “সদাপ্রভু বলেন, তোমাদের মামলা উপস্থাপিত করো,” যাকোবের রাজা বলেন, “তোমাদের তর্কবিতর্কসকল উত্থাপন করো।
২১সদাপ্রভু বলছেন, “তোমাদের মূর্তির জন্য ভালো যুক্তি উপস্থিত কর” যাকোবের রাজা বলেন।
22 কী সব ঘটবে, তা আমাদের কাছে বলার জন্য তোমাদের প্রতিমাগুলিকে নিয়ে এসো। আমাদের বলো, পূর্বের বিষয়গুলি সব কী কী, যেন আমরা সেগুলি বিবেচনা করি ও তাদের শেষ পরিণতি জানতে পারি। অথবা, ভাবী ঘটনাসমূহ আমাদের কাছে ঘোষণা করো,
২২ওরা সে সব নিয়ে আসুক, যা যা ঘটবে, আমাদেরকে জানাক; আগেকার বিষয়ে কি কি তা বল; তা হলে আমরা বিবেচনা করে তার শেষ ফল জানব, কিংবা ওরা আগামী ঘটনা সব আমাদের জানাক।
23 আমাদের বলো, ভবিষ্যতে কী ঘটতে চলেছে, যেন আমরা বুঝতে পারি যে তোমরাই দেবতা। ভালো হোক বা মন্দ, তোমরা কিছু করে দেখাও, যেন আমরা অবাক হয়ে ভীত হই।
২৩ভবিষ্যতে কি হবে তা আমাদের বল, তা হলে আমরা জানতে পারব যে, তোমরা দেবতা। ভাল হোক বা মন্দ হোক একটা কিছু কর যা দেখে আমরা ভীত ও মুগ্ধ হব।
24 দেখো তোমরা কিছুরই মধ্যে গণ্য নও, তোমাদের সমস্ত কাজ সম্পূর্ণ মূল্যহীন; যে তোমাদের মনোনীত করে সে ঘৃণ্য।
২৪দেখ, তোমরা কিছুই না, আর তোমাদের কাজগুলোও কিছু না; যে তোমাদের বেছে নেয় সে ঘৃণার পাত্র।
25 “আমি উত্তর দিক থেকে একজনকে উত্তেজিত করেছি, আর সে আসছে, সূর্যোদয়ের দিক থেকে সে আমার নামে আহ্বান করে। চুনসুরকির মতো, অথবা মাটির তাল নিয়ে কুমোরের মতো, সে যত শাসককে দলাইমলাই করে।
২৫উত্তর দিকের একজন লোক উত্তেজিত করলাম, সে এসেছে। যেমন করে কাদা দলায় আর কুমার মাটি দলাই করে তেমনি করে সে শাসনকর্ত্তাদের পায়ে দলবে।
26 পূর্ব থেকে কে একথা বলেছে, যেন আমরা জানতে পারি, অথবা আগেভাগে বলেছে যেন আমরা বলতে পারি, ‘তার কথা সঠিক ছিল?’ এ সম্পর্কে কেউই কিছু বলেনি, কেউই এ বিষয়ের পূর্বঘোষণা করেনি, তোমাদের কাছ থেকে কেউ কোনো কথা শোনেনি।
২৬কে শুরু থেকে এর সংবাদ দিয়েছে যাতে আমরা জানতে পারি? এবং কে আগে জানিয়েছিল যাতে আমরা বলতে পারি, সে সঠিক? কেউ বলে নি, কেউ জানায় নি, কেউ তোমাদের কথা বলতে শোনে নি।
27 আমিই সর্বপ্রথম সিয়োনকে বলেছি, ‘এই দেখো, ওরা এখানে!’ আমি জেরুশালেমকে সুসংবাদের এক দূত দিয়েছি।
২৭আমিই প্রথমে সিয়োনকে বলেছি, “দেখ এদেরকে দেখ;” আমি যিরূশালেমকে একজন সুসংবাদদাতা দিয়েছি।
28 আমি তাকালাম, কিন্তু কাউকে দেখতে পেলাম না, পরামর্শ দেওয়ার জন্য ঈশ্বরদের মধ্যে কেউ ছিল না, আমার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য কেউ ছিল না।
২৮আমি দেখলাম কেউ নেই; পরামর্শ দেবার জন্য তাদের মধ্যে কেউ নেই যে, তাদের জিজ্ঞাসা করলে উত্তর দিতে পারে।
29 দেখো, ওরা সকলে ভ্রান্ত! ওদের কাজগুলি সমস্তই অসার; ওদের মূর্তিগুলি যেন বাতাস ও বিভ্রান্তিস্বরূপ।
২৯দেখ, তারা সবাই কিছুই নয় এবং তাদের কাজ কিছুই না তাদের ছাঁচে-ঢালা মুর্ত্তিগুলো বাতাস ও শূন্যতা ছাড়া কিছু নয়।

< যিশাইয় ভাববাদীর বই 41 >