< যিশাইয় ভাববাদীর বই 38 >
1 সেই সময় হিষ্কিয় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এবং তা মৃত্যুজনক হয়ে গেল। আমোষের ছেলে ভাববাদী যিশাইয় তাঁর কাছে গিয়ে বললেন, “সদাপ্রভু একথাই বলেন: তুমি বাড়ির সব ব্যবস্থা ঠিকঠাক করে রাখো, কারণ তুমি মরতে চলেছ; তুমি আর সেরে উঠবে না।”
2 হিষ্কিয় দেয়ালের দিকে মুখ ফিরিয়ে সদাপ্রভুর কাছে এই প্রার্থনা করলেন,
3 “হে সদাপ্রভু, স্মরণ করো, আমি কীভাবে তোমার সামনে বিশ্বস্ততায় ও সম্পূর্ণ হৃদয়ে ভক্তি প্রকাশ করেছি। তোমার দৃষ্টিতে যা কিছু মঙ্গলজনক, আমি তাই করেছি।” এই বলে হিষ্কিয় অত্যন্ত রোদন করতে লাগলেন।
4 তখন সদাপ্রভুর বাণী যিশাইয়ের কাছে উপস্থিত হল:
5 “তুমি ফিরে গিয়ে হিষ্কিয়কে এই কথা বলো, ‘সদাপ্রভু, তোমার পিতৃপুরুষ দাউদের ঈশ্বর এই কথা বলেন, আমি তোমার প্রার্থনা শ্রবণ করেছি ও তোমার অশ্রু দেখেছি; আমি তোমার জীবনের আয়ুর সঙ্গে আরও পনেরো বছর যোগ করব।
6 এছাড়াও আমি তোমাকে ও এই নগরটিকে আসিরীয় রাজার হাত থেকে উদ্ধার করব। আমি এই নগরকে রক্ষা করব।
7 “‘সদাপ্রভু যা কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা পূর্ণ করার জন্য এই হবে সদাপ্রভুর চিহ্নস্বরূপ:
8 আহসের সিড়িতে সূর্যের ছায়া যতটা নেমে গিয়েছে, আমি তার থেকে দশ ধাপ সেই ছায়া পিছনে ফিরিয়ে দেব।’” তাই সূর্যের আলো যতটা নেমেছিল, তার থেকে দশ ধাপ পিছিয়ে গেল।
9 যিহূদার রাজা হিষ্কিয় তাঁর অসুস্থতা ও রোগনিরাময়ের পরে যা লিখেছিলেন, তা হল এই:
10 আমি বললাম, “আমার জীবনের সর্বোৎকৃষ্ট সময়ে আমাকে কি অবশ্যই মৃত্যুর দুয়ারগুলির মধ্য দিয়ে যেতে হবে এবং আমার আয়ুষ্কালের অবশিষ্ট সময় থেকে বঞ্চিত হতে হবে?” (Sheol )
11 আমি বললাম, “আমি সদাপ্রভুকে আর দেখতে পাব না, জীবিতদের দেশে সদাপ্রভুকে দেখতে পাব না; আমি আর মানবকুলকে দেখতে পাব না, কিংবা যারা এই জগতে বসবাস করে, তাদের সঙ্গে থাকব না।
12 আমার কাছ থেকে আমার আবাস মেষশাবকের তাঁবুর মতো তুলে নিয়ে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাঁতির মতো আমি আমার জীবন গুটিয়ে ফেলেছি এবং তিনি তাঁত থেকে আমাকে ছিন্ন করেছেন; দিনে ও রাতে তুমি আমার জীবন শেষ করেছ।
13 আমি প্রভাত পর্যন্ত ধৈর্যসহ অপেক্ষা করেছি, কিন্তু সিংহের মতোই তিনি আমার হাড়গুলি চূর্ণ করেছেন; দিনে ও রাতে তুমি আমার জীবন শেষ করেছ।
14 আমি ফিঙে বা সারসের মতো চিঁ চিঁ শব্দ করেছি, আমি বিলাপকারী ঘুঘুর মতোই বিলাপ করেছি। আকাশমণ্ডলের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে আমার চোখের দৃষ্টি ক্ষীণ হল। আমি উপদ্রুত হয়েছি; ও প্রভু, তুমি আমার সাহায্যের জন্য এসো!”
15 কিন্তু আমার কী বলার আছে? তিনি আমার সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তিনি স্বয়ং এ কাজ করেছেন। আমার প্রাণের এই নিদারুণ যন্ত্রণার জন্য আমার সমস্ত জীবনকাল আমি নতনম্র হয়ে চলব।
16 প্রভু, এই সমস্ত বিষয়ের জন্যই মানুষ বাঁচে; আবার আমার আত্মাও সেগুলির মধ্যে জীবন খুঁজে পায়। তুমি আমার স্বাস্থ্য ফিরিয়ে দিয়েছ এবং আমাকে বাঁচতে দিয়েছ।
17 নিশ্চিতরূপে এ ছিল আমার উপকারের জন্য যে আমি এ ধরনের মর্মযন্ত্রণা ভোগ করেছি। ধ্বংসের গহ্বর থেকে তুমি তোমার ভালোবাসায় আমাকে রক্ষা করেছ; আমার সমস্ত পাপ নিয়ে তুমি তোমার পিছন দিকে ফেলে দিয়েছ।
18 কারণ কবর তোমার প্রশংসা করতে পারে না, মৃত্যু করতে পারে না তোমার স্তব; যারা সেই গহ্বরে নেমে যায়, তারা তোমার বিশ্বস্ততার প্রত্যাশা করতে পারে না। (Sheol )
19 জীবন্ত, কেবলমাত্র জীবন্ত লোকেরাই তোমার প্রশংসা করবে, যেমন আজ আমি তোমার প্রশংসা করছি; বাবারা তাদের সন্তানদের তোমার বিশ্বস্ততার কথা বলেন।
20 সদাপ্রভু আমাকে রক্ষা করবেন, আমরা জীবনের সমস্ত দিন সদাপ্রভুর মন্দিরে তারের বাদ্যযন্ত্রে গান গাইব।
21 যিশাইয় বলেছিলেন, “ডুমুরফল ছেঁচে একটি প্রলেপ তৈরি করে সেই ফোঁড়ার উপরে লাগাতে, তাহলে তিনি আরোগ্য লাভ করবেন।”
22 হিষ্কিয় জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “আমি যে সদাপ্রভুর মন্দিরে উঠে যাব, তার চিহ্ন কী?”