< ইব্রীয় 9 >
1 প্রথম সন্ধিচুক্তিতে উপাসনা-সংক্রান্ত রীতিনীতি ছিল এবং ছিল এক পার্থিব পবিত্রধাম।
১ভাল, ঐ প্রথম নিয়ম অনুসারেও স্বর্গীয় আরাধনার নানা ধর্ম্মবিধি এবং পৃথিবীর একটি ঈশ্বরের ঘর ছিল।
2 কারণ, একটি সমাগম তাঁবু স্থাপিত হয়েছিল, যার প্রথম কক্ষে ছিল সেই দীপাধার, উৎসর্গীকৃত দর্শন রুটিসহ একটি টেবিল; একে বলা হত, পবিত্রস্থান।
২কারণ একটি তাঁবু নির্মিত হয়েছিল, সেটি প্রথম, তার মধ্যে বাতিস্তম্ভ, টেবিল ও দর্শনরুটি র ছিল; এটার নাম পবিত্র তাঁবু।
3 দ্বিতীয় পর্দার পিছনে মহাপবিত্র স্থান বলে আর একটি কক্ষ ছিল।
৩আর দ্বিতীয় পর্দার পিছনে অতি পবিত্র জায়গা নামে তাঁবু ছিল;
4 সেখানে ছিল সোনার ধূপবেদি ও সোনায় মোড়া নিয়ম-সিন্দুক। এই সিন্দুকে ছিল মান্নায় ভরা সোনার ঘট, হারোণের মুকুলিত লাঠি এবং নিয়মসমন্বিত পাথরের ফলকগুলি।
৪তা সুবর্ণময় ধূপবেদির ও সবদিকে স্বর্ণমন্ডিত নিয়ম সিন্দুক বিশিষ্ট; ঐ সিন্দুকে ছিল মান্নাধারী সোনার ঘট, ও হারোণের মঞ্জরিত ছড়ি, ও নিয়মের দুই প্রস্তরফলক,
5 সিন্দুকের উপরে ছিল মহিমার সেই দুই করূব, যারা সিন্দুকের আচ্ছাদনের উপরে ছায়া বিস্তার করত। কিন্তু এখন আমরা এ সমস্ত বিষয় বিশদভাবে আলোচনা করতে পারি না।
৫এবং সিন্দুকের উপরে ঈশ্বরের মহিমার সেই দুই করূব দূত ছিল, যারা পাপাবরণ ছায়া করত; এই সবের বর্ণনা করে বলা এখন নিষ্প্রয়োজন।
6 এইভাবে পবিত্র তাঁবুতে সবকিছুর ব্যবস্থা করার পর, যাজকেরা তাদের পরিচর্যা সম্পন্ন করার জন্য নিয়মিতরূপে বাইরের কক্ষে প্রবেশ করতেন।
৬পরে এই সব জিনিস এই ভাবে তৈরী করা হলে যাজকরা আরাধনার কাজ সব শেষ করবার জন্য ঐ প্রথম তাঁবুতে নিয়মিত প্রবেশ করে;
7 কিন্তু কেবলমাত্র মহাযাজকই বছরে শুধুমাত্র একবার ভিতরের কক্ষে প্রবেশ করতেন এবং কখনও রক্ত ছাড়া প্রবেশ করতেন না। সেই রক্ত তিনি নিজের ও লোকেদের অজ্ঞতায় করা পাপের প্রায়শ্চিত্তের জন্য উৎসর্গ করতেন।
৭কিন্তু দ্বিতীয় তাঁবুতে বছরের মধ্যে একবার মহাযাজক একা প্রবেশ করেন; তিনি আবার রক্ত বিনা প্রবেশ করেন না, সেই রক্ত তিনি নিজের জন্য ও প্রজালোকদের অনিচ্ছাকৃত পাপের জন্য উৎসর্গ করেন।
8 এর দ্বারা পবিত্র আত্মা দেখিয়েছেন যে, প্রথম সমাগম তাঁবুটি যতদিন বজায় ছিল, ততদিন মহাপবিত্র স্থানের প্রবেশপথ উন্মুক্ত হয়নি।
৮এতে পবিত্র আত্মা যা জানান, তা এই, সেই প্রথম তাঁবু যতদিন স্থাপিত থাকে, ততদিন পবিত্র জায়গায় প্রবেশের পথ প্রকাশিত হয় না।
9 বর্তমানকালের জন্য এ এক দৃষ্টান্তস্বরূপ; এর তাৎপর্য হল, উৎসর্গীকৃত বলি-উপহার ও নৈবেদ্য কখনও উপাসনাকারীর বিবেক শুচিশুদ্ধ করতে সমর্থ হয়নি।
৯সেই তাঁবু এই উপস্থিত দিনের র জন্য দৃষ্টান্ত; সেই দৃষ্টান্ত অনুসারে এমন উপহার ও বলি উৎসর্গ করা হয়, যা উপাসনাকারীর বিবেক সিদ্ধি দিতে পারে না;
10 সেগুলি শুধুমাত্র খাবার, পানীয় ও বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক শুচিকরণ সম্পর্কিত বাহ্যিক নিয়ন্ত্রণ-বিধিস্বরূপ, যা নতুন বিধি প্রবর্তণের সময় না আসা পর্যন্ত প্রযোজ্য ছিল।
১০সেই সবই খাদ্য, পানীয় ও নানা ধরনের শুচি স্নানের মধ্যে বাঁধা, সে সকল কেবল দেহের ধার্মিক বিধিমাত্র, সংশোধনের দিন পর্যন্ত পালনীয়।
11 এখন, খ্রীষ্ট যখন আগত উৎকৃষ্ট বিষয়গুলির জন্য মহাযাজকরূপে এলেন, তিনি আরও বেশি মহৎ ও নিখুঁত সমাগম তাঁবুর মধ্য দিয়ে প্রবেশ করলেন, যা মানবসৃষ্ট নয়; এমনকি, যা এই সৃষ্টিরই অঙ্গ নয়।
১১কিন্তু খ্রীষ্ট, আগত ভালো ভালো জিনিসের মহাযাজক হয়ে উপস্থিত হয়ে এসেছেন, যে মহত্তর ও সিদ্ধতর তাঁবু মানুষের বানানো না, তা এই জগতেরও না,
12 তিনি ছাগল ও বাছুরের রক্ত নিয়ে প্রবেশ করেননি; সেই মহাপবিত্র স্থানে তিনি নিজের রক্ত নিয়ে চিরকালের মতো একবারই প্রবেশ করেছেন এবং আমাদের জন্য অনন্তকালীন মুক্তি অর্জন করেছেন। (aiōnios )
১২এটা ছাগলের ও বাছুরের রক্তে না, কিন্তু খ্রীষ্ট তাঁর নিজের রক্তে গুণে একবারে পবিত্র জায়গায় প্রবেশ করেছেন, ও আমাদের জন্য অনন্তকালীয় মুক্তি উপার্জন করেছেন। (aiōnios )
13 যারা সংস্কারগতভাবে অশুচি, বাহ্যিকভাবে শুচিশুদ্ধ করার জন্য তাদের উপরে ছাগল ও ষাঁড়ের রক্ত এবং দগ্ধ বকনা-বাছুরের ভস্ম ছিটিয়ে দেওয়া হত।
১৩কারণ ছাগলের ও বৃষের রক্ত এবং অশুচিদের উপরে বাছুরের ভস্ম ছড়িয়ে যদি দেহ বিশুদ্ধতার জন্য পবিত্র করে,
14 তাহলে আমরা যেন জীবন্ত ঈশ্বরের সেবা করতে পারি, এই উদ্দেশ্যে যিনি চিরন্তন আত্মার মাধ্যমে নিষ্কলঙ্ক বলিরূপে নিজেকেই ঈশ্বরের কাছে উৎসর্গ করেছেন, সেই খ্রীষ্টের রক্ত আমাদের বিবেককে মৃত্যুমুখী ক্রিয়াকলাপ থেকে আরও কত না নিশ্চিতরূপে শুচিশুদ্ধ করবে! (aiōnios )
১৪তবে, খ্রীষ্ট অনন্তজীবী আত্মার মাধ্যমে নির্দোষ বলিরূপে নিজেকেই ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেছেন, সেই খ্রীষ্টের রক্ত আমাদের বিবেককে মৃত ক্রিয়াকলাপ থেকে কত বেশি পবিত্র না করবে, যেন তোমরা জীবন্ত ঈশ্বরের আরাধনা করতে পার। (aiōnios )
15 এই কারণে খ্রীষ্ট এক নতুন নিয়মের মধ্যস্থতাকারী, যেন আহূতজনেরা চিরন্তন উত্তরাধিকার লাভ করতে পারে। এখন তা সম্ভব, কারণ প্রথম নিয়মের সময়ে তারা যেসব পাপ করেছিল, তা থেকে তাদের উদ্ধার করতে তিনি মুক্তিপণরূপে মৃত্যুবরণ করেছেন। (aiōnios )
১৫আর এই কারণে খ্রীষ্ট এক নতুন নিয়মের মধ্যস্থ; যেন, প্রথম নিয়ম সম্বন্ধীয় অপরাধ সকলের মুক্তির জন্য মৃত্যু ঘটেছে বলে যারা মনোনীত হয়েছে, তারা অনন্তকালীয় অধিকার বিষয়ক প্রতিজ্ঞার ফল পায়। (aiōnios )
16 কোনও ইচ্ছাপত্র কার্যকর হওয়ার ক্ষেত্রে, যিনি ইচ্ছাপত্র সম্পাদন করেছেন, তাঁর মৃত্যু প্রমাণিত হওয়া আবশ্যক।
১৬কারণ যে জায়গায় নিয়মপত্র থাকে, সেই জায়গায় নিয়মকারীর মৃত্যু হওয়া আবশ্যক।
17 কারণ যখন কোনো ব্যক্তির মৃত্যু হয়, কেবলমাত্র তখনই ইচ্ছাপত্র বলবৎ হয়। জীবিত ব্যক্তির ইচ্ছাপত্র কখনও কার্যকর হয় না।
১৭কারণ মৃত্যু হলেই নিয়মপত্র বলবৎ হয়, কারণ নিয়মকারী জীবিত থাকতে তা কখনও বলবৎ হয় না।
18 এই কারণেই রক্ত ছাড়া প্রথম নিয়ম কার্যকর হয়নি।
১৮সেইজন্য ঐ প্রথম নিয়মের প্রতিষ্ঠাও রক্ত ছাড়া হয়নি।
19 মোশি যখন সব লোকের কাছে বিধানপুস্তকের প্রত্যেকটি আজ্ঞা ঘোষণা করেন, তিনি বাছুরের ও ছাগদের রক্তের সঙ্গে নিলেন জল, রক্তবর্ণ মেষলোম ও এসোব গাছের শাখা এবং তিনি তা ছিটিয়ে দিলেন সেই পুঁথি ও প্রজাদের উপর।
১৯কারণ প্রজাদের কাছে মোশির মাধ্যমে নিয়ম অনুসারে সব আদেশের প্রস্তাব দিলে পর, তিনি জল ও লাল মেষলোম ও ত্রসোবের সাথে বাছুরের ও ছাগলের রক্ত নিয়ে বইতে ও সমস্ত প্রজাদের গায়ে ছিটিয়ে দিলেন,
20 তিনি বললেন, “এ হল সেই নতুন নিয়মের রক্ত, যা পালন করার জন্য ঈশ্বর তোমাদের আদেশ দিয়েছেন।”
২০বললেন, “এ সেই নিয়মের রক্ত, যে নিয়ম ঈশ্বর তোমাদের উদ্দেশ্যে আদেশ করলেন।”
21 একইভাবে তিনি সেই সমাগম তাঁবু ও তার বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত দ্রব্যসামগ্রীর উপরে রক্ত ছিটিয়ে দিলেন।
২১আর তিনি তাঁবুতে ও সেবা কাজের সমস্ত জিনিসেও সেইভাবে রক্ত ছিটিয়ে দিলেন।
22 বিধান অনুসারে, প্রকৃতপক্ষে সব কিছুকেই রক্ত দ্বারা পরিশোধিত হতে হয় এবং রক্তসেচন ছাড়া পাপের ক্ষমা হয় না।
২২আর নিয়ম অনুসারে প্রায় সবই রক্তে শুচি হয় এবং রক্ত সেচন ছাড়া পাপের ক্ষমা হয় না।
23 অতএব, যেগুলি স্বর্গীয় বিষয়ের প্রতিরূপ, সেগুলি এসব বলির দ্বারা শুচিকৃত হওয়ার প্রয়োজন ছিল, কিন্তু স্বর্গীয় বিষয়গুলির জন্য মহত্তর বলিদানের আবশ্যকতা ছিল।
২৩ভাল, যা যা স্বর্গস্থ বিষয়ের দৃষ্টান্ত, সেইগুলির ঐ পশুর বলিদানের মাধ্যমে শুচি হওয়া আব্যশক ছিল; কিন্তু যা যা স্বয়ং স্বর্গীয়, সেগুলির এর থেকে শ্রেষ্ঠ যজ্ঞের মাধ্যমে শুচি হওয়া আবশ্যক।
24 কারণ খ্রীষ্ট প্রকৃত উপাসনাস্থলের প্রতিরূপ মানব-নির্মিত পবিত্রস্থানে প্রবেশ করেননি; তিনি সাক্ষাৎ স্বর্গে প্রবেশ করেছেন, যেন আমাদের পক্ষে ঈশ্বরের সান্নিধ্যে উপস্থিত হন।
২৪কারণ খ্রীষ্ট হাতে বানানো পবিত্র জায়গায় প্রবেশ করেননি এ তো প্রকৃত বিষয়গুলির প্রতিরূপ মাত্র কিন্তু তিনি স্বর্গেই প্রবেশ করেছেন, যেন তিনি এখন আমাদের জন্য ঈশ্বরের সাক্ষাৎে প্রকাশমান হন।
25 আবার মহাযাজক যেভাবে নিজের নয়, কিন্তু অন্যের রক্ত নিয়ে প্রতি বছর মহাপবিত্র স্থানে প্রবেশ করতেন, খ্রীষ্ট কিন্তু সেভাবে নিজেকে উৎসর্গ করার জন্য বারবার স্বর্গে প্রবেশ করেননি।
২৫আর মহাযাজক যেমন বছর বছর অন্যের রক্ত নিয়ে পবিত্র জায়গায় প্রবেশ করেন, তেমনি খ্রীষ্ট যে অনেকবার নিজেকে উৎসর্গ করবেন, তাও না;
26 তাহলে জগৎ সৃষ্টির কাল থেকে খ্রীষ্টকে বহুবারই কষ্টভোগ ও মৃত্যুবরণ করতে হত। কিন্তু এখন, যুগের শেষ সময়ে, আত্মবলিদানের দ্বারা তিনি চিরকালের মতো পাপের বিলোপ সাধনের উদ্দেশ্যে একবারই প্রকাশিত হয়েছেন। (aiōn )
২৬কারণ তাহলে জগতের শুরু থেকে অনেকবার তাঁকে মৃত্যুভোগ করতে হত। কিন্তু বাস্তবিক তিনি একবার, যুগপর্য্যায়ের শেষে, নিজের বলিদান মাধ্যমে পাপ নাশ করবার জন্য প্রকাশিত হয়েছেন। (aiōn )
27 মানুষের জন্য যেমন একবার মৃত্যু ও তারপর বিচার নির্ধারিত হয়ে আছে,
২৭আর যেমন মানুষের জন্য একবার মৃত্যু, তারপরে বিচার আছে,
28 তেমনই বহু মানুষের সব পাপ হরণ করার জন্য খ্রীষ্ট একবারই উৎসর্গীকৃত হয়েছেন এবং আর পাপবহনের জন্য নয়, কিন্তু যারা তাঁর প্রতীক্ষায় আছে, তাদের পরিত্রাণ সাধনের উদ্দেশ্যে তিনি দ্বিতীয়বার প্রকাশিত হবেন।
২৮তেমনি খ্রীষ্টও অনেকের পাপাভার তুলে নেবার জন্য একবার উৎসর্গীত হয়েছেন; তিনি দ্বিতীয়বার, বিনা পাপে, তাদেরকে দর্শন দেবেন, যারা পরিত্রানের জন্য তাঁর অপেক্ষা করে।