< আদিপুস্তক 9 >

1 পরে ঈশ্বর নোহ ও তাঁর ছেলেদের আশীর্বাদ করে বললেন, “ফলবান হও ও সংখ্যায় বৃদ্ধি পেয়ে পৃথিবী ভরিয়ে তোলো।
পরে ঈশ্বর নোহকে ও তাঁর ছেলেদেরকে এই আশীর্বাদ করলেন ও বললেন, “তোমরা ফলবান ও বহুবংশ হও, পৃথিবী ভরিয়ে তোলো।
2 পৃথিবীর সব জন্তু ও আকাশের সব পাখি, সব সরীসৃপ প্রাণী, ও সমুদ্রের সব মাছ তোমাদের দেখে ভীত ও আতঙ্কিত হবে; তোমাদের হাতে এদের তুলে দেওয়া হল।
পৃথিবীর যাবতীয় প্রাণী ও আকাশের যাবতীয় পাখি তোমাদের থেকে ভয় ও ত্রাসযুক্ত হবে; সমস্ত মাটিতে চলা জীব ও সমুদ্রের সমস্ত মাছ সে সব তোমাদেরই হাতে দেওয়া আছে।
3 যা যা জীবন্ত ও চলেফিরে বেড়ায়, সেসব তোমাদের খাদ্য হবে। ঠিক যেভাবে আমি তোমাদের সবুজ গাছপালা দিয়েছি, সেভাবে এখন সবকিছু আমি তোমাদের দিচ্ছি।
প্রত্যেক গমনশীল প্রাণী তোমাদের খাদ্য হবে; আমি সবুজ গাছপালার মতো সে সকল তোমাদেরকে দিলাম।
4 “কিন্তু যে মাংসে প্রাণ-রক্ত অবশিষ্ট আছে, তোমরা সেই মাংস কখনোই খেয়ো না।
কিন্তু প্রাণসহ অর্থাৎ রক্তসহ মাংস খেও না।
5 আর তোমাদের প্রাণ-রক্তের হিসেবও আমি নিশ্চিতভাবেই চাইব। প্রত্যেকটি পশুর কাছে আমি হিসেব চাইব। আর প্রত্যেকটি মানুষের কাছেও, আমি অন্যান্য মানুষের প্রাণের হিসেব চাইব।
আর তোমাদের রক্তপাত হলে আমি তোমাদের প্রাণের পক্ষে তার প্রতিশোধ অবশ্যই নেব; সকল পশুর কাছে তার প্রতিশোধ নেব। এবং মানুষের ভাই মানুষের কাছে আমি মানুষের প্রাণের প্রতিশোধ নেব।”
6 “যে কেউ মানুষের রক্ত ঝরাবে, মানুষের দ্বারাই তার রক্ত ঝরবে; কারণ ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতে ঈশ্বর মানুষকে তৈরি করেছেন।
যে কেউ মানুষের রক্তপাত করবে, মানুষের মাধ্যমে তার রক্তপাত করা যাবে; কারণ ঈশ্বর নিজের প্রতিমূর্ত্তিতে মানুষকে নির্মাণ করেছেন।
7 আর তোমরা ফলবান হয়ে সংখ্যায় বৃদ্ধিলাভ করো; পৃথিবীতে বংশবৃদ্ধি করো ও এখানে বর্ধিষ্ণু হও।”
তোমরা ফলবান ও বহুবংশ হও, পৃথিবীকে প্রাণীময় কর, ও তার মধ্যে বেড়ে ওঠ।
8 পরে ঈশ্বর নোহকে ও তাঁর সাথে থাকা তাঁর ছেলেদের বললেন,
পরে ঈশ্বর নোহকে ও তাঁর সঙ্গী ছেলেদেরকে বললেন,
9 “আমার নিয়মটি আমি এখন তোমাদের সঙ্গে ও তোমাদের ভাবী বংশধরদের সঙ্গে
“দেখ, তোমাদের সঙ্গে, তোমাদের আগামী বংশের সঙ্গে ও তোমাদের সঙ্গী যাবতীয় প্রাণীর সঙ্গে,
10 এবং তোমাদের সাথে থাকা সব জীবিত প্রাণীর—পাখিদের, গৃহপালিত পশুদের ও সব বন্যপশুর, যারা তোমাদের সাথে জাহাজের বাইরে বের হয়ে এসেছিল—পৃথিবীর সব জীবিত প্রাণীর সঙ্গে স্থাপন করছি।
১০পাখি এবং পশুপাল ও বন্য পশু, পৃথিবীতে অবস্থিত যত প্রাণী জাহাজ থেকে বের হয়েছে, তাদের সঙ্গে আমি আমার নিয়ম স্থির করি।
11 আমি তোমাদের সঙ্গে আমার নিয়ম স্থাপন করছি: আর কখনও সব প্রাণী বন্যার জলে উচ্ছিন্ন হবে না; আর কখনও এই পৃথিবী ধ্বংস করার জন্য কোনও বন্যা হবে না।”
১১আমি তোমাদের সঙ্গে আমার নিয়ম স্থির করি; বন্যার মাধ্যমে সমস্ত প্রাণী আর ধ্বংস হবে না এবং পৃথিবীর বিনাশের জন্য জলপ্লাবন আর হবে না।”
12 আর ঈশ্বর বললেন, “এই হল সেই নিয়মের চিহ্ন, যা আমি আমার ও তোমাদের মধ্যে তথা তোমাদের সঙ্গে থাকা প্রত্যেকটি জীবিত প্রাণীর সঙ্গে স্থাপন করেছি, পরবর্তী সব প্রজন্মের জন্যও এ এক নিয়ম হবে:
১২ঈশ্বর আরও বললেন, “আমি তোমাদের সঙ্গে ও তোমাদের সঙ্গী যাবতীয় প্রাণীর সঙ্গে চিরস্থায়ী পুরুষ পরম্পরার জন্য যে নিয়ম স্থির করলাম, তাঁর চিহ্ন এই।”
13 মেঘের মধ্যে আমি আমার মেঘধনু বসিয়ে দিয়েছি, আর এটিই হবে আমার ও পৃথিবীর মধ্যে স্থাপিত সেই চিহ্ন।
১৩আমি মেঘে নিজের মেঘধনু স্থাপন করি, সেটাই পৃথিবীর সঙ্গে আমার নিয়মের চিহ্ন হবে।
14 পৃথিবীর উপর যখনই আমি মেঘ বিস্তার করব ও সেই মেঘে মেঘধনু আবির্ভূত হবে,
১৪যখন আমি পৃথিবীর উপরে মেঘ আনব, তখন সেই মেঘধনু মেঘে দেখা যাবে;
15 তখনই আমি তোমাদের এবং তোমাদের সঙ্গে থাকা সব জীবিত প্রাণীর সঙ্গে স্থাপিত আমার সেই নিয়মটি স্মরণ করব। আর কখনও জল বন্যায় পরিণত হয়ে সব প্রাণীকে ধ্বংস করবে না।
১৫তাতে তোমাদের সঙ্গে ও মাংসিক সমস্ত প্রাণীর সঙ্গে আমার যে নিয়ম আছে, তা আমার স্মরণ হবে এবং সকল প্রাণীর বিনাশের জন্য জলপ্লাবন আর হবে না।
16 যখনই মেঘে মেঘধনু আবির্ভূত হবে, আমি তা দেখব ও অনন্তকালস্থায়ী সেই নিয়মটি স্মরণ করব, যা ঈশ্বর ও পৃথিবীর সব ধরনের জীবিত প্রাণীর মধ্যে স্থাপিত হয়েছে।”
১৬আর মেঘধনু হলে আমি তার প্রতি দৃষ্টিপাত করব; তাতে মাংসিক যত প্রাণী পৃথিবীতে আছে, তাদের সঙ্গে ঈশ্বরের যে চিরস্থায়ী নিয়ম, তা আমি স্মরণ করব।
17 অতএব ঈশ্বর নোহকে বললেন, “এই সেই নিয়মের চিহ্ন, যা আমি আমার ও পৃথিবীর সব প্রাণীর মধ্যে স্থাপন করেছি।”
১৭ঈশ্বর নোহকে বললেন, “এটি একটি নিয়মের চিহ্ন যা আমার এবং পৃথিবীর সব প্রাণীর সঙ্গে স্থাপিত হবে।”
18 নোহের যে ছেলেরা জাহাজ থেকে বেরিয়ে এলেন, তারা হলেন শেম, হাম ও যেফৎ। (হাম কনানের বাবা)
১৮নোহের যে ছেলেরা জাহাজ থেকে বের হলেন, তাঁদের নাম শেম, হাম ও যেফৎ; সেই হাম কনানের বাবা।
19 এরাই হলেন নোহের সেই তিন ছেলে, এবং তাঁদের থেকে যেসব লোকজন উৎপন্ন হল, তারা সমগ্র জগতে ছড়িয়ে পড়ল।
১৯এই তিনজন নোহের ছেলে; এদেরই বংশ সমস্ত পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ল।
20 চাষিগৃহস্থ মানুষ নোহ, একটি দ্রাক্ষাক্ষেত তৈরি করার জন্য এগিয়ে গেলেন।
২০পরে নোহ কৃষিকাজে যুক্ত হয়ে আঙ্গুরের ক্ষেত করলেন।
21 যখন তিনি সেখানকার খানিকটা দ্রাক্ষারস পান করলেন, তখন তিনি নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়লেন এবং তাঁর তাঁবুর ভিতরে তিনি বিবস্ত্র হয়ে শুয়ে পড়লেন।
২১আর তিনি আঙ্গুর রস পান করে মাতাল হলেন এবং তাঁবুর মধ্যে বিবস্ত্র হয়ে পড়লেন।
22 কনানের বাবা হাম তাঁর বাবাকে উলঙ্গ অবস্থায় দেখে বাইরে বেরিয়ে গিয়ে তাঁর দুই দাদাকে তা বললেন।
২২তখন কনানের বাবা হাম নিজের বাবার উলঙ্গতা দেখে বাইরে নিজের দুই ভাইকে বলল।
23 কিন্তু শেম ও যেফৎ একটি কাপড় নিয়ে সেটি তাঁদের কাঁধের উপর ফেলে রাখলেন; পরে তাঁরা পিছনের দিকে পিছিয়ে গিয়ে তাঁদের বাবার উলঙ্গতা ঢেকে দিলেন। তাঁদের মুখমণ্ডল অন্যদিকে ঘোরানো ছিল, যেন তাঁরা তাঁদের বাবার উলঙ্গতা দেখতে না পান।
২৩তাতে শেম ও যেফৎ কাপড় নিয়ে নিজেদের কাঁধে রেখে পিছনে হেঁটে বাবার উলঙ্গতা ঢেকে দিলেন; পিছন দিকে মুখ থাকাতে তাঁরা পিতার উলঙ্গতা দেখলেন না।
24 নোহ যখন তাঁর নেশার ঘোর কাটিয়ে উঠলেন ও জানতে পারলেন তাঁর ছোটো ছেলে তাঁর প্রতি ঠিক কী আচরণ করেছেন,
২৪পরে নোহ আঙ্গুর রসের ঘুম থেকে জেগে উঠে তাঁর প্রতি ছোট ছেলের আচরণ জানতে পারলেন।
25 তখন তিনি বললেন, “কনান অভিশপ্ত হোক! তার দাদা-ভাইদের মধ্যে সে অত্যন্ত নীচ দাস হবে।”
২৫আর তিনি বললেন, “কনান অভিশপ্ত হোক, সে নিজের ভাইদের দাসানুদাস হবে।”
26 তিনি আরও বললেন, “শেমের ঈশ্বর সদাপ্রভু ধন্য হোন! কনান শেমের দাস হোক।
২৬তিনি আরও বললেন, “শেমের ঈশ্বর সদাপ্রভু ধন্য; কনান তার দাস হোক।
27 ঈশ্বর যেফতের এলাকা প্রসারিত করুন; যেফৎ শেমের তাঁবুতে বসবাস করুক, আর কনান তার ক্রীতদাস হোক।”
২৭ঈশ্বর যেফৎকে বিস্তীর্ণ করুন; সে শেমের তাঁবুতে বাস করুক, আর কনান তার দাস হোক।”
28 বন্যার পর নোহ 350 বছর বেঁচেছিলেন।
২৮জলপ্লাবনের পরে নোহ তিনশো পঞ্চাশ বছর জীবিত থাকলেন।
29 নোহ মোট 950 বছর বেঁচেছিলেন, ও পরে তিনি মারা যান।
২৯সব মিলিয়ে নোহের নয়শো পঞ্চাশ বছর বয়স হলে তাঁর মৃত্যু হল।

< আদিপুস্তক 9 >