< আদিপুস্তক 6 >
1 পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা যখন বাড়তে শুরু করল ও তাদের ঔরসে কন্যাসন্তানেরা জন্মাল,
১এভাবে যখন পৃথিবীতে মানুষদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে লাগল ও অনেক মেয়ে জন্ম গ্রহণ করল,
2 তখন ঈশ্বরের ছেলেরা দেখল যে মানুষের মেয়েরা বেশ সুন্দরী, এবং তাদের মধ্যে থেকে তারা নিজেদের পছন্দমতো মেয়েকে বিয়ে করল।
২তখন ঈশ্বরের ছেলেরা মানুষদের মেয়েদেরকে সুন্দরী দেখে, যার যাকে ইচ্ছা, সে তাকে বিয়ে করতে লাগল।
3 তখন সদাপ্রভু বললেন, “আমার আত্মা অনন্তকাল ধরে মানুষের সাথে বিবাদ করবেন না, কারণ তারা নশ্বর; তাদের আয়ু হবে 120 বছর।”
৩তাতে সদাপ্রভু বললেন, “আমার আত্মা মানুষদের মধ্যে সবদিন থাকবে না, কারণ তারা মাংসমাত্র; কিন্তু তাদের দিন একশো কুড়ি বছর হবে।”
4 সে যুগে পৃথিবীতে নেফিলীমরা বসবাস করত—এবং পরবর্তীকালেও করত—যখন ঈশ্বরের ছেলেরা মানুষের মেয়েদের সঙ্গে সহবাস করল এবং তাদের মাধ্যমে সন্তানসন্ততি লাভ করল। তারাই প্রাচীনকালের বীরপুরুষ, বিখ্যাত মানুষ হল।
৪সেই দিনের পৃথিবীতে মহাবীররা ছিল এবং তার পরেও ঈশ্বরের ছেলেরা মানুষদের মেয়েদের কাছে গেলে তাদের গর্ভে ছেলেমেয়ে জন্মাল, তারাই সেকালের প্রসিদ্ধ বীর।
5 সদাপ্রভু দেখলেন পৃথিবীতে মানুষের দুষ্টতা কত বেড়ে গিয়েছে, এবং তাদের অন্তরের চিন্তাভাবনার প্রত্যেকটি প্রবণতা সবসময় শুধু মন্দই থেকে গেল।
৫আর সদাপ্রভু দেখলেন, পৃথিবীতে মানুষের দুষ্টতা বড় এবং তার হৃদয়ের চিন্তার সমস্ত কল্পনা সবদিন কেবল খারাপ।
6 পৃথিবীতে মানবজাতিকে তৈরি করেছেন বলে সদাপ্রভু মর্মাহত হলেন, এবং তাঁর অন্তর গভীর মর্মবেদনায় ভরে উঠল।
৬তাই সদাপ্রভু পৃথিবীতে মানুষের সৃষ্টির জন্য দুঃখিত হলেন ও মনে আঘাত পেলেন।
7 তাই সদাপ্রভু বললেন, “যে মানবজাতিকে আমি সৃষ্টি করেছি, তাদের—এবং তাদের সাথে সাথে পশুদের, পাখিদের ও সরীসৃপ প্রাণীদেরও—আমি এই পৃথিবীর বুক থেকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলব, কারণ তাদের তৈরি করেছি বলে আমার অনুতাপ হচ্ছে।”
৭আর সদাপ্রভু বললেন, “আমি যে মানুষকে সৃষ্টি করেছি, তাকে পৃথিবী থেকে উচ্ছিন্ন করব; মানুষের সঙ্গে পশু, সরীসৃপ জীব ও আকাশের পাখিদেরকেও উচ্ছিন্ন করব; কারণ তাদের সৃষ্টির জন্য আমার দুঃখ হচ্ছে।”
8 কিন্তু নোহ সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে অনুগ্রহ লাভ করলেন।
৮কিন্তু নোহ সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে অনুগ্রহ প্রাপ্ত হলেন। নোহের বংশ বৃত্তান্ত এই।
9 এই হল নোহ ও তাঁর পরিবারের বিবরণ। নোহ তাঁর সমকালীন লোকদের মধ্যে এক ধার্মিক, অনিন্দনীয় লোক ছিলেন, আর তিনি বিশ্বস্ততাপূর্বক ঈশ্বরের সাথে চলাফেরা করতেন।
৯নোহ সেই সময়ের লোকদের মধ্যে ধার্মিক ও সিদ্ধ লোক ছিলেন, নোহ ঈশ্বরের সঙ্গে যাতায়াত করতেন।
10 নোহের তিন ছেলে ছিল: শেম, হাম ও যেফৎ।
১০নোহ শেম, হাম ও যেফৎ নামে তিন ছেলের জন্ম দেন।
11 এমতাবস্থায় পৃথিবী ঈশ্বরের দৃষ্টিতে নীতিভ্রষ্ট ছিল এবং হিংস্রতাতেও পরিপূর্ণ হয়েছিল।
১১সেই দিনের পৃথিবী ঈশ্বরের সামনে ভ্রষ্ট ও মন্দতায় পরিপূর্ণ ছিল।
12 ঈশ্বর দেখলেন পৃথিবী কত নীতিভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছে, কারণ পৃথিবীর সব মানুষজন তাদের জীবনযাপন নীতিভ্রষ্ট করে তুলেছিল।
১২আর ঈশ্বর পৃথিবীতে দেখলেন, আর দেখ, সে ভ্রষ্ট হয়েছে, কারণ পৃথিবীতে অবস্থিত সমস্ত প্রাণী ভ্রষ্টাচারী হয়েছিল।
13 অতএব ঈশ্বর নোহকে বললেন, “আমি সব মানুষের জীবন শেষ করে দিতে চলেছি, কারণ এদের জন্যই পৃথিবী হিংস্রতায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আমি নির্ঘাৎ তাদের ও পৃথিবীকে একসাথে ধ্বংস করে দিতে চলেছি।
১৩তখন ঈশ্বর নোহকে বললেন, “আমার চোখের সামনে সমস্ত প্রাণীর অন্তিমকাল উপস্থিত, কারণ তাদের দিয়ে পৃথিবী অত্যাচারে পরিপূর্ণ হয়েছে; আর দেখ, আমি পৃথিবীর সঙ্গে তাদেরকে বিনষ্ট করব।
14 তাই তুমি নিজেই দেবদারু কাঠ দিয়ে একটি জাহাজ তৈরি করো; তার মধ্যে কয়েকটি ঘর তৈরি কোরো এবং তার ভিতরের ও বাইরের দিকে আলকাতরা মাখিয়ে দিয়ো।
১৪তুমি গোফর কাঠ দিয়ে এক জাহাজ তৈরী কর; সেই জাহাজের মধ্যে কামরা তৈরী করবে ও তার ভিতরে ও বাইরে ধূনা দিয়ে লেপে দেবে।
15 এভাবেই তোমাকে এটি তৈরি করতে হবে: জাহাজটি 135 মিটার লম্বা, 23 মিটার চওড়া ও 14 মিটার উঁচু হবে।
১৫এই ভাবে তা তৈরী করবে। জাহাজ দৈর্ঘ্যে তিনশো হাত, প্রস্থে পঞ্চাশ হাত ও উচ্চতায় ত্রিশ হাত হবে।
16 এর একটি ছাদ তৈরি কোরো এবং ছাদের নিচে চারদিকে 45 সেন্টিমিটার উঁচু একটি জানালা তৈরি কোরো। জাহাজটির একদিকে একটি দরজা তৈরি কোরো এবং জাহাজে নিম্ন, মধ্যম ও উপর তলা তৈরি কোরো।
১৬আর তার ছাদের এক হাত নিচে জানালা তৈরী করে রাখবে ও জাহাজের পাশে দরজা রাখবে; তার প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা তৈরী করবে।
17 পৃথিবীতে বন্যার জল পাঠিয়ে আমি আকাশমণ্ডলের নিচে থাকা সব প্রাণকে, প্রাণবায়ুবিশিষ্ট প্রত্যেকটি প্রাণীকে ধ্বংস করে দিতে চলেছি। পৃথিবীর সবকিছু ধ্বংস হবে।
১৭আর দেখ, আকাশের নীচে প্রাণবায়ুবিশিষ্ট যত জীবজন্তু আছে, সবাইকে বিনষ্ট করার জন্য আমি পৃথিবীর উপরে বন্যা আনব, পৃথিবীতে সবাই মারা যাবে।
18 কিন্তু তোমার সাথে আমি আমার নিয়ম প্রতিষ্ঠিত করব, এবং তুমি সেই জাহাজে প্রবেশ করবে—তুমি ও তোমার সাথে তোমার ছেলেরা, ও তোমার স্ত্রী এবং তোমার পুত্রবধূরাও।
১৮কিন্তু তোমার সঙ্গে আমি নিজের নিয়ম স্থির করব; তুমি নিজের ছেলেদের, স্ত্রী ও ছেলের বউদেরকে সঙ্গে নিয়ে সেই জাহাজে প্রবেশ করবে।
19 সব জীবিত প্রাণীর মধ্যে থেকে এক এক জোড়া করে মদ্দা ও মাদি প্রাণীকে তোমার সাথে বাঁচিয়ে রাখার জন্য তোমাকে জাহাজে এনে রাখতে হবে।
১৯আর মাংসবিশিষ্ট সমস্ত জীবজন্তুর স্ত্রীপুরুষ জোড়া জোড়া নিয়ে তাদের প্রাণরক্ষার জন্য নিজের সঙ্গে
20 জীবিত থাকার জন্য সব ধরনের পাখি, সব ধরনের পশু এবং সব ধরনের সরীসৃপ প্রাণী দুটি দুটি করে তোমার কাছে আসবে।
২০সেই জাহাজে প্রবেশ করাবে; সর্বজাতীয় পাখি ও সর্বজাতীয় পশু ও সর্বজাতীয় মাটিতে চলা সরীসৃপ জোড়া জোড়া প্রাণরক্ষার জন্য তোমার কাছে প্রবেশ করবে।
21 তোমাদের ও তাদের সকলের খাদ্যরূপে তোমাকে সব ধরনের খাদ্যদ্রব্য মজুত করতে হবে।”
২১আর তোমার ও তাদের আহারের জন্য তুমি সব ধরনের খাদ্য সামগ্রী এনে নিজের কাছে সঞ্চয় করবে।”
22 ঈশ্বর যেমন আদেশ দিয়েছিলেন, নোহ সবকিছু ঠিক সেভাবেই করলেন।
২২তাতে নোহ সেরকম করলেন, ঈশ্বরের আদেশ অনুসারেই সব কাজ করলেন।