< আদিপুস্তক 48 >
1 কিছুকাল পর যোষেফকে বলা হল, “আপনার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।” অতএব তিনি তাঁর দুই ছেলে মনঃশি ও ইফ্রয়িমকে সঙ্গে করে নিয়ে গেলেন।
2 যাকোবকে যখন বলা হল, “আপনার ছেলে যোষেফ আপনার কাছে এসেছেন,” তখন ইস্রায়েল শক্তি সঞ্চয় করে বিছানায় উঠে বসলেন।
3 যাকোব যোষেফকে বললেন, “সর্বশক্তিমান ঈশ্বর কনান দেশের লূসে আমাকে দর্শন দিয়েছিলেন, এবং সেখানে তিনি আমাকে আশীর্বাদ করেছিলেন
4 ও আমাকে বলেছিলেন, ‘আমি তোমাকে ফলবান করতে ও তোমার সংখ্যা বৃদ্ধি করতে চলেছি। আমি তোমাকে এক জনসমাজে পরিণত করব, এবং আমি তোমার পরে তোমার বংশধরদের এই দেশটি চিরস্থায়ী এক অধিকাররূপে দেব।’
5 “এখন তবে, আমি তোমার কাছে এখানে আসার আগে মিশরে তোমার যে দুই ছেলে জন্মেছিল, তারা আমারই বলে গণ্য হবে; ইফ্রয়িম ও মনঃশি আমারই হবে, ঠিক যেমন রূবেণ ও শিমিয়োনও আমার।
6 এদের পরে তোমার যে কোনো সন্তান জন্মাবে, তারা তোমারই হবে; উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত সেই অঞ্চলে তারা তাদের দাদাদের নামেই পরিচিত হবে।
7 আমি যখন পদ্দন থেকে ফিরছিলাম, তখন আমাদের যাত্রাপথেই ইফ্রাথ থেকে খানিকটা দূরে সেই কনান দেশে রাহেল মারা গিয়েছিল। তাই ইফ্রাথে (অথবা, বেথলেহেমে) যাওয়ার পথের পাশে আমি তাকে কবর দিয়েছিলাম।”
8 ইস্রায়েল যখন যোষেফের ছেলেদের দেখলেন, তখন তিনি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “এরা কারা?”
9 “এরা সেই ছেলেরা, ঈশ্বর যাদের এখানে আমাকে দিয়েছেন,” যোষেফ তাঁর বাবাকে বললেন। তখন ইস্রায়েল বললেন, “তাদের আমার কাছে নিয়ে এসো, যেন আমি তাদের আশীর্বাদ করতে পারি।”
10 বার্ধক্যের কারণে ইস্রায়েলের চোখের দৃষ্টি ক্ষীণ হয়ে এসেছিল, এবং দেখতে তাঁর খুব অসুবিধা হত। তাই যোষেফ নিজের ছেলেদের তাঁর খুব কাছে নিয়ে এলেন, এবং তাঁর বাবা তাদের চুমু দিলেন ও তাদের আলিঙ্গন করলেন।
11 ইস্রায়েল যোষেফকে বললেন, “আমি কখনও আশা করিনি যে তোমার মুখ আবার দেখতে পাব, আর ঈশ্বর এখন আমাকে তোমার সন্তানদেরও দেখার সুযোগ করে দিলেন।”
12 পরে যোষেফ ইস্রায়েলের দুই হাঁটুর মাঝখান থেকে তাদের সরিয়ে দিলেন এবং মাটিতে মুখ ঠেকিয়ে নতজানু হলেন
13 আর যোষেফ তাদের দুজনকে নিয়ে, ইফ্রয়িমকে নিজের ডানদিকে রেখে ইস্রায়েলের বাঁ হাতের দিকে এবং মনঃশিকে নিজের বাঁদিকে রেখে ইস্রায়েলের ডান হাতের দিকে এগিয়ে দিলেন, এবং তাঁর খুব কাছাকাছি নিয়ে এলেন।
14 কিন্তু ইস্রায়েল তাঁর ডান হাত বাড়িয়ে দিলেন এবং তা ইফ্রয়িমের মাথায় রাখলেন, যদিও সেই ছিল ছোটো, এবং তাঁর হাত দুটি আড়াআড়িভাবে বাড়িয়ে দিয়ে, তিনি তাঁর বাঁ হাত মনঃশির মাথায় রাখলেন, যদিও মনঃশিই ছিল প্রথমজাত সন্তান।
15 পরে তিনি যোষেফকে আশীর্বাদ করে বললেন, “আমার পূর্বপুরুষ অব্রাহাম ও ইস্হাক যে ঈশ্বরের সামনে বিশ্বস্ততাপূর্বক চলাফেরা করতেন, আজও পর্যন্ত আমার সমগ্র জীবনভোর যে ঈশ্বর আমার মেষপালক হয়ে থেকেছেন,
16 যে দূত আমাকে সব অনিষ্ট থেকে রক্ষা করেছেন, তিনিই এই বালকদের আশীর্বাদ করুন। তারা আমার এবং আমার পূর্বপুরুষ অব্রাহাম ও ইস্হাকের নাম দ্বারাই পরিচিত হোক, আর তারা এই পৃথিবীর বুকে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধিলাভ করুক।”
17 যোষেফ যখন দেখলেন যে তাঁর বাবা তাঁর ডান হাত ইফ্রয়িমের মাথায় রেখেছেন তখন তিনি অসন্তুষ্ট হলেন; তাই তিনি তাঁর বাবার হাতটি মনঃশির মাথার উপর রাখার জন্য সেটি ধরে ইফ্রয়িমের মাথার উপর থেকে সরিয়ে দিলেন।
18 যোষেফ তাঁকে বললেন, “হে আমার বাবা, না না, এই প্রথমজাত, এরই মাথার উপর আপনার ডান হাতটি রাখুন।”
19 কিন্তু তাঁর বাবা তা প্রত্যাখ্যান করে বললেন, “আমি জানি, বাছা, আমি জানি। সেও এক জাতিতে পরিণত হবে, এবং সেও মহান হবে। তা সত্ত্বেও, তার ছোটো ভাই তার থেকেও মহান হবে এবং তার বংশধরেরা এক জাতিপুঞ্জ হবে।”
20 সেদিন তিনি তাদের আশীর্বাদ করে বললেন, “তোমার নামেই ইস্রায়েল এই আশীর্বাদ উচ্চারণ করবে: ‘ঈশ্বর তোমাকে ইফ্রয়িম ও মনঃশির মতো করুন।’” অতএব তিনি ইফ্রয়িমকে মনঃশির আগে রাখলেন।
21 পরে ইস্রায়েল যোষেফকে বললেন, “আমি মরতে চলেছি, কিন্তু ঈশ্বর তোমাদের সহবর্তী থাকবেন এবং তোমাদের পূর্বপুরুষদের দেশে তোমাদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন।
22 আর আমি তোমার দাদা-ভাইদের যা দেব তা থেকেও তোমাকে দেশের আরও একটি বেশি শৈলশিরা দেব, যে শৈলশিরাটি আমি আমার তরোয়াল ও আমার ধনুক দিয়ে ইমোরীয়দের কাছ থেকে অধিকার করেছিলাম।”