< আদিপুস্তক 4 >
1 আদম তাঁর স্ত্রী হবার সঙ্গে সহবাস করলেন, এবং হবা গর্ভবতী হয়ে কয়িনের জন্ম দিলেন। হবা বললেন, “সদাপ্রভুর সাহায্য নিয়ে আমি একটি পুরুষমানুষ উৎপন্ন করেছি।”
১পরে আদম নিজের স্ত্রী হবার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করলে তিনি গর্ভবতী হয়ে কয়িনকে প্রসব করে বললেন, “সদাপ্রভুর সাহায্যতে আমি একটা মানুষকে জন্ম দিতে পেরেছি।”
2 পরে তিনি কয়িনের ভাই হেবলের জন্ম দিলেন। হেবল মেষপাল দেখাশোনা করত, এবং কয়িন জমি চাষ-আবাদ করত।
২পরে তিনি হেবল নামে তার ভাইকে প্রসব করলেন। হেবল মেষপালক ছিল, ও কয়িন চাষী ছিল।
3 অবশেষে কয়িন তার জমির কিছু ফল সদাপ্রভুর কাছে এক উপহার রূপে নিয়ে এল।
৩পরে নির্ধারিত দিনের কয়িন উপহাররূপে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে ভূমির ফল উৎসর্গ করল।
4 কিন্তু হেবল উপহার রূপে তার মেষপালের প্রথমজাত কয়েকটি মেষের চর্বিদার অংশ আনল। সদাপ্রভু হেবল ও তার উপহারের প্রতি সন্তুষ্ট হলেন,
৪আর হেবলও নিজের পালের প্রথমজাত কয়েকটি পশু ও তাদের মেদ উৎসর্গ করল। তখন সদাপ্রভু হেবলকে ও তার উপহার গ্রহণ করলেন;
5 কিন্তু কয়িন ও তার উপহারের প্রতি তিনি সন্তুষ্ট হননি। তাই কয়িন খুব ক্রুদ্ধ হল এবং সে বিষণ্ণবদন হয়ে পড়ল।
৫কিন্তু কয়িনকে ও তার উপহার গ্রহণ করলেন না; এই জন্য কয়িন খুবই রেগে গেল, তার মুখ বিষণ্ণ হল।
6 তখন সদাপ্রভু কয়িনকে বললেন, “তুমি ক্রুদ্ধ হলে কেন? কেন তুমি বিষণ্ণবদন হয়ে পড়েছ?
৬তাতে সদাপ্রভু কয়িনকে বললেন, “তুমি কেন রাগ করেছ? তোমার মুখ কেন বিষণ্ণ হয়েছে?
7 যদি তুমি ঠিক কাজ করতে, তবে কি গ্রাহ্য হতে না? কিন্তু যদি ঠিক কাজ না করে থাকো, তবে পাপ তোমার দরজায় গুটিসুটি মেরে আছে; পাপ তোমাকে গ্রাস করতে চাইছে, কিন্তু তোমাকেই পাপকে বশে রাখতে হবে।”
৭যদি ভালো আচরণ কর, তবে কি গ্রহণ করা হবে না? আর যদি ভালো আচরণ না কর, তবে পাপ দরজায় গুঁড়ি মেরে বসে আছে। তোমার প্রতি তার বাসনা থাকবে কিন্তু তোমার তার উপরে কর্তৃত্ব করা উচিত।”
8 এদিকে কয়িন তার ভাই হেবলকে বলল, “চলো, আমরা জমিতে যাই।” আর তারা যখন জমিতে ছিল, তখন কয়িন তার ভাই হেবলকে আক্রমণ করে তাকে হত্যা করল।
৮আর কয়িন নিজের ভাই হেবলের সঙ্গে কথোপকথন করল; পরে তারা ক্ষেতে গেলে কয়িন নিজের ভাই হেবলের বিরুদ্ধে উঠে তাকে মেরে ফেলল।
9 তখন সদাপ্রভু কয়িনকে বললেন, “তোমার ভাই হেবল কোথায়?” “আমি জানি না,” সে উত্তর দিল, “আমি কি আমার ভাইয়ের তত্ত্বাবধায়ক?”
৯পরে সদাপ্রভু কয়িনকে বললেন, তোমার ভাই হেবল কোথায়? সে উত্তর করল, “আমি জানি না, আমি কি আমার ভাইয়ের রক্ষক?”
10 সদাপ্রভু বললেন, “তুমি এ কী করলে? শোনো! জমি থেকে তোমার ভাইয়ের রক্তের কান্না আমার কানে ভেসে আসছে।
১০তিনি বললেন, “তুমি কি করেছ? তোমার ভাইয়ের রক্ত ভূমি থেকে আমার কাছে প্রতিফলের জন্য কাঁদছে।
11 এখন তুমি অভিশাপগ্রস্ত হলে এবং সেই জমি থেকে বিতাড়িতও হলে, যা তোমার হাত থেকে তোমার ভাইয়ের রক্ত গ্রহণ করার জন্য উন্মুক্ত হয়েছে।
১১আর এখন, যে ভূমি তোমার হাত থেকে তোমার ভাইয়ের রক্ত গ্রহণ করার জন্য নিজের মুখ খুলেছে, সেই ভূমিতে তুমি শাপগ্রস্ত হলে।
12 যখন তুমি এই জমিতে কাজ করবে, তখন আর তা তোমার জন্য ফসল উৎপন্ন করবে না। এ জগতে তুমি অশান্ত এক ভ্রমণকারী হয়েই থাকবে।”
১২যখন তুমি ভূমিতে কৃষিকাজ করবে তা নিজের শক্তি দিয়ে তোমার সেবা আর করবে না; তুমি পৃথিবীতে পলাতক ও ভ্রমণকারী হবে।”
13 কয়িন সদাপ্রভুকে বলল, “আমার শাস্তিটি, আমার শক্তির অতিরিক্ত হয়ে গেল।
১৩তাতে কয়িন সদাপ্রভুকে বলল, “আমার অপরাধের ভার অসহ্য।
14 আজ তুমি আমাকে কৃষিভূমি থেকে তাড়িয়ে দিলে, আর আমি তোমার উপস্থিতি থেকে লুকিয়ে পড়ব; পৃথিবীতে আমি অশান্ত এক ভ্রমণকারী হয়েই থাকব, এবং যে কেউ আমার দেখা পাবে সে আমাকে হত্যা করবে।”
১৪দেখ, আজ তুমি পৃথিবী থেকে আমাকে তাড়িয়ে দিলে, আর তোমার সামনে থেকে আমি লুকিয়ে থাকব। আমি পৃথিবীতে পলাতক ও ভ্রমণকারী হব, আর আমাকে যে পাবে, সে হত্যা করবে।”
15 কিন্তু সদাপ্রভু তাকে বললেন, “তা নয়; কেউ যদি কয়িনকে হত্যা করে, তবে তার প্রতিশোধে তাকে সাতগুণ বেশি নির্যাতন সহ্য করতে হবে।” পরে সদাপ্রভু কয়িনের গায়ে একটি চিহ্ন লাগিয়ে দিলেন, যেন যে কেউ কয়িনের খোঁজ পেয়ে তাকে হত্যা করতে না পারে।
১৫তাতে সদাপ্রভু তাকে বললেন, “এই জন্য কয়িনকে যে মারবে, সে সাত গুন প্রতিফল পাবে।” আর সদাপ্রভু কয়িনের জন্য এক চিহ্ন রাখলেন, যদি কেউ তাকে পেলে আক্রমণ করে।
16 অতএব কয়িন সদাপ্রভুর উপস্থিতি থেকে সরে গিয়ে এদনের পূর্বদিকে নোদ দেশে গিয়ে বসবাস করতে লাগল।
১৬পরে কয়িন সদাপ্রভুর সামনে থেকে চলে গিয়ে এদনের পূর্ব দিকে নোদ দেশে বাস করল।
17 কয়িন তার স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করল, ও তার স্ত্রী গর্ভবতী হয়ে হনোকের জন্ম দিল। পরে কয়িন একটি নগর গড়ে তার ছেলে হনোকের নামানুসারে সেটির নাম রাখল হনোক।
১৭আর কয়িন নিজের স্ত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করলে সে গর্ভবতী হয়ে হনোককে প্রসব করল। আর কয়িন এক নগর তৈরী করে নিজের ছেলের নামানুসারে তার নাম হনোক রাখল।
18 হনোক ঈরদের জন্ম দিল, এবং ঈরদ মহূয়ায়েলের বাবা হল, এবং মহূয়ায়েল মথূশায়েলের বাবা হল, এবং মথূশায়েল লেমকের বাবা হল।
১৮হনোকের ছেলে ঈরদ, ঈরদের ছেলে মহুয়ায়েল, মহুয়ায়েলের ছেলে মথূশায়েল ও
19 লেমক দুজন মহিলাকে বিয়ে করল, একজনের নাম আদা ও অন্যজনের নাম সিল্লা।
১৯মথূশায়েলের ছেলে লেমক। লেমক দুই স্ত্রী গ্রহণ করল, একজন স্ত্রীর নাম আদা, অন্যের নাম সিল্লা।
20 আদা যাবলের জন্ম দিল; যারা তাঁবুতে বসবাস করে ও গৃহপালিত পশুপাল পালন করে, সে তাদের পূর্বপুরুষ।
২০আদার গর্ভে যাবল জন্মাল, সে তাঁবুনিবাসী পশুপালকদের আদিপুরুষ ছিল। তার ভাইয়ের নাম যুবল;
21 তার ভাইয়ের নাম যুবল; যারা বীণা ও বাঁশি বাজায়, সে তাদের পূর্বপুরুষ।
২১সে বীণা ও বংশীধারী সকলের আদিপুরুষ ছিল।
22 সিল্লারও এক ছেলে ছিল, যে তূবল-কয়িন, ব্রোঞ্জ ও লোহা দিয়ে সেসব ধরনের যন্ত্রপাতি গড়ে তুলত। তূবল-কয়িনের বোনের নাম নয়মা।
২২আর সিল্লার গর্ভে তুবল-কয়িন জন্মাল, সে পিতলের ও লোহার নানা প্রকার অস্ত্র তৈরী করত। তুবল-কয়িনের বোনের নাম নয়মা।
23 লেমক তার স্ত্রীদের বলল, “আদা ও সিল্লা; আমার কথা শোনো; ওহে লেমকের স্ত্রীরা, আমার কথায় কান দাও। আমায় যন্ত্রণা দেওয়ার জন্য একটি লোককে আমি হত্যা করেছি, আমায় আহত করার জন্য একটি যুবককে আমি হত্যা করেছি।
২৩আর লেমক নিজের দুই স্ত্রীকে বলল, “আদা, সিল্লা, তোমরা আমার কথা শোন, লেমকের স্ত্রীরা আমার কথা শোন; কারণ আমি আঘাতের পরিশোধে পুরুষকে, প্রহারের পরিশোধে যুবাকে মেরে ফেলেছি।
24 কয়িনের হত্যার প্রতিশোধ যদি সাতগুণ হয়, তবে লেমকের হত্যার প্রতিশোধ হবে 77 গুণ।”
২৪যদি কয়িনের হত্যার প্রতিফল সাত গুন হয়, তবে লেমকের হত্যার প্রতিফল সাতাত্তর গুন হবে।”
25 আদম আবার তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করলেন, এবং হবা এক ছেলের জন্ম দিয়ে এই বলে তার নাম দিলেন শেথ, যে “কয়িন হেবলকে হত্যা করেছে বলে ঈশ্বর তার স্থানে আমাকে আর এক ছেলে মঞ্জুর করেছেন।”
২৫আর আদম আবার নিজের স্ত্রীর পরিচয় নিলে তিনি ছেলে প্রসব করলেন ও তার নাম শেথ রাখলেন। কারণ [তিনি বললেন] কয়িনের মাধ্যমে হত হেবলের পরিবর্তে ঈশ্বর আমাকে আর এক ছেলে দিলেন। পরে
26 শেথেরও একটি ছেলে হল, এবং তিনি তার নাম দিলেন ইনোশ। তখন থেকেই লোকেরা সদাপ্রভুর নামে ডাকতে শুরু করল।
২৬শেথেরও ছেলে হল, আর তিনি তার নাম ইনোশ রাখলেন। তখন লোকেরা সদাপ্রভুর নামে আরাধনা করতে আরম্ভ করল।