< আদিপুস্তক 39 >

1 যোষেফকে মিশরে নিয়ে যাওয়া হল। পোটিফর বলে একজন মিশরীয়, যিনি ফরৌণের রাজকর্মকর্তাদের মধ্যে একজন তথা পাহারাদারদের দলপতি ছিলেন, তিনি তাঁকে সেই ইশ্মায়েলীয়দের কাছ থেকে কিনে নিয়েছিলেন, যারা তাঁকে মিশরে নিয়ে গেল।
যোষেফকে মিশর দেশে নিয়ে যাওয়ার পর, যে ইশ্মায়েলীয়েরা তাকে সেখানে নিয়ে গিয়েছিল, তাদের কাছে ফরৌণের কর্মচারী পোটীফর তাকে কিনলেন, ইনি রক্ষক-সেনাপতি, একজন মিশরীয় লোক।
2 সদাপ্রভু যোষেফের সঙ্গে ছিলেন তাই তিনি সাফল্য পেলেন, এবং তিনি তাঁর মিশরীয় প্রভুর বাড়িতে বসবাস করতেন।
আর সদাপ্রভু যোষেফের সঙ্গে ছিলেন এবং তিনি সমৃদ্ধিশালী হলেন ও নিজের মিশরীয় প্রভুর ঘরে থাকলেন।
3 তাঁর প্রভু যখন দেখলেন যে সদাপ্রভু তাঁর সঙ্গে আছেন এবং তিনি যা যা করেন সবেতেই সদাপ্রভু তাঁকে সফলতা দেন,
আর সদাপ্রভু তাঁর সঙ্গে আছেন এবং তিনি যা কিছু করেন, সদাপ্রভু তাঁর হাতে তা সফল করছেন, এটা তাঁর প্রভু দেখলেন।
4 তখন যোষেফ তাঁর দৃষ্টিতে অনুগ্রহ লাভ করলেন ও তাঁর সেবক হয়ে গেলেন। পোটিফর তাঁকে নিজের পরিবারের দেখাশোনার দায়িত্ব দিলেন, এবং তাঁর মালিকানাধীন সবকিছু দেখাশোনার দায়িত্বও তাঁকে দিলেন।
অতএব যোষেফ তার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ প্রাপ্ত হলেন ও তার পরিচারক হলেন এবং তিনি যোষেফকে নিজের বাড়ির পরিচালক করে তার হাতে নিজের সব কিছুর দায়িত্ব দিলেন।
5 যে সময় থেকে তিনি যোষেফকে তাঁর পরিবারের ও তাঁর মালিকানাধীন সবকিছুর দায়িত্ব দিলেন, সদাপ্রভু যোষেফের জন্য সেই মিশরীয়ের পরিবারকে আশীর্বাদ করলেন। বাড়িতে ও জমিতে, পোটিফরের যা যা ছিল, সে সবকিছুর উপর সদাপ্রভুর আশীর্বাদ বর্তে ছিল।
যখন থেকে তিনি যোষেফকে নিজের বাড়ির ও সব কিছুর পরিচালক করলেন, তখন থেকে সদাপ্রভু যোষেফের অনুরোধে সেই মিশরীয় ব্যক্তির বাড়ির প্রতি আশীর্বাদ করলেন; বাড়িতে ও ক্ষেতে অবস্থিত তাঁর সমস্ত সম্পদের প্রতি সদাপ্রভু আশীর্বাদ করলেন।
6 অতএব পোটিফর তাঁর সবকিছু দেখাশোনার দায়িত্ব যোষেফের উপর ছেড়ে দিলেন; যোষেফ সেই দায়িত্ব সামলানোর সময়, তিনি যে যে খাবারদাবার খেতেন সেগুলি ছাড়া তিনি আর কোনো বিষয়ে চিন্তা করতেন না। যোষেফ শক্তপোক্ত ও সুদর্শন পুরুষ ছিলেন,
অতএব তিনি যোষেফের হাতে নিজের সব কিছুর ভার দিলেন, তিনি নিজের খাবারের জিনিস ছাড়া আর কিছুরই বিষয়ে চিন্তা করতেন না। যোষেফ রূপবান ও সুন্দর ছিলেন।
7 এবং কিছুকাল পর তার প্রভু-পত্নীর দৃষ্টি যোষেফের উপর গিয়ে পড়ল ও সে বলল, “আমার সাথে বিছানায় এসো!”
এই সব ঘটনার পর তাঁর প্রভুর স্ত্রী যোষেফের প্রতি দৃষ্টিপাত করল; আর তাঁকে বলল, “আমার সঙ্গে শয়ন কর।”
8 কিন্তু তিনি সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেন। “আমাকে দায়িত্ব দিয়ে,” তিনি তাকে বললেন, “আমার প্রভু বাড়ির কোনও বিষয়েই আর মাথা ঘামান না; তাঁর মালিকানাধীন সবকিছুই তিনি আমার দায়িত্বে ছেড়ে দিয়েছেন।
কিন্তু তিনি অস্বীকার করায় নিজের প্রভুর স্ত্রীকে বললেন, “দেখুন, এই বাড়িতে আমার হাতে কি কি আছে, আমার প্রভু তা জানেন না; আমারই হাতে সব কিছু রেখেছেন;
9 এই বাড়িতে আমার চেয়ে বড়ো আর কেউ নেই। আপনাকে ছাড়া আর কোনো কিছুই আমার প্রভু আমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখেননি, কারণ আপনি যে তাঁর স্ত্রী। তবে কীভাবে আমি এ ধরনের জঘন্য কাজ এবং ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ করব?”
এই বাড়িতে আমার থেকে বড় কেউই নেই; তিনি সকলের মধ্যে শুধু আপনাকেই আমার অধীনা করেননি; কারণ আপনি তাঁর স্ত্রী। অতএব আমি কিভাবে এই এত বড় খারাপ কাজ করতে ও ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ করতে পারি?”
10 আর যদিও সেই মহিলা দিনের পর দিন যোষেফকে একই কথা বলে যাচ্ছিল, তবুও তিনি তাঁর সাথে বিছানায় যেতে অস্বীকার করলেন; এমনকি তিনি তাঁর সঙ্গে থাকতেও চাইলেন না।
১০সে দিন দিন যোষেফকে সেই কথা বললেও তিনি তার সঙ্গে শয়ন করতে কিম্বা সঙ্গে থাকতে তার কথায় রাজি হতেন না।
11 একদিন তিনি নিজের দায়িত্ব পালন করার জন্য বাড়ির ভিতরে গেলেন, এবং পারিবারিক দাস-দাসীদের মধ্যে কেউই তখন ভিতরে ছিল না।
১১পরে এক দিন যোষেফ কাজ করার জন্য ঘরের মধ্যে গেলেন, বাড়ির লোকদের মধ্যে অন্য কেউ সেখানে ছিল না,
12 তাঁর প্রভু-পত্নী তাঁর আলখাল্লা টেনে ধরে বলল, “আমার সাথে বিছানায় এসো!” কিন্তু তিনি তার হাতে নিজের আলখাল্লাটি ছেড়ে দিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেলেন।
১২তখন সে যোষেফের পোশাক ধরে বলল, “আমার সঙ্গে শয়ন কর৷” কিন্তু যোষেফ তার হাতে নিজের পোশাক ফেলে বাইরে পালিয়ে গেলেন।
13 যখন সে দেখল যে যোষেফ তার হাতে নিজের আলখাল্লাটি ছেড়ে দিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছেন,
১৩তখন যোষেফ তার হাতে পোশাক ফেলে বাইরে পালালেন দেখে, সে নিজের ঘরের লোকদেরকে ডেকে বলল,
14 তখন সে তার পারিবারিক দাস-দাসীদের ডাক দিল। “দেখো,” সে তাদের বলল, “এই হিব্রুটিকে আমাদের সঙ্গে ফুর্তি করার জন্য আনা হয়েছে! সে এখানে ভিতরে এসে আমার সঙ্গে শুতে চেয়েছিল, কিন্তু আমি চিৎকার করে উঠেছিলাম।
১৪“দেখ, তিনি আমাদের সঙ্গে ঠাট্টা করতে একজন ইব্রীয় পুরুষকে এনেছেন; সে আমার সঙ্গে শয়ন করবার জন্য আমার কাছে এসেছিল, তাতে আমি চিৎকার করে উঠলাম;”
15 যখন সে শুনল আমি সাহায্য পাওয়ার জন্য চিৎকার করছি, তখন সে আমার পাশে তার আলখাল্লাটি ছেড়ে দিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেল।”
১৫আমার চিৎকার শুনে সে আমার কাছে নিজের পোশাকটি ফেলে বাইরে পালিয়ে গেল।
16 তাঁর প্রভু ঘরে না ফেরা পর্যন্ত সেই মহিলাটি তাঁর আলখাল্লাটি নিজের পাশে রেখে দিয়েছিল।
১৬আর যতক্ষণ তার কর্তা ঘরে না আসলেন, সে পর্যন্ত সেই স্ত্রীলোক তাঁর পোশাক নিজের কাছে রেখে দিল।
17 পরে সে পোটিফরকে এই গল্পটি বলে শোনাল: “যে হিব্রু ক্রীতদাসটিকে তুমি এনেছিলে, সে আমার সঙ্গে ফুর্তি করার জন্য আমার কাছে এসেছিল।
১৭পরে সে সেই কথা অনুযায়ী তাঁকে বলল, “তুমি যে ইব্রীয় দাসকে আমাদের কাছে এনেছ, সে আমার সঙ্গে ঠাট্টা করতে আমার কাছে এসেছিল;
18 কিন্তু যেই না আমি সাহায্যের জন্য চিৎকার করে উঠেছিলাম, সে আমার পাশে তার আলখাল্লাটি ছেড়ে দিয়ে পালিয়েছিল।”
১৮পরে আমি চিৎকার করে উঠলে সে আমার কাছে তার বস্ত্রখানি ফেলে বাইরে পালিয়ে গেল।”
19 “তোমার ক্রীতদাসটি আমার সঙ্গে এই ধরনের ব্যবহার করেছে,” এই গল্পটি যখন যোষেফের প্রভু-পত্নী তাঁর প্রভুকে বলে শোনাল, তখন তিনি রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে উঠলেন।
১৯তাঁর প্রভু যখন নিজের স্ত্রীর এই কথা শুনলেন যে, “তোমার দাস আমার প্রতি এইরকম ব্যবহার করেছে,” তখন খুব রেগে গেলেন।
20 যোষেফের প্রভু যোষেফকে ধরে সেই জেলখানায় পুরে দিলেন, যেখানে রাজার কয়েদিদের বন্দি করে রাখা হত। কিন্তু যোষেফ যখন সেই জেলখানায় ছিলেন,
২০অতএব যোষেফের প্রভু তাঁকে নিয়ে কারাগারে রাখলেন, যে জায়গায় রাজার বন্দিরা বন্ধ থাকত; তাতে তিনি সেখানে, সেই কারাগারে থাকলেন।
21 সদাপ্রভু তখন তাঁর সঙ্গেই ছিলেন; তিনি তাঁকে দয়া দেখালেন ও সেই জেল-রক্ষকের দৃষ্টিতে তাঁকে অনুগ্রহ পেতেও দিলেন।
২১কিন্তু সদাপ্রভু যোষেফের সঙ্গে ছিলেন এবং তাঁর প্রতি দয়া করলেন ও তাঁকে কারারক্ষকের দৃষ্টিতে অনুগ্রহ-পাত্র করলেন।
22 অতএব সেই জেল-রক্ষক যোষেফকে জেলের সব বন্দির তত্ত্বাবধায়ক করে দিলেন, এবং সেখানে যা যা কাজকর্ম হত, সেসবের দায়িত্বও তাঁকে দিলেন।
২২তাতে কারারক্ষক কারাগারে অবস্থিত সমস্ত বন্দির ভার যোষেফের হাতে সমর্পণ করলেন এবং সেখানকার লোকেদের সমস্ত কাজ যোষেফের আদেশ অনুযায়ী চলতে লাগল।
23 যোষেফের তত্ত্বাবধানে যা কিছু ছিল, তার কোনোটির প্রতিই সেই রক্ষক মনোযোগ দিতেন না, কারণ সদাপ্রভু যোষেফের সঙ্গে ছিলেন ও তিনি যা কিছু করতেন, সবেতেই তিনি তাঁকে সাফল্য দিলেন।
২৩কারারক্ষক তাঁর অধিকারের কোনো বিষয়ে দেখতেন না, কারণ সদাপ্রভু তাঁর সঙ্গী ছিলেন এবং তিনি যা কিছু করতেন সদাপ্রভু তা সফল করতেন।

< আদিপুস্তক 39 >