< আদিপুস্তক 38 >
1 সেই সময় যিহূদা তাঁর দাদা-ভাইদের ছেড়ে হীরা নামক অদুল্লম নিবাসী একজন লোকের সঙ্গে থাকতে চলে গেলেন।
2 সেখানে যিহূদা শূয় নামক কনানীয় একজন লোকের মেয়ের দেখা পেলেন। তিনি তাকে বিয়ে করলেন ও তাকে প্রণয়জ্ঞাপনও করলেন;
3 সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ল ও এক ছেলের জন্ম দিল, যার নাম রাখা হল এর।
4 সে আবার গর্ভবতী হল ও এক ছেলের জন্ম দিল, ও তার নাম রাখল ওনন।
5 সে আরও এক ছেলের জন্ম দিল ও তার নাম রাখল শেলা। শেলার জন্মের সময় তাঁরা কষীবেই বসবাস করতেন।
6 যিহূদা তাঁর বড়ো ছেলে এরের জন্যে এক স্ত্রী এনেছিলেন, তার নাম তামর।
7 কিন্তু যিহূদার বড়ো ছেলে এর, সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে দুষ্ট ছিল; তাই সদাপ্রভু তাকে মেরে ফেললেন।
8 পরে যিহূদা ওননকে বললেন, “তোমার দাদার স্ত্রীর সঙ্গে শুয়ে পড়ো এবং তোমার দাদার হয়ে সন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য তার প্রতি তোমার দায়িত্ব পালন করো।”
9 কিন্তু ওনন জানত যে সেই সন্তানটি তার নিজের হবে না, তাই যখনই সে তার দাদার স্ত্রীর সাথে শুতো, সে তার বীর্য মাটিতে ফেলে দিত, যেন তাকে তার দাদার হয়ে কোনও সন্তানের জন্ম দিতে না হয়।
10 সে যা করল তা সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে অপকর্মরূপে গণ্য হল; তাই সদাপ্রভু তাকেও মেরে ফেললেন।
11 যিহূদা তখন তাঁর পুত্রবধূ তামরকে বললেন, “আমার ছেলে শেলা যতদিন না বড়ো হচ্ছে, ততদিন তুমি তোমার বাবার ঘরে গিয়ে বিধবার মতো হয়ে থাকো।” কারণ তিনি ভাবলেন, “সেও হয়তো তার দাদাদের মতো মারা যাবে।” অতএব তামর তার বাবার ঘরে থাকতে চলে গেল।
12 বেশ কিছুকাল পর শূয়ের সেই মেয়ে, যিহূদার স্ত্রী মারা গেল। যিহূদা যখন তাঁর মর্মযন্ত্রণা কাটিয়ে উঠলেন, তখন তিনি তিম্নায় সেই লোকজনের কাছে উঠে গেলেন, যারা তাঁর মেষগুলির লোম ছাঁটছিল, এবং তাঁর বন্ধু অদুল্লমীয় হীরাও তাঁর সঙ্গে গেলেন।
13 যখন তামরকে বলা হল, “তোমার শ্বশুরমশাই তাঁর মেষগুলির লোম ছাঁটার জন্য তিম্নার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন,”
14 তখন সে তার বৈধব্য-বস্ত্রটি খুলে ফেলল, ছদ্মবেশ ধারণের জন্য ঘোমটায় মুখ ঢাকল, এবং পরে সেই ঐনয়িমের প্রবেশদ্বারে গিয়ে বসল, যা তিম্নায় যাওয়ার পথেই পড়ে। কারণ সে দেখল যে, যদিও শেলা এখন বেড়ে উঠেছে, তবুও তার স্ত্রীরূপে তাকে তার হাতে তুলে দেওয়া হয়নি।
15 যিহূদা যখন তাকে দেখলেন, তখন তিনি ভাবলেন যে সে একজন বেশ্যা, কারণ সে তার মুখ ঢেকে রেখেছিল।
16 সে যে তাঁর পুত্রবধূ, একথা না বুঝেই তিনি রাস্তার ধারে তার কাছে গিয়ে বললেন, “এবার এসো, আমি তোমার সঙ্গে শুয়ে পড়ি।” “আর আপনার সঙ্গে শোয়ার জন্য আপনি আমাকে কী দেবেন?” সে জিজ্ঞাসা করল।
17 “আমার পশুপাল থেকে একটি ছাগশাবক আমি তোমার কাছে পাঠিয়ে দেব,” তিনি বললেন। “যতদিন না আপনি আমার কাছে সেটি পাঠাচ্ছেন, ততদিন আপনি কি জামানতরূপে আমাকে কিছু দেবেন?” সে জিজ্ঞাসা করল।
18 তিনি বললেন, “জামানতরূপে তোমাকে আমি কী দেব?” “আপনার সিলমোহর ও সেটির সুতো, ও আপনার হাতের লাঠিটি,” সে উত্তর দিল। অতএব তিনি তাকে সেগুলি দিলেন ও তাঁর সঙ্গে শুলেন, এবং সে তাঁর দ্বারা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ল।
19 সেখান থেকে চলে যাওয়ার পর, সে তার ওড়নাটি খুলে ফেলল এবং আবার তার বৈধব্য-বস্ত্রটি পরে নিল।
20 ইতিমধ্যে যিহূদা সেই মহিলাটির কাছ থেকে তাঁর জামানতটি ফিরে পাওয়ার লক্ষ্যে তাঁর সেই অদুল্লমীয় বন্ধুর মাধ্যমে সেই ছাগশাবকটি পাঠিয়ে দিলেন, কিন্তু তিনি তাকে খুঁজে পাননি।
21 সেখানে বসবাসকারী লোকজনকে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “ঐনয়িমের রাস্তার ধারে যে দেবদাসীটি ছিল, সে কোথায়?” তারা বলল, “এখানে কোনও দেবদাসী থাকে না।”
22 অতএব তিনি যিহূদার কাছে ফিরে গেলেন ও বললেন, “আমি তাকে খুঁজে পাইনি। এছাড়াও, সেখানে বসবাসকারী লোকজনও বলল, ‘এখানে কোনও দেবদাসী থাকে না।’”
23 তখন যিহূদা বললেন, “তার কাছে যা আছে তা সে রেখে দিক, তা না হলে আমাদের এক হাসির খোরাক হতে হবে। যাই হোক না কেন, আমি তো এই ছাগশাবকটি তার কাছে পাঠিয়েছিলাম, কিন্তু তুমি তাকে খুঁজে পাওনি।”
24 প্রায় তিন মাস পর যিহূদাকে বলা হল, “আপনার পুত্রবধূ তামর বেশ্যাবৃত্তির অপরাধ করেছে, এবং পরিণামস্বরূপ এখন সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে।” যিহূদা বললেন, “তাকে বের করে আনো ও আগুনে পুড়িয়ে মারো!”
25 তাকে যখন বের করে আনা হচ্ছিল, সে তখন তার শ্বশুরের কাছে একটি খবর পাঠিয়েছিল। “যিনি এগুলির মালিক, তাঁর দ্বারাই আমি অন্তঃসত্ত্বা হয়েছি,” সে বলল। আর সে এও বলল, “দেখুন তো, এই সিলমোহর ও সুতো এবং লাঠিটি কার তা আপনি চিনতে পারেন কি না।”
26 যিহূদা সেগুলি চিনতে পেরে বললেন, “সে আমার থেকে বেশি ধার্মিক, যেহেতু আমি তাকে আমার ছেলে শেলার হাতে তুলে দিইনি।” তিনি আর কখনও তামরের সঙ্গে শয়ন করেননি।
27 যখন তামরের প্রসবকাল এসে উপস্থিত হল, তখন দেখা গেল তার গর্ভে যমজ ছেলে।
28 যখন সে সন্তান প্রসব করছিল, তাদের মধ্যে একজন তার হাত বাইরে বের করল; অতএব ধাত্রী টকটকে লাল রংয়ের সুতো নিয়ে সেটি তার কব্জিতে বেঁধে দিল ও বলল, “এই প্রথমে বের হয়েছে।”
29 কিন্তু সে যখন তার হাতটি টেনে নিল, তখন তার ভাই বের হয়ে এল, ও ধাত্রী বলল, “অতএব তুমি এভাবেই আবির্ভূত হয়েছ!” আর তার নাম রাখা হল পেরস।
30 পরে তার সেই ভাই বের হয়ে এল, যার কব্জিতে টকটকে লাল রংয়ের সুতো বাঁধা ছিল। আর তার নাম রাখা হল সেরহ।