< আদিপুস্তক 33 >
1 যাকোব চোখ তুলে তাকিয়ে সেই এষৌকে দেখতে পেলেন, যিনি 400 জন লোক নিয়ে এগিয়ে আসছিলেন; অতএব তিনি লেয়া, রাহেল ও দুই দাসীর মধ্যে সন্তানদের ভাগাভাগি করে দিলেন।
১পরে যাকোব চোখ তুলে চাইলেন, আর দেখ, এষৌ আসছেন ও তাঁর সঙ্গে চারশো লোক। তখন তিনি ছেলেদেরকে বিভাগ করে লেয়াকে, রাহেলকে ও দুই দাসীকে সমর্পণ করলেন;
2 সামনের দিকে তিনি দাসীদের ও তাদের সন্তানদের, পরে লেয়া ও তাঁর সন্তানদের এবং পিছন দিকে রাহেল ও যোষেফকে রাখলেন।
২সবার আগে দুই দাসী ও তাদের ছেলেমেয়েদেরকে, তার পিছনে লেয়া ও তাঁর ছেলেমেয়েদেরকে, সবার পিছনে রাহেল ও যোষেফকে রাখলেন।
3 তিনি স্বয়ং সবার আগে এগিয়ে গেলেন এবং তাঁর দাদার কাছাকাছি পৌঁছে সাতবার মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে অভিবাদন জানালেন।
৩পরে নিজে সবার আগে গিয়ে সাত বার ভূমিতে নত হতে হতে নিজের ভাইয়ের কাছে উপস্থিত হলেন।
4 কিন্তু এষৌ যাকোবের সঙ্গে দেখা করার জন্য ছুটে এলেন এবং তাঁকে আলিঙ্গন করলেন; তিনি দু-হাতে তাঁর গলা জড়িয়ে ধরে তাঁকে চুমু দিলেন। আর তাঁরা কান্নাকাটি করলেন।
৪তখন এষৌ তাঁর সঙ্গে দেখা করতে দৌড়ে এসে তাঁর গলা ধরে আলিঙ্গন ও চুম্বন করলেন এবং উভয়েই কাঁদলেন।
5 পরে এষৌ মুখ তুলে তাকালেন এবং সব মহিলা ও সন্তানকে দেখতে পেলেন। “তোমার সঙ্গে এরা কারা?” তিনি জিজ্ঞাসা করলেন। যাকোব উত্তর দিলেন, “এরা সেইসব সন্তানসন্ততি যাদের ঈশ্বর অনুগ্রহ করে আপনার এই দাসকে দিয়েছেন।”
৫পরে এষৌ চোখ তুলে নারীদেরকে ও বালকদেরকে দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, “এরা তোমার কে?” তিনি বললেন, “ঈশ্বর অনুগ্রহ করে আপনার দাসকে এই সব সন্তান দিয়েছেন।”
6 তখন দাসীরা ও তাদের সন্তানেরা এগিয়ে এসে অভিবাদন জানাল।
৬তখন দাসীরা ও তাদের ছেলেমেয়েরা কাছে এসে প্রণাম করল;
7 পরে, লেয়া ও তাঁর সন্তানেরা এসে অভিবাদন জানালেন। সবশেষে যোষেফ ও রাহেল এলেন, এবং তাঁরাও অভিবাদন জানালেন।
৭পরে লেয়া ও তাঁর ছেলেমেয়েরা কাছে এসে প্রণাম করলেন; শেষে যোষেফ ও রাহেল কাছে এসে প্রণাম করলেন।
8 এষৌ জিজ্ঞাসা করলেন, “যেসব মেষ ও পশুপালের সঙ্গে আমার দেখা হল, সেগুলির অর্থ কী?” “হে আমার প্রভু, আপনার দৃষ্টিতে দয়া পাওয়ার জন্য,” তিনি বললেন।
৮পরে এষৌ জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি যে সব দলের সঙ্গে মিলিত হলাম, সে সমস্ত কিসের জন্য?” তিনি বললেন, “প্রভুর দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পাবার জন্য।”
9 কিন্তু এষৌ বললেন, “হে আমার ভাই, আমার কাছে তো যথেষ্ট আছে। তোমার কাছে যা আছে, তা নিজের জন্যই রেখে দাও।”
৯তখন এষৌ বললেন, “আমার যথেষ্ট আছে, ভাই, তোমার যা আছে তা তোমার থাকুক।”
10 যাকোব বললেন, “আপনার দৃষ্টিতে আমি যদি দয়া পেয়েছি, তবে দয়া করে আমার কাছ থেকে এই উপহারটি গ্রহণ করুন। কারণ আপনার মুখ দেখার অর্থ হল ঈশ্বরেরই মুখ দেখা, যেহেতু এখন আপনি দয়া দেখিয়ে আমাকে গ্রহণ করেছেন।
১০যাকোব বললেন, “তা না, অনুরোধ করি, আমি যদি আপনার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পেয়ে থাকি, তবে আমার হাত থেকে উপহার গ্রহণ করুন; কারণ আমি ঈশ্বরের মুখ দর্শনের মতো আপনার মুখ দর্শন করলাম, আপনিও আমার প্রতি প্রসন্ন হলেন।
11 আপনার কাছে যে উপহারটি আনা হয়েছে তা দয়া করে গ্রহণ করুন, কারণ ঈশ্বর আমার প্রতি অনুগ্রহশীল হয়েছেন এবং আমার যা যা প্রয়োজন তা আমার কাছে আছে।” আর যেহেতু যাকোব পীড়াপীড়ি করলেন, তাই এষৌ তা গ্রহণ করলেন।
১১অনুরোধ করি, আপনার কাছে যে উপহার আনা হয়েছে, তা গ্রহণ করুন; কারণ ঈশ্বর আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন এবং আমার সবই আছে।” এই ভাবে অনুরোধ করলে এষৌ তা গ্রহণ করলেন।
12 পরে এষৌ বললেন, “চলো আমরা রওনা দিই; আমিও তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে যাব।”
১২পরে এষৌ বললেন, “এস আমরা যাই; আমি তোমার আগে আগে যাব।”
13 কিন্তু যাকোব তাঁকে বললেন, “আমার প্রভু তো জানেন যে শিশুসন্তানেরা সুকুমার এবং আমাকে সেইসব মেষীর ও গরুর যত্ন নিতে হবে, যারা তাদের শাবকদের শুশ্রুষা করছে। একদিনেই যদি তাদের জোরে তাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, তবে সব পশু মারা যাবে।
১৩তিনি তাঁকে বললেন, “আমার প্রভু জানেন, এই ছেলেরা কোমল এবং দুগ্ধবতী ভেড়ী ও গরু সব আমার সঙ্গে আছে; একদিন খুব জোরে গেলেই সব পালই মারা যাবে।”
14 অতএব আমার প্রভুই তাঁর দাসের আগে আগে চলে যান, আর যতক্ষণ না আমি আমার প্রভুর কাছে সেয়ীরে উপস্থিত হতে পারছি, ততক্ষণ আমি আমার আগে আগে যাওয়া মেষ ও পশুপালের এবং শিশু সন্তানদের গতির সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।”
১৪“নিবেদন করি, হে আমার প্রভু আপনি নিজের দাসের আগে যান; আর আমি যতক্ষণ সেয়ীরে আমার প্রভুর কাছে উপস্থিত না হই, ততক্ষণ আমার সামনে চলা পশুদের চলবার শক্তি অনুসারে এবং এই ছেলে মেয়েদের, চলবার শক্তি অনুসারে ধীরে ধীরে চালাই।”
15 এষৌ বললেন, “তবে আমার কিছু লোকজন তোমাদের কাছে ছেড়ে যাই!” “কিন্তু তা কেন করবেন?” যাকোব জিজ্ঞাসা করলেন। “আমার প্রভুর দৃষ্টিতে শুধু আমাকে দয়া পেতে দিন।”
১৫এষৌ বললেন, “তবে আমার সঙ্গী কিছু লোক তোমার কাছে রেখে যাই।” তিনি বললেন, “তাতেই বা প্রয়োজন কি? আমার প্রভুর দৃষ্টিতে আমি অনুগ্রহ পেলেই হল।”
16 অতএব সেদিন এষৌ সেয়ীরের দিকে ফিরে যাওয়ার জন্য যাত্রা শুরু করলেন।
১৬আর এষৌ সেই দিন সেয়ীরের পথে ফিরে গেলেন।
17 যাকোব, অবশ্য, সেই সুক্কোতে চলে গেলেন, যেখানে তিনি নিজের জন্য এক বাড়ি ও তাঁর গৃহপালিত পশুপালের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল তৈরি করলেন। সেই কারণে সেই স্থানটিকে সুক্কোৎ বলে ডাকা হয়।
১৭কিন্তু যাকোব সুক্কোতে গিয়ে নিজের জন্য গৃহ ও পশুদের জন্য কয়েকটি ঘর তৈরী করলেন, এই জন্য সেই জায়গা সুক্কোৎ [কুটীর সকল] নামে আখ্যাত আছে।
18 পদ্দন-আরাম থেকে চলে আসার পর যাকোব নিরাপদে কনান দেশের শিখিম নগরে পৌঁছে গেলেন এবং সেই নগরের কাছেই নিজের শিবির স্থাপন করলেন।
১৮পরে যাকোব পদ্দন্-অরাম থেকে এসে, নিরাপদে কনান দেশের শিখিম নগরে উপস্থিত হয়ে, নগরের বাইরে তাঁবু স্থাপন করলেন।
19 100 রৌপমুদ্রা দিয়ে, তিনি শিখিমের বাবা হমোরের ছেলেদের কাছ থেকে সেই জমিখণ্ডটি কিনলেন, যেখানে তিনি তাঁবু খাটিয়েছিলেন।
১৯পরে শিখিমের বাবা যে হমোর, তাঁর ছেলেদেরকে রূপার একশো কসীতা [মুদ্রা] দিয়ে তিনি নিজের তাঁবু স্থাপনের ভূমিখণ্ড কিনলেন
20 সেখানে তিনি একটি যজ্ঞবেদি নির্মাণ করে সেটির নাম রাখলেন এল্-এলোহে-ইস্রায়েল।
২০এবং সেখানে এক যজ্ঞবেদি নির্মাণ করে তার নাম এল-ইলহে-ইস্রায়েল [ঈশ্বর, ইস্রায়েলের ঈশ্বর] রাখলেন।