< আদিপুস্তক 3 >
1 এখন সদাপ্রভু ঈশ্বরের নির্মিত যে কোনো বন্যপশুর মধ্যে সাপই ছিল সবচেয়ে ধূর্ত। সে নারীকে বলল, “সত্যিই কি ঈশ্বর বলেছেন, ‘তোমরা অবশ্যই বাগানের কোনও গাছের ফল খেয়ো না’?”
2 নারী সাপকে বললেন, “আমরা বাগানের গাছগুলি থেকে ফল খেতে পারি,
3 কিন্তু ঈশ্বর বলেছেন, ‘বাগানের মাঝখানে যে গাছটি আছে, তার ফল তোমরা অবশ্যই খাবে না, আর এটি তোমরা ছোঁবেও না, এমনটি করলে তোমরা মারা যাবে।’”
4 “অবশ্যই তোমরা মরবে না,” সাপ নারীকে বলল।
5 “কারণ ঈশ্বর জানেন যে, যখন তোমরা এটি খাবে, তখন তোমাদের চোখ খুলে যাবে, ও তোমরা ভালোমন্দ জানার ক্ষেত্রে ঈশ্বরের মতো হয়ে যাবে।”
6 নারী যখন দেখলেন যে সেই গাছের ফলটি খাদ্য হিসেবে ভালো ও চোখের পক্ষে আনন্দদায়ক, এবং জ্ঞানার্জনের পক্ষেও কাম্য, তখন তিনি কয়েকটি ফল পেড়ে তা খেলেন। তিনি তাঁর সেই স্বামীকেও কয়েকটি ফল দিলেন, যিনি তাঁর সঙ্গেই ছিলেন ও তিনিও তা খেলেন।
7 তখন তাদের দুজনেরই চোখ খুলে গেল, এবং তারা অনুভব করলেন যে তারা উলঙ্গ; তাই তারা ডুমুর গাছের পাতা একসাথে সেলাই করে নিজেদের জন্য আচ্ছাদন তৈরি করলেন।
8 তখন সেই মানুষটি ও তাঁর স্ত্রী সেই সদাপ্রভু ঈশ্বরের হাঁটার আওয়াজ শুনতে পেলেন, যিনি দিনের পড়ন্ত বেলায় বাগানে হেঁটে চলে বেড়াচ্ছিলেন, এবং তারা সদাপ্রভু ঈশ্বরকে এড়িয়ে বাগানের গাছগুলির আড়ালে লুকিয়ে পড়লেন।
9 কিন্তু সদাপ্রভু ঈশ্বর সেই মানুষটিকে ডেকে বললেন, “তুমি কোথায়?”
10 তিনি উত্তর দিলেন, “বাগানে আমি তোমার হাঁটার আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলাম, আর আমি ভয় পেয়েছিলাম কারণ আমি যে উলঙ্গ; তাই আমি লুকিয়ে পড়েছি।”
11 আর সদাপ্রভু ঈশ্বর বললেন, “কে তোমাকে বলেছে যে তুমি উলঙ্গ? যে গাছের ফল না খাওয়ার আদেশ আমি তোমাকে দিয়েছিলাম, সেই গাছের ফল তুমি কি খেয়েছ?”
12 মানুষটি বললেন, “আমার সঙ্গে তুমি যে নারীকে এখানে রেখেছ—সেই গাছটি থেকে কয়েকটি ফল আমায় দিয়েছিল এবং আমি তা খেয়ে ফেলেছি।”
13 তখন সদাপ্রভু ঈশ্বর নারীকে বললেন, “তুমি এ কী করলে?” নারী বললেন, “সাপ আমাকে প্রতারিত করেছে, ও আমি খেয়ে ফেলেছি।”
14 অতএব সদাপ্রভু ঈশ্বর সাপকে বললেন, “যেহেতু তুমি এমনটি করেছ, তাই, “সব গবাদি পশুর মধ্যে ও সব বন্যপশুর মধ্যে তুমিই হলে অভিশপ্ত! তুমি বুকে ভর দিয়ে চলবে আর সারা জীবনভর ধুলো খেয়ে যাবে।
15 তোমার ও নারীর মধ্যে আর তোমার ও তার সন্তানসন্ততির মধ্যে আমি শত্রুতা জন্মাব; সে তোমার মাথা গুঁড়িয়ে দেবে আর তুমি তার পায়ের গোড়ালিতে আঘাত হানবে।”
16 সদাপ্রভু ঈশ্বর নারীকে বললেন, “আমি তোমার সন্তান প্রসবের ব্যথা খুব বাড়িয়ে দেব; প্রচণ্ড প্রসববেদনা সহ্য করে তুমি সন্তানের জন্ম দেবে। তোমার স্বামীর প্রতি তোমার আকুল বাসনা থাকবে, আর সে তোমার উপর কর্তৃত্ব করবে।”
17 আদমকে তিনি বললেন, “যেহেতু তুমি তোমার স্ত্রীর কথা শুনে সেই গাছের ফল খেয়েছ, যেটির বিষয়ে আমি তোমাকে আদেশ দিয়েছিলাম, ‘তুমি এর ফল অবশ্যই খাবে না,’ তাই “তোমার জন্য ভূমি অভিশপ্ত হল; আজীবন তুমি কঠোর পরিশ্রম করে তা থেকে খাবার খাবে।
18 তা তোমার জন্য কাঁটাগাছ ও শিয়ালকাঁটা ফলাবে, আর তুমি ক্ষেতের লতাগুল্ম খাবে,
19 যতদিন না তুমি মাটিতে ফিরে যাচ্ছ, ততদিন তুমি কপালের ঘাম ঝরিয়ে তোমার খাবার খাবে, যেহেতু সেখান থেকেই তোমাকে আনা হয়েছে; কারণ তুমি তো ধুলো, আর ধুলোতেই তুমি যাবে ফিরে।”
20 আদম তাঁর স্ত্রীর নাম দিলেন হবা, কারণ তিনি হবেন সব জীবন্ত মানুষের মা।
21 সদাপ্রভু ঈশ্বর আদম ও তাঁর স্ত্রীর জন্য চামড়ার পোশাক বানিয়ে দিলেন এবং তাদের কাপড় পরিয়ে দিলেন।
22 আর সদাপ্রভু ঈশ্বর বললেন, “মানুষ এখন ভালোমন্দের জ্ঞান পেয়ে আমাদের একজনের মতো হয়ে গিয়েছে। তাকে এই সুযোগ দেওয়া যাবে না, যেন সে তার হাত বাড়িয়ে আবার জীবনদায়ী গাছের ফল খেয়ে অমর হয়ে যায়।”
23 তাই সদাপ্রভু ঈশ্বর তাঁকে এদন বাগান থেকে নির্বাসিত করে সেই ভূমিতে কাজ করার জন্য পাঠিয়ে দিলেন, যেখান থেকে তাঁকে তুলে আনা হয়েছিল।
24 সেই মানুষটিকে তাড়িয়ে দেওয়ার পর, এদন বাগানের পূর্বদিকে তিনি করূবদের মোতায়েন করে দিলেন এবং জীবনদায়ী গাছের কাছে পৌঁছানোর পথ রক্ষা করার জন্য ঘূর্ণায়মান জ্বলন্ত এক তরোয়ালও বসিয়ে দিলেন।