< আদিপুস্তক 29 >
1 পরে যাকোব তাঁর যাত্রাপথে এগিয়ে গেলেন এবং প্রাচ্যদেশীয় লোকদের দেশে পৌঁছালেন।
পরে যাকোব তাঁর যাত্রাপথে এগিয়ে গেলেন এবং প্রাচ্যদেশীয় লোকদের দেশে পৌঁছালেন।
2 সেখানে খোলা মাঠের মধ্যে তিনি একটি কুয়ো দেখতে পেলেন, যার কাছে মেষের তিনটি পাল শুয়েছিল, কারণ সেই কুয়ো থেকে পালগুলিকে জলপান করানো হত। কুয়োর মুখের উপর রাখা পাথরটি খুব বড়ো ছিল।
সেখানে খোলা মাঠের মধ্যে তিনি একটি কুয়ো দেখতে পেলেন, যার কাছে মেষের তিনটি পাল শুয়েছিল, কারণ সেই কুয়ো থেকে পালগুলিকে জলপান করানো হত। কুয়োর মুখের উপর রাখা পাথরটি খুব বড়ো ছিল।
3 সবকটি পাল যখন সেখানে একত্রিত হত, তখন মেষপালকেরা কুয়োর মুখ থেকে সেই পাথরটি সরিয়ে মেষদের জলপান করাতো। পরে তারা আবার কুয়োর মুখে যথাস্থানে পাথরটি বসিয়ে দিত।
সবকটি পাল যখন সেখানে একত্রিত হত, তখন মেষপালকেরা কুয়োর মুখ থেকে সেই পাথরটি সরিয়ে মেষদের জলপান করাতো। পরে তারা আবার কুয়োর মুখে যথাস্থানে পাথরটি বসিয়ে দিত।
4 যাকোব মেষপালকদের জিজ্ঞাসা করলেন, “হে আমার ভাইসকল, তোমরা কোথাকার লোক?” “আমরা হারণের অধিবাসী,” তারা উত্তর দিল।
যাকোব মেষপালকদের জিজ্ঞাসা করলেন, “হে আমার ভাইসকল, তোমরা কোথাকার লোক?” “আমরা হারণের অধিবাসী,” তারা উত্তর দিল।
5 তিনি তাদের বললেন, “তোমরা কি সেই লাবনকে চেন, যিনি নাহোরের নাতি?” “হ্যাঁ, আমরা তাঁকে চিনি,” তারা উত্তর দিল।
তিনি তাদের বললেন, “তোমরা কি সেই লাবনকে চেন, যিনি নাহোরের নাতি?” “হ্যাঁ, আমরা তাঁকে চিনি,” তারা উত্তর দিল।
6 তখন যাকোব জিজ্ঞাসা করলেন, “তিনি ভালো আছেন তো?” “হ্যাঁ, তিনি ভালো আছেন,” তারা বলল, “আর দেখুন, তাঁর মেয়ে রাহেল মেষপাল নিয়ে এদিকেই আসছে।”
তখন যাকোব জিজ্ঞাসা করলেন, “তিনি ভালো আছেন তো?” “হ্যাঁ, তিনি ভালো আছেন,” তারা বলল, “আর দেখুন, তাঁর মেয়ে রাহেল মেষপাল নিয়ে এদিকেই আসছে।”
7 “দেখো,” তিনি বললেন, “সূর্য এখনও মাথার উপরেই আছে; পালগুলি একত্রিত করার সময় এখনও হয়নি। মেষদের জলপান করিয়ে তাদের আবার চরাতে নিয়ে যাও।”
“দেখো,” তিনি বললেন, “সূর্য এখনও মাথার উপরেই আছে; পালগুলি একত্রিত করার সময় এখনও হয়নি। মেষদের জলপান করিয়ে তাদের আবার চরাতে নিয়ে যাও।”
8 “আমরা তা পারবো না,” তারা উত্তর দিল, “আগে সব পাল একসঙ্গে একত্রিত হোক এবং কুয়োর মুখ থেকে পাথরটি সরানো হোক। পরে আমরা মেষদের জলপান করাব।”
“আমরা তা পারবো না,” তারা উত্তর দিল, “আগে সব পাল একসঙ্গে একত্রিত হোক এবং কুয়োর মুখ থেকে পাথরটি সরানো হোক। পরে আমরা মেষদের জলপান করাব।”
9 তিনি তখনও তাদের সঙ্গে কথা বলছেন, ইতিমধ্যে রাহেল তাঁর বাবার মেষপাল নিয়ে উপস্থিত হলেন, কারণ তিনি এক মেষপালিকা ছিলেন।
তিনি তখনও তাদের সঙ্গে কথা বলছেন, ইতিমধ্যে রাহেল তাঁর বাবার মেষপাল নিয়ে উপস্থিত হলেন, কারণ তিনি এক মেষপালিকা ছিলেন।
10 যাকোব যখন তাঁর মামা লাবনের মেয়ে রাহেলকে, ও লাবনের মেষদের দেখতে পেলেন, তখন তিনি এগিয়ে গিয়ে কুয়োর মুখ থেকে পাথরটি সরিয়ে দিলেন ও তাঁর মামার মেষদের জলপান করালেন।
যাকোব যখন তাঁর মামা লাবনের মেয়ে রাহেলকে, ও লাবনের মেষদের দেখতে পেলেন, তখন তিনি এগিয়ে গিয়ে কুয়োর মুখ থেকে পাথরটি সরিয়ে দিলেন ও তাঁর মামার মেষদের জলপান করালেন।
11 পরে যাকোব রাহেলকে চুমু দিলেন এবং জোর গলায় কাঁদতে শুরু করলেন।
পরে যাকোব রাহেলকে চুমু দিলেন এবং জোর গলায় কাঁদতে শুরু করলেন।
12 তিনি রাহেলকে বলে দিয়েছিলেন যে তিনি রাহেলের বাবার এক আত্মীয় ও রিবিকার এক ছেলে। তাই রাহেল দৌড়ে গিয়ে তাঁর বাবাকে সেকথা জানালেন।
তিনি রাহেলকে বলে দিয়েছিলেন যে তিনি রাহেলের বাবার এক আত্মীয় ও রিবিকার এক ছেলে। তাই রাহেল দৌড়ে গিয়ে তাঁর বাবাকে সেকথা জানালেন।
13 যে মুহূর্তে লাবন তাঁর বোনের ছেলে যাকোবের খবর পেলেন, তিনি তাড়াতাড়ি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। তিনি তাঁকে জড়িয়ে ধরলেন ও তাঁকে চুমু দিলেন এবং তাঁকে নিজের ঘরে নিয়ে এলেন, ও যাকোব সেখানে তাঁকে সবকিছু বলে শোনালেন।
যে মুহূর্তে লাবন তাঁর বোনের ছেলে যাকোবের খবর পেলেন, তিনি তাড়াতাড়ি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। তিনি তাঁকে জড়িয়ে ধরলেন ও তাঁকে চুমু দিলেন এবং তাঁকে নিজের ঘরে নিয়ে এলেন, ও যাকোব সেখানে তাঁকে সবকিছু বলে শোনালেন।
14 তখন লাবন তাঁকে বললেন, “তুমি আমার আপন রক্তমাংসের আত্মীয়।” যাকোব সম্পূর্ণ এক মাস লাবনের সঙ্গে থাকার পর,
তখন লাবন তাঁকে বললেন, “তুমি আমার আপন রক্তমাংসের আত্মীয়।” যাকোব সম্পূর্ণ এক মাস লাবনের সঙ্গে থাকার পর,
15 লাবন যাকোবকে বললেন, “তুমি আমার এক আত্মীয় বলে কি কিছু না নিয়েই আমার জন্য কাজ করবে? তোমার বেতন কত হওয়া উচিত তা তুমিই বলে দাও।”
লাবন যাকোবকে বললেন, “তুমি আমার এক আত্মীয় বলে কি কিছু না নিয়েই আমার জন্য কাজ করবে? তোমার বেতন কত হওয়া উচিত তা তুমিই বলে দাও।”
16 লাবনের দুই মেয়ে ছিল; বড়টির নাম লেয়া ও ছোটোটির নাম রাহেল।
লাবনের দুই মেয়ে ছিল; বড়টির নাম লেয়া ও ছোটোটির নাম রাহেল।
17 লেয়ার চোখদুটি দুর্বল ছিল, কিন্তু রাহেল স্বাস্থ্যবতী ও সুন্দরী ছিলেন।
লেয়ার চোখদুটি দুর্বল ছিল, কিন্তু রাহেল স্বাস্থ্যবতী ও সুন্দরী ছিলেন।
18 যাকোব রাহেলের প্রেমে পড়ে গেলেন এবং তিনি বললেন, “আপনার ছোটো মেয়ে রাহেলের জন্য আমি সাত বছর আপনার কাছে কাজ করব।”
যাকোব রাহেলের প্রেমে পড়ে গেলেন এবং তিনি বললেন, “আপনার ছোটো মেয়ে রাহেলের জন্য আমি সাত বছর আপনার কাছে কাজ করব।”
19 লাবন বললেন, “তাকে অন্য কোনও পুরুষের হাতে তুলে দেওয়ার পরিবর্তে বরং তোমাকে দেওয়াই ভালো। আমার সঙ্গে তুমি এখানেই থাকো।”
লাবন বললেন, “তাকে অন্য কোনও পুরুষের হাতে তুলে দেওয়ার পরিবর্তে বরং তোমাকে দেওয়াই ভালো। আমার সঙ্গে তুমি এখানেই থাকো।”
20 অতএব যাকোব রাহেলকে পাওয়ার জন্য সাত বছর দাসত্ব করলেন, কিন্তু যেহেতু তিনি রাহেলকে ভালোবেসেছিলেন তাই এতগুলি বছর তাঁর কাছে মাত্র কয়েক দিন বলে মনে হল।
অতএব যাকোব রাহেলকে পাওয়ার জন্য সাত বছর দাসত্ব করলেন, কিন্তু যেহেতু তিনি রাহেলকে ভালোবেসেছিলেন তাই এতগুলি বছর তাঁর কাছে মাত্র কয়েক দিন বলে মনে হল।
21 পরে যাকোব লাবনকে বললেন, “আমার স্ত্রীকে আমার হাতে তুলে দিন। আমার সময় সম্পূর্ণ হয়েছে, আর আমি তাকে প্রণয়জ্ঞাপন করতে চাই।”
পরে যাকোব লাবনকে বললেন, “আমার স্ত্রীকে আমার হাতে তুলে দিন। আমার সময় সম্পূর্ণ হয়েছে, আর আমি তাকে প্রণয়জ্ঞাপন করতে চাই।”
22 অতএব লাবন সেখানকার সব লোকজনকে একত্রিত করে এক ভোজসভার আয়োজন করলেন।
অতএব লাবন সেখানকার সব লোকজনকে একত্রিত করে এক ভোজসভার আয়োজন করলেন।
23 কিন্তু সন্ধ্যাবেলায়, তিনি তাঁর মেয়ে লেয়াকে এনে তাঁকে যাকোবের কাছে পৌঁছে দিলেন এবং যাকোব তাঁকে প্রণয়জ্ঞাপন করলেন।
কিন্তু সন্ধ্যাবেলায়, তিনি তাঁর মেয়ে লেয়াকে এনে তাঁকে যাকোবের কাছে পৌঁছে দিলেন এবং যাকোব তাঁকে প্রণয়জ্ঞাপন করলেন।
24 আর লাবন তাঁর দাসী সিল্পাকে তাঁর মেয়ে লেয়ার সেবিকারূপে তাঁকে দিলেন।
আর লাবন তাঁর দাসী সিল্পাকে তাঁর মেয়ে লেয়ার সেবিকারূপে তাঁকে দিলেন।
25 যখন সকাল হল, দেখা গেল তিনি লেয়া! অতএব যাকোব লাবনকে বললেন, “আপনি আমার সঙ্গে এ কী করলেন? আমি রাহেলের জন্যই তো আপনার দাসত্ব করেছি, তাই না? তবে কেন আপনি আমাকে ঠকালেন?”
যখন সকাল হল, দেখা গেল তিনি লেয়া! অতএব যাকোব লাবনকে বললেন, “আপনি আমার সঙ্গে এ কী করলেন? আমি রাহেলের জন্যই তো আপনার দাসত্ব করেছি, তাই না? তবে কেন আপনি আমাকে ঠকালেন?”
26 লাবন উত্তর দিলেন, “আমাদের এখানে বড়ো মেয়ের আগে ছোটো মেয়ের বিয়ে দেওয়ার প্রথা নেই।
লাবন উত্তর দিলেন, “আমাদের এখানে বড়ো মেয়ের আগে ছোটো মেয়ের বিয়ে দেওয়ার প্রথা নেই।
27 এই মেয়েটির দাম্পত্য-সপ্তাহ সম্পূর্ণ করো; আরও সাত বছর কাজ করার পরিবর্তে পরে আমরা ছোটো মেয়েটিকেও তোমার হাতে তুলে দেব।”
এই মেয়েটির দাম্পত্য-সপ্তাহ সম্পূর্ণ করো; আরও সাত বছর কাজ করার পরিবর্তে পরে আমরা ছোটো মেয়েটিকেও তোমার হাতে তুলে দেব।”
28 আর যাকোব তেমনই করলেন। তিনি লেয়ার সপ্তাহ সম্পূর্ণ করলেন, এবং পরে লাবন তাঁর মেয়ে রাহেলকে যাকোবের স্ত্রী হওয়ার জন্য তাঁর হাতে তুলে দিলেন।
আর যাকোব তেমনই করলেন। তিনি লেয়ার সপ্তাহ সম্পূর্ণ করলেন, এবং পরে লাবন তাঁর মেয়ে রাহেলকে যাকোবের স্ত্রী হওয়ার জন্য তাঁর হাতে তুলে দিলেন।
29 লাবন তাঁর দাসী বিলহাকে রাহেলের সেবিকারূপে তাঁকে দিলেন।
লাবন তাঁর দাসী বিলহাকে রাহেলের সেবিকারূপে তাঁকে দিলেন।
30 যাকোব রাহেলকেও প্রণয়জ্ঞাপন করলেন, এবং লেয়াকে তিনি যত না ভালোবাসতেন, রাহেলকে সে তুলনায় অনেক বেশি ভালোবাসতেন। আর তিনি লাবনের জন্য আরও সাত বছর কাজ করলেন।
যাকোব রাহেলকেও প্রণয়জ্ঞাপন করলেন, এবং লেয়াকে তিনি যত না ভালোবাসতেন, রাহেলকে সে তুলনায় অনেক বেশি ভালোবাসতেন। আর তিনি লাবনের জন্য আরও সাত বছর কাজ করলেন।
31 সদাপ্রভু যখন দেখলেন যে লেয়া ভালোবাসা পাচ্ছেন না, তখন তিনি তাঁকে গর্ভধারণের ক্ষমতা দিলেন, কিন্তু রাহেল নিঃসন্তান রয়ে গেলেন।
সদাপ্রভু যখন দেখলেন যে লেয়া ভালোবাসা পাচ্ছেন না, তখন তিনি তাঁকে গর্ভধারণের ক্ষমতা দিলেন, কিন্তু রাহেল নিঃসন্তান রয়ে গেলেন।
32 লেয়া অন্তঃসত্ত্বা হলেন এবং একটি ছেলের জন্ম দিলেন। তিনি তাঁর নাম রাখলেন রূবেণ, কারণ তিনি বললেন, “সদাপ্রভু আমার দুর্দশা দেখেছেন বলেই এমনটি ঘটেছে। এখন নিশ্চয় আমার স্বামী আমাকে ভালোবাসবেন।”
লেয়া অন্তঃসত্ত্বা হলেন এবং একটি ছেলের জন্ম দিলেন। তিনি তাঁর নাম রাখলেন রূবেণ, কারণ তিনি বললেন, “সদাপ্রভু আমার দুর্দশা দেখেছেন বলেই এমনটি ঘটেছে। এখন নিশ্চয় আমার স্বামী আমাকে ভালোবাসবেন।”
33 তিনি আবার গর্ভবতী হলেন, এবং যখন তিনি আর একটি ছেলের জন্ম দিলেন, তখন তিনি বললেন, “যেহেতু সদাপ্রভু শুনেছেন যে আমি ভালোবাসা পাইনি, তাই তিনি আমাকে এই একটি ছেলেও দিলেন।” অতএব তিনি তার নাম রাখলেন শিমিয়োন।
তিনি আবার গর্ভবতী হলেন, এবং যখন তিনি আর একটি ছেলের জন্ম দিলেন, তখন তিনি বললেন, “যেহেতু সদাপ্রভু শুনেছেন যে আমি ভালোবাসা পাইনি, তাই তিনি আমাকে এই একটি ছেলেও দিলেন।” অতএব তিনি তার নাম রাখলেন শিমিয়োন।
34 আবার তিনি গর্ভবতী হলেন, এবং যখন তিনি আর একটি ছেলের জন্ম দিলেন, তখন তিনি বললেন, “এখন অবশেষে আমার স্বামী আমার প্রতি সংলগ্ন হবেন, কারণ আমি তাঁর জন্য তিন ছেলের জন্ম দিয়েছি।” অতএব তার নাম রাখা হল লেবি।
আবার তিনি গর্ভবতী হলেন, এবং যখন তিনি আর একটি ছেলের জন্ম দিলেন, তখন তিনি বললেন, “এখন অবশেষে আমার স্বামী আমার প্রতি সংলগ্ন হবেন, কারণ আমি তাঁর জন্য তিন ছেলের জন্ম দিয়েছি।” অতএব তার নাম রাখা হল লেবি।
35 তিনি আর একবার গর্ভবতী হলেন, এবং যখন তিনি আর একটি ছেলের জন্ম দিলেন, তখন তিনি বললেন, “এবার আমি সদাপ্রভুর প্রশংসা করব।” অতএব তিনি তার নাম রাখলেন যিহূদা। পরে তিনি আর কোনও সন্তানের জন্ম দেননি।
তিনি আর একবার গর্ভবতী হলেন, এবং যখন তিনি আর একটি ছেলের জন্ম দিলেন, তখন তিনি বললেন, “এবার আমি সদাপ্রভুর প্রশংসা করব।” অতএব তিনি তার নাম রাখলেন যিহূদা। পরে তিনি আর কোনও সন্তানের জন্ম দেননি।