< আদিপুস্তক 27 >

1 ইস্‌হাক যখন বৃদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন ও তাঁর চোখদুটি যখন এত দুর্বল হয়ে পড়েছিল যে তিনি আর দেখতেই পারতেন না, তখন তিনি তাঁর বড়ো ছেলে এষৌকে ডেকে তাঁকে বললেন, “বাছা।” “এই তো আমি এখানে,” এষৌ উত্তর দিলেন।
পরে ইস্‌হাক বৃদ্ধ হলে তাঁর চোখ নিস্তেজ হওয়ায় আর দেখতে পেতেন না; তখন তিনি আপনার বড় ছেলে এষৌকে ডেকে বললেন, “বৎস।”
2 ইস্‌হাক বললেন, “আমি এখন বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছি আর এও জানি না কবে আমার মৃত্যু হবে।
তিনি উত্তর করলেন, “দেখুন, এই আমি।” তখন ইস্‌হাক বললেন, “দেখ, আমি বৃদ্ধ হয়েছি; কোন দিন আমার মৃত্যু হবে, জানি না।
3 তাই এখন, তোমার সাজসরঞ্জাম—তোমার তূণীর ও ধনুক হাতে তুলে নাও—এবং মরুপ্রান্তরে গিয়ে আমার জন্য পশু শিকার করে আনো।
এখন অনুরোধ করি, তোমার শস্ত্র, তোমার তীর ও ধনুক নিয়ে প্রান্তরে যাও, আমার জন্য পশু শিকার করে আন।
4 আমি যে ধরনের সুস্বাদু খাবার পছন্দ করি, সেরকম পদ রান্না করে আমার কাছে নিয়ে এসো, আমি তা খাব; যেন মারা যাওয়ার আগে আমি আমার আশীর্বাদ তোমাকে দিয়ে যেতে পারি।”
আমি যেমন ভালবাসি, সেরকম সুস্বাদু খাদ্য তৈরী করে আমার কাছে আন, আমি ভোজন করব; যেন মৃত্যুর আগে আমার প্রাণ তোমাকে আশীর্বাদ করে।”
5 ইস্‌হাক যখন এষৌর সাথে কথা বলছিলেন তখন রিবিকা তা শুনে ফেলেছিলেন। এষৌ যখন শিকার করে আনার জন্য মরুপ্রান্তরের উদ্দেশে বেড়িয়ে পড়লেন,
যখন ইস্‌হাক নিজের ছেলে এষৌকে এই কথা বলেন, তখন রিবিকা তা শুনতে পেলেন। অতএব এষৌ পশু শিকার করে আনবার জন্য প্রান্তরে গেলে পর
6 তখন রিবিকা তাঁর ছেলে যাকোবকে বললেন, “দেখো, আমি আড়ি পেতে শুনে ফেলেছি, তোমার বাবা তোমার দাদা এষৌকে বলেছেন,
রিবিকা নিজের ছেলে যাকোবকে বললেন, “দেখ, তোমার ভাই এষৌকে তোমার বাবা যা বলেছেন, আমি শুনেছি;”
7 ‘আমার কাছে শিকার করা পশুর মাংস নিয়ে এসো এবং আমার জন্য সুস্বাদু খাবার রান্না করো, যেন মারা যাওয়ার আগে সদাপ্রভুর উপস্থিতিতে আমি তোমায় আশীর্বাদ দিয়ে যেতে পারি।’
তিনি বলেছেন, “তুমি আমার জন্য পশু শিকার করে এনে সুস্বাদু খাদ্য তৈরী কর, তাতে আমি ভোজন করে মৃত্যুর আগে সদাপ্রভুর সামনে তোমাকে আশীর্বাদ করব।
8 এখন বাছা, আমি তোমাকে যা বলছি তা ভালো করে শোনো এবং আমি যা বলছি, তাই করো:
হে আমার ছেলে, এখন আমি তোমাকে যা আদেশ করি, আমার সেই কথা শুন।
9 পশুপালের কাছে চলে যাও এবং বাছাই করা দুটি কচি পাঁঠা নিয়ে এসো, যেন আমি তোমার বাবার জন্য সুস্বাদু খাবার রান্না করে দিতে পারি, ঠিক যেমনটি তিনি পছন্দ করেন।
তুমি পালে গিয়ে সেখান থেকে উত্তম দুটি বাচ্চা ছাগল আন, তোমার বাবা যেমন ভাল বাসেন, সেরকম সুস্বাদু খাবার আমি প্রস্তুত করে দিই;
10 পরে তুমি তা নিয়ে গিয়ে তোমার বাবাকে খেতে দিয়ো, যেন মারা যাওয়ার আগে তিনি তোমাকে তাঁর আশীর্বাদ দিয়ে যেতে পারেন।”
১০পরে তুমি নিজের বাবার কাছে তা নিয়ে যাও, তিনি তা ভোজন করুন; যেন তিনি মৃত্যুর আগে তোমাকে আশীর্বাদ করেন।”
11 যাকোব তাঁর মা রিবিকাকে বললেন, “কিন্তু আমার দাদা এষৌ যে এক লোমশ মানুষ, অথচ আমার ত্বক তো মসৃণ।
১১তখন যাকোব নিজের মা রিবিকাকে বললেন, “দেখ, আমার ভাই এষৌ লোমশ, কিন্তু আমি নির্লোম।
12 আমার বাবা যদি আমাকে স্পর্শ করেন তবে কী হবে? আমি যে তাঁর সাথে ছলচাতুরি করছি তা প্রমাণ হয়ে যাবে এবং আমার উপর আশীর্বাদের পরিবর্তে অভিশাপ নেমে আসবে।”
১২কি জানি, বাবা আমাকে স্পর্শ করবেন, আর আমি তাঁর দৃষ্টিতে প্রতারক বলে গণিত হব; তা হলে আমি আমার প্রতি আশীর্বাদ না পেয়ে অভিশাপ পাব।”
13 তাঁর মা তাঁকে বললেন, “বাছা, সেই অভিশাপ আমার উপরেই নেমে আসুক। আমি যা বলছি তুমি শুধু তাই করো; যাও ও আমার জন্য সেগুলি নিয়ে এসো।”
১৩তাঁর মা বললেন, “বৎস, সেই অভিশাপ আমাতেই আসুক, কেবল আমার কথা শোনো, একটি বাচ্চা ছাগল নিয়ে এস।”
14 অতএব তিনি চলে গেলেন ও সেগুলি সংগ্রহ করে তাঁর মায়ের কাছে নিয়ে এলেন, এবং তাঁর বাবা যেমনটি পছন্দ করতেন, রিবিকা ঠিক তেমনই সুস্বাদু খাবার রান্না করে দিলেন।
১৪পরে যাকোব গিয়ে তা নিয়ে মায়ের কাছে নিয়ে গেলেন, আর তাঁর বাবা যেমন ভালবাসতেন, মা সেরকম সুস্বাদু খাবার তৈরী করলেন।
15 পরে রিবিকা তাঁর বড়ো ছেলে এষৌর সবচেয়ে ভালো সেই পোশাকগুলি বের করলেন, যা সেই বাড়িতেই রাখা ছিল, এবং সেগুলি তাঁর ছোটো ছেলে যাকোবের গায়ে পরিয়ে দিলেন।
১৫আর ঘরে নিজের কাছে বড় ছেলে এষৌর যে যে সুন্দর বস্ত্র ছিল, রিবিকা তা নিয়ে ছোট ছেলে যাকোবকে পরিয়ে দিলেন।
16 তিনি যাকোবের দুটি হাত ও ঘাড়ের মসৃণ অংশগুলি ছাগচর্ম দিয়ে আচ্ছাদিত করে দিলেন।
১৬ঐ দুই বাচ্চা ছাগলের চামড়া নিয়ে তাঁর হাতে ও গলার নির্লোম জায়গায় জড়িয়ে দিলেন।
17 পরে তিনি তাঁর ছেলে যাকোবের হাতে তাঁর নিজের হাতে তৈরি করা সেই সুস্বাদু খাবার ও রুটি তুলে দিলেন।
১৭আর তিনি যে সুস্বাদু খাবার ও রুটি রান্না করেছিলেন, তা তাঁর ছেলে যাকোবের হাতে দিলেন।
18 যাকোব তাঁর বাবার কাছে গিয়ে বললেন, “বাবা।” “হ্যাঁ বাছা,” তিনি উত্তর দিলেন, “তুমি কে?”
১৮পরে তিনি নিজের বাবার কাছে গিয়ে বললেন, “বাবা।” তিনি উত্তর করলেন, “দেখ, এই আমি; বৎস, তুমি কে?”
19 যাকোব তাঁর বাবাকে বললেন, “আমি আপনার বড়ো ছেলে এষৌ। আপনি আমায় যা বলেছিলেন, আমি তাই করেছি। দয়া করে উঠে বসুন এবং আমার শিকার করা পশুর মাংসের খানিকটা অংশ খান, যেন আপনি আমাকে আপনার আশীর্বাদ দিতে পারেন।”
১৯যাকোব নিজের বাবাকে বললেন, “আমি আপনার বড় ছেলে এষৌ; আপনি আমাকে যা আদেশ করেছিলেন, তা করেছি। অনুরোধ করি, আপনি উঠে বসে আমার আনা পশুর মাংস ভোজন করুন, যেন আপনার প্রাণ আমাকে আশীর্বাদ করে।”
20 ইস্‌হাক তাঁর ছেলেকে জিজ্ঞাসা করলেন, “বাছা, এত তাড়াতাড়ি তুমি কীভাবে তা খুঁজে পেলে?” “আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভু আমাকে সফলতা দিয়েছেন,” তিনি উত্তর দিলেন।
২০তখন ইসহাক নিজের ছেলেকে বললেন, “বৎস, কেমন করে এত তাড়াতাড়ি ওটা পেলে?” তিনি বললেন, “আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভু আমার সামনে শুভফল উপস্থিত করলেন।”
21 তখন ইস্‌হাক যাকোবকে বললেন, “বাছা, আমার কাছে এসো, যেন আমি তোমাকে স্পর্শ করে বুঝতে পারি তুমি সত্যিই আমার ছেলে এষৌ কি না।”
২১ইস্‌হাক যাকোবকে বললেন, “বৎস, কাছে এস; আমি তোমাকে স্পর্শ করে বুঝি, তুমি নিশ্চয় আমার ছেলে এষৌ কি না।”
22 যাকোব তাঁর বাবা ইস্‌হাকের কাছে গেলেন, ও তিনি যাকোবকে স্পর্শ করে বললেন, “কণ্ঠস্বর তো যাকোবের কণ্ঠস্বরের মতো, কিন্তু হাত দুটি এষৌর হাতের মতো।”
২২তখন যাকোব নিজের বাবা ইস্‌হাকের কাছে গেলে তিনি তাঁকে স্পর্শ করে বললেন, “গলার আওয়াজ তো যাকোবের আওয়াজ, কিন্তু হাত এষৌর হাত।”
23 তিনি যাকোবকে চিনতে পারেননি, কারণ তাঁর হাত দুটি তাঁর দাদা এষৌর হাতের মতোই লোমশ ছিল; তাই তিনি তাঁকে আশীর্বাদ করার জন্য এগিয়ে গেলেন।
২৩বাস্তবিক তিনি তাঁকে চিনতে পারলেন না, কারণ ভাই এষৌর হাতের মতো তাঁর হাত লোমযুক্ত ছিল; অতএব তিনি তাঁকে আশীর্বাদ করলেন।
24 “তুমি কি সত্যিই আমার ছেলে এষৌ?” তিনি জিজ্ঞাসা করলেন। “হ্যাঁ,” যাকোব উত্তর দিলেন।
২৪তিনি বললেন, “তুমি নিশ্চয়ই আমার ছেলে এষৌ?” তিনি বললেন, “হ্যাঁ।”
25 তখন তিনি বললেন, “বাছা, শিকার করা পশুর মাংস খাওয়ার জন্য খানিকটা আমার কাছে নিয়ে এসো, যেন আমি তোমাকে আমার আশীর্বাদ দিতে পারি।” যাকোব তাঁর কাছে তা নিয়ে এলেন ও তিনি তা খেলেন; এবং যাকোব তাঁকে কিছুটা দ্রাক্ষারসও এনে দিলেন ও তিনি তা পান করলেন।
২৫তখন ইস্‌হাক বললেন, “আমার কাছে আন; আমি ছেলের আনা পশুর মাংস ভোজন করি, যেন আমার প্রাণ তোমাকে আশীর্বাদ করে।” তিনি মাংস আনলে ইস্‌হাক ভোজন করলেন এবং দ্রাক্ষারস এনে দিলে তা পান করলেন।
26 তখন তাঁর বাবা ইস্‌হাক তাঁকে বললেন, “বাছা, এখানে এসো, ও আমাকে চুমু দাও।”
২৬পরে তাঁর বাবা ইস্‌হাক বললেন, “বৎস, অনুরোধ করি, কাছে এসে আমাকে চুম্বন কর।”
27 অতএব যাকোব তাঁর কাছে গিয়ে তাঁকে চুমু দিলেন। ইস্‌হাক যখন তাঁর পোশাকের গন্ধ শুঁকলেন, তখন তিনি তাঁকে আশীর্বাদ করে বললেন, “আহা, আমার ছেলের সুগন্ধ তা যেন এমন এক ক্ষেতের সুগন্ধ যা সদাপ্রভুর আশীর্বাদধন্য।
২৭তখন তিনি কাছে গিয়ে চুম্বন করলেন, আর ইস্‌হাক তাঁর বস্ত্রের গন্ধ নিয়ে তাঁকে আশীর্বাদ করে বললেন, “দেখ, আমার ছেলের সুগন্ধ সদাপ্রভুর আশীর্বাদযুক্ত ক্ষেত্রের সুগন্ধের মতো।
28 ঈশ্বর তোমাকে আকাশের শিশির আর ভূমির প্রাচুর্য— শস্যপ্রাচুর্য ও নতুন দ্রাক্ষারস দান করুন।
২৮ঈশ্বর আকাশের শিশির থেকে ও ভূমির উর্বরতা থেকে তোমাকে দিন; প্রচুর শস্য ও আঙ্গুরের রস তোমাকে দিন।
29 জাতিরা তোমার সেবা করুক এবং মানুষজন তোমার কাছে মাথা নত করুক। তোমার ভাইদের উপর তুমি প্রভুত্ব করো, আর তোমার মায়ের ছেলেরা তোমার কাছে মাথা নত করুক। যারা তোমাকে অভিশাপ দেয় তারা শাপগ্রস্ত হোক আর যারা তোমাকে আশীর্বাদ দেয় তারা আশীর্বাদধন্য হোক।”
২৯লোকবৃন্দ তোমার দাস হোক, জাতিরা তোমার কাছে নত হোক; তুমি নিজের আত্মীয়দের কর্তা হও, তোমার মায়ের ছেলেরা তোমার কাছে নত হোক। যে কেউ তোমাকে অভিশাপ দেয়, সে অভিশপ্ত হোক; যে কেউ তোমাকে আশীর্বাদ করে, সে আশীর্বাদযুক্ত হোক।”
30 ইস্‌হাক যাকোবকে আশীর্বাদ করার পর, ও তিনি তাঁর বাবার কাছ থেকে প্রস্থান করতে না করতেই, তাঁর দাদা এষৌ শিকার করে ফিরে এলেন।
৩০ইস্‌হাক যখন যাকোবের প্রতি আশীর্বাদ শেষ করলেন, তখন যাকোব নিজের পিতা ইস্‌হাকের সামনে থেকে যেতে না যেতেই তাঁর ভাই এষৌ শিকার করে ঘরে আসলেন।
31 তিনিও খানিকটা সুস্বাদু খাবার রান্না করে সেটি তাঁর বাবার কাছে আনলেন। পরে তিনি তাঁকে বললেন, “বাবা, দয়া করে উঠে বসুন ও আমার শিকার করা পশুর মাংসের তরকারি খানিকটা খেয়ে নিন, যেন আপনি আমাকে আপনার আশীর্বাদ দিতে পারেন।”
৩১তিনিও সুস্বাদু খাবার তৈরী করে বাবার কাছে এনে বললেন, “বাবা আপনি উঠে ছেলের আনা পশুর মাংস ভোজন করুন, যেন আপনার প্রাণ আমাকে আশীর্বাদ করে।”
32 তাঁর বাবা ইস্‌হাক তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কে?” “আমি তো আপনার ছেলে,” তিনি উত্তর দিলেন, “আপনার বড়ো ছেলে এষৌ।”
৩২তাঁর বাবা ইস্‌হাক বললেন, “তুমি কে?” তিনি বললেন, “আমি আপনার বড় ছেলে এষৌ।”
33 ইস্‌হাক প্রবলভাবে কাঁপতে কাঁপতে বললেন, “তবে, সে কে ছিল, যে পশু শিকার করেছিল ও আমার কাছে তা নিয়ে এসেছিল? তুমি আসার খানিকক্ষণ আগেই আমি তা খেয়ে ফেলেছি ও তাকে আশীর্বাদ দিয়েছি—আর সে অবশ্যই আশীর্বাদধন্য হবে!”
৩৩ইস্‌হাক ভীষণভাবে কেঁপে উঠে বললেন, “তবে সে কে, যে শিকার করে আমার কাছে পশুর মাংস এনেছিল? আমি তোমার আসবার আগেই তা ভোজন করে তাকে আশীর্বাদ করেছি, আর সেই আশীর্বাদযুক্ত থাকবে।”
34 তাঁর বাবার কথা শুনে এষৌ জোর গলায় চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করলেন এবং তাঁর বাবাকে বললেন, “বাবা, আমাকে—আমাকেও আশীর্বাদ করুন!”
৩৪বাবার এই কথা শোনামাত্র এষৌ ভীষণ ব্যকুলভাবে কাঁদলেন এবং নিজের বাবাকে বললেন, “হে বাবা, আমাকে, আমাকেও আশীর্বাদ করুন।”
35 কিন্তু তিনি বললেন, “তোমার ভাই ছলনা করে এসেছিল ও তোমার আশীর্বাদ আত্মসাৎ করে নিয়ে গিয়েছে।”
৩৫ইস্‌হাক বললেন, “তোমার ভাই ছলনা করে এসে তোমার আশীর্বাদ নিয়ে নিয়েছে।”
36 এষৌ বললেন, “তার নাম যাকোব রাখাই কি উচিত হয়নি? সে এই দ্বিতীয়বার আমার সাথে প্রতারণা করল: সে আমার জ্যেষ্ঠাধিকার আত্মসাৎ করেছিল আর এখন সে আমার আশীর্বাদও আত্মসাৎ করে নিল!” পরে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “আমার জন্য আর কোনও আশীর্বাদ কি আপনি রাখেননি?”
৩৬এষৌ বললেন, “তার নাম কি যাকোব না? বাস্তবিক সে দু-বার আমাকে [প্রতারণা] করেছে; সে আমার বড় হওয়ার অধিকার নিয়ে নিয়েছিল এবং দেখুন, এখন আমার আশীর্বাদও নিয়ে নিয়েছে।” তিনি আবার বললেন, “আপনি কি আমার জন্য কিছুই আশীর্বাদ রাখেননি?”
37 ইস্‌হাক এষৌকে উত্তর দিলেন, “তোমার উপর আমি তাকে প্রভু করে দিয়েছি ও তার সব আত্মীয়স্বজনকে আমি তার দাস করে দিয়েছি, এবং খাদ্যশস্য ও নতুন দ্রাক্ষারস দিয়ে আমি তাকে সবল করেছি। তাই, বাছা, তোমার জন্য এখন আমি আর কী করতে পারি?”
৩৭তখন ইস্‌হাক উত্তর করে এষৌকে বললেন, “দেখ, আমি তাঁকে তোমার কর্তা করেছি এবং তার আত্মীয় সবাইকে তারই দাস করেছি এবং তাঁকে শস্য ও দ্রাক্ষারস দিয়ে সবল করেছি; বৎস, এখন তোমার জন্য আর কি করিতে পারি?”
38 এষৌ তাঁর বাবাকে বললেন, “বাবা, আপনার কাছে কি শুধু একটিই আশীর্বাদ আছে? বাবা, আমাকেও আশীর্বাদ করুন না!” পরে এষৌ জোর গলায় কেঁদে ফেলেছিলেন।
৩৮এষৌ আবার নিজের বাবাকে বললেন, “হে বাবা, আপনার কি কেবল ঐ একটা আশীর্বাদ ছিল? হে বাবা, আমাকেও আশীর্বাদ করুন।” এই বলে এষৌ উচ্চৈঃস্বরে কাঁদতে লাগলেন।
39 তাঁর বাবা ইস্‌হাক তাঁকে উত্তর দিলেন, “তোমার বাসস্থান হবে ভূমির প্রাচুর্য থেকে দূরবর্তী, ঊর্ধ্বস্থ আকাশের শিশির থেকে দূরবর্তী।
৩৯তখন তাঁর বাবা ইস্‌হাক উত্তর করে বললেন, “দেখ, তোমার বাসভূমি উর্বরতা বিহীন হবে।
40 তরোয়ালের সাহায্যেই তুমি বেঁচে থাকবে আর তুমি তোমার ভাইয়ের সেবা করবে। কিন্তু তুমি যখন অস্থির হয়ে পড়বে, তখন তোমার কাঁধ থেকে তুমি তার জোয়াল ঝেড়ে ফেলবে।”
৪০তুমি তরোয়ালের জোরে বাঁচবে এবং নিজের ভাইয়ের দাস হবে; কিন্তু যখন তুমি বিদ্রোহ করবে, নিজের ঘাড় থেকে তার যোঁয়ালী ভাঙ্গবে।”
41 যাকোবের বিরুদ্ধে এষৌ মনে আক্রোশ পুষে রাখলেন, কারণ তাঁর বাবা যাকোবকে আশীর্বাদ দিয়েছিলেন। তিনি মনে মনে বললেন, “আমার বাবার জন্য শোকপ্রকাশের সময় আসন্ন; তারপরেই আমি আমার ভাই যাকোবকে হত্যা করব।”
৪১যাকোব নিজের বাবার কাছ থেকে আশীর্বাদ পেয়েছিলেন বলে এষৌ যাকোবকে হিংসা করতে লাগলেন। এষৌ মনে মনে বললেন, “আমার বাবার জন্য দুঃখ প্রকাশ করার দিন প্রায় উপস্থিত, তারপরে আমার ভাই যাকোবকে হত্যা করব।”
42 রিবিকার বড়ো ছেলে কী বলেছেন, তা যখন তাঁকে বলা হল, তখন রিবিকা লোক পাঠিয়ে তাঁর ছোটো ছেলে যাকোবকে ডেকে পাঠালেন ও তাঁকে বললেন, “তোমার দাদা এষৌ তোমাকে হত্যা করে প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
৪২বড় ছেলে এষৌর এরকম কথা রিবিকার কানে গেল, তাতে তিনি লোক পাঠিয়ে ছোট ছেলে যাকোবকে ডাকালেন, বললেন, “দেখ, তোমার ভাই এষৌ তোমাকে হত্যা করবার আশাতেই মনকে সান্ত্বনা দিচ্ছে।
43 এখন তবে, বাছা, আমি যা বলছি তুমি তাই করো: এখনই তুমি হারণে আমার দাদা লাবনের কাছে পালিয়ে যাও।
৪৩এখন, হে বৎস, আমার কথা শোনো; ওঠ, হারণে আমার ভাই লাবনের কাছে পালিয়ে যাও
44 সেখানে অল্প কিছুদিন তাঁর কাছে গিয়ে থাকো, যতদিন না তোমার দাদার রাগ কমছে।
৪৪সেখানে কিছু দিন থাক, যে পর্যন্ত তোমার ভাইয়ের রাগ না কমে।
45 যখন তোমার উপর তোমার দাদার রাগ শান্ত হয়ে যাবে ও তুমি যা যা করেছ, সে যখন সেসব কথা ভুলে যাবে, তখন আমি সেখান থেকে ফিরে আসার জন্য তোমাকে খবর পাঠাব। একই দিনে কেন আমি তোমাদের দুজনকেই হারাব?”
৪৫তোমার প্রতি ভাইয়ের রাগ কমে গেলে এবং তুমি তার প্রতি যা করেছ, তা সে ভুলে গেলে আমি লোক পাঠিয়ে সেখান থেকে তোমাকে আনাব; এক দিনের তোমাদের দুই জনকেই কেন হারাব?”
46 পরে রিবিকা ইস্‌হাককে বললেন, “এই হিত্তীয় মেয়েদের সাথে বসবাস করতে করতে আমি বিতৃষ্ণ হয়ে পড়েছি। এদের মতো যাকোবও যদি এই দেশের মেয়েদের মধ্যে থেকে, অর্থাৎ হিত্তীয় মেয়েদের মধ্যে থেকে কাউকে তার স্ত্রী করে আনে, তবে আমার বেঁচে থাকাই অর্থহীন হয়ে যাবে।”
৪৬রিবিকা ইসহাককে বললেন, “এই হিত্তীয়দের মেয়েদের বিষয় আমার প্রাণে ঘৃণা হচ্ছে; যদি যাকোবও এদের মতো কোনো হিত্তীয় মেয়েকে, এদেশীয় মেয়েদের মধ্যে কোনো মেয়েকে বিয়ে করে, তবে বেঁচে থেকে আমার কি লাভ?”

< আদিপুস্তক 27 >