< আদিপুস্তক 22 >

1 কিছুকাল পর ঈশ্বর অব্রাহামকে পরীক্ষা করলেন। তিনি তাঁকে বললেন, “অব্রাহাম!” “আমি এখানে,” অব্রাহাম উত্তর দিলেন।
এই সব ঘটনার পরে ঈশ্বর অব্রাহামের পরীক্ষা করলেন। তিনি তাঁকে বললেন, “অব্রাহাম;” তিনি উত্তর করলেন, “এখানে আমি।”
2 তখন ঈশ্বর বললেন, “তোমার ছেলেকে, তোমার একমাত্র ছেলেকে, যাকে তুমি ভালোবাসো তাকে—সেই ইস্‌হাককে—নাও ও মোরিয়া প্রদেশে যাও। সেখানে এমন একটি পর্বতের উপর তাকে হোমবলিরূপে উৎসর্গ করো, যেটি আমি তোমাকে দেখিয়ে দেব।”
তখন তিনি বললেন, “তুমি নিজের ছেলেকে, তোমার একমাত্র ছেলেকে, যাকে তুমি ভালবাস, সেই ইসহাককে নিয়ে মোরিয়া দেশে যাও এবং সেখানকার যে এক পর্বতের কথা আমি তোমাকে বলব, তার উপরে তাকে হোম বলির জন্য বলিদান কর।”
3 পরদিন ভোরবেলায় অব্রাহাম উঠে তাঁর গাধায় জিন চাপালেন। তিনি তাঁর দাসদের মধ্যে দুজনকে ও তাঁর ছেলে ইস্‌হাককে সাথে নিলেন। হোমবলির জন্য যথেষ্ট পরিমাণ কাঠ কাটার পর তিনি সেই স্থানের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করলেন, যেটির বিষয়ে ঈশ্বর তাঁকে আগেই বলে দিয়েছিলেন।
পরে অব্রাহাম ভোরবেলায় উঠে গাধা সাজিয়ে দুই জন দাস ও তাঁর ছেলে ইসহাককে সঙ্গে নিলেন, হোমের জন্য কাঠ কাটলেন, আর উঠে ঈশ্বরের নির্দিষ্ট জায়গায় দিকে গেলেন।
4 তৃতীয় দিনে অব্রাহাম চোখ তুলে তাকিয়ে দূর থেকে সেই স্থানটি দেখলেন।
তৃতীয় দিনের অব্রাহাম চোখ তুলে দূর থেকে সেই জায়গা দেখলেন।
5 তিনি তাঁর দাসদের বললেন, “ছেলেটিকে সাথে নিয়ে আমি যখন সেখানে যাচ্ছি, তখন তোমরা গাধাটির সঙ্গে এখানেই থাকো। আমরা আরাধনা করব ও পরে তোমাদের কাছে ফিরে আসব।”
তখন অব্রাহাম নিজের দাসদেরকে বললেন, “তোমরা এই জায়গায় গাধার সঙ্গে থাক; আমি ও ছেলেটি, আমরা ঐ জায়গায় গিয়ে প্রার্থনা করি, পরে তোমাদের কাছে ফিরে আসব”
6 অব্রাহাম হোমবলির কাঠ নিয়ে সেগুলি তাঁর ছেলে ইস্‌হাকের কাঁধে চাপিয়ে দিলেন, এবং তিনি স্বয়ং আগুন ও ছুরি নিলেন। তাঁরা দুজন যখন একসাথে এগিয়ে যাচ্ছিলেন,
তখন অব্রাহাম হোমের কাঠ নিয়ে নিজের ছেলে ইসহাকের কাঁধে দিলেন এবং নিজের হাতে আগুন ও ছুরি; দুজনেই একসঙ্গে চলে গেলেন।
7 ইস্‌হাক মুখ খুলে তাঁর বাবা অব্রাহামকে বললেন, “বাবা?” “বলো বাছা?” অব্রাহাম উত্তর দিলেন। “আগুন ও কাঠ তো এখানে আছে,” ইস্‌হাক বললেন, “কিন্তু হোমবলির জন্য মেষশাবক কোথায়?”
ইসহাক নিজের বাবা অব্রাহামকে বললেন, “হে আমার বাবা।” তিনি বললেন, “হে আমার ছেলে, দেখ, এই আমি।” তখন তিনি বললেন, “এই দেখুন, আগুন ও কাঠ, কিন্তু হোমের জন্য বাচ্চা ভেড়া কোথায়?”
8 অব্রাহাম উত্তর দিলেন, “বাছা, ঈশ্বর স্বয়ং হোমবলির জন্য মেষশাবকের জোগান দেবেন।” আর তাঁরা দুজন একসাথে এগিয়ে গেলেন।
অব্রাহাম বললেন, “বৎস, ঈশ্বর নিজের হোমের জন্য বাচ্চা ভেড়া যোগাবেন।” পরে উভয়ে একসঙ্গে গেলেন।
9 ঈশ্বর যে স্থানটির কথা বলেছিলেন, তারা যখন সেখানে পৌঁছালেন, তখন অব্রাহাম সেখানে একটি যজ্ঞবেদি নির্মাণ করলেন ও সেটির উপর কাঠ বিছিয়ে দিলেন। তিনি তাঁর ছেলে ইস্‌হাককে বেঁধে সেই বেদিতে, কাঠের উপর শুইয়ে দিলেন।
ঈশ্বরের নির্দিষ্ট জায়গায় উপস্থিত হলে অব্রাহাম সেখানে যজ্ঞবেদি নির্মাণ করে কাঠ সাজালেন, পরে নিজের ছেলে ইসহাককে বেঁধে বেদিতে কাঠের ওপরে রাখলেন।
10 পরে তিনি হাত বাড়িয়ে ছুরিটি ধরে তাঁর ছেলেকে হত্যা করতে উদ্যত হলেন।
১০পরে অব্রাহাম হাত বাড়িয়ে নিজের ছেলেকে হত্যা করার জন্য ছুরি গ্রহণ করলেন।
11 কিন্তু সদাপ্রভুর দূত স্বর্গ থেকে তাঁকে ডেকে বললেন, “অব্রাহাম, অব্রাহাম!” “আমি এখানে,” তিনি উত্তর দিলেন।
১১এমন দিনের আকাশ থেকে সদাপ্রভুর দূত তাঁকে ডাকলেন, বললেন, “অব্রাহাম, অব্রাহাম।” তিনি বললেন, “দেখুন এই আমি।”
12 “ছেলেটির গায়ে হাত দিয়ো না,” দূত বললেন। “ওর কোনও ক্ষতি কোরো না। এখন আমি বুঝেছি যে তুমি ঈশ্বরকে ভয় করো, কারণ আমাকে তুমি তোমার ছেলেটি, তোমার একমাত্র ছেলেটি দিতে অসম্মত হওনি।”
১২তখন তিনি বললেন, “ছেলেটির প্রতি তোমার হাত বাড়িয়ো না ওর প্রতি কিছুই কর না, কারণ এখন আমি বুঝলাম, তুমি ঈশ্বরকে ভয় কর, আমাকে নিজের একমাত্র ছেলে দিতেও হয়নি।”
13 অব্রাহাম চোখ তুলে তাকিয়ে দেখতে পেলেন সেখানে ঝোপঝাড়ের মধ্যে একটি মদ্দা মেষ শিং আটকানো অবস্থায় পড়ে আছে। তিনি সেখানে গিয়ে মদ্দা মেষটিকে এনে তাঁর ছেলের পরিবর্তে সেটিকে এক হোমবলিরূপে উৎসর্গ করলেন।
১৩তখন অব্রাহাম চোখ তুলে চাইলেন, আর দেখ, তাঁর পিছন দিকে একটি ভেড়া, তার শিং ঝোপে বাঁধা; পরে অব্রাহাম গিয়ে সেই মেষটি নিয়ে নিজের পুত্রের পরিবর্তে হোমের জন্য বলিদান করলেন।
14 অতএব অব্রাহাম সেই স্থানটির নাম দিলেন সদাপ্রভু জোগাবেন। আর আজও পর্যন্ত একথা বলা হয়ে থাকে, “সদাপ্রভুর পর্বতে তা জোগানো হবে।”
১৪আর অব্রাহাম সেই জায়গার নাম যিহোবা-যিরি [সদাপ্রভু যোগাবেন] রাখলেন। এই জন্য আজও লোকে বলে, “সদাপ্রভুর পর্বতে যোগান হবে।”
15 সদাপ্রভুর দূত দ্বিতীয়বার স্বর্গ থেকে অব্রাহামকে ডাক দিলেন
১৫পরে সদাপ্রভুর দূত দ্বিতীয় বার আকাশ থেকে অব্রাহামকে ডেকে বললেন,
16 এবং বললেন, “সদাপ্রভু ঘোষণা করছেন, আমি নিজের নামে শপথ করছি, যেহেতু তুমি এই কাজটি করেছ এবং আমাকে তোমার ছেলেটি, তোমার একমাত্র ছেলেটি দিতে অসম্মত হওনি,
১৬সদাপ্রভু বলছেন, “তুমি এই কাজ করলে, আমাকে নিজের একমাত্র পুত্র দিতে অসম্মত হলে না,
17 তাই অবশ্যই আমি তোমাকে আশীর্বাদ করব ও তোমার বংশধরদের আকাশের তারাগুলির মতো ও সমুদ্রের বালুকণার মতো বিপুল সংখ্যক করে তুলব। তোমার বংশধররা তাদের শত্রুদের নগরগুলি দখল করে নেবে,
১৭এই জন্য আমি আমারই দিব্য করে বলছি, আমি অবশ্য তোমাকে আশীর্বাদ করব এবং আকাশের তারাদের ও সমুদ্রতীরের বালির মতো তোমার অতিশয় বংশ বৃদ্ধি করব; তোমার বংশ শত্রুদের পুরদ্বার অধিকার করবে;
18 এবং তোমার সন্তানসন্ততির মাধ্যমে পৃথিবীর সব জাতি আশীর্বাদ লাভ করবে, কারণ তুমি আমার বাধ্য হয়েছ।”
১৮আর তোমার বংশে পৃথিবীর সব জাতি আশীর্বাদ প্রাপ্ত হবে; কারণ তুমি আমার বাক্যে পালন করেছ।”
19 পরে অব্রাহাম তাঁর দাসদের কাছে ফিরে এলেন, এবং তাঁরা সবাই মিলে বের-শেবার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করলেন। আর অব্রাহাম বের-শেবাতেই থেকে গেলেন।
১৯পরে অব্রাহাম নিজের দাসদের কাছে গেলেন, আর সবাই উঠে একসঙ্গে বের-শেবাতে গেলেন; এবং অব্রাহাম বের-শেবাতে বাস করতে লাগলেন।
20 কিছুকাল পর অব্রাহামকে বলা হল, “মিল্কাও মা হয়েছেন; তিনি আপনার ভাই নাহোরের জন্য এই ছেলেদের জন্ম দিয়েছেন:
২০ঐ ঘটনার পরে অব্রাহামের কাছে এই সংবাদ আসল, “দেখুন, আপনার ভাই নাহোরের জন্য মিল্কাও ছেলেদেরকে জন্ম দিয়েছেন;
21 প্রথমজাত ঊষ, তার ভাই বূষ, কমূয়েল (অরামের বাবা),
২১তাঁর বড় ছেলে ঊষ ও তার ভাই বূষ ও অরামের পিতা কমূয়েল এবং
22 কেষদ, হসো, পিলদশ, যিদলফ ও বথূয়েল।”
২২কেষদ, হসো, পিল্‌দশ, যিদ্‌লফ ও বথূয়েল।
23 বথূয়েল রিবিকার বাবা। মিল্কা অব্রাহামের ভাই নাহোরের জন্য এই আটটি ছেলের জন্ম দিলেন।
২৩বথূয়েলের মেয়ে রিবিকা। অব্রাহামের ভাই নাহোরের জন্য মিল্কা এই আট জনকে জন্ম দিলেন।
24 যার নাম রূমা, নাহোরের সেই উপপত্নীও এই ছেলেদের জন্ম দিল: টেবহ, গহম, তহশ ও মাখা।
২৪আর রুমা নামে তাঁর উপপত্নী টেবহ, গহম, তহশ এবং মাখা, এই সবাইকে জন্ম দিলেন।”

< আদিপুস্তক 22 >