< গালাতীয় 4 >
1 যা আমি বলতে চাইছি, তা হল, উত্তরাধিকারী যতদিন শিশু থাকে, সে সমস্ত সম্পত্তির অধিকারী হলেও, ক্রীতদাসের সঙ্গে তার কোনও পার্থক্য থাকে না।
2 তার বাবা যে সময় নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন, সেই সময় পর্যন্ত সে অভিভাবক ও প্রতিপালকদের তত্ত্বাবধানে থাকে।
3 একইভাবে, আমরা যখন শিশু ছিলাম, আমরা জগতের বিভিন্ন রীতিনীতির অধীনে ক্রীতদাস ছিলাম।
4 কিন্তু সময় যখন সম্পূর্ণ হল, ঈশ্বর তাঁর পুত্রকে পাঠালেন; তিনি এক নারী থেকে জন্ম নিলেন, বিধানের অধীনে জন্মগ্রহণ করলেন,
5 যেন যারা বিধানের অধীন তাদের মুক্তিপণ দিয়ে মুক্ত করেন এবং আমরা পুত্র হওয়ার পূর্ণ অধিকার লাভ করি।
6 যেহেতু আমরা পুত্র, তাই ঈশ্বর তাঁর পুত্রের আত্মাকে আমাদের হৃদয়ে পাঠালেন, যে আত্মা “আব্বা, পিতা” বলে ডেকে ওঠেন।
7 তাই তোমরা আর ক্রীতদাস নও, কিন্তু পুত্র; আর যেহেতু তোমরা পুত্র, ঈশ্বর তোমাদের উত্তরাধিকারীও করেছেন।
8 আগে তোমরা যখন ঈশ্বরকে জানতে না, তোমরা তাদেরই দাসত্ব করতে, যারা প্রকৃতপক্ষে দেবতা নয়।
9 কিন্তু এখন, যেহেতু তোমরা ঈশ্বরকে জানো—বা সঠিক বলতে গেলে, তোমরাই ঈশ্বরের দ্বারা পরিচিত হয়েছ—তাহলে, কী করে তোমরা ওইসব দুর্বল ও ঘৃণ্য নীতিগুলির প্রতি ফিরে যাচ্ছ? তোমরা কি আবার ফিরে গিয়ে সেসবের দ্বারা দাসত্বে আবদ্ধ হতে চাও?
10 তোমরা বিশেষ বিশেষ দিন, মাস, ঋতু ও বছর পালন করছ!
11 তোমাদের জন্য আমার ভয় হয়, হয়তো আমি তোমাদের মধ্যে ব্যর্থ পরিশ্রম করেছি।
12 ভাই ও বোনেরা, আমি তোমাদের অনুরোধ করছি, তোমরা আমার মতো হও, কারণ আমি তোমাদের মতো হয়েছি। তোমরা আমার প্রতি কোনো অন্যায় করোনি।
13 যেমন তোমরা জানো, আমি অসুস্থ ছিলাম, যখন প্রথমবার তোমাদের কাছে সুসমাচার প্রচার করেছিলাম।
14 যদিও আমার অসুস্থতা তোমাদের কাছে পরীক্ষার কারণস্বরূপ ছিল, তোমরা আমার সঙ্গে ঘৃণ্য ও অবজ্ঞাসুলভ আচরণ করোনি। বরং তোমরা আমাকে যেন ঈশ্বরের এক দূতের মতো, স্বয়ং খ্রীষ্ট যীশুর মতো মনে করে স্বাগত জানিয়েছিলে।
15 তোমাদের সেইসব আনন্দের কী হল? আমি সাক্ষ্য দিতে পারি যে, সম্ভব হলে, তোমরা নিজের নিজের চোখদুটি উপড়ে নিয়ে আমাকে দিতে!
16 সত্যিকথা বলার জন্য আমি কি এখন তোমাদের শত্রু হয়েছি?
17 ওইসব লোক তোমাদের জয় করার জন্য আগ্রহী হয়েছে, কিন্তু কোনো ভালো উদ্দেশ্যে নয়। তারা যা চায় তা হল আমাদের কাছ থেকে তোমাদের দূরে সরিয়ে দিতে, যেন তোমরা ওদের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠো।
18 কেবলমাত্র তোমাদের মধ্যে যখন উপস্থিত থাকি তখন নয়, কিন্তু সব সময়ের জন্য সঠিক উদ্দেশ্য নিয়ে আগ্রহী হওয়া ভালো।
19 আমার প্রিয় সন্তানেরা তোমাদের জন্য আমি আবার প্রসবযন্ত্রণা ভোগ করছি, যতক্ষণ না তোমরা খ্রীষ্টের মতো হও।
20 আমার এমন ইচ্ছা হচ্ছে যে, আমি যদি এখনই তোমাদের কাছে যেতে ও অন্য স্বরে কথা বলতে পারতাম! কারণ আমি তোমাদের নিয়ে যে কী করব তা বুঝতে পারছি না!
21 তোমরা যারা বিধানের অধীনে থাকতে চাও, আমাকে বলো তো, বিধান যা বলে, তা কি তোমরা জানো না?
22 কারণ লেখা আছে, অব্রাহামের দুই পুত্র ছিল, একজন ক্রীতদাসীর, অন্যজন স্বাধীন নারীর।
23 ক্রীতদাসী নারীর দ্বারা তাঁর পুত্রের জন্ম হয়েছিল স্বাভাবিক উপায়ে, কিন্তু স্বাধীন নারীর দ্বারা তাঁর পুত্রের জন্ম হয়েছিল এক প্রতিশ্রুতির ফলস্বরূপে।
24 এসব বিষয় রূপক অর্থে গ্রহণ করা যেতে পারে, কারণ ওই দুজন নারী দুটি চুক্তির প্রতীকস্বরূপ। একটি চুক্তি সীনয় পর্বত থেকে, তা ক্রীতদাস হওয়ার জন্য সন্তানদের জন্ম দেয়। এ হল হাগার।
25 এখন হাগার হল আরবে স্থিত সীনয় পর্বতের প্রতীক এবং বর্তমানের জেরুশালেম নগরীর সঙ্গে সংগতিপূর্ণ, কারণ সে তার সন্তানদের নিয়ে দাসত্ববন্ধনে আবদ্ধ আছে।
26 কিন্তু ঊর্ধ্বে স্থিত জেরুশালেম স্বাধীন, সে আমাদের প্রকৃত মা।
27 কারণ লেখা আছে, “ওহে বন্ধ্যা নারী, যে কখনও সন্তান প্রসব করোনি, আনন্দিত হও; তোমরা কখনও প্রসবযন্ত্রণা ভোগ করোনি, আনন্দোল্লাসে ফেটে পড়ো; কারণ যার স্বামী আছে, সেই নারীর চেয়ে, যে নারী পরিত্যক্তা, তার সন্তান বেশি।”
28 এখন ভাইবোনেরা, তোমরা ইস্হাকের মতো প্রতিশ্রুতির সন্তান।
29 সেই সময়, স্বাভাবিক উপায়ে জাত পুত্র, ঈশ্বরের আত্মার পরাক্রমে জাত পুত্রকে নির্যাতন করত। তেমনই এখনও হচ্ছে।
30 কিন্তু শাস্ত্র কী বলে? “সেই ক্রীতদাসী ও তার ছেলেকে তাড়িয়ে দাও, কারণ সেই স্বাধীন নারীর সম্পত্তির অধিকারে ওই মহিলার ছেলে কখনোই ভাগ বসাবে না।”
31 অতএব ভাইবোনেরা, আমরা ক্রীতদাসীর সন্তান নই, কিন্তু সেই স্বাধীন নারীর সন্তান।