< ইষ্রা 4 >
1 যিহূদা ও বিন্যামীনদের প্রতিপক্ষেরা যখন শুনল যে নির্বাসন থেকে প্রত্যাগত ব্যক্তিরা ইস্রায়েলের আরাধ্য ঈশ্বর, সদাপ্রভুর উদ্দেশে একটি মন্দির নির্মাণ করছে,
১পরে যিহূদার ও বিন্যামীনের শত্রুরা শুনল যে, বন্দীদশা থেকে আসা লোকেরা ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে মন্দির তৈরী করছে৷
2 তখন তারা সরুব্বাবিল ও গোষ্ঠীপতিদের কাছে এসে বলল, “তোমাদের নির্মাণ কাজে আমরা সাহায্য করতে চাই, কারণ আমরাও তোমাদের আরাধ্য ঈশ্বরের আরাধনা করি। আসিরিয়ার রাজা এসর-হদ্দোন যখন আমাদের এদেশে বসবাস করতে এনেছেন তখন থেকেই আমরা সেই ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে বলি উৎসর্গ করে চলেছি।”
২তখন তারা সরুব্বাবিলের ও পূর্বপুরুষদের প্রধানদের কাছে এসে তাঁদেরকে বলল, “তোমাদের সঙ্গে আমরাও গাঁথি, কারণ তোমাদের মত আমরাও তোমাদের ঈশ্বরের খোঁজ করি; আর যে অশূরের রাজা এসর-হদ্দোন আমাদেরকে এখানে এনেছিলেন, তাঁর দিন থেকে আমরা তাঁরই উদ্দেশ্যে যজ্ঞ করে আসছি৷”
3 কিন্তু সরুব্বাবিল, যেশূয় ও অন্যান্য গোষ্ঠীপতিরা উত্তরে বললেন, “আমাদের আরাধ্য ঈশ্বরের মন্দির নির্মাণের কার্যে তোমাদের সাহায্যের কোনও প্রয়োজন নেই। পারস্য-সম্রাট কোরসের আদেশমতো ইস্রায়েলের আরাধ্য ঈশ্বর সদাপ্রভুর জন্য আমরা নিজেরাই এই কাজ করতে পারব।”
৩কিন্তু সরুব্বাবিল, যেশূয় ও ইস্রায়েলের অন্য সবার পূর্বপুরুষদের প্রধানরা তাদেরকে বললেন, “আমাদের ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে বাড়ি তৈরীর বিষয়ে আমাদের সঙ্গে তোমাদের সম্পর্ক নেই; কিন্তু কোরস রাজা, পারস্যের রাজা আমাদেরকে যা আদেশ করেছেন, সেই অনুসারে শুধুমাত্র আমরাই ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে তৈরী করবো৷”
4 তখন তাদের চারিদিকে যে সমস্ত লোক ছিল তারা যিহূদার লোকদের নিরুৎসাহ করতে চাইল এবং মন্দির নির্মাণের কাজে ভয় দেখাতে লাগল।
৪তখন দেশের লোকেরা যিহূদার লোকেদের হাত দুর্বল করতে ও তৈরীর কাজে তাদেরকে ভয় দেখাতে লাগলো
5 তারা অর্থের বিনিময়ে কিছু লোককে নিযুক্ত করল যাদের কাজ ছিল নির্মাণ কাজের ব্যাপারে সকলকে হতাশাগ্রস্ত করে তোলা এবং এ ব্যপারে সমস্ত পরিকল্পনাই নস্যাৎ করে দেওয়া। পারস্য-সম্রাট কোরসের সময় থেকে সম্রাট দারিয়াবসের রাজত্বকাল পর্যন্ত এই চক্রান্ত চলছিল।
৫এবং তাদের ইচ্ছা ব্যর্থ করার জন্য পারস্যের রাজা কোরসের দিন কালে ও পারস্যের রাজা দারিয়াবসের রাজত্বের ভার পাওয়া পর্যন্ত, টাকা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে পরামর্শদাতাদের নিযুক্ত করত৷
6 সম্রাট অহশ্বেরশের রাজত্বের শুরুতেই তারা যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকেদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করল।
৬অহশ্বেরশের রাজত্বের দিন, তাঁর রাজত্ব শুরুর দিনের, লোকেরা যিহূদা ও যিরূশালেমে বসবাসকারীদের বিরুদ্ধে এক অভিযোগের চিঠি লিখল৷
7 পারস্য-সম্রাট অর্তক্ষস্তের শাসনকালেও বিশ্লম, মিত্রদাৎ, টাবেল ও তার সহযোগীরা সম্রাট অর্তক্ষস্তের কাছে একটি পত্র লিখল। পত্রটি অরামীয় অক্ষরে ও অরামীয় ভাষায় লেখা হয়েছিল।
৭আর অর্তক্ষস্তের দিনের বিশ্লম, মিত্রদাৎ, টাবেল ও তার অন্য সঙ্গীরা পারস্যের অর্তক্ষস্ত রাজার কাছে একটি চিঠি লিখল, তা অরামীয় অক্ষরে লিপিবদ্ধ ও অরামীয় ভাষা থেকে অনুবাদ করা হয়েছিল৷
8 প্রদেশপাল রহূম, সচিব শিম্শয় সম্রাট অর্তক্ষস্তের কাছে জেরুশালেমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে সেই পত্র লিখেছিল।
৮রহূম মন্ত্রী ও শিমশয় লেখক যিরূশালেমের বিরুদ্ধে অর্তক্ষস্ত রাজার কাছে এই ভাবে চিঠি লিখল;
9 সেনাধিপতি রহূম, সচিব শিম্শয় ও তাদের সব সহযোগী—পারস্য, অর্কব ও ব্যাবিলনের বিচারক, কর্মকর্তা প্রশাসক, শূশনের এলমীয়েরা,
৯“রহূম মন্ত্রী ও শিমশয় লেখক ও তাদের সঙ্গী অন্য সবাই, অর্থাৎ দীনীয়, অফর্সত্খীয় টর্পলীয়, অফর্সীয়, অর্কবীয়, বাবিলীয়, শূশনখীয়, দেহ্বীয় ও এলমীয় লোকেরা
10 এবং অন্য সকল ব্যক্তি যাদের মহান ও সম্মানীয় অস্নপ্পর নির্বাসিত করেছিলেন এবং শমরিয়া ও ইউফ্রেটিস নদীর সংলগ্ন এলাকার সর্বত্র বসবাস করিয়েছেন, তাদের সকলের পক্ষে এই পত্র লেখা হয়েছিল।
১০এবং মহান ও অভিজাত অস্নপ্পরের মাধ্যমে নিয়ে আসা ও শমরিয়ার নগরে এবং ফরাৎ নদীর পারের অন্য সব দেশে স্থাপিত অন্য সব জাতি ইত্যাদি৷”
11 (যে পত্রটি তাঁকে প্রেরণ করা হয়েছিল এটি হল তারই অনুলিপি) সম্রাট অর্তক্ষস্ত সমীপেষু, ইউফ্রেটিস নদীর সংলগ্ন এলাকার জনগণের পক্ষে, আপনার সেবকবৃন্দ:
১১তারা অর্তক্ষস্ত রাজার কাছে সেই যে চিঠি পাঠালো, তার অনুলিপি এই; “ফরাৎ নদীর পারের আপনার দাসেরা ইত্যাদি৷
12 মহামান্য সম্রাটের জ্ঞাতার্থে আপনাকে অবহিত করি, যে সকল ইহুদিরা আপনার কাছ থেকে জেরুশালেমে গিয়েছে তারা সেই রাজদ্রোহ ও দুষ্টতায় ভরা নগরটিকে পুনরায় নির্মাণ করছে। তারা নগরের প্রাচীর পুনরুদ্ধার ও ভিত্তি পুনর্নির্মাণ করছে।
১২মহারাজের কাছে এই প্রার্থনা; ইহুদীরা আপনার কাছে থেকে আমাদের এখানে যিরূশালেমে এসেছে; তারা সে বিদ্রোহী মন্দ নগর তৈরী করছে, প্রাচীর শেষ করেছে, ভীত মেরামত করেছে৷
13 এছাড়াও, সম্রাটের জ্ঞাতার্থে জানাই যে যদি এই নগর পুনর্নির্মিত ও তাঁর প্রাচীর পুনর্গঠিত হয় তাহলে তারা কোনও রাজস্ব, প্রণামী ও মাশুল দেবে না। এর ফলে সম্রাটের রাজস্ব সংগ্রহ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
১৩অতএব মহারাজের কাছে এই প্রার্থনা, যদি এই নগর তৈরী ও প্রাচীর স্থাপন হয়, তবে ঐ লোকেরা কর, রাজস্ব ও মাশুল আর দেবে না, এর ফলে রাজকোষের ক্ষতি হবে৷
14 যেহেতু আপনার প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা আছে এবং আমাদের উচিত হবে না সম্রাটের অসম্মান হোক এমন কিছু ঘটতে দেওয়া, সেইজন্য আপনার জ্ঞাতার্থে এই সংবাদ আপনার কাছে প্রেরণ করছি।
১৪আমরা রাজবাড়ির নুন খেয়ে থাকি, অতএব মহারাজের অপমান দেখা আমাদের উচিত নয়, তাই লোক পাঠিয়ে মহারাজকে জানালাম৷
15 আপনি দয়া করে আপনার পূর্বসূরীদের নথিপত্রগুলি ভালো করে অনুসন্ধান করে দেখুন। সেই নথিগুলি দেখলেই আপনি বুঝতে পারবেন যে এই নগরটি কেমন বিদ্রোহীভাবাপন্ন এবং রাজাদের ও প্রদেশের পক্ষে কত বিপজ্জনক। প্রাচীনকাল থেকেই এই নগরটি রাজদ্রোহী মনোভাব দেখিয়েছে। এজন্যই নগরটিকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল।
১৫আপনার পূর্বপুরুষদের ইতিহাস বইয়ে খুঁজে দেখা হোক; সেই ইতিহাস বই দেখে জানতে পারবেন, এই নগর বিদ্রোহী নগর এবং রাজাদের ও দেশের সবার জন্য ক্ষতিকর, আর এই নগরে অনেকদিন থেকে রাজবিদ্রোহ হচ্ছিল, তাই এই নগর বিনষ্ট হয়৷
16 আমরা মহামান্য সম্রাটকে জানাই যে যদি আপনি এই নগরটি পুনর্নির্মিত হতে এবং তাঁর প্রাচীরগুলি পুনরুদ্ধার হতে দেন তাহলে ইউফ্রেটিস নদীর সংলগ্ন কোনও স্থান আর আপনার অধীনে থাকবে না।
১৬আমরা মহারাজকে জানালাম, যদি এই নগর তৈরী ও এর প্রাচীর স্থাপন হয়, তবে এর মাধ্যমে নদীর এ পারে আপনার কিছু অধিকার থাকবে না৷”
17 সম্রাট পত্রটির উত্তরে এই কথা লিখলেন: প্রদেশপাল রহূম, সচিব শিম্শয় এবং শমরিয়া ও ইউফ্রেটিস নদীর সংলগ্ন অঞ্চলে বসবাসকারী ও তাদের সহযোগীবৃন্দ: শুভেচ্ছা।
১৭রাজা রহূম মন্ত্রীকে, শিমশয় লেখককে ও শমরিয়ার অধিবাসী তাদের অন্য সঙ্গীদেরকে এবং নদীর পারের অন্য লোকদেরকে উত্তরে লিখলেন, “মঙ্গল হোক, ইত্যাদি৷
18 আপনারা আমার কাছে যে পত্রখানি পাঠিয়েছেন সেটি আমার সামনে পাঠ করা হয়েছে এবং অনুবাদ করা হয়েছে।
১৮তোমরা আমাদের কাছে যে চিঠি পাঠিয়েছ, তা আমার সামনে স্পষ্ট ভাবে পড়া হয়েছে৷
19 আমি একটি নির্দেশ পাঠিয়েছি এবং সেইমতো অনুসন্ধানও করা হয়েছে। সত্যিই এটি দেখা গেছে যে পূর্ব থেকেই নগরটি সম্রাটদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে এবং নগরটি যথার্থই বিক্ষোভ ও বিদ্রোহের জন্য কুখ্যাত।
১৯আমার আদেশে খোঁজ করে জানা গেল, পূর্বকাল থেকে সেই নগর রাজদ্রোহ করছিল এবং সেখানে বিদ্রোহ ও বিক্ষোভ হত৷
20 জেরুশালেম থেকেই পরাক্রমী নৃপতিগণ একদিন ইউফ্রেটিস নদীর অববাহিকার সমস্ত ভূখণ্ডে রাজত্ব করতেন। তাদের রাজস্ব, প্রণামী এবং মাশুলও যথাযথভাবে প্রদান করা হত।
২০আর যিরূশালেমে পরাক্রমী রাজারাও ছিলেন, তাঁরা নদীর পারে সবার উপরে রাজত্ব করতেন এবং তাঁদেরকে কর, রাজস্ব ও মাশুল দেওয়া হত৷
21 তোমরা শীঘ্রই ওই লোকদের কাছে এই আদেশ করো যেন তারা কাজ বন্ধ করে দেয় এবং আমি যতদিন না পুনরায় জানাচ্ছি ততদিন নগরটি যেন পুনর্নির্মিত না হয়।
২১সেই লোকদেরকে থামতে এবং যতদিন না আমি কোন আদেশ দিই, ততদিন ঐ নগর তৈরী না করতে আদেশ কর৷
22 সাবধান, এই বিষয়ে তোমরা শিথিল মনোভাব দেখিও না। কি কারণে এই বিপজ্জনক অবস্থাকে চলতে দেওয়া হবে যা রাজার স্বার্থকে বিঘ্নিত করবে?
২২সাবধান, এই কাজে তোমরা নরম হয়ো না; রাজকোষের ক্ষতিকর লোকসান কেন হবে?”
23 রহূম ও সচিব শিম্শয়ের কাছে যে মুহূর্তে সম্রাট অর্তক্ষস্তের এই পত্রের অনুলিপি পাঠ করা হল, তারা তৎক্ষণাৎ জেরুশালেমে ইহুদিদের কাছে গেল এবং তাদের কাজ বন্ধ করতে বাধ্য করল।
২৩পরে রহূমের, শিমশয় লেখকের ও তাদের সঙ্গী লোকেদের কাছে অর্তক্ষস্ত রাজার চিঠি পড়ার পরেই তারা খুব তাড়াতাড়ি যিরূশালেমে ইহুদীদের কাছে গিয়ে হাত ও বলপ্রয়োগ করে তাদের ঐ কাজ থামিয়ে দিল৷
24 এইভাবে জেরুশালেমে ঈশ্বরের মন্দির নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়ে গেল। সম্রাট দারিয়াবসের রাজত্বের দ্বিতীয় বছর পর্যন্ত সেই কাজ স্তব্ধ হয়ে রইল।
২৪তখন যিরূশালেমে ঈশ্বরের বাড়ির কাজ থেমে গেল, পারস্যের রাজা দারিয়াবসের রাজত্বের দ্বিতীয় বছর পর্যন্ত তা থেমে থাকলো৷