< যিহিস্কেল ভাববাদীর বই 29 >

1 দশম বছরের, দশম মাসের বারো দিনের দিন, সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল,
বাবিলে আমাদের বন্দিত্বের সময়ে দশম বছরের দশম মাসে, মাসের দ্বাদশ দিনের, সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল,
2 “হে মানবসন্তান, তুমি তোমার মুখ মিশরের রাজা ফরৌণের দিকে রেখে তার ও সারা মিশর দেশের বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী বলো।
হে মানুষের-সন্তান, তুমি মিশরের রাজা ফরৌণের বিরুদ্ধে মুখ রাখ এবং তার বিরুদ্ধে ও সমস্ত মিশরের বিরুদ্ধে ভাববাণী বল।
3 তুমি এই কথা তাকে বলো: ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “‘হে মিশরের রাজা ফরৌণ, আমি তোমার বিপক্ষে, তুমি নিজের নদীর মধ্যে শুয়ে থাকা এক প্রকাণ্ড দানব। তুমি বলো, “এই নীলনদ আমার; আমি নিজের জন্য এটি তৈরি করেছি।”
ঘোষণা কর এবং বল, প্রভু সদাপ্রভু এই কথা বলেন, হে মিশরের রাজা ফরৌণ, দেখ, আমি তোমার বিরুদ্ধে; তুমি সেই বিশাল সমুদ্রের জীব, যে নদীর মধ্যে শোয়, বলে আমার নদী আমারই, আমিই নিজের জন্য এটা তৈরী করেছি।
4 আমি তোমার চোয়ালে বড়শি পরাব এবং তোমার স্রোতোধারার মাছগুলিকে তোমার আঁশের সঙ্গে লাগিয়ে দেব। তোমার স্রোতের মধ্যে থেকে আমি তোমাকে টেনে তুলব, তখনও তোমার স্রোতের মাছগুলি তোমার আঁশের সঙ্গে লেগে থাকবে।
কিন্তু আমি তোমার চোয়াল ফুঁড়ব, তোমার জলপ্রবাহের মাছ সব তোমার আঁশে আটকে দেব এবং তোমার জলপ্রবাহের মাছ সব তখনও তোমার আঁশে লেগে থাকবে।
5 তোমাকে ও তোমার স্রোতোধারার মাছগুলিকে আমি প্রান্তরে ফেলে রাখব। তুমি খোলা মাঠে পড়ে থাকবে এবং কেউ তোমাকে জড়ো করবে না বা তুলবে না। আমি খাবার হিসেবে তোমাকে ভূমির পশু এবং আকাশের পাখিদের দেব।
আর আমি তোমার জলপ্রবাহের সব মাছশুদ্ধ তোমাকে মরুপ্রান্তে ফেলে দেব; তুমি মাঠের ওপরে পড়ে থাকবে, সংগৃহীত কি সঞ্চিত হবে না; আমি তোমাকে ভূমির পশুদের ও আকাশের পাখিদের খাবার হিসাবে দিলাম।
6 তখন মিশরে যারা বাস করে তারা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু। “‘তুমি ইস্রায়েল কুলের জন্য নলের লাঠি হয়েছিলে।
তাত মিশর নিবাসী সবাই জানবে যে, আমিই সদাপ্রভু কারণ তারা ইস্রায়েল কুলের পক্ষে নলের লাঠি হয়েছিল।
7 যখন তারা তোমাকে হাতে ধরত, তুমি ফেটে গিয়ে তাদের কাঁধে আঘাত করতে; যখন তারা তোমার উপর ভর দিত তখন তুমি ভেঙে যেতে এবং তাদের পিঠ তাতে মুচড়ে যেত।
যখন তারা তোমাকে হাতে ধরত, তখন তুমি ভেঙে তাদের সমস্ত কাঁধ বিদীর্ণ করতে এবং যখন তারা তোমার ওপরে নির্ভর করত, তাদের সমস্ত কোমর অসাড় করতে।
8 “‘সেইজন্য, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমি তোমার বিরুদ্ধে তরোয়াল নিয়ে এসে তোমার লোকদের ও পশুদের মেরে ফেলব।
সেই জন্য প্রভু সদাপ্রভু এই কথা বলেন, দেখ, আমি তোমার বিরুদ্ধে তরোয়াল আনব ও তোমার মধ্যে থেকে মানুষ ও পশু উচ্ছিন্ন করব।
9 মিশর হবে একটি জনশূন্য ধ্বংসস্থান। তখন তারা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু। “‘কারণ তুমি বলেছিলে, “এই নীলনদ আমার; আমি এটি তৈরি করেছি,”
মিশর দেশ ধ্বংসিত ও উত্সন্ন জায়গা হবে; তাতে তারা জানবে যে, আমিই সদাপ্রভু; কারণ তুমি বলতে, নদী আমার, আমিই তা উৎপন্ন করেছি।
10 এই জন্য আমি তোমার ও তোমার স্রোতোধারা সকলের বিপক্ষে, এবং আমি মিগ্‌দোল থেকে সিবেনী পর্যন্ত, অর্থাৎ কূশের সীমানা পর্যন্ত, মিশর দেশকে জনশূন্য ও ধ্বংসস্থান করব।
১০এই জন্য দেখ, আমি তোমার ও তোমার জলপ্রবাহের বিরুদ্ধে; আমি মিগদোল থেকে সিবেনী পর্যন্ত ও কূশ দেশের সীমা পর্যন্ত, মিশর দেশ উৎসন্ন ও ধ্বংসস্থান করব।
11 তার মধ্যে দিয়ে কোনও মানুষ বা পশু যাতায়াত করবে না; চল্লিশ বছর কেউ সেখানে বাস করবে না।
১১কোনো মানুষের পা তা দিয়ে যাবে না ও পশুর পা তা দিয়ে যাবে না এবং এটা চল্লিশ বছরের জন্য দখল হবে না।
12 ধ্বংস হয়ে যাওয়া সমস্ত দেশগুলির মধ্যে আমি মিশর দেশের অবস্থা আরও বেশি খারাপ করে দেব; ধ্বংস হয়ে যাওয়া নগরগুলির মধ্যে তার নগরগুলির চল্লিশ বছর ধরে জনশূন্য হয়ে থাকবে। এবং আমি মিস্রীয়দের বিভিন্ন জাতি ও দেশের মধ্যে ছড়িয়ে দেব।
১২আর আমি মিশর দেশকে ধ্বংসিত দেশগুলির মধ্যে ধ্বংসস্থান করব এবং উচ্ছিন্ন শহরগুলির মধ্যে তার শহর সব চল্লিশ বছর পর্যন্ত ধ্বংসস্থান থাকবে; আর আমি মিশরীয়দেরকে জাতিদের মধ্যে ছিন্নভিন্ন ও দেশ-বিদেশ বিকীর্ন করব।
13 “‘কেননা সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, চল্লিশ বছরের শেষে আমি বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা মিশরীয়দের জড়ো করব।
১৩কারণ প্রভু সদাপ্রভু এই কথা বলেন, যে সব জাতির মধ্যে মিশরীয়েরা ছিন্নভিন্ন হবে, তাদের মধ্যে থেকে আমি চল্লিশ বছরের শেষে তাদেরকে সংগ্রহ করব।
14 আমি তাদের বন্দিদশা থেকে ফিরিয়ে তাদের পূর্বপুরুষদের দেশ মিশরের উপরের এলাকাটি দেব। সেখানে তারা এক দুর্বল রাজ্য হবে।
১৪আর মিশরের বন্দিত্ব ফেরাব ও তাদের উৎপত্তিস্থান পথোষ দেশে তাদেরকে ফেরাব, সেখানে তারা নিম্নপদস্থ এক রাজ্য হবে।
15 সে দুর্বল রাজ্য হবে এবং অন্যান্য জাতিদের উপরে সে কখনও নিজেকে উঁচু করবে না। আমি তাকে এত দুর্বল করব যে সে আর কখনও অন্যান্য জাতিদের উপরে রাজত্ব করবে না।
১৫অন্যান্য রাজ্যের থেকে তা সবচেয়ে নীচু অবস্থানে হবে এবং নিজেকে আর জাতিদের ওপরে বড় করে তুলবে না; আমি তাদেরকে খর্ব করব, তারা আর জাতিদের ওপরে কর্তৃত্ব করবে না।
16 ইস্রায়েলীরা আর কখনও মিশরের উপর নির্ভর করবে না, কিন্তু মিশরের অবস্থা দেখে তারা বুঝতে পারবে যে সাহায্যের জন্য মিশরের দিকে ফিরে তারা পাপ করেছিল। তখন তারা জানতে পারবে যে আমিই সার্বভৌম সদাপ্রভু।’”
১৬মিশর আর ইস্রায়েল কুলের বিশ্বাসভূমি হবে না; যখন তারা মিশরের দিকে ফিরে গিয়েছে বলে যে অপরাধ করেছে তা মনে করবে; তাতে তারা জানবে যে, আমিই প্রভু সদাপ্রভু।
17 সাতাশ বছরের প্রথম মাসের প্রথম দিনে, সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল,
১৭আর বাবিলে আমাদের বন্দিত্বের সময়ে সাতাশ বছরের প্রথম মাসে মাসের প্রথম দিনের, প্রভু সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল এবং বলল,
18 “হে মানবসন্তান, ব্যাবিলনের রাজা নেবুখাদনেজার সোরের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় তার সৈন্যদলকে এত বেশি পরিশ্রম করিয়েছে যে; প্রত্যেকের মাথার চুল উঠে গিয়েছে ও কাঁধের ছালচামড়া উঠে গিয়েছে। তবুও সোরের বিরুদ্ধে সে যে যুদ্ধ চালিয়েছে তাতে তার বা তার সৈন্যদলের কোনো লাভ হয়নি।
১৮“হে মানুষের সন্তান, বাবিলের রাজা নবূখদ্‌নিৎসর নিজের সৈন্যসামন্তকে সোরের বিরুদ্ধে ভারী পরিশ্রম করিয়েছে; সবার মাথা টাকপড়া ও সবার কাঁধ অনাবৃত হয়েছে; কিন্তু সোরের বিরুদ্ধে সে যে পরিশ্রম করেছে, তার বেতন সে কিংবা তার সেনা সোর থেকে পায়নি।
19 এই জন্য সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমি ব্যাবিলনের রাজা নেবুখাদনেজারকে মিশর দেশটা দেব, আর সে তার ধনসম্পদ নিয়ে যাবে। তার সৈন্যদলের বেতনের জন্য সে সেই দেশ লুটপাট করবে।
১৯এই জন্য প্রভু সদাপ্রভু এই কথা বলেন, দেখ, আমি বাবিলের রাজা নবূখদ্‌নিৎসরকে মিশর দেশ দেব; সে তার সম্পত্তি নিয়ে যাবে, তার জিনিস লুট করবে ও তার সম্পত্তি অপহরণ করবে; তাই তার সেনার বেতন হবে।
20 সে ও তার সৈন্যদল আমার জন্য যে পরিশ্রম করেছে তার পুরস্কার হিসেবে আমি তাকে মিশর দেশটা দিয়েছি, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন।
২০সে যে পরিশ্রম করেছে, তার বেতন বলে আমি মিশর দেশ তাকে দিলাম, কারণ তারা আমারই জন্য কাজ করেছে, এটা প্রভু সদাপ্রভু বলেন।
21 “সেদিন আমি ইস্রায়েল জাতিকে শক্তিশালী করব, এবং তাদের মধ্যে কথা বলার জন্য আমি তোমার মুখ খুলে দেব। তখন তারা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু।”
২১সেই দিনের আমি ইস্রায়েল কুলের জন্যে এক শিং নির্গত করাব এবং তাদের মধ্যে তোমার মুখ খুলে দেব; তাতে তারা জানবে যে, আমিই সদাপ্রভু।”

< যিহিস্কেল ভাববাদীর বই 29 >