< যাত্রাপুস্তক 7 >
1 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “দেখো, আমি তোমাকে ফরৌণের কাছে ঈশ্বরের সমতুল্য করে দিয়েছি, এবং তোমার দাদা হারোণ তোমার ভাববাদী হবে।
2 আমি তোমাকে যে আদেশ দিচ্ছি সেসব কথা তোমাকে বলতে হবে, এবং তোমার দাদা হারোণ ফরৌণকে বলুক যেন সে ইস্রায়েলীদের তার দেশ ছেড়ে যেতে দেয়।
3 কিন্তু আমি ফরৌণের হৃদয় কঠিন করব, ও যদিও আমি মিশরে আমার চিহ্নের ও অলৌকিক কাজের সংখ্যা বৃদ্ধি করব,
4 তবুও সে তোমাদের কথা শুনবে না। পরে আমি মিশরের উপর আমার হাত বাড়াব এবং দণ্ডের ক্ষমতাশালী কাজের মাধ্যমে আমি আমার সৈন্যসামন্তকে, আমার প্রজা ইস্রায়েলীদের বের করে আনব।
5 আর আমি যখন মিশরের বিরুদ্ধে আমার হাত প্রসারিত করব ও সেখান থেকে ইস্রায়েলীদের বের করে আনব তখনই মিশরীয়রা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু।”
6 মোশি ও হারোণকে সদাপ্রভু যে আদেশ দিলেন তাঁরা ঠিক তাই করলেন।
7 তাঁরা যখন ফরৌণের সঙ্গে কথা বললেন তখন মোশির বয়স আশি ও হারোণের তিরাশি বছর।
8 সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে বললেন,
9 “ফরৌণ যখন তোমাদের বলবে, ‘একটি অলৌকিক কাজ করে দেখাও,’ তখন হারোণকে বোলো, ‘তোমার ছড়িটি নাও ও ফরৌণের সামনে সেটি নিক্ষেপ করো,’ আর সেটি একটি সাপে পরিণত হবে।”
10 অতএব মোশি ও হারোণ ফরৌণের কাছে গেলেন এবং সদাপ্রভু যেমন আদেশ দিয়েছিলেন ঠিক সেরকমই করলেন। হারোণ ফরৌণের ও তাঁর কর্মকর্তাদের সামনে তাঁর ছড়িটি নিক্ষেপ করলেন ও সেটি একটি সাপে পরিণত হল।
11 ফরৌণ তখন পণ্ডিতদের ও গুনিনদের ডেকে পাঠালেন, এবং সেই মিশরীয় জাদুকররাও তাদের রহস্যময় শিল্পকলার মাধ্যমে একই কাজ করল:
12 প্রত্যেকে নিজের নিজের ছড়ি নিক্ষেপ করল এবং তা সাপে পরিণত হল। কিন্তু হারোণের ছড়িটি তাদের ছড়িগুলি গিলে ফেলল।
13 তবুও ফরৌণের হৃদয় কঠিন হল ও তিনি তাদের কথা শুনতে চাননি, যেমন সদাপ্রভু বলেছিলেন।
14 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “ফরৌণের হৃদয় অনমনীয়; সে লোকদের যেতে দিতে চায় না।
15 সকালে ফরৌণ যখন নদীর কাছে যাবে তখন তুমিও তার কাছে যেয়ো। নীলনদের তীরে তার সম্মুখীন হোয়ো, এবং তোমার সেই ছড়িটি হাতে রেখো যেটি একটি সাপে পরিণত হয়েছিল।
16 পরে তাকে বোলো, ‘হিব্রুদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, আপনার কাছে আমাকে একথা বলতে পাঠিয়েছেন: আমার প্রজাদের যেতে দাও, যেন তারা মরুপ্রান্তরে আমার আরাধনা করতে পারে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তুমি সেকথা শোনোনি।
17 সদাপ্রভু একথাই বলেন: এর দ্বারাই তোমরা জানতে পারবে যে আমিই সদাপ্রভু: যে ছড়িটি আমার হাতে ধরা আছে সেটি দিয়ে আমি নীলনদের জলে আঘাত করব, আর তা রক্তে পরিণত হবে।
18 নীলনদে মাছ মারা যাবে, এবং তার ফলে নদীতে দুর্গন্ধ ছড়াবে; মিশরীয়রা এর জলপান করতে পারবে না।’”
19 সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “হারোণকে বোলো, ‘তোমার ছড়িটি নাও এবং মিশরের সব স্রোতোজলের উপর—নদীর ও খালের উপর, পুকুরের ও সব জলাধারের উপর—তোমার হাত বাড়াও ও সেসব রক্তে পরিণত হবে।’ মিশরে সর্বত্র রক্তই থাকবে, এমনকি কাঠের ও পাথরের পাত্রেও থাকবে।”
20 মোশি ও হারোণ ঠিক তাই করলেন যা সদাপ্রভু তাঁদের করার আদেশ দিয়েছিলেন। ফরৌণ ও তাঁর কর্মকর্তাদের সামনে তিনি তাঁর ছড়িটি বাড়িয়ে দিলেন ও নীলনদের জলে আঘাত করলেন ও সব জল রক্তে পরিণত হল।
21 নীলনদে মাছ মারা গেল, এবং নদীতে এত দুর্গন্ধ ছড়াল যে মিশরীয়রা সেটির জলপান করতে পারল না। মিশরে সর্বত্র রক্ত ছড়িয়ে পড়েছিল।
22 কিন্তু মিশরের জাদুকররাও তাদের রহস্যময় শিল্পকলার দ্বারা একই কাজ করল, এবং ফরৌণের হৃদয় কঠিন হল; তিনি মোশি ও হারোণের কথা শোনেননি, ঠিক যেমনটি সদাপ্রভু বলেছিলেন।
23 পরিবর্তে, তিনি তাঁর প্রাসাদে ফিরে গেলেন, এবং এমনকি এতে কিছুই মনে করলেন না।
24 আর মিশরীয়রা সবাই পানীয় জল পাওয়ার জন্য নীলনদের পাশে কুয়ো খুঁড়েছিল, কারণ তারা নদীর জলপান করতে পারেনি।
25 সদাপ্রভু নীলনদের উপর আঘাত হানার পর সাত দিন কেটে গেল।