< যাত্রাপুস্তক 5 >

1 পরে মোশি ও হারোণ ফরৌণের কাছে গিয়ে বললেন, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু, একথাই বলেন: ‘আমার লোকজনকে যেতে দাও, যেন তারা মরুপ্রান্তরে গিয়ে আমার উদ্দেশে এক উৎসব পালন করতে পারে।’”
পরে মোশি ও হারোণ গিয়ে ফরৌণকে বললেন, “সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর এই কথা বলেন, ‘মরুপ্রান্তে আমার উদ্দেশ্যে উৎসব করার জন্য আমার প্রজাদেরকে ছেড়ে দাও’।”
2 ফরৌণ বললেন, “সদাপ্রভু কে, যে আমাকে তার বাধ্য হতে হবে ও ইস্রায়েলকে যেতে দিতে হবে? আমি সদাপ্রভুকে চিনি না আর আমি ইস্রায়েলকেও যেতে দেব না।”
ফরৌণ বললেন, “সদাপ্রভু কে, যে আমি তার কথা শুনে ইস্রায়েলকে ছেড়ে দেব? আমি সদাপ্রভু কে জানি না, ইস্রায়েলকেও ছাড়বো না।”
3 তখন তাঁরা বললেন, “হিব্রুদের ঈশ্বর আমাদের দর্শন দিয়েছেন। এখন মরুপ্রান্তরে তিনদিনের পথযাত্রা করে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে আমাদের বলি উৎসর্গ করে আসতে দিন, তা না হলে তিনি হয়তো আমাদের মহামারি বা তরোয়াল দিয়ে আঘাত করবেন।”
তাঁরা বললেন, “ইব্রীয়দের ঈশ্বর আমাদেরকে দেখা দিয়েছেন; আমরা অনুরোধ করি, আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে বলিদান করার জন্য আমাদেরকে তিন দিনের র পথ মরুপ্রান্তে যেতে দিন, যেন তিনি মহামারী কি তরোয়াল দিয়ে আমাদেরকে আক্রমণ না করেন।”
4 কিন্তু মিশররাজ বললেন, “ওহে মোশি ও হারোণ, লোকদের কেন তোমরা তাদের কাজকর্ম থেকে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছ? তোমাদের কাজে ফিরে যাও!”
মিশরের রাজা তাঁদেরকে বললেন, “ওহে মোশি ও হারোণ, তোমরা কেন লোকদের কাজ থেকে নিস্তার দাও? তোমাদের কাজে ফিরে যাও।”
5 পরে ফরৌণ বললেন, “দেখো, দেশের লোকজন এখন বহুসংখ্যক হয়ে গিয়েছে এবং তোমরা তাদের কাজ করা থেকে বিরত রাখছ।”
ফরৌণ আরও বললেন, “দেখ, দেশে লোক এখন অনেক, আর তোমরা তাদের কাজ থামিয়ে দিয়েছ।”
6 সেদিনই ফরৌণ লোকজনের দায়িত্বে থাকা ক্রীতদাস পরিচালকদের ও তত্ত্বাবধায়কদের এই আদেশ দিলেন:
আর ফরৌণ সেই দিন লোকদের শাসক ও শাসনকর্তাকে এই আদেশ দিলেন,
7 “ইট তৈরি করার জন্য তোমরা লোকদের আর খড়ের জোগান দেবে না; তারা নিজেরাই গিয়ে খড় জোগাড় করুক।
“তোমরা ইট তৈরী করার জন্য আগের মত এই লোকদেরকে আর খড় দিয়ো না; তাঁরা গিয়ে নিজেরাই নিজেদের খড় সংগ্রহ করুক।
8 কিন্তু আগে তারা যে পরিমাণ ইট তৈরি করত, এখনও তাদের ততটাই তৈরি করতে বলো; প্রদেয় নির্দিষ্ট ভাগ কমিয়ে দিয়ো না। তারা অলস; তাই তারা কান্নাকাটি করে বলছে, ‘আমাদের যেতে দাও ও আমাদের ঈশ্বরের উদ্দেশে বলি উৎসর্গ করতে দাও।’
কিন্তু আগে তাদের যত ইট তৈরীর ভার ছিল, এখনও সেই ভার দাও; তার কিছুই কম কর না; কারণ তারা কুঁড়ে, তাই কেঁদে বলছে, আমরা আমাদের ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে বলিদান করতে যাই।
9 লোকদের জন্য কাজকর্ম এত কঠিন করে দাও, যেন তারা কাজ করতেই থাকে ও মিথ্যা কথায় মনোযোগ না দেয়।”
সেই লোকদের উপরে আরও কঠিন কাজ চাপান হোক, তারা তাতেই ব্যস্ত থাকুক এবং মিথ্যা কথায় মনোযোগ না দিক।”
10 তখন ক্রীতদাস পরিচালকেরা ও তত্ত্বাবধায়কেরা বাইরে গিয়ে লোকজনকে বলল, “ফরৌণ একথাই বলেছেন: ‘আমি আর তোমাদের খড় দেব না।
১০আর লোকদের শাসকেরা ও শাসনকর্তারা বাইরে গিয়ে তাদেরকে বলল, “ফরৌণ এই কথা বলেন, আমি তোমাদেরকে খড় দেব না।
11 যাও, যেখান থেকে পারো তোমাদের খড় নিয়ে এসো, কিন্তু তোমাদের কাজকর্ম কোনোমতেই কম করা হবে না।’”
১১নিজেরা যেখানে পাও, সেখানে গিয়ে খড় সংগ্রহ কর; কিন্তু তোমাদের কাজ কিছুই কম হবে না।”
12 অতএব লোকেরা খড়ের পরিবর্তে নাড়া সংগ্রহ করার জন্য মিশরের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ল।
১২তাতে লোকেরা খড়ের চেষ্টায় নাড়া জড়ো করতে সমস্ত মিশর দেশে ছড়িয়ে পড়ল।
13 ক্রীতদাস পরিচালকেরা এই বলে তাদের চাপ দিয়ে যাচ্ছিল, “তোমরা প্রতিদিনের নিরূপিত কাজকর্ম শেষ করো, ঠিক যেভাবে আগে তোমাদের কাছে খড় থাকার সময় তোমরা তা করতে।”
১৩আর শাসকেরা তাড়া দিয়ে বলল, “খড় পেলে যেমন করতে, সেই রকম এখনও তোমাদের প্রতিদিনের র নির্ধারিত কাজ শেষ কর।”
14 আর ফরৌণের ক্রীতদাস পরিচালকেরা যে ইস্রায়েলী তত্ত্বাবধায়কদের নিযুক্ত করল, তারা তাদের কাছে এই দাবি জানিয়ে তাদের মারধর করত, “গতকাল বা আজ কেন তোমরা আগের মতো তোমাদের যত ইট তৈরি করার কথা, ততখানি তৈরি করোনি?”
১৪আর ফরৌণের শাসকেরা ইস্রায়েল সন্তানদের যে শাসনকর্তাদেরকে তাদের উপরে রেখেছিল, তারাও অত্যাচারিত হল, আর বলে দেওয়া হল, “তোমরা আগের মত ইট তৈরীর বিষয়ে নির্ধারিত কাজ আজকাল শেষ কর না কেন?”
15 তখন ইস্রায়েলী তত্ত্বাবধায়কেরা গিয়ে ফরৌণের কাছে নালিশ জানাল: “কেন আপনি আপনার এই দাসেদের সঙ্গে এরকম আচরণ করছেন?
১৫তাতে ইস্রায়েলীয়দের শাসনকর্তারা এসে ফরৌণের কাছে কেঁদে বলল, “আপনার দাসদের সঙ্গে আপনি এমন ব্যবহার কেন করছেন?
16 আপনার দাসেদের কোনও খড় দেওয়া হয়নি, অথচ আমাদের বলা হয়েছে, ‘ইট তৈরি করো!’ আপনার দাসেদের মারধর করা হয়েছে, কিন্তু আপনার নিজের প্রজারাই দোষ করেছে।”
১৬লোকেরা আপনার দাসদেরকে খড় দেয় না, তবুও আমাদেরকে বলে ইট তৈরী কর; আর দেখুন আপনার এই দাসেরা অত্যাচারিত হয়, কিন্তু আপনারই লোকদেরই দোষ।”
17 ফরৌণ বললেন, “তোমরা অলস, তোমরা এরকমই—অলস! সেজন্যই তোমরা বলে যাচ্ছ, ‘চলো যাই ও সদাপ্রভুর উদ্দেশে বলি উৎসর্গ করি।’
১৭ফরৌণ বললেন, “তোমরা অলস, তাই বলছ, ‘আমরা সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে যজ্ঞ করতে যাই।’
18 এখন কাজে লেগে পড়ো। তোমাদের কোনও খড় দেওয়া হবে না। তবুও তোমাদের নিরূপিত পরিমাণ ইটের পুরোটাই উৎপাদন করতে হবে।”
১৮এখন যাও, কাজ কর, তোমাদেরকে খড় দেওয়া যাবে না, তবুও সমস্ত ইট তৈরী করে দিতে হবে।”
19 ইস্রায়েলী তত্ত্বাবধায়কদের যখন বলা হল, “প্রতিদিন তোমাদের যতগুলি করে ইট তৈরি করার কথা, তোমরা তার সংখ্যা কমাতে পারবে না,” তখন তারা বুঝতে পারল যে তারা অসুবিধায় পড়েছে।
১৯তখন ইস্রায়েল সন্তানদের শাসনকর্তারা দেখল, তারা বিপদে পড়েছে, কারণ বলা হয়েছিল, “তোমরা প্রত্যেক দিনের র কাজের, নির্ধারিত ইটের, কিছু কম করতে পাবে না।”
20 তারা যখন ফরৌণের কাছ থেকে ফিরে এল, তখন তারা দেখল যে মোশি ও হারোণ তাদের সাথে দেখা করার জন্য অপেক্ষা করছেন,
২০পরে ফরৌণের কাছ থেকে বের হয়ে আসার দিনের তারা মোশির ও হারোণের দেখা পেল, তাঁরা পথে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
21 এবং তারা বলল, “সদাপ্রভুই আপনাদের দিকে তাকিয়ে আপনাদের বিচার করুন! আপনারা ফরৌণের ও তাঁর কর্মকর্তাদের কাছে আমাদের আপত্তিকর করে তুলেছেন এবং আমাদের হত্যা করার জন্য তাদের হাতে এক তরোয়াল তুলে দিয়েছেন।”
২১তারা তাঁদেরকে বলল, “সদাপ্রভু তোমাদের প্রতি দৃষ্টিপাত করুন এবং তোমাদের বিচার করুন, কারণ তোমরা ফরৌণের চোখে ও তাঁর দাসেদের চোখে আমাদেরকে জঘন্য খারাপ করে তুলে আমাদের হত্যা করার জন্য তাদের হাতে তরোয়াল দিয়েছ।”
22 মোশি সদাপ্রভুর কাছে ফিরে গিয়ে বললেন, “কেন, হে প্রভু, কেন তুমি এই লোকদের অসুবিধায় ফেললে? এজন্যই কি তুমি আমাকে পাঠিয়েছিলে?
২২পরে মোশি সদাপ্রভুর কাছে ফিরে গিয়ে তাঁকে বললেন, “হে প্রভু, তুমি এই লোকদের অমঙ্গল কেন করলে? আমাকে কেন পাঠালে?
23 যখন থেকে আমি তোমার নাম করে ফরৌণের সাথে কথা বলতে গিয়েছি, তখন থেকেই তিনি এই লোকদের অসুবিধায় ফেলেছেন, এবং তুমি তোমার প্রজাদের আদৌ উদ্ধার করোনি।”
২৩যখন তোমার নামে কথা বলতে ফরৌণের কাছে গিয়েছি, তখন থেকে তিনি এই লোকেদের অমঙ্গল করছেন, আর তুমি তোমার প্রজাদের কিছুই উদ্ধার করনি।”

< যাত্রাপুস্তক 5 >