< যাত্রাপুস্তক 2 >
1 এদিকে লেবি বংশের একজন লোক এক লেবীয় মহিলাকে বিয়ে করলেন,
2 আর সেই মহিলাটি গর্ভবতী হলেন ও এক পুত্রসন্তানের জন্ম দিলেন। যখন তিনি দেখলেন যে শিশুটি দেখতে খুব সুন্দর, তখন তিনি তাকে তিন মাস ধরে লুকিয়ে রাখলেন।
3 কিন্তু যখন তিনি তাকে আর লুকিয়ে রাখতে পারলেন না, তখন তিনি তার জন্য নলখাগড়া দিয়ে একটি ডালি তৈরি করলেন ও সেটিতে আলকাতরা ও পিচ লেপন করে দিলেন। পরে তিনি সেই শিশুটিকে সেটির মধ্যে শুইয়ে দিয়ে সেটি নীলনদের পাড়ে নলবনের মধ্যে রেখে দিলেন।
4 শিশুটির দিদি একটু দূরে দাঁড়িয়ে লক্ষ্য রাখছিল তার ভাইয়ের প্রতি কী ঘটতে চলেছে।
5 পরে ফরৌণের মেয়ে নীলনদে স্নান করার জন্য নামলেন, এবং তাঁর পরিচারিকারা তাঁর পাশে পাশে নদীর পাড় ধরে হাঁটছিল। তিনি নলবনের মধ্যে সেই ডালিটি দেখতে পেলেন এবং সেটি তুলে আনার জন্য তিনি তাঁর ক্রীতদাসীকে পাঠালেন।
6 তিনি সেটি খুললেন ও সেই শিশুটিকে দেখতে পেলেন। সে কাঁদছিল, আর তার জন্য তাঁর দুঃখ হল। “এ হিব্রু শিশুদের মধ্যেই একজন,” তিনি বললেন।
7 তখন সেই শিশুটির দিদি ফরৌণের মেয়েকে জিজ্ঞাসা করল, “আমি কি গিয়ে হিব্রু মহিলাদের মধ্যে একজনকে ডেকে আনব, যে আপনার জন্য এই শিশুটির শুশ্রুষা করবে?”
8 “হ্যাঁ, যাও,” ফরৌণের মেয়ে উত্তর দিলেন। অতএব সেই মেয়েটি গিয়ে শিশুটির মাকে ডেকে আনল।
9 ফরৌণের মেয়ে তাঁকে বললেন, “এই শিশুটিকে নিয়ে যাও ও আমার হয়ে এর শুশ্রুষা করো, আর আমি তোমাকে বেতন দেব।” অতএব সেই মহিলাটি শিশুটিকে নিয়ে তার শুশ্রুষা করলেন।
10 শিশুটি যখন বড়ো হল, তখন তিনি তাকে ফরৌণের মেয়ের কাছে নিয়ে এলেন ও সে তাঁর ছেলে হয়ে গেল। “আমি তাকে জল থেকে টেনে তুলেছি,” এই বলে তিনি তার নাম দিলেন মোশি।
11 একদিন, মোশি বড়ো হয়ে যাওয়ার পর, যেখানে তাঁর নিজস্ব লোকজনেরা ছিল, তিনি সেখানে গেলেন ও দেখলেন তারা কঠোর পরিশ্রম করছে। তিনি দেখতে পেলেন একজন মিশরীয় লোক একজন হিব্রু লোককে মারধর করছে, যে কি না তাঁর নিজস্ব লোকজনের মধ্যেই একজন।
12 এদিক-ওদিক তাকিয়ে, কাউকে দেখতে না পেয়ে তিনি সেই মিশরীয় লোকটিকে হত্যা করলেন ও তাকে বালিতে পুঁতে দিলেন।
13 পরদিন তিনি বাইরে গেলেন ও দেখতে পেলেন দুজন হিব্রু লোক মারপিট করছে। যে অন্যায় করেছিল তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কেন তোমার স্বজাতীয় হিব্রু ভাইকে মারছ?”
14 সেই লোকটি বলল, “কে তোমাকে আমাদের উপর শাসক ও বিচারক নিযুক্ত করেছে? যেভাবে তুমি সেই মিশরীয় লোকটিকে হত্যা করেছিলে, সেভাবে আমাকেও কি হত্যা করার কথা ভাবছ?” তখন মোশি ভয় পেয়ে গিয়ে ভাবলেন, “আমি যা করেছি তা নিশ্চয় লোকেরা জেনে ফেলেছে।”
15 ফরৌণ যখন তা শুনতে পেলেন, তখন তিনি মোশিকে হত্যা করার চেষ্টা করলেন, কিন্তু মোশি ফরৌণের কাছ থেকে পালিয়ে মিদিয়নে বসবাস করতে চলে গেলেন, ও সেখানে গিয়ে তিনি এক কুয়োর পাড়ে বসে পড়লেন।
16 মিদিয়নীয় এক যাজকের সাতটি মেয়ে ছিল, এবং তারা তাদের বাবার মেষপালকে জলপান করাবার জন্য জল তুলতে ও জাবপাত্র ভরতে এসেছিল।
17 কয়েকজন মেষপালক সেখানে এসে তাদের তাড়িয়ে দিল, কিন্তু মোশি উঠে দাঁড়ালেন ও তাদের রক্ষাকর্তা হয়ে তাদের মেষপালকে জলপান করালেন।
18 সেই মেয়েরা যখন তাদের বাবা রূয়েলের কাছে ফিরে গেল, তখন তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “আজ তোমরা কেন এত তাড়াতাড়ি ফিরে এলে?”
19 তারা উত্তর দিল, “একজন মিশরীয় লোক মেষপালকদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করেছেন। এমনকি তিনি আমাদের জন্য জল তুলে দিলেন ও আমাদের মেষপালকে জলপান করালেন।”
20 “আর তিনি কোথায়?” রূয়েল তাঁর মেয়েদের জিজ্ঞাসা করলেন। “তোমরা কেন তাঁকে ছেড়ে এলে? কিছু খাওয়ার জন্য তাঁকে নিমন্ত্রণ করো।”
21 মোশি সেই লোকটির সঙ্গে থাকতে সম্মত হলেন, যিনি মোশির সঙ্গে তাঁর মেয়ে সিপ্পোরার বিয়ে দিলেন।
22 সিপ্পোরা এক পুত্রসন্তানের জন্ম দিলেন, ও মোশি এই বলে তার নাম দিলেন গের্শোম যে “বিদেশভূমিতে আমি এক বিদেশি হয়ে গেলাম।”
23 সুদীর্ঘ সময়কাল পার হয়ে যাওয়ার পর, মিশরের রাজা মারা গেলেন। ইস্রায়েলীরা তাদের ক্রীতদাসত্বের কারণে যন্ত্রণা পেয়ে গভীর আর্তনাদ করে উঠল, এবং তাদের ক্রীতদাসত্বের কারণে তাদের চাওয়া সাহায্যের আকুতি ঈশ্বরের কাছে পৌঁছে গেল।
24 ঈশ্বর তাদের কান্না শুনলেন এবং অব্রাহাম, ইস্হাক ও যাকোবের সঙ্গে করা তাঁর নিয়মটি তিনি স্মরণ করলেন।
25 অতএব ঈশ্বর ইস্রায়েলীদের দিকে দৃষ্টিপাত করলেন ও তাদের বিষয়ে উদ্বিগ্ন হলেন।