< ইষ্টের বিবরণ 2 >
1 পরে রাজা অহশ্বেরশের রাগ পড়ে গেলে, বষ্টীকে ও তিনি কি করেছিলেন এবং তাঁর বিষয় কি আদেশ দেওয়া হয়েছিল তা স্মরণ করলেন।
১এই সব ঘটনার পরে অহশ্বেরশ রাজার রাগ কমে গেলে তিনি বষ্টীকে, তাঁর কাজ ও তাঁর বিপরীতে যে আদেশ দেওয়া হয়েছিল, তা মনে করলেন।
2 তখন রাজার ব্যক্তিগত কর্মচারীরা প্রস্তাব করল, “মহারাজের জন্য সুন্দরী কুমারী মেয়ের খোঁজ করা হোক।
২তখন রাজার নপুংসক দাসেরা তাঁকে বলল মহারাজের জন্য সুন্দরী যুবতী কুমারীদের খোঁজ করা যাক।
3 রাজা নিজের সাম্রাজ্যের সমস্ত রাজ্যে এজেন্ট নিযুক্ত করুন যেন তারা সব সুন্দরী মেয়েদের শূশন দুর্গের হারেমে পাঠিয়ে দিতে পারে। তাদেরকে রাজার যে নপুংসক হেগয়, তার হাতে সমর্পণ করুক, যার উপর স্ত্রীলোকদের ভার দেওয়া আছে, এবং তাদের সৌন্দর্য বাড়াবার জন্য যা লাগে তা দেওয়া হোক।
৩মহারাজ নিজের রাজ্যের সমস্ত প্রদেশে কর্মচারীদেরকে নিযুক্ত করুন; তারা সেই সব সুন্দরী যুবতী কুমারীদেরকে শূশন রাজধানীতে জড়ো করে অন্দরমহলে স্ত্রীলোকদের রক্ষক রাজ নপুংসক যে হেগয়, তাঁর কাছে দেওয়া হোক এবং তাদের সাজসরঞ্জামের জিনিস দেওয়া হোক।
4 তারপর মহারাজকে যে কুমারী মেয়ে সন্তুষ্ট করতে পারবে তাকে বষ্টীর পরিবর্তে রানি করা হোক।” এই পরামর্শ রাজার কাছে ভালো লাগল, এবং তিনি সেইমতই কাজ করলেন।
৪পরে মহারাজের চোখে যে মেয়ে ভালো হবেন, তিনি বষ্টীর পদে রাণী হোন। তখন এই কথা রাজার ভালো মনে হওয়াতে তিনি সেরকমই করলেন।
5 সেই সময় মর্দখয় নামে বিন্যামীন গোষ্ঠীর একজন ইহুদি শূশনের দুর্গে ছিলেন। তিনি যায়ীরের ছেলে, যে শিমিয়ের ছেলে, যে কীশের ছেলে,
৫সেই দিনের যায়ীরের ছেলে মর্দখয় নামে একজন যিহূদী শূশন রাজধানীতে ছিলেন। সেই যায়ীরের বাবা শিমিয়ি, শিমিয়ির বাবা বিন্যামীনীয় কীশ।
6 যাকে ব্যাবিলনের রাজা নেবুখাদনেজার যিহূদার রাজা যিহোয়াখীনের সঙ্গে জেরুশালেম থেকে বন্দি করে নিয়ে এসেছিলেন।
৬বাবিলের রাজা নবূখদ্নিৎসরের মাধ্যমে বন্দী অবস্থায় আনা যিহূদার রাজা যিকনিয়ের সঙ্গে যে সব লোক বন্দী হয়েছিল, [কীশ] তাদের সঙ্গে যিরুশালেম থেকে বন্দী অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল।
7 মর্দখয়ের হদসা নামে একটি সম্পর্কিত বোন ছিল যাঁকে তিনি মানুষ করেছিলেন কারণ তাঁর মা অথবা বাবা ছিল না। এই মেয়েটি ইষ্টের নামেও পরিচিত ছিল, সে খুব সুন্দরী ও ভালো গড়নের ছিল এবং তাঁর মা ও বাবা মারা যাওয়ায় মর্দখয় তাঁকে নিজের মেয়ে বলে গ্রহণ করেছিলেন।
৭মর্দখয় নিজের কাকার মেয়ে হদসাকে অর্থাৎ ইষ্টেরকে লালন পালন করতেন; কারণ তাঁর বাবা কি মা ছিল না। সেই মেয়ে সুন্দরী ও রূপবতী ছিলেন; তাঁর বাবা মা মারা গেলে মর্দখয় তাঁকে নিজের মেয়ে করেছিলেন।
8 রাজার আদেশ ও নির্দেশ ঘোষণা করা হলে পর অনেক মেয়েকে শূশনের দুর্গে নিয়ে এসে হেগয়ের তদারকির অধীনে রাখা হল। ইষ্টেরকেও রাজবাড়িতে নিয়ে গিয়ে হেগয়ের কাছে রাখা হল, যাঁর উপর হারেমের দায়িত্ব ছিল।
৮পরে রাজার ঐ কথা ও আদেশ প্রচারিত হলে যখন শূশন রাজধানীতে হেগয়ের কাছে অনেক মেয়েকে আনা হল, তখন ইষ্টেরকেও রাজবাড়িতে স্ত্রীরক্ষক হেগয়ের কাছে আনা হল।
9 মেয়েটি তাঁকে সন্তুষ্ট করে ও তাঁর দয়া পায়। হেগয় প্রথম থেকেই তাঁকে সৌন্দর্য বাড়াবার জিনিসপত্র এবং বিশেষ খাবার দিল। সে রাজবাড়ি থেকে বেছে বেছে সাতজন দাসী তাঁর জন্য নিযুক্ত করল এবং হারেমের সবচেয়ে ভালো জায়গায় তাঁকে ও তাঁর দাসীদের রাখল।
৯আর সেই মেয়েটি হেগয়ের চোখে ভালো হলেন ও তাঁর কাছে দয়া পেলেন এবং তিনি তাড়াতাড়ি সাজ সরঞ্জামের জিনিসগুলি এবং আরো যে যে জিনিসগুলো তাঁকে দিতে হয়, তা এবং রাজবাড়ি থেকে মনোনীত সাতটা দাসী তাঁকে দিলেন এবং সেই দাসীদের সঙ্গে তাঁকে অন্দরমহলের ভালো জায়গায় নিয়ে রাখলেন।
10 ইষ্টের তাঁর জাতি ও বংশের পরিচয় দিলেন না কারণ মর্দখয় তাঁকে বারণ করেছিলেন।
১০ইষ্টের নিজের জাতির কি বংশের পরিচয় দিলেন না; কারণ মর্দখয় তা না জানাতে তাঁকে আদেশ করেছিলেন।
11 ইষ্টের কেমন আছেন ও তাঁর কি হচ্ছে না হচ্ছে তা জানার জন্য মর্দখয় প্রতিদিন হারেমের উঠানের সামনে ঘোরাফেরা করতেন।
১১পরে ইষ্টের কেমন আছেন ও তাঁর প্রতি কেমন ব্যবহার করা হয়, তা জানবার জন্য মর্দখয় প্রতিদিন অন্দরমহলের উঠানের সামনে বেড়াতে লাগলেন।
12 রাজা অহশ্বেরশের কাছে কোনও মেয়ের যাবার পালা আসবার আগে বারো মাস ধরে তাঁকে মেয়েদের জন্য সৌন্দর্য বাড়াবার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হত, ছয় মাস গন্ধরসের তেল ও ছয় মাস সুগন্ধি ও মহিলাদের জন্য নির্ধারিত প্রসাধনের জিনিসপত্র ব্যবহার করতে হত।
১২আর বারো মাস স্ত্রীলোকদের জন্য নিয়মিত সেবা পাওয়ার পর রাজা অহশ্বেরশের কাছে এক এক মেয়ের যাওয়ার পালা আসত; কারণ তাদের রূপচর্চায় এত দিন লাগত, অর্থাৎ ছয় মাস গন্ধরসের তেল, ছয় মাস সুগন্ধি ও স্ত্রীলোকের রূপচর্চার জন্য জিনিস ব্যবহার করা হত;
13 আর এইভাবে সে রাজার কাছে যেতে পারত তিনি যা নিয়ে যেতে চাইতেন তাই তাঁকে রাজার প্রাসাদের হারেম থেকে দেওয়া হত।
১৩আর রাজার কাছে যেতে হলে প্রত্যেক যুবতীর জন্য এই নিয়ম ছিল; সে যে কোনো জিনিস চাইত, তা অন্দরমহল থেকে রাজবাড়িতে যাবার দিনের সঙ্গে নিয়ে যাবার জন্য তাকে দেওয়া হত।
14 সন্ধ্যাবেলা সে সেখানে যেত এবং সকালবেলা হারেমের আরেক জায়গায় যেত যেখানে রাজার নপুংসক শাশগস উপপত্নীদের যত্ন নিতেন। সে আর রাজার কাছে যেতে পারত না যদি না রাজা তার উপর খুশি হয়ে তাকে নাম ধরে ডাকতেন।
১৪সে সন্ধ্যাবেলায় যেত ও সকালে উপপত্নীদের রক্ষক রাজ নপুংসক শাশ্গসের কাছে দ্বিতীয় অন্দরমহলে ফিরে আসত; রাজা তার ওপরে খুশি হয়ে তার নাম ধরে না ডাকলে সে রাজার কাছে আর যেত না।
15 ইষ্টেরের যখন রাজার কাছে যাবার পালা এল (মর্দখয় তাঁর কাকা অবীহয়িলের যে মেয়েকে নিজের মেয়ে হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন), তখন হারেমের তদারককারী রাজার নিযুক্ত নপুংসক হেগয় তাঁকে যা নিয়ে যেতে বলল তা ছাড়া তিনি আর কিছুই চাইলেন না। আর যে কেউ ইষ্টেরকে দেখত, সে তাঁকে অনুগ্রহ করত।
১৫পরে মর্দখয় নিজের কাকা অবীহয়িলের যে মেয়েটিকে নিজের মেয়ে করেছিলেন, যখন রাজার কাছে সেই ইষ্টেরের যাবার পালা হল, তখন তিনি কিছুই চাইলেন না, শুধু স্ত্রীলোকদের রক্ষক রাজ নপুংসক হেগয় যা যা ঠিক করলেন, তাই মাত্র [সঙ্গে নিলেন]; আর যে কেউ ইষ্টেরের প্রতি দেখত, সে তাঁকে অনুগ্রহ করত।
16 রাজা অহশ্বেরশের রাজত্বের সাত বছরের দশম মাসে তার অর্থ টেবেথ মাসে ইষ্টেরকে রাজবাড়িতে রাজার কাছে নিয়ে যাওয়া হল।
১৬রাজার রাজত্বের সাত বছরের দশ মাসে অর্থাৎ টেবেৎ মাসে ইষ্টেরকে অহশ্বেরশ রাজার কাছে রাজবাড়িতে আনা হল।
17 অন্যান্য স্ত্রীলোকদের চেয়ে ইষ্টেরকে রাজা বেশি ভালোবাসলেন এবং তিনি অন্যান্য কুমারী মেয়েদের চেয়ে রাজার কাছে বেশি দয়া ও ভালোবাসা পেলেন। অতএব রাজা তাঁর মাথায় মুকুট পরিয়ে দিলেন এবং বষ্টীর জায়গায় ইষ্টেরকে রানি করলেন।
১৭আর রাজা অন্য সব স্ত্রীলোকের চেয়ে ইষ্টেরকে বেশি ভালবাসলেন এবং অন্য সব কুমারীর থেকে তিনিই রাজার চোখে অনুগ্রহ ও দয়া পেলেন; অতএব রাজা তাঁরই মাথায় রাজমুকুট দিয়ে বষ্টীর পদে তাঁকে রাণী করলেন।
18 তারপর রাজা তাঁর উঁচু পদের লোকদের ও কর্মকর্তাদের জন্য ইষ্টেরের ভোজ নামে একটি বড়ো ভোজ দিলেন। তিনি সব রাজ্যে ছুটি ঘোষণা করলেন ও রাজকীয় উদারতায় উপহার দান করলেন।
১৮পরে রাজা নিজের সমস্ত শাসনকর্ত্তা ও দাসদের জন্য ইষ্টেরের ভোজ বলে মহাভোজ তৈরী করলেন এবং সব দেশের কর ছাড় ও নিজের রাজকীয় উদারতা অনুসারে দান করলেন।
19 দ্বিতীয়বার কুমারী মেয়েদের যখন একত্র করা হল, মর্দখয় রাজবাড়ির দ্বারে বসেছিলেন।
১৯দ্বিতীয় বার কুমারী জড়ো করার দিনের মর্দখয় রাজবাড়ীর দরজায় বসতেন।
20 কিন্তু মর্দখয়ের কথামতো ইষ্টের তাঁর বংশের পরিচয় ও জাতির কথা গোপন রেখেছিলেন। ইষ্টের মর্দখয়ের কাছে প্রতিপালিত হবার সময় যেমন তাঁর কথামতো চলতেন তখনও তিনি তেমনই চলছিলেন।
২০তখনও ইষ্টের মর্দখয়ের আদেশ অনুসারে নিজের বংশের কি জাতির পরিচয় দেননি; কারণ ইষ্টের মর্দখয়ের কাছে লালিত পালিত হবার দিন যেমন করতেন, তখনও তেমনি তাঁর আদেশ পালন করতেন।
21 মর্দখয় রাজবাড়ির দ্বারে বসে থাকার সময় একদিন রাজার দ্বাররক্ষীদের মধ্যে দুজন, বিগথন ও তেরশ, রাগ করে রাজা অহশ্বেরশকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করল।
২১সেই দিনের অর্থাৎ যখন মর্দখয় রাজবাড়ীর দরজায় বসতেন, তখন দরজার পাহারাদারদের মধ্যে বিগ্থন ও তেরশ নামে রাজবাড়ির দুইজন নপুংসক রেগে গিয়ে অহশ্বেরশ রাজার ক্ষতি করার চেষ্টা করল।
22 কিন্তু মর্দখয় ষড়যন্ত্রের কথা জানতে পেরে রানি ইষ্টেরকে সেই কথা জানালেন। রানি মর্দখয়ের নাম করে তা রাজাকে জানালেন।
২২কিন্তু সেই বিষয় অর্থাৎ মর্দখয় জানতে পেরে তিনি ইষ্টের রাণীকে তা জানালেন এবং ইষ্টের মর্দখয়ের নাম করে তা রাজাকে বললেন।
23 সেই বিষয় খোঁজখবর নিয়ে যখন জানা গেল কথাটি সত্যি তখন সেই দুজন কর্মচারীকে ফাঁসি দেওয়া হল। এসব কথা রাজার সামনেই ইতিহাস বইতে লেখা হল।
২৩তাতে খোঁজ খবর নিয়ে সেই কথা প্রমাণ হলে ঐ দুজনকে গাছে ফাঁসি দেওয়া হল এবং সেই কথা রাজার সামনে ইতিহাস বইতে লেখা হল।