< ইফিষীয় 4 >
1 অতএব, প্রভুতে বন্দি আমি তোমাদের কাছে মিনতি করছি, যে আহ্বান তোমরা লাভ করেছ, তার যোগ্য হয়ে জীবনযাপন করো।
2 সম্পূর্ণ নম্র ও অমায়িক হও, ধৈর্যশীল হয়ে প্রেমে পরস্পরের প্রতি সহনশীল হও।
3 শান্তির যোগবন্ধনে আত্মার ঐক্য রক্ষা করার জন্য বিশেষভাবে সচেষ্ট হও।
4 দেহ এক এবং আত্মা এক, তেমনই তোমাদের প্রত্যাশাও এক, যে প্রত্যাশার উদ্দেশে তোমরা আহূত হয়েছিলে।
5 প্রভু এক, বিশ্বাস এক, বাপ্তিষ্ম এক,
6 সকলের ঈশ্বর ও পিতা এক, তিনি সকলের উপরে, সকলের কাছে এবং সকলের অন্তরে আছেন।
7 কিন্তু খ্রীষ্ট যেভাবে বণ্টন করেছেন, সেই অনুযায়ী আমরা প্রত্যেকে অনুগ্রহ-দান পেয়েছি।
8 সেজন্যই বলা হয়েছে: “তিনি যখন ঊর্ধ্বে আরোহণ করলেন, সঙ্গে নিয়ে গেলেন বহু বন্দিকে এবং মানুষকে দিলেন বিবিধ উপহার।”
9 “তিনি ঊর্ধ্বে আরোহণ করলেন,” একথার অর্থ কি এই নয় যে, তিনি পৃথিবীর নিম্নলোকেও অবতরণ করেছিলেন?
10 সমগ্র বিশ্বে পরিব্যাপ্ত হওয়ার জন্য যিনি সব স্বর্গের ঊর্ধ্বে আরোহণ করেছিলেন, সেই তিনিই নিম্নে অবতরণ করেছিলেন।
11 তিনিই কয়েকজনকে প্রেরিতশিষ্য, কয়েকজনকে ভাববাদী, কয়েকজনকে সুসমাচার প্রচারক, কয়েকজনকে পালক ও শিক্ষকরূপে দান করেছেন,
12 পবিত্রগণকে পরিপক্ব করার জন্য করেছেন, যেন পরিচর্যার কাজ সাধিত হয়, খ্রীষ্টের দেহ যেন গঠন করে তোলা হয়,
13 যতদিন না আমরা সবাই ঈশ্বরের পুত্রের জ্ঞান ও বিশ্বাসের ঐক্যে উপনীত হতে পারি ও পরিণত হই এবং খ্রীষ্টের সকল পূর্ণতা অর্জন করতে পারি।
14 তখন আমরা আর নাবালক থাকব না। যে কোনো মতবাদের হাওয়ায় বিচলিত হব না বা বাতাসে ভেসে যাব না। আমরা প্রভাবিত হব না যখন লোকেরা মিথ্যার সাহায্য নিয়ে, যা শুনে মনে হয় সত্য, আমাদের ঠকানোর চেষ্টা করবে।
15 এর পরিবর্তে আমরা প্রেমে সত্য প্রকাশ করব এবং সব বিষয়ে খ্রীষ্টের মতো হয়ে উঠব, যিনি তাঁর দেহের মস্তক; আর সেই দেহ হল মণ্ডলী।
16 তিনি সমগ্র দেহকে সুন্দরভাবে সন্নিবদ্ধ করেন। প্রতিটি অঙ্গ নিজের নিজের বিশেষ কাজ করে, যার ফলে অন্যান্য অংশ বৃদ্ধিলাভ করে। এই কারণে সমগ্র দেহ সুস্থ, বৃদ্ধিপ্রাপ্ত ও প্রেমে পূর্ণতা লাভ করে।
17 অতএব, আমি তোমাদের এই কথা বলি এবং প্রভুর নামে অনুনয় করি, তোমরা অইহুদিদের মতো আর অসার চিন্তায় জীবনযাপন কোরো না।
18 তাদের বুদ্ধি হয়েছে অন্ধকারে আচ্ছন্ন এবং ঐশ্বরিক-জীবন থেকে তারা হয়েছে বিচ্ছিন্ন। তাদের কঠিন হৃদয়ের অজ্ঞতাই তার কারণ।
19 সমস্ত চেতনা হারিয়ে তারা কামনাবাসনায় নিজেদের সমর্পণ করেছে, যেন সকল প্রকার কলুষতা ও ইন্দ্রিয়লালসায় তারা বেশি আসক্ত হয়ে পড়ে।
20 খ্রীষ্টের সম্বন্ধে তোমরা অবশ্য সেরকম শিক্ষা লাভ করোনি।
21 নিঃসন্দেহে, তোমরা তাঁর বিষয়ে শুনেছ এবং যীশুর মধ্যে যে সত্য আছে, সেই অনুযায়ী শিক্ষা পেয়েছ।
22 তোমাদের অতীত জীবনধারা সম্বন্ধে তোমরা শিক্ষা পেয়েছ যে, তোমাদের পুরোনো সত্তাকে ত্যাগ করতে হবে, যা তার বহুবিধ ছলনাময় অভিলাষের দ্বারা কলুষিত হয়ে উঠেছে।
23 তোমাদের মানসিকতাকে নতুন করতে হবে;
24 প্রকৃত ধার্মিকতা এবং পবিত্রতায় ঈশ্বরের সাদৃশ্যে সৃষ্ট নতুন সত্তাকে পরিধান করতে হবে।
25 অতএব, তোমাদের প্রত্যেকে মিথ্যাচার ত্যাগ করে প্রতিবেশীর সঙ্গে সত্য কথা বলো, কারণ আমরা সকলে একই দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ।
26 “ক্রোধের বশবর্তী হয়ে পাপ কোরো না।” সূর্য অস্ত যাওয়ার আগেই তোমাদের ক্রোধ প্রশমিত হোক।
27 দিয়াবলকে প্রশ্রয় দিয়ো না।
28 যে চুরি করতে অভ্যস্ত, সে যেন আর চুরি না করে, বরং নিজের হাতে পরিশ্রমের দ্বারা সৎ উপায়ে উপার্জন করে; দুস্থদের সাহায্য করার মতো তার হাতে যেন কিছু উদ্বৃত্ত থাকে।
29 তোমরা কোনো অশালীন কথা বোলো না, প্রয়োজন অনুসারে যা অপরকে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সহায়ক, যা শ্রোতার পক্ষে কল্যাণকর, তোমাদের মুখ থেকে শুধু এমন কথাই বের হোক।
30 ঈশ্বরের পবিত্র আত্মাকে দুঃখার্ত কোরো না, তাঁরই দ্বারা তোমরা মুক্তিদিনের জন্য মোহরাঙ্কিত হয়েছ।
31 সব রকমের তিক্ততা, রোষ ও ক্রোধ, কলহ ও নিন্দা, সেই সঙ্গে সব ধরনের হিংসা ত্যাগ করো।
32 পরস্পরের প্রতি দয়ালু ও সহানুভূতিশীল হও। ঈশ্বর যেমন খ্রীষ্টে তোমাদের ক্ষমা করেছেন, তেমনই তোমরাও পরস্পরকে ক্ষমা করো।