< দ্বিতীয় বিবরণ 4 >
1 এখন, হে ইস্রায়েল, আমি তোমাদের যেসব অনুশাসন ও বিধান শিক্ষা দিতে যাচ্ছি তা শোনো। সেগুলি মেনে চলো যেন যে দেশ, সদাপ্রভু, তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর, তোমাদের দিতে যাচ্ছেন সেখানে প্রবেশ করে তা অধিকার করতে পারো।
১এখন, হে ইস্রায়েল, আমি যে যে নিয়ম ও আদেশ পালন করতে তোমাদেরকে শিক্ষা দিই, তা শোন; যেন তোমরা বেঁচে থাকতে পার এবং তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদেরকে যে দেশ দিচ্ছেন, তার মধ্যে গিয়ে তা অধিকার করতে পার।
2 আমি তোমাদের যে আদেশ দিচ্ছি তার সঙ্গে কিছু যোগ কোরো না এবং তা থেকে কিছু বাদ দিয়ো না, কিন্তু তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর যেসব আদেশ আমি তোমাদের দিচ্ছি তা তোমরা মেনে চলবে।
২আমি তোমাদেরকে যা আদেশ করি, সেই কথায় তোমরা আর কিছু যোগ করবে না এবং তার কিছু কমাবে না। আমি তোমাদেরকে যা যা আদেশ করছি, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেই সব আদেশ পালন করবে।
3 সদাপ্রভু বায়াল-পিয়োরে যা করেছিলেন তা তো তোমরা নিজের চোখেই দেখেছ। তোমাদের মধ্যে যারা পিয়োরের বায়াল-দেবতার পূজা করেছিল তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাদের প্রত্যেককে তোমাদের মধ্য থেকে ধ্বংস করেছিলেন,
৩বাল পিয়োরের বিষয়ে সদাপ্রভু যা করেছিলেন, তা তোমরা নিজের চোখে দেখেছ; ফলে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু বাল পিয়োরের অনুসারী প্রত্যেক জনকে তোমার মধ্যে থেকে ধ্বংস করেছিলেন;
4 কিন্তু তোমরা যারা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে আঁকড়ে ধরেছিলে, তোমরা সবাই এখনও বেঁচে আছ।
৪কিন্তু তোমরা যত লোক তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুতে যুক্ত ছিলে, সবাই আজ জীবিত আছ।
5 দেখো, আমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর আদেশ মেনে আমি তোমাদের অনুশাসন ও বিধান শিক্ষা দিয়েছি, যেন যে দেশ তোমরা অধিকার করতে যাচ্ছ সেই দেশে তা পালন করতে পারো।
৫দেখ, আমার ঈশ্বর সদাপ্রভু আমাকে যেমন আদেশ করেছিলেন, আমি তোমাদেরকে সেরকম নিয়ম ও আদেশ শিক্ষা দিয়েছি; যেন, তোমরা যে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ, সেই দেশের মধ্যে সেই অনুযায়ী ব্যবহার কর।
6 সেগুলি সাবধানতার সঙ্গে পালন কোরো, কারণ তাতে অন্যান্য জাতির মধ্যে তোমাদের জ্ঞান ও বুদ্ধি প্রকাশ পাবে, যারা এসব অনুশাসনের বিষয় শুনে বলবে, “সত্যিই এই মহান জাতি জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান।”
৬অতএব তোমরা সে সব মেনে চল ও পালন কোরো; কারণ জাতি সকলের সামনে সেটাই তোমাদের প্রজ্ঞা ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় হবে; এই সব বিধি শুনে তারা বলবে, “সত্যই, এই মহাজাতি জ্ঞানবান ও বুদ্ধিমান লোক।”
7 এমন আর কোনও মহান জাতি কি আছে যাদের ঈশ্বর তাদের কাছে থাকে, যেমন করে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ডাকলে তাঁকে কাছে পাওয়া যায়?
৭কারণ কোন্ বড় জাতির কাছে এমন ঈশ্বর আছেন, যেমন আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু? যখনই আমরা তাঁকে ডাকি, তিনি আমাদের সঙ্গে থাকেন।
8 আর আমি আজ তোমাদের সামনে যে বিধান দিচ্ছি, তার মতো ন্যায়নিষ্ঠ অনুশাসন ও বিধান কোনও বড়ো জাতির আছে?
৮আর আমি আজ তোমাদের সামনে যে সব ব্যবস্থা দিচ্ছি, তার মত সঠিক নিয়ম ও আদেশ কোন্ বড় জাতির আছে?
9 কেবল সাবধান থেকো, এবং নিজের উপর দৃষ্টি রেখো যেন তোমরা যা দেখেছ তা ভুলে না যাও বা যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন তোমাদের অন্তর থেকে তা মুছে না যায়। এসব তোমরা তোমাদের ছেলেমেয়েদের এবং পরে তাদের ছেলেমেয়েদের শেখাবে।
৯কিন্তু তুমি নিজের বিষয়ে মনোযোগ দাও, তোমার প্রাণের বিষয়ে খুব সাবধান থাক; অতএব তুমি যে সব বিষয় নিজের চোখে দেখেছ, তা ভুলে যাও; অতএব জীবন থাকতে তোমার হৃদয় থেকে তা মুছে যাক; তুমি নিজের ছেলে নাতিদেরকে তা জানাও।
10 তোমরা সেদিনের কথা মনে করো যেদিন তোমরা হোরেবে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে উপস্থিত হয়েছিলে, যখন তিনি আমাকে বলেছিলেন, “আমার কথা শোনার জন্য তুমি লোকদের আমার সামনে জড়ো করো যেন তারা এই পৃথিবীতে যতদিন বাঁচবে ততদিন আমাকেই ভক্তি করে চলতে শিখতে পারে এবং যেন তাদের ছেলেমেয়েদেরও শিক্ষা দিতে পারে।”
১০সেই দিন, তুমি হোরেবে নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে দাঁড়িয়েছিলে, যখন সদাপ্রভু আমাকে বললেন, “তুমি আমার কাছে লোকদেরকে জড়ো কর, আমি আমার কথা সব তাদেরকে শোনাব; তারা পৃথিবীতে যতদিন বেঁচে থাকে, ততদিন যেন আমাকে ভয় করে, এই বিষয় তারা শিখবে এবং নিজের ছেলেমেয়েদেরকেও শেখাবে।”
11 তোমরা কাছে এসে পাহাড়ের নিচে দাঁড়িয়েছিলে, তখন পাহাড়টি মেঘ ও ঘন অন্ধকারে ঘেরা ছিল আর তার মধ্যে সেটি স্বর্গ পর্যন্ত জ্বলছিল।
১১তাতে তোমরা কাছে এসে পর্বতের পাদদেশে দাঁড়িয়েছিলে এবং আকাশের ভিতর পর্যন্ত সেই পর্বত আগুনে জ্বলছিল, অন্ধকার, মেঘ ও ঘন অন্ধকার ছড়িয়ে ছিল।
12 সেই সময় আগুনের মধ্য থেকে সদাপ্রভু তোমাদের কাছে কথা বলেছিলেন। তোমরা তাঁর কথা শুনেছিলে কিন্তু কোনও চেহারা দেখতে পাওনি; সেখানে কেবল আওয়াজ ছিল।
১২তখন আগুনের মধ্যে থেকে সদাপ্রভু তোমাদের সঙ্গে কথা বললেন; তোমরা কথার স্বর শুনছিলে, কিন্তু কোনো মূর্ত্তি দেখতে পেলে না, তোমরা শুধু রব শুনতে পেলে।
13 তিনি তোমাদের কাছে তাঁর বিধান, দশাজ্ঞা ঘোষণা করেছিলেন, যেগুলি তিনি তোমাদের পালন করতে বলেছিলেন এবং পরে দুটি পাথরের ফলকে লিখে দিয়েছিলেন।
১৩আর তিনি নিজের যে নিয়ম পালন করতে তোমাদেরকে আজ্ঞা করলেন, সেই নিয়ম অর্থাৎ দশ আজ্ঞা তোমাদেরকে আদেশ করলেন এবং দুটি পাথরের ফলকে লিখলেন।
14 তোমরা জর্ডন নদী পার হয়ে যে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ সেই দেশে গিয়ে তোমাদের যে অনুশাসন ও বিধান পালন করে চলতে হবে তা তোমাদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য সদাপ্রভু আমাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
১৪তোমরা যে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ, সেই দেশে তোমাদের পালন করা নিয়ম ও আদেশ সব তোমাদেরকে শিক্ষা দিতে সদাপ্রভু সেই দিনের আমাকে আদেশ করলেন।
15 যেদিন সদাপ্রভু হোরেবে আগুনের মধ্য থেকে তোমাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন সেইদিন তোমরা তাঁর কোনও চেহারা দেখোনি। সুতরাং তোমরা নিজেদের উপর দৃষ্টি রেখো,
১৫যে দিন সদাপ্রভু হোরেবে আগুনের মধ্যে থেকে তোমাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, সেই দিন তোমরা কোনো মূর্ত্তি দেখনি; অতএব নিজের নিজের প্রাণের বিষয়ে খুব সাবধান হও;
16 যেন তোমরা কুপথে গিয়ে নিজেদের জন্য কোনো আকারের প্রতিমা তৈরি না করো, তা পুরুষের বা স্ত্রীলোকেরই হোক,
১৬যদি তোমরা নষ্ট হয়ে নিজেদের জন্য কোনো আকারের মূর্তিতে খোদাই প্রতিমা তৈরী কর;
17 কিংবা মাটির উপরের কোনো জন্তুর বা আকাশে উড়ে বেড়ানোর কোনো পাখিরই হোক,
১৭যদি পুরুষের বা স্ত্রীর প্রতিমূর্ত্তি, পৃথিবীতে অবস্থিত কোনো পশুর প্রতিমূর্ত্তি, আকাশে উড়া কোনো পাখির প্রতিমূর্ত্তি,
18 কিংবা বুকে হাঁটা কোনো প্রাণীর বা জলের নিচের কোনো মাছেরই হোক।
১৮মাটিতে বুকে হেঁটে চলা কোনো প্রাণীর প্রতিমূর্ত্তি, অথবা মাটির নীচে জলের মধ্যে কোনো মাছের প্রতিমূর্ত্তি তৈরী কর;
19 আর যখন তোমরা আকাশের দিকে তাকাবে এবং সূর্য, চাঁদ ও তারাদের—আকাশের সমস্ত বিন্যাস—দেখে ভ্রান্ত হয়ে তাদের প্রতি নত হোয়ো না এবং আরাধনা কোরো না কারণ এগুলি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু আকাশের নিচে সমস্ত জাতিকে দিয়েছেন।
১৯আর আকাশের প্রতি চোখ তুলে সূর্য্য, চাঁদ ও তারা, আকাশের সমস্ত বাহিনী দেখলে, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু যাদেরকে সমস্ত আকাশমণ্ডলের নীচে অবস্থিত সমস্ত জাতির জন্য ভাগ করেছেন, যদি আকৃষ্ট হয়ে তাদের কাছে আরাধনা কর ও তাদের সেবা কর।
20 কিন্তু তোমার জন্য, সদাপ্রভু তোমাদের গ্রহণ করে লোহা গলানো হাপর থেকে বের করেছেন, মিশর থেকে তোমাদের বের করে এনেছেন যেন তোমরা তাঁরই উত্তরাধিকারের লোক হতে পারো, যেমন তোমরা এখন আছ।
২০কিন্তু সদাপ্রভু তোমাদেরকে গ্রহণ করেছেন, (লোহা গলাবার হাফর) থেকে, মিশর থেকে তোমাদেরকে বের করে এনেছেন, যেন তোমরা তাঁর উত্তরাধিকারী লোক হও, যেমন আজ আছ।
21 তোমাদের জন্য সদাপ্রভু আমার উপর ক্রুদ্ধ হলেন, এবং তিনি গম্ভীরভাবে শপথ করলেন যে আমি জর্ডন পার হতে পারব না ও সেই দেশে ঢুকব না যা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের উত্তরাধিকারসূত্রে দেবেন।
২১আর তোমাদের জন্য সদাপ্রভু আমার প্রতিও রেগে গিয়ে এই শপথ করেছেন যে, তিনি আমাকে যর্দ্দন পার হতে দেবেন না এবং তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে দেশ অধিকারের জন্য দিচ্ছেন, সেই উত্তম দেশে আমাকে যেতে দেবেন না।
22 আমি এই দেশেই মারা যাব; আমি জর্ডন পার হতে পারব না; কিন্তু তোমরা পার হয়ে সেই চমৎকার দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ।
২২প্রকৃত পক্ষে এই দেশেই আমাকে মারা যেতে হবে; আমি যর্দ্দন পার হয়ে যাব না; কিন্তু তোমরা পার হয়ে সেই উত্তম দেশ অধিকার করবে।
23 সাবধান তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের জন্য যে বিধান স্থাপন করেছেন তা তোমরা ভুলে যেয়ো না; নিজেদের জন্য কোনো কিছুর মতো কোনও মূর্তি তৈরি কোরো না যা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু বারণ করেছেন।
২৩তোমরা নিজেদের বিষয়ে সাবধান থেকো, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের সঙ্গে যে নিয়ম স্থির করেছেন, তা ভুলে যেও না, কোনো বস্তুর মূর্তিবিশিষ্ট খোদাই করা প্রতিমা তৈরী কোরো না; ওটা তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর নিষিদ্ধ।
24 কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু হলেন সবকিছু পুড়িয়ে দেওয়া আগুনের মতো, যিনি নিজের গৌরব রক্ষা করতে উদ্যোগী ঈশ্বর।
২৪কারণ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু গ্রাসকারী আগুনের মতো; তিনি স্বগৌরব রক্ষণে উদ্যোগী ঈশ্বর।
25 তোমরা এবং তোমাদের সন্তানদের এবং তাদের সন্তানদের সেই দেশে অনেক দিন বসবাস করার পর—যদি তোমরা তখন কুপথে গিয়ে কোনও মূর্তি তৈরি করো, আর সদাপ্রভু তোমাদের ঈশ্বরের চোখে যা খারাপ তাই করে তাঁকে অসন্তুষ্ট করো,
২৫সেই দেশে ছেলে নাতিদের জন্ম দিয়ে বহু দিন বাস করার পর যদি তোমরা ভ্রষ্ট হও ও কোনো বস্তুর মূর্তিবিশিষ্ট ক্ষোদিত প্রতিমা তৈরী কর এবং তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা খারাপ, তা করে তাঁকে অসন্তুষ্ট কর;
26 আমি আজকের এই দিনে স্বর্গ ও পৃথিবীকে তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী রেখে বলছি, তোমরা জর্ডন নদী পার হয়ে যে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ সেই দেশে তোমরা অল্প দিনেই শেষ হয়ে যাবে। তোমরা সেখানে বেশি দিন বসবাস করতে পারবে না কিন্তু নিশ্চয়ই ধ্বংস হবে।
২৬তবে আমি আজ তোমাদের বিরুদ্ধে স্বর্গ পৃথিবীকে সাক্ষী মেনে বলছি, তোমরা যে দেশ অধিকার করতে যর্দ্দন পার হয়ে যাচ্ছ, সেই দেশ থেকে তাড়াতাড়ি বিনষ্ট হবে, সেখানে বহু দিন থাকবে না, কিন্তু সম্পূর্ণ ধ্বংস হবে।
27 সদাপ্রভু বিভিন্ন জাতির মধ্যে তোমাদের ছড়িয়ে দেবেন এবং যাদের মধ্যে তিনি তোমাদের তাড়িয়ে দেবেন, তোমাদের খুব কম লোকই তাদের মধ্যে বেঁচে থাকবে।
২৭আর সদাপ্রভু জাতিদের মধ্যে তোমাদেরকে ছিন্ন ভিন্ন করবেন; যেখানে সদাপ্রভু তোমাদেরকে নিয়ে যাবেন, সেই জাতিদের মধ্যে তোমরা অল্পসংখ্যক হয়ে অবশিষ্ট থাকবে।
28 সেখানে তোমরা মানুষের তৈরি কাঠের ও পাথরের দেবতাদের উপাসনা করবে, যারা না পারে দেখতে, না পারে শুনতে, না পারে খেতে, না পারে গন্ধ শুঁকতে।
২৮আর তোমরা সেখানে মানুষের হাতে তৈরী দেবতাদের দেখা, শোনা, খাওয়ায় ও ঘ্রাণে অসমর্থ কাঠ ও পাথরের সেবা করবে।
29 কিন্তু যদি তোমরা সেখান থেকে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দিকে মন ফিরাও, তোমরা তাঁকে পাবে যদি তোমরা তোমাদের সমস্ত মন ও সমস্ত প্রাণ দিয়ে তাঁর অন্বেষণ করো।
২৯কিন্তু সেখানে থেকে যদি তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর খোঁজ কর, তবে তাঁর খোঁজ পাবে; সমস্ত হৃদয়ের সঙ্গে ও সমস্ত প্রাণের সঙ্গে তাঁর খোঁজ করলেই পাবে।
30 যখন তোমরা সংকটে পড়বে এবং এসব তোমাদের প্রতি ঘটবে তখন ভবিষ্যতের সেই দিনগুলিতে তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে ফিরে আসবে এবং তাঁর বাধ্য হবে।
৩০যখন তুমি সঙ্কটে পড় এবং এই সব তোমার প্রতি ঘটে, তখন ভবিষ্যতে তুমি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর দিকে ফিরবে ও তাঁর স্বর শুনবে।
31 কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু এক করুণাময় ঈশ্বর; তিনি তোমাদের ছেড়ে যাবেন না বা ধ্বংস করবেন না, কিংবা তোমাদের পূর্বপুরুষদের জন্য শপথ করে যে নিয়ম স্থাপন করেছেন তা ভুলে যাবেন না।
৩১কারণ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু কৃপাময় ঈশ্বর; তিনি তোমাকে ত্যাগ করবেন না, তোমাকে ধ্বংস করবেন না এবং শপথের মাধ্যমে তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে যে নিয়ম করেছেন, তা ভুলে যাবেন না।
32 বিগত দিনের কথা জিজ্ঞাসা করো, তোমাদের সময়ের অনেক আগে, যেদিন থেকে ঈশ্বর পৃথিবীতে মানুষ সৃষ্টি করেছিলেন; আকাশমণ্ডলের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত জিজ্ঞাসা করো। যা ঘটেছে তার থেকে মহান কি আর কিছু ঘটেছে বা এর মতো মহান কি কিছু শোনা গেছে?
৩২কারণ পৃথিবীতে ঈশ্বরের মাধ্যমে মানুষের সৃষ্টির দিন থেকে তোমার আগে যে দিন গিয়েছে, সেই পুরোনো দিন কে এবং আকাশমণ্ডলের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তকে জিজ্ঞাসা কর, এই মহৎ কাজের মত কাজ কি আর কখনও হয়েছে? অথবা এমন কি শোনা গিয়েছে?
33 কোনও মানুষ কি আগুনের মধ্য থেকে ঈশ্বরের রব শুনেছে, যেমন তোমরা শুনেছ এবং বেঁচে আছ?
৩৩তোমার মত কি আর কোনো জাতি আগুনের মধ্যে থেকে ঈশ্বরের স্বর শুনে বেঁচেছে?
34 কিংবা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু মিশরে তোমাদের সামনে যে সমস্ত কাজ করেছিলেন, আর কোনো ঈশ্বর কি কখনও সেইরকম পরীক্ষা, আশ্চর্য চিহ্ন ও কাজ, যুদ্ধ, শক্তিশালী হাত ও বিস্তারিত হাত, মহান ও ভয়ংকর কাজের মাধ্যমে অন্য জাতির মধ্যে থেকে নিজের জন্য এক জাতিকে বের করে এনেছে?
৩৪অথবা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু মিশরে তোমাদের সামনে যে সব কাজ করেছেন, ঈশ্বর কি সেই অনুযায়ী গিয়ে পরীক্ষা, চিহ্ন, বিস্ময়, যুদ্ধ, শক্তিশালী হাত, বিশাল ক্ষমতা প্রদর্শন এবং মহা ভয়ঙ্কর কাজের মাধ্যমে অন্য জাতির মধ্যে থেকে নিজের জন্য এক জাতি গ্রহণ করতে চেষ্টা করেছেন?
35 তোমাদের এসব বিষয় দেখানো হয়েছে যেন তোমরা জানতে পারো যে সদাপ্রভুই ঈশ্বর; আর কেউ না।
৩৫সদাপ্রভুই ঈশ্বর, তিনি ছাড়া আর কেউ নেই, এটা যেন তুমি জানো, তার জন্য ঐ সব তোমাকেই দেখানো হল।
36 তোমাদের উপদেশ দেবার জন্য তিনি স্বর্গ থেকে তাঁর রব তোমাদের শুনিয়েছিলেন। পৃথিবীতে তিনি তোমাদের তাঁর মহান আগুন দেখিয়েছিলেন এবং তোমরা আগুনের মধ্যে তাঁর রব শুনেছিলে।
৩৬নির্দেশ দেবার জন্য তিনি স্বর্গ থেকে তোমাকে নিজের স্বর শোনালেন ও পৃথিবীতে তোমাকে নিজের বিশাল আগুন দেখালেন এবং তুমি আগুনের মধ্যে থেকে তাঁর কথা শুনতে পেলে।
37 যেহেতু তিনি তোমাদের পূর্বপুরুষদের ভালোবাসতেন এবং তাদের বংশধরদের মনোনীত করেছিলেন, তিনি তোমাদের তাঁর উপস্থিতিতে ও মহাপরাক্রমে মিশর থেকে বের করে এনেছেন,
৩৭তিনি তোমরা পূর্বপুরুষদেরকে ভালবাসতেন, তাই তাঁদের পরে তাঁদের বংশকেও বেছে নিলেন এবং নিজের অস্তিত্ব ও বিশাল ক্ষমতার মাধ্যমে তোমাকে মিশর দেশ থেকে বের করে আনলেন;
38 যেন তোমাদের চেয়েও শক্তিশালী জাতিগুলিকে তোমাদের সামনে থেকে তাড়িয়ে দিয়ে তাদের দেশে তোমাদের নিয়ে যেতে পারেন এবং তোমাদের অধিকার করতে দেন, যেমন আজ হয়েছে।
৩৮যেন তোমার থেকে মহান ও শক্তিশালী জাতিদেরকে তোমার সামনে থেকে তাড়িয়ে দিয়ে তাদের দেশে তোমাকে প্রবেশ করান ও অধিকারের জন্য তোমাকে সে দেশ দেন, যেমন আজ দেখছ।
39 আজকে তোমরা এই কথা জানো ও মনে রেখো যে সদাপ্রভুই উপরে স্বর্গে ও নিচে পৃথিবীর ঈশ্বর। অন্য কেউ নেই।
৩৯অতএব আজ জানো, মনে রাখ যে, উপরে অবস্থিত স্বর্গে ও নীচে অবস্থিত পৃথিবীতে সদাপ্রভুই ঈশ্বর, অন্য কেউ নেই।
40 তোমাদের ও তোমাদের পরে তোমাদের সন্তানদের যেন মঙ্গল হয় এবং তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যে দেশ চিরকালের জন্য তোমাদের দিচ্ছেন তাতে যেন তোমরা অনেক দিন বেঁচে থাকতে পারো সেইজন্য আমি যেসব বিধান ও আদেশ আজ তোমাদের দিচ্ছি তা তোমরা মেনে চলবে।
৪০আর তোমার মঙ্গল ও তোমার পরে যে সন্তানরা আসতে চলেছে তাদের যেন মঙ্গল হয় এবং তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে ভূমি চিরকালের জন্য দিচ্ছেন, তার উপরে যেন তুমি দীর্ঘদিন বেঁচে থাক, এই জন্য আমি তাঁর যে সব বিধি ও আজ্ঞা আজ তোমাকে আদেশ করলাম, তা পালন কোরো।
41 এরপরে মোশি জর্ডনের পূর্বদিকের তিনটি নগর বেছে নিলেন,
৪১তারপর মোশি যর্দ্দন নদীর পূর্ব দিকে তিনটি শহর আলাদা করলেন;
42 যেন কেউ কাউকে মেরে ফেললে সেখানে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নিতে পারে অবশ্য যদি সে মনে কোনও হিংসা না রেখে হঠাৎ তা করে থাকে তবেই সে সেখানে আশ্রয় নিতে পারবে। সে নগরগুলির মধ্যে একটিতে পালিয়ে নিজের জীবন বাঁচাতে পারবে।
৪২যেন হত্যাকারী সেখানে পালাতে পারে; যে কেউ নিজের প্রতিবেশীকে আগে শত্রুতা না করে অনিচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করে, সে যেন এই সকলের মধ্যে কোনো এক শহরে পালিয়ে গিয়ে বাঁচতে পারে;
43 নগরগুলি হল রূবেণীয়দের জন্য মরুএলাকার সমভূমির বেৎসর; গাদীয়দের জন্য গিলিয়দের রামোৎ এবং মনঃশীয়দের জন্য বাশনের গোলন।
৪৩তিনটি শহর হল, রূবেণীয়দের জন্য সমভূমি, মরুপ্রান্তের বেৎসর, গাদীয়দের জন্য গিলিয়দে অবস্থিত রামোৎ এবং মনঃশীয়দের জন্য বাশনে অবস্থিত গোলন।
44 মোশি ইস্রায়েলীদের সামনে এই বিধান তুলে ধরেছিলেন।
৪৪মোশি ইস্রায়েলের লোকদের সামনে এই ব্যবস্থা স্থাপন করেছিলেন;
45 মিশর থেকে বের হয়ে মোশি তাদের এসব চুক্তির বিষয়, অনুশাসন ও বিধান দিয়েছিলেন
৪৫যখন মিশর থেকে তারা বের হয়ে এসেছিলেন তখন মোশি ইস্রায়েলের লোকদের এই সমস্ত নিয়মের বিধি, ব্যবস্থা এবং অন্যান্য নিয়মের কথা বলেছিলেন,
46 এবং তারা তখন জর্ডনের পূর্বদিকে হিষ্বোনের ইমোরীয় রাজা সীহোনের দেশে বেথ-পিয়োরের কাছে উপত্যকায় ছিল আর মোশি এবং ইস্রায়েলীরা মিশর থেকে বেরিয়ে এসে তাদের পরাজিত করেছিল।
৪৬যর্দ্দনের পূর্বপারে, বৈৎ-পিয়োরের সামনে অবস্থিত উপত্যকাতে, হিষবোন নিবাসী ইমোরীয় রাজা সীহোনের দেশে ইস্রায়েলের লোকদের কাছে এই সব সাক্ষ্য, বিধি ও শাসনের কথা বলেছিলেন। মিশর থেকে বের হয়ে আসলে মোশি ও ইস্রায়েলের লোকেরা সেই রাজাকে আঘাত করেছিলেন
47 তারা জর্ডনের পূর্বদিকের দুজন ইমোরীয় রাজা এবং বাশনের রাজা ওগের দেশ অধিকার করেছিল।
৪৭এবং তাঁর ও বাশনের রাজা ওগের দেশ, যর্দ্দনের পূর্ব পারে ইমোরীয়দের এই দুই রাজার দেশ,
48 এই দেশ অর্ণোন উপত্যকার সীমানায় অরোয়ের থেকে সীওন পাহাড় (অর্থাৎ হর্মোণ) পর্যন্ত সমস্ত দেশ,
৪৮অর্ণোন উপত্যকার সীমাতে অবস্থিত অরোয়ের থেকে সীওন পর্বত অর্থাৎ হর্মোণ পর্যন্ত সমস্ত দেশ
49 এবং জর্ডনের পূর্বদিকের সম্পূর্ণ অরাবা এলাকা, পিস্গা পাহাড়শ্রেণীর ঢালু অংশের নিচে অরাবার তলভূমির সূফ সাগর পর্যন্ত চলে গিয়েছে।
৪৯এবং পিস্গা পর্বতের নীচে অবস্থিত অরাবা উপত্যকার সমুদ্র পর্যন্ত যর্দ্দনের পূর্বদিকে অবস্থিত সমস্ত অরাবা উপত্যকা অধিকার করেছিলেন।