< দ্বিতীয় বিবরণ 3 >
1 পরে আমরা ঘুরে বাশনের পথে উঠে গেলাম। আর বাশনের রাজা ওগ তাঁর সৈন্যদল নিয়ে আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য ইদ্রিয়ীতে এলেন।
2 সদাপ্রভু আমাকে বললেন, “তাকে ভয় পেয়ো না। আমি তাকে, তার সমস্ত সেনাবাহিনী ও তার দেশ তোমার হাতে সমর্পণ করেছি। তার প্রতি সেরকমই কোরো, যেমন তুমি ইমোরীয়দের রাজা সীহোনের প্রতি করেছিলে, যে হিষ্বোনে রাজত্ব করত।”
3 এইভাবে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু বাশনের রাজা ওগ ও তার সমগ্র সেনাবাহিনী আমাদের হাতে দিয়ে দিয়েছিলেন। আমরা তাদের আঘাত করলাম, কাউকে বাঁচিয়ে রাখিনি।
4 সেই সময় আমরা তাঁর সবগুলি নগরই দখল করলাম। তাঁর ষাটটি নগরের সবগুলোই আমরা দখল করে নিয়েছিলাম, এমন একটিও ছিল না যা আমরা নিইনি—অর্গোবের সমস্ত এলাকা, বাশনে ওগের রাজ্য।
5 সেইসব নগর উঁচু প্রাচীর দিয়ে ঘেরা ছিল আর তাতে দ্বার ও হুড়কা ছিল, আর সেখানে অনেক গ্রামও ছিল যেগুলি প্রাচীর দিয়ে ঘেরা ছিল না।
6 আমরা সেগুলি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছিলাম, যেমন আমরা হিষ্বোনের রাজা সীহোনের প্রতি করেছিলাম, প্রত্যেক নগর ধ্বংস করে দিয়েছিলাম—পুরুষ, মহিলা ও শিশুদের।
7 কিন্তু পশুপাল এবং নগর থেকে লুট করা জিনিসপত্র আমরা নিজেদের জন্য নিয়ে আসলাম।
8 সেই সময় আমরা অর্ণোন উপত্যকা থেকে হর্মোণ পর্বত পর্যন্ত জর্ডন নদীর পূর্বদিকের এলাকাটি এই দুজন ইমোরীয় রাজার হাত থেকে নিয়ে নিয়েছিলাম।
9 (সীদোনীয়েরা হর্মোণকে সিরিয়োণ বলে আর ইমোরীয়েরা বলে সনীর)
10 আমরা মালভূমির সমস্ত নগর, গিলিয়দের সব এলাকা এবং বাশনের রাজা ওগের রাজ্যের সল্খা ও ইদ্রিয়ী প্রর্যন্ত গোটা বাশন দেশটি দখল করে নিয়েছিলাম।
11 (রফায়ীয়দের বাকি লোকদের মধ্যে কেবল বাশনের রাজা ওগই বেঁচেছিলেন। তাঁর লোহার তৈরি শোবার খাটটি ছিল লম্বায় তেরো ফুটের বেশি এবং চওড়ায় ছয় ফুট। সেটি এখনও অম্মোনীয়দের রব্বাতে আছে।)
12 সেই সময় আমরা যে দেশ অধিকার করেছিলাম, আমি অর্ণোন উপত্যকার কাছে অরোয়ের উত্তর দিকের এলাকা পর্যন্ত এবং গিলিয়দের পাহাড়ি এলাকার অর্ধেক ও সেখানকার সব নগর রূবেণীয়দের ও গাদীয়দের দিলাম।
13 গিলিয়দের বাকি অংশ এবং রাজা ওগের গোটা বাশন রাজ্যটি আমি মনঃশির অর্ধেক বংশকে দিলাম। (বাশনের মধ্যবর্তী সমস্ত অর্গোব এলাকাটিকে রফায়ীয়দের দেশ বলা হত।
14 যায়ীর, মনঃশির এক বংশধর, গশূরীয়দের ও মাখাথীয়দের সীমানা পর্যন্ত অর্গোবের গোটা এলাকাটি দখল করে নিজের নাম অনুসারে তার নাম রেখেছিল, আজ পর্যন্ত বাশনকে হব্বোৎ-যায়ীর বলা হয়ে থাকে)
15 আর আমি মাখীরকে গিলিয়দ এলাকাটি দিলাম।
16 কিন্তু গিলিয়দ থেকে অর্ণোন উপত্যকার (মাঝখানের সীমারেখাটি পর্যন্ত) সমস্ত এলাকা এবং সেখান থেকে অম্মোনীয়দের সীমানা যব্বোক নদী পর্যন্ত আমি রূবেণীয়দের ও গাদীয়দের দিলাম।
17 পশ্চিমদিকে তাদের সীমানা ছিল অরাবার জর্ডন নদী, কিন্নেরৎ থেকে অরাবা (লবণ-সমুদ্র), পিস্গা পাহাড়শ্রেণীর ঢালু অংশের নিচে।
18 সেই সময় আমি তোমাদের আদেশ করেছিলাম, “তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই দেশটি তোমাদের দখল করবার জন্য দিয়েছেন। কিন্তু তোমাদের মধ্যে যাদের গায়ে জোর আছে সেইসব লোককে যুদ্ধের জন্য তৈরি হয়ে ইস্রায়েলী ভাইদের আগে আগে নদী পার হয়ে যেতে হবে।
19 তবে তোমাদের যেসব নগর আমি দিয়েছি সেখানে তোমাদের স্ত্রী, ছেলেমেয়ে আর পশুপাল রেখে যেতে পারবে (আমি জানি তোমাদের অনেক পশু আছে),
20 যতদিন পর্যন্ত সদাপ্রভু তোমাদের মতো করে তোমাদের ভাইদেরও বিশ্রামের সুযোগ না দেন এবং জর্ডনের ওপাড়ে যে দেশটি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাদের দিতে যাচ্ছেন তা তারা অধিকার না করে। তারপর, যে জায়গা তোমাদের অধিকারের জন্য দেওয়া হয়েছে সেখানে প্রত্যেকে ফিরে আসবে।”
21 সেই সময় আমি যিহোশূয়কে আদেশ করলাম “তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই দুই রাজার কী অবস্থা করেছেন তা তো তুমি নিজের চোখেই দেখেছ। তোমরা যেখানে যাচ্ছ সেখানকার সব রাজ্যের অবস্থাও সদাপ্রভু সেইরকমই করবেন।
22 তাদের ভয় কোরো না; তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের হয়ে যুদ্ধ করবেন।”
23 সেই সময় আমি সদাপ্রভুর কাছে মিনতি করলাম,
24 “হে সার্বভৌম সদাপ্রভু, তুমি যে কত মহান ও শক্তিশালী তা তোমার দাসকে দেখাতে আরম্ভ করেছ। স্বর্গে বা পৃথিবীতে এমন ঈশ্বর কে আছে যে, তুমি যেসব কাজ করেছ তা করতে পারে এবং তুমি যে শক্তি দেখিয়েছ তা দেখাতে পারে?
25 আমাকে ওপাড়ে গিয়ে জর্ডনের পারে সেই মনোরম জায়গাটি দেখতে দাও—সেই চমৎকার পাহাড়ি দেশ এবং লেবানন।”
26 কিন্তু তোমাদের জন্য সদাপ্রভু আমার উপরে বিরক্ত হওয়াতে আমার কথা শুনলেন না। সদাপ্রভু বললেন, “যথেষ্ট হয়েছে, এই বিষয়ে আমাকে আর বোলো না।
27 তুমি পিস্গার চূড়ায় উঠে পশ্চিম ও উত্তর এবং দক্ষিণ ও পূর্বদিকে দেখো। তুমি নিজের চোখে সেই দেশ দেখো, কেননা তুমি জর্ডন পার হতে পারবে না।
28 কিন্তু যিহোশূয়কে দায়িত্ব দাও, এবং তাকে উৎসাহ ও সাহস জোগাও, কারণ সে এই লোকদের আগে আগে গিয়ে পার হবে এবং যে দেশটি তুমি দেখতে যাচ্ছ তা তাদের দিয়ে অধিকার করাবে।”
29 সেইজন্য আমরা বেথ-পিয়োরের কাছের উপত্যকায় থেকে গেলাম।