< দ্বিতীয় বিবরণ 26 >

1 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যে দেশ তোমাদের অধিকারের জন্য দিচ্ছেন সেটি অধিকার করে সেখানে তোমরা যখন বসবাস করবে,
তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু অধিকারের জন্যে যে দেশ তোমাকে দিচ্ছেন, তুমি যখন তা অধিকার করবে ও সেখানে বাস করবে;
2 তখন তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দেওয়া দেশের জমিতে তোমরা যেসব ফসল ফলাবে তার প্রথম তোলা কিছু ফসল টুকরিতে রাখবে। তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু নিজের নামের জন্য যে জায়গা তাঁর বাসস্থান হিসেবে মনোনীত করবেন তোমরা সেখানে সেই ফসল নিয়ে যাবে
সেই দিনের তুমি ভূমির যাবতীয় ফলের, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু যে দেশ তোমাকে দিচ্ছেন, সেই দেশে উৎপন্ন ফলের প্রথমাংশ থেকে কিছু কিছু নিয়ে ঝুড়িতে করে, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু নিজের নামের থাকার জন্যে যে জায়গা মনোনীত করবেন, সেই জায়গায় যাবে।
3 এবং সেই সময় যে যাজক থাকবে তাকে বলবে, “আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে আমি স্বীকার করছি যে, তিনি যে দেশটি দেবেন বলে আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে শপথ করেছিলেন সেই দেশে আমি এসে গিয়েছি।”
আর সেই দিনের যাজকের কাছে গিয়ে তাকে বলবে, “সদাপ্রভু আমাদেরকে যে দেশ দিতে আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে শপথ করেছিলেন, সেই দেশে আমি এসেছি; এটা আজ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে নিবেদন করছি।”
4 যাজক তোমাদের হাত থেকে সেই টুকরি নিয়ে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বেদির সামনে রাখবে।
আর যাজক তোমার হাত থেকে সেই ঝুড়ি নিয়ে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদির সামনে রাখবে।
5 তারপর তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে ঘোষণা করবে “আমার পিতৃপুরুষ একজন অরামীয় যাযাবর ছিলেন, এবং তিনি কয়েকজন লোক নিয়ে মিশরে গিয়েছিলেন ও সেখানে বসবাস করবার সময় তাঁর মাধ্যমে মহান, শক্তিশালী ও বহুসংখ্যক লোকের এক জাতির সৃষ্টি হয়েছিল।
আর তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে এই কথা বলবে, “এক জন ভবঘুরে অরামীয় আমার পূর্বপুরুষ ছিলেন; তিনি অল্প সংখ্যায় মিশরে নেমে গিয়ে বাস করলেন এবং সে জায়গায় মহান, বলশালী ও জনপূর্ণ জাতি হয়ে উঠলেন।
6 কিন্তু মিশরীয়েরা আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছিল ও কষ্ট দিয়েছিল, এবং আমাদের উপর একটি কঠিন পরিশ্রমের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছিল।
পরে মিশরীয়েরা আমাদের প্রতি খারাপ আচরণ করল, আমাদেরকে নিপীড়িত করল। তারা আমাদেরকে দাসত্ব করালো;
7 তখন আমরা সদাপ্রভুর কাছে কাঁদলাম, আমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরের কাছে, আর সদাপ্রভু আমাদের রব শুনলেন ও আমাদের কষ্ট, পরিশ্রম এবং আমাদের উপর অত্যাচার দেখলেন।
তাতে আমরা নিজের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে কাঁদলাম; আর সদাপ্রভু আমাদের রব শুনে আমাদের কষ্ট, পরিশ্রম ও অত্যাচারের প্রতি দেখলেন।
8 সেইজন্য সদাপ্রভু তাঁর শক্তিশালী হাত, বিস্তারিত বাহু ও মহা ভয়ংকরতা এবং আশ্চর্য কাজ ও চিহ্ন দ্বারা আমাদের মিশর থেকে বের করে আনলেন।
সদাপ্রভু শক্তিশালী হাত, ক্ষমতা প্রদর্শন ও মহাভয়ঙ্করতা এবং নানা চিহ্ন ও অলৌকিক কাজের মাধ্যমে মিশর থেকে আমাদেরকে বের করে আনলেন।
9 তিনি আমাদের এখানে এনেছেন এবং দুধ আর মধু প্রবাহিত এই দেশ আমাদের দিয়েছেন;
এবং তিনি আমাদেরকে এই জায়গায় এনেছেন এবং এই দেশ, দুধ ও মধু প্রবাহী দেশ দিয়েছেন।
10 সেইজন্য হে সদাপ্রভু, তোমার দেওয়া জমির প্রথমে তোলা ফসল আমি তোমার কাছেই এনেছি।” তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে টুকরি রাখবে এবং মাথা নত করবে।
১০এখন দেখ, তুমি আমাকে যে ভূমি দিয়েছ, তার ফলের প্রথমাংশ আমি এনেছি।” এই বলে তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে তা রেখে নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে আরাধনা করবে।
11 তোমাদের এবং তোমাদের পরিবারকে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যেসব ভালো জিনিসপত্র দিয়েছেন তা নিয়ে তোমরা, লেবীয়েরা এবং তোমাদের মধ্যে বসবাসকারী বিদেশিরা আনন্দ করবে।
১১এবং তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে ও তোমার পরিবারকে যেসব মঙ্গল দান করেছেন, সেই সব কিছুতে তুমি ও লেবীয় ও তোমার মাঝখানে অবস্থিত বিদেশী, তোমরা সবাই আনন্দ করবে।
12 তৃতীয় বছরে, অর্থাৎ দশমাংশের বছরে, তোমাদের সব ফসলের দশমাংশ পৃথক করা শেষ করে, সেগুলি তোমরা লেবীয়, বিদেশি বসবাসকারী, পিতৃহীন এবং বিধবাদের দেবে, যেন তারা তোমাদের নগরের মধ্যে খেয়ে তৃপ্ত হয়।
১২তৃতীয় বছরে, অর্থাৎ দশমাংশের বছরে, তোমার উৎপন্ন জিনিসের সব দশমাংশ আলাদা করা শেষ করলে পর তুমি লেবীয়কে, বিদেশীকে, পিতৃহীনকে ও বিধবাকে তা দেবে, তাতে তারা তোমার শহরের দরজার মধ্যে খেয়ে তৃপ্তি পাবে।
13 তারপর তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে বলবে “আমি তোমার আজ্ঞা অনুসারে আমার বাড়ি থেকে পবিত্র জিনিসপত্র বের করে লেবীয়, বিদেশি বসবাসকারী, পিতৃহীন এবং বিধবাদের দিয়েছি। তোমার আজ্ঞা আমি অমান্য করিনি কিংবা সেগুলির একটিও আমি ভুলে যাইনি।
১৩তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে এই কথা বলবে, “তোমার আদেশ দেওয়া সমস্ত কথা অনুসারে আমি নিজের বাড়ি থেকে আলাদা করে রাখা জিনিস বের করে লেবীয়কে, বিদেশীকে, পিতৃহীনকে ও বিধবাকে দিয়েছি; তোমার কোনো আদেশ লঙ্ঘন করিনি ও ভুলে যাইনি;
14 আমার শোকের সময় আমি সেই পবিত্র অংশ থেকে কিছুই খাইনি, কিংবা অশুচি অবস্থায় আমি তার কিছুই সরাইনি, কিংবা তা থেকে কোনও অংশ মৃত লোকদের উদ্দেশে দান করিনি। আমি আমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর বাধ্য হয়েছি; তোমার আজ্ঞা অনুসারে আমি সবকিছুই করেছি।
১৪আমার শোকের দিন আমি তার কিছুই খাইনি, অশুচি অবস্থায় তার কিছুই বের করিনি এবং মৃত লোকের উদ্দেশ্যে তার কিছুই দিইনি, আমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর রবে কান দিয়েছি; তোমার আদেশ অনুসারেই সব কাজ করেছি।
15 তুমি তোমার পবিত্র বাসস্থান থেকে, স্বর্গ থেকে দেখো, তোমার প্রজা ইস্রায়েলকে আশীর্বাদ করো এবং আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে তোমার শপথ করা প্রতিজ্ঞা অনুসারে দুধ আর মধু প্রবাহিত যে দেশ তুমি আমাদের দিয়েছ সেই দেশকেও আশীর্বাদ করো।”
১৫তুমি নিজের পবিত্র নিবাস থেকে, স্বর্গ থেকে, দেখ, তোমার প্রজা ইস্রায়েলকে আশীর্বাদ কর এবং আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে করা তোমার শপথ অনুসারে যে ভূমি আমাদেরকে দিয়েছ, সেই দুধ ও মধু প্রবাহী দেশকেও আশীর্বাদ কর।”
16 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু আজ তোমাদের এই সমস্ত অনুশাসন ও বিধান মেনে চলবার আজ্ঞা দিচ্ছেন; তোমরা সতর্ক হয়ে তোমার সমস্ত হৃদয় ও তোমার সমস্ত প্রাণ দিয়ে তা পালন করবে।
১৬এই সব বিধি ও শাসন পালন করতে আজ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে আদেশ দিচ্ছেন তুমি যত্নসহকারে তোমার পুরো হৃদয় ও তোমার সমস্ত প্রাণের সঙ্গে এ সমস্ত রক্ষা ও পালন করবে।
17 আজই তোমরা স্বীকার করেছ যে, সদাপ্রভুই তোমাদের ঈশ্বর এবং তাঁর পথেই তোমরা চলবে, তাঁর অনুশাসন, আদেশ ও বিধান তোমরা পালন করবে—তাঁর কথা শুনবে।
১৭আজ তুমি এই স্বীকার করেছ যে, সদাপ্রভুই তোমার ঈশ্বর হবেন এবং তুমি তার পথে চলবে, তাঁর বিধি, তাঁর আদেশ ও তাঁর শাসন সব পালন করবে এবং তাঁর রবে কান দেবে।
18 আর সদাপ্রভুও আজকে ঘোষণা করেছেন যে তাঁর প্রতিজ্ঞা অনুসারে তোমরা তাঁরই প্রজা এবং তাঁর নিজের মূল্যবান সম্পত্তি হয়েছ ও তাঁর সমস্ত আজ্ঞা পালন করবে।
১৮আর আজ সদাপ্রভুও এই স্বীকার করেছেন যে, তাঁর প্রতিজ্ঞা অনুসারে তুমি তাঁর অধিকারের লোক হবে ও তাঁর সব আদেশ পালন করবে;
19 তিনি ঘোষণা করেছেন যে প্রশংসা, সুনাম ও গৌরবের দিক থেকে তাঁর সৃষ্ট অন্যান্য জাতিদের উপরে তিনি তোমাদের স্থান দেবেন এবং তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রতিজ্ঞা অনুসারে তোমরা হবে তাঁর উদ্দেশে পবিত্র প্রজা।
১৯আর তিনি নিজের তৈরী সমস্ত জাতির থেকে তোমাকে শ্রেষ্ঠ করে প্রশংসা, কীর্তি ও সম্মানস্বরূপ করবেন এবং তিনি যেমন বলেছেন, সেই অনুসারে তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে পবিত্র লোক হবে।

< দ্বিতীয় বিবরণ 26 >