< দানিয়েল 10 >
1 পারস্য-রাজ কোরসের রাজত্বের তৃতীয় বছরে যাকে বেল্টশৎসর নামে ডাকা হত সেই দানিয়েলের কাছে একটি দর্শন প্রকাশিত হল। তার বার্তা ছিল সত্য ও এক মহাযুদ্ধ সম্পর্কিত। দর্শনের মাধ্যমে সেই বার্তার মানে তার কাছে এল।
১পারস্যের রাজা কোরসের তৃতীয় বছরে, দানিয়েলের (যাঁকে বেল্টশৎসর বলা হত) কাছে একটা বার্তা প্রকাশিত হল এবং সেই বার্তাটি সত্যি। এটা ছিল ভীষণ যুদ্ধের সম্পর্কে। দানিয়েল সেই বার্তাটি বুঝতে পারলেন যখন তিনি একটা দর্শনের মধ্য দিয়ে অন্তর্দৃষ্টি লাভ করেছিলেন।
2 সেই সময় আমি, দানিয়েল, তিন সপ্তাহ ধরে শোক পালন করলাম।
২সেই দিন আমি, দানিয়েল, তিন সপ্তা ধরে শোক করছিলাম।
3 আমি কোনো সুস্বাদু খাবার খেলাম না; মাংস ও সুরা আমি মুখে তুললাম না; এবং তিন সপ্তাহ কেটে না যাওয়া পর্যন্ত সুগন্ধি তেল মাখলাম না।
৩সেই তিন সপ্তাহ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোন সুস্বাদু খাবার আমি খাই নি, কোন মাংসও খাই নি, আঙ্গুর রসও পান করি নি এবং তেলও মাখি নি।
4 প্রথম মাসের চব্বিশতম দিনে, আমি টাইগ্রিস মহানদীর ধারে দাঁড়িয়েছিলাম।
৪প্রথম মাসের চব্বিশ দিনের দিন, আমি যখন মহানদীর টাইগ্রীসের তীরে দাঁড়িয়ে ছিলাম।
5 আমি চোখ তুলে দেখলাম যে আমার সামনে এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে আছেন, যার পরনে ছিল লিনেন, তাঁর কোমরে ছিল উফসের খাঁটি সোনার কটিবন্ধ।
৫আমি তাকালাম এবং দেখতে পেলাম মসীনার কাপড় পরা ও কোমরে ঊফসের খাঁটি সোনার কোমর বাঁধনি দেওয়া একজন লোক।
6 তাঁর শরীর ছিল বৈদূর্যমণির মতো, তাঁর মুখমণ্ডল বিদ্যুতের মতো, তাঁর চোখ জ্বলন্ত মশালের মতো, তাঁর হাত ও পা পালিশ করা পিতলের কিরণের মতো এবং তাঁর কণ্ঠস্বর ছিল জনসমুদ্রের মতো।
৬তাঁর দেহ বৈদূর্যমণির মত, তাঁর মুখ বিদ্যুতের মত, তাঁর চোখ জ্বলন্ত মশালের মত, তাঁর হাত এবং পা পালিশ করা ব্রোঞ্জের মত এবং তাঁর বাক্যর স্বর জড়ো হওয়া অনেক লোকের শব্দের মত।
7 কেবলমাত্র আমি, দানিয়েল, সেই দর্শন দেখেছিলাম; যারা আমার সঙ্গে ছিল তারা কিছুই দেখতে পেল না কিন্তু আতঙ্ক তাদের এতটাই গ্রাস করল যে তারা পালিয়ে গেল ও লুকিয়ে পড়ল।
৭আমি, দানিয়েল একাই সেই দর্শন দেখলাম, কারণ সেই সমস্ত লোকেরা যারা আমার সঙ্গে ছিল দেখতে পেল না, যদিও তাদের উপর মহা ভয় নেমে এসেছিল এবং লুকানোর জন্য তারা পালিয়ে গেল।
8 তাই আমি একাই রইলাম এবং এই মহা দর্শনের দিকে তাকিয়ে রইলাম; আমার কোনো শক্তি বাকি রইল না, আমার মুখমণ্ডল মৃতের মতো বিবর্ণ হয়ে উঠল এবং আমি অসহায় হয়ে পড়লাম।
৮তাই আমি একাই ছিলাম এবং সেই মহৎ দর্শন দেখলাম। আমার মধ্যে কোন শক্তি থাকল না, আমার দীপ্তিপূর্ণ চেহারা ভয়ের সঙ্গে পরিবর্তন হয়ে গেল এবং আমার মধ্যে কোন শক্তি অবশিষ্ট থাকল না।
9 এরপর আমি সেই ব্যক্তিকে কথা বলতে শুনলাম; যখন আমি তাঁর কণ্ঠস্বর শুনলাম তখন আমি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে উবুড় হয়ে পড়লাম।
৯তারপর আমি তাঁর কথা শুনতে পেলাম এবং যখন আমি সেই কথাগুলো শুনছিলাম তখন আমি গভীর ঘুমে মাটিতে উপুড় হয়ে পড়লাম।
10 তখন একটি হাত আমাকে স্পর্শ করল ও আমাকে হাতের ও হাঁটুর উপর ভর দিয়ে বসিয়ে দিল; আমি কাঁপছিলাম।
১০একটা হাত আমাকে স্পর্শ করল এবং যা আমার হাঁটুকে ও দুই হাতকে কম্পিত করল।
11 তিনি আমাকে বললেন, “দানিয়েল, তুমি ঈশ্বরের প্রিয়পাত্র, আমি তোমাকে যা বলতে যাচ্ছি তা মনোযোগ দিয়ে শোনো এবং উঠে দাঁড়াও, কারণ আমাকে তোমার কাছে পাঠানো হয়েছে।” যখন তিনি আমাকে এই কথা বললেন, তখন আমি কাঁপতে কাঁপতে উঠে দাঁড়ালাম।
১১সেই স্বর্গদূত আমাকে বললেন, “দানিয়েল, সেই মানুষ যাকে খুবই ভালবাসা হয়েছে, আমি তোমাকে যে কথা বলছি তা বোঝো। তুমি উঠে দাঁড়াও, কারণ আমাকে তোমার কাছে পাঠানো হয়েছে।” যখন তিনি আমাকে এই কথা বললেন, তখন আমি কাঁপতে কাঁপতে উঠে দাঁড়ালাম।
12 তিনি আরও বললেন, “দানিয়েল, ভয় কোরো না। তুমি প্রথম যেদিন জ্ঞান অর্জন করতে মনোযোগ দিয়েছিলে ও তোমার ঈশ্বরের সামনে নিজেকে নম্র করেছিলে, সেইদিনই ঈশ্বর তোমার প্রার্থনা শুনেছিলেন এবং আমি তার উত্তরে তোমার সামনে হাজির হয়েছি।
১২তখন তিনি আমাকে বললেন, “দানিয়েল, ভয় পেয়ো না। সেই প্রথম যেই দিন থেকে যখন তুমি বোঝার জন্য তোমার মনকে স্থির করেছিলে এবং ঈশ্বরের সামনে নিজেকে নম্র করেছিলে, তোমার কথা শোনা হয়েছিল এবং তোমার বাক্যর জন্যই আমি এসেছি।
13 কিন্তু পারস্য সাম্রাজ্যের অধিপতি আমাকে একুশদিন প্রতিরোধ করেছিল। তখন মীখায়েল, প্রধান অধিপতিগণদের একজন আমাকে সাহায্য করতে আসলেন, কারণ পারস্য রাজার কাছে আমাকে আটকে রাখা হয়েছিল।
১৩কিন্তু পারস্য রাজ্যের শাসনকর্ত্তা আমাকে বাধা দিয়েছিল এবং আমি সেখানে পারস্যের রাজাদের সঙ্গে একুশ দিন রাখা হয়েছিল৷ কিন্তু মীখায়েল প্রধান অধিপতি আমাকে সাহায্য করতে এলেন।
14 তোমার স্বজাতিদের প্রতি ভবিষ্যতে কী ঘটবে তা ব্যাখ্যা করতে এখন আমি এসেছি, কারণ এই দর্শন আসন্ন সময়ের কথা।”
১৪এখন আমি তোমাকে সাহায্য করতে এসেছি যেন তুমি বুঝতে পারো যে শেষ দিনের তোমার লোকদের প্রতি কি ঘটবে। কারণ এই দর্শন হল সেই সমস্ত দিনের র বিষয় যা এখনও আসে নি।”
15 তিনি যখন আমাকে এসব কথা বলছিলেন তখন আমি মাথা নিচু করে উপুড় হয়ে মাটির দিকে চেয়ে রইলাম, কিছুই বলতে পারলাম না।
১৫তিনি যখন আমাকে এই কথা বলছিলেন, তখন আমি মাটির দিকে মাথা নীচু করে ছিলাম এবং আমার মুখে কোন কথা ছিল না।
16 তখন যিনি মানুষের মতো দেখতে তিনি আমার ঠোঁট দুটি স্পর্শ করলেন এবং আমি মুখ খুললাম ও কথা বলতে শুরু করলাম। যিনি আমার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁকে আমি বললাম, “হে আমার প্রভু, দর্শনের কারণে নিদারুণ মানসিক যন্ত্রণা আমাকে গ্রাস করেছে এবং নিজেকে অত্যন্ত দুর্বল বোধ করছি।
১৬তখন মানুষের মত দেখতে একজন আমার ঠোঁট স্পর্শ করলেন এবং আমি মুখ খুলে তাঁকে বললাম যিনি আমার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন, “আমার মনিব, এই দর্শনের জন্য আমি মনে খুব কষ্ট পাচ্ছি এবং আমার মধ্যে কোন শক্তি অবশিষ্ট নেই।
17 হে প্রভু, আমি, তোমার ভক্তদাস, কী করে তোমার সঙ্গে কথা বলতে পারি? আমার সব শক্তি শেষ হয়ে গেছে এবং ঠিক ভাবে নিশ্বাসও নিতে পারছি না।”
১৭আমি আপনার দাস, আমি কি করে আমার মনিবের সঙ্গে কথা বলতে পারি? কারণ এখন আমার কোন শক্তি নেই এবং আমার মধ্যে কোন শ্বাসও অবশিষ্ট নেই।”
18 পুনরায় তিনি, যাকে মানুষের মতো দেখতে, আমাকে স্পর্শ করলেন ও আমাকে শক্তি দিলেন।
১৮তখন মানুষের মত দেখতে সেই ব্যক্তি আমাকে স্পর্শ করলেন এবং আমাকে শক্তি দিলেন।
19 তিনি বললেন, “ভয় কোরো না কারণ তুমি ঈশ্বরের প্রিয়পাত্র। তোমার শান্তি হোক! সাহস করো ও শক্তিশালী হও।” যখন তিনি আমাকে এসব বললেন তখন আমি শক্তি পেলাম এবং বললাম, “হে প্রভু, বলুন, কারণ আপনি আমাকে শক্তি দিয়েছেন।”
১৯তিনি বললেন, “হে মানুষ যে খুবই প্রিয়, তুমি ভয় পেয়ো না। তোমার শান্তি হোক। এখন শক্তিশালী হও, শক্তিশালী হও!” যখন তিনি আমার সঙ্গে কথা বললেন তখন আমি শক্তি পেলাম এবং বললাম, “আমার প্রভু, বলুন, কারণ আপনি আমাকে শক্তিশালী করেছেন।”
20 তখন তিনি বললেন, “তুমি কি জানো যে কেন আমি তোমার কাছে এসেছি? শীঘ্রই আমি পারস্য সাম্রাজ্যের অধিপতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে ফিরে যাব এবং যখন আমি যাব, গ্রীসের অধিপতিও আসবে;
২০তিনি বললেন, “তুমি কি জান কেন আমি তোমার কাছে এসেছি? আমি এখন পারস্যের রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য ফিরে যাচ্ছি। যখন আমি যাব তখন গ্রীসের শাসনকর্তাও আসবেন।
21 কিন্তু প্রথমে আমি তোমাকে বলব সত্যের বইতে কি লেখা আছে। (তাদের বিরুদ্ধে এই সংগ্রামে একমাত্র মীখায়েল, তোমার অধিপতি ছাড়া কেউ আমাকে সাহায্য করে না।
২১কিন্তু আমি তোমাকে বলছি সত্যের বইতে যা লেখা আছে, সেই প্রধান মীখায়েল ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর মত আমার সঙ্গে আর কেউ নেই।”